শিরোনাম :
Logo হাসিনার গণহত্যা মামলার প্রতিবেদন জমা; মিলেছে অপরাধের প্রমাণ Logo কচুয়ায় টানা ৪১ দিন জামাতে নামাজ পড়ে সাইকেল পুরস্কার পেল ১০ শিশু-কিশোর Logo চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার দুর্ঘটনায় নিহত বেড়ে ১০ Logo দেশে জঙ্গিবাদ উত্থানের মতো কিছুই ঘটেনি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Logo কচুয়ায় নিরাপদ সড়ক চাই উদ্যোগে ডা. আমিনুল ইসলামকে ফুলেল সংবর্ধনা Logo আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ কর্তৃক মাদক সম্রজ্ঞী মিনি বেগম মাদক বিক্রয়কালে হাতেনাতে গ্রেফতার Logo ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ঈদের আয়োজন Logo নির্বাচন ডিসেম্বরের মধ্যে না হলে দেশ অস্থিতিশীল হতে পারে, রয়টার্সকে মঈন খান Logo কলকাতাকে উড়িয়ে মুম্বাইয়ের প্রথম জয় Logo অস্ট্রেলিয়ার কেন্দ্রীয় চুক্তিতে চমক, তালিকায় ২ টেস্ট খেলা ব্যাটার

থানার লুটের অস্ত্র দিয়ে টিকটক করতে গিয়ে গুলিতে তরুণের মৃত্যু

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৮:২৭:৫৮ অপরাহ্ণ, সোমবার, ১২ আগস্ট ২০২৪
  • ৭২০ বার পড়া হয়েছে

ফরিদপুরের সদরপুর থানা থেকে লুট করা অস্ত্র নিয়ে টিকটক করছিলেন তিন তরুণ। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় পলাশ হোসেন (১৮) নামে একজনের। সোমবার (১২ আগস্ট) ভোর ৬টার দিকে ঢাকার নিউরো সায়েন্স হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। গত ৬ আগস্ট গুলিবিদ্ধ হন ওই তরুণ।

নিহত পলাশ সদরপুর উপজেলার আটরশি গ্রামের মোশারফ হোসেনের বড় ছেলে।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ৬ আগস্ট সকালে পলাশ তার বাবার হোটেলে কাজ করছিলেন। এ সময় তার দুই বন্ধু সদরপুর সরকারি কালেজের একাদশ শ্রেণির দুই শিক্ষার্থী পলাশকে হোটেল থেকে ডেকে নিয়ে যান। পরে তারা আড়াই রশি গ্রামে পলাশের নানা মোসলেম মাতুব্বরের বাড়িতে যান।

ওই বাড়ির একটি কক্ষে তারা তিনজন একত্রিত হয়ে গত ৫ আগস্ট সদরপুর থানা থেকে লুট করে নেওয়া একটি শর্টগান নিয়ে টিকটক ভিডিও করার জন্য অস্ত্রটি একে অপরের মাথায় তাক করে অভিনয় করতে থাকেন। হঠাৎ শর্টগান থেকে গুলি বের হয়ে তা পলাশের মাথায় লাগে। গুলির শব্দ এবং পলাশের চিৎকার শুনতে পেয়ে বাড়ির লোকজন ছুটে যান সেই কক্ষে। সেখানে গিয়ে তারা রক্তাক্ত অবস্থায় বিছানায় পরে থাকতে দেখেন পলাশকে।

পলাশকে প্রথমে তারা আটরশি বিশ্ব জাকের মঞ্জিল হাসপাতালে নেন। কিন্তু শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য সেখান থেকে নেওয়া হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে অবস্থার আরও অবনতি হলে তাকে ফরিদপুর থেকে ঢাকা নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে নেওয়া হয়। ঢাকার নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে ছয় দিন আইসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকার পর সোমবার ভোরে মারা যান পলাশ।

স্থানীয়দের মাধ্যমে জানা যায়, পলাশকে গুলি করা অস্ত্রটি সদরপুর থানা থেকে লুট হওয়া একটি শর্টগান। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের দিন বিকেলে সদরপুর থানা থেকে ওই শর্টগান লুট করা হয়েছিল। অস্ত্রটি আটরশির একটি পরিত্যক্ত ভবন থেকে উদ্ধার করে সদরপুরের আনসার বাহিনী এবং সেটি পরে ফরিদপুর সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়।

ঘটনার পর পলাশের ওই দুই বন্ধু ও তাদের পরিবারের সদস্যরা আত্মগোপন করায় এ ব্যাপারে তাদের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
তবে নিহত পলাশের মা পারুলি আক্তারের দাবি, সদরপুর থানা থেকে লুট করা অস্ত্র দিয়ে তার ছেলেকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। থানার কাজকর্ম শুরু না হওয়ায় তাৎক্ষণিক এ ব্যাপারে আইনগত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি।

যোগাযোগ করা হলে সদরপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় পলাশের মা পারুলী আক্তার বাদী হয়ে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে থানায় হত্যা মামলা করেছেন। পলাশের মরদেহ থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে।

তিনি বলেন, তদন্ত করলে জানা যাবে, থানা থেকে লুট করে নেওয়া অস্ত্র দিয়ে বন্ধুরা টিকটক করতে গিয়ে গুলি বের হয়ে পলাশ মারা গেছেন নাকি এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

হাসিনার গণহত্যা মামলার প্রতিবেদন জমা; মিলেছে অপরাধের প্রমাণ

থানার লুটের অস্ত্র দিয়ে টিকটক করতে গিয়ে গুলিতে তরুণের মৃত্যু

আপডেট সময় : ০৮:২৭:৫৮ অপরাহ্ণ, সোমবার, ১২ আগস্ট ২০২৪

ফরিদপুরের সদরপুর থানা থেকে লুট করা অস্ত্র নিয়ে টিকটক করছিলেন তিন তরুণ। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় পলাশ হোসেন (১৮) নামে একজনের। সোমবার (১২ আগস্ট) ভোর ৬টার দিকে ঢাকার নিউরো সায়েন্স হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। গত ৬ আগস্ট গুলিবিদ্ধ হন ওই তরুণ।

নিহত পলাশ সদরপুর উপজেলার আটরশি গ্রামের মোশারফ হোসেনের বড় ছেলে।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ৬ আগস্ট সকালে পলাশ তার বাবার হোটেলে কাজ করছিলেন। এ সময় তার দুই বন্ধু সদরপুর সরকারি কালেজের একাদশ শ্রেণির দুই শিক্ষার্থী পলাশকে হোটেল থেকে ডেকে নিয়ে যান। পরে তারা আড়াই রশি গ্রামে পলাশের নানা মোসলেম মাতুব্বরের বাড়িতে যান।

ওই বাড়ির একটি কক্ষে তারা তিনজন একত্রিত হয়ে গত ৫ আগস্ট সদরপুর থানা থেকে লুট করে নেওয়া একটি শর্টগান নিয়ে টিকটক ভিডিও করার জন্য অস্ত্রটি একে অপরের মাথায় তাক করে অভিনয় করতে থাকেন। হঠাৎ শর্টগান থেকে গুলি বের হয়ে তা পলাশের মাথায় লাগে। গুলির শব্দ এবং পলাশের চিৎকার শুনতে পেয়ে বাড়ির লোকজন ছুটে যান সেই কক্ষে। সেখানে গিয়ে তারা রক্তাক্ত অবস্থায় বিছানায় পরে থাকতে দেখেন পলাশকে।

পলাশকে প্রথমে তারা আটরশি বিশ্ব জাকের মঞ্জিল হাসপাতালে নেন। কিন্তু শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য সেখান থেকে নেওয়া হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে অবস্থার আরও অবনতি হলে তাকে ফরিদপুর থেকে ঢাকা নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে নেওয়া হয়। ঢাকার নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে ছয় দিন আইসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকার পর সোমবার ভোরে মারা যান পলাশ।

স্থানীয়দের মাধ্যমে জানা যায়, পলাশকে গুলি করা অস্ত্রটি সদরপুর থানা থেকে লুট হওয়া একটি শর্টগান। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের দিন বিকেলে সদরপুর থানা থেকে ওই শর্টগান লুট করা হয়েছিল। অস্ত্রটি আটরশির একটি পরিত্যক্ত ভবন থেকে উদ্ধার করে সদরপুরের আনসার বাহিনী এবং সেটি পরে ফরিদপুর সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়।

ঘটনার পর পলাশের ওই দুই বন্ধু ও তাদের পরিবারের সদস্যরা আত্মগোপন করায় এ ব্যাপারে তাদের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
তবে নিহত পলাশের মা পারুলি আক্তারের দাবি, সদরপুর থানা থেকে লুট করা অস্ত্র দিয়ে তার ছেলেকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। থানার কাজকর্ম শুরু না হওয়ায় তাৎক্ষণিক এ ব্যাপারে আইনগত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি।

যোগাযোগ করা হলে সদরপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় পলাশের মা পারুলী আক্তার বাদী হয়ে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে থানায় হত্যা মামলা করেছেন। পলাশের মরদেহ থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে।

তিনি বলেন, তদন্ত করলে জানা যাবে, থানা থেকে লুট করে নেওয়া অস্ত্র দিয়ে বন্ধুরা টিকটক করতে গিয়ে গুলি বের হয়ে পলাশ মারা গেছেন নাকি এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।