চুয়াডাঙ্গায় দীর্ঘ ৪৪ দিন ধরে বিরামহীনভাবে বইছে তীব্র তাপপ্রবাহ। চলতি মে মাসের মাঝামাঝি এসে পরিস্থিতি আরও প্রকট হয়েছে। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের এই জেলাটিতে লাগাতার উচ্চ তাপমাত্রা জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে।
বুধবার (১৪ মে) দুপুর ৩টায় জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা দাঁড়ায় ৩৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। সেই সঙ্গে বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৪২ শতাংশ। ফলে প্রকৃত অনুভূত তাপমাত্রা ছিল আরও বেশি, জানিয়েছে স্থানীয় আবহাওয়া অফিস।
গত এক সপ্তাহের তাপমাত্রা পর্যালোচনা করলেই বোঝা যায়, চুয়াডাঙ্গা কতটা ভয়াবহ তাপপ্রবাহের কবলে রয়েছে। মঙ্গলবার (১৩ মে) তাপমাত্রা ছিল ৩৮.৭, সোমবার (১২ মে) ৩৮.৮, রবিবার (১১ মে) ৪১.৮ এবং তার আগের দিন শনিবার (১০ মে) মৌসুমের সর্বোচ্চ ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়।
দিনমজুর, রিকশাচালক, ভ্যানচালক এবং কৃষিশ্রমিকরা এই উত্তাপে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। শহরের রাস্তাঘাট দুপুরের দিকে প্রায় জনশূন্য হয়ে পড়ে। ভ্যাপসা গরমে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা থমকে গেছে।
আলমডাঙ্গা শহরের বাসিন্দা মো. কামাল উদ্দিন বলেন, “বাইরে বের হলেই মনে হয় তাপে শরীর ঝলসে যাচ্ছে। গরমে নিঃশ্বাস নেওয়াও কষ্টকর।” সদর পৌরসভার কলেজ পাড়ার রাশেদুল বলেন, “প্রতিদিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়। যদি বৃষ্টি না নামে, তাহলে বহু মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়বে।”
তাপপ্রবাহের সরাসরি প্রভাব পড়ছে স্বাস্থ্য খাতে। শিশু, বৃদ্ধ এবং রোগীরা পড়ছেন সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে। ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. আওলিয়ার রহমান জানান, “হিটস্ট্রোক ও পানিশূন্যতা নিয়ে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। সবাইকে প্রচুর পানি পান এবং রোদ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।”
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ জামিনুর রহমান জানান, “বর্তমানে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উপর দিয়ে মাঝারি থেকে তীব্র ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। চুয়াডাঙ্গা অন্যতম ক্ষতিগ্রস্ত জেলা। তবে দু-এক দিনের মধ্যে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।”
তীব্র দাবদাহে অতিষ্ঠ চুয়াডাঙ্গাবাসী এখন তাকিয়ে আছেন আকাশের দিকে—এক পশলা স্বস্তির বৃষ্টির আশায়।