শিরোনাম :
Logo বেরোবিতে বহিরাগত প্রবেশ নিষিদ্ধ Logo দেশব্যাপী হত্যাকাণ্ড এবং চলমান চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে চুয়াডাঙ্গায় তীব্র প্রতিবাদ Logo উত্তর কচুয়া জাতীয়তাবাদী প্রবাসী কল্যাণ সংগঠনের উদ্যোগে মহিলা দলের বিশাল গনমিছিল Logo কচুয়ায় বিএনপির উদ্যোগে লিফলেট বিতরন ও মিছিল Logo চাঁদপুরে খতিবের উপর হামলার প্রতিবাদে শহর জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ Logo ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন চাঁদপুর জেলা শাখার উদ্যোগে দায়িত্বশীল তারবিয়াত অনুষ্ঠিত Logo চাঁদপুর জেলা বিজেপি’র জেলা কমিটি গঠনকল্পে সমন্বয় সভা আন্দালিভ রহমান পার্থ বাংলাদেশে সুস্থধারার রাজনীতির দিকপাল ………উপাধ্যক্ষ নুরুজ্জামান হীরা Logo আমরা সংস্কার চেয়েছি,জুলাই গণহত্যার বিচার চেয়েছি এবং নতুন সংবিধান চেয়েছি: নাহিদ ইসলাম Logo মিটফোর্ডে হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে হাবিপ্রবিতে বিক্ষোভ Logo ইবিতে শাখা ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মীর পদত্যাগ

ভয়ঙ্কর কুস্তিগীর গামা দৈনিক খেতেন ৬ মুরগি-১০ লিটার দুধ !

  • amzad khan
  • আপডেট সময় : ০১:৫৬:১১ অপরাহ্ণ, রবিবার, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭
  • ৭৬৪ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

গুলাম মহম্মদ বা ‘দ্য গ্রেট গামা’ ভারতের মাটিতে অনেক পালোয়ানকে চোখের পলকেই পরাজিত করে ফেলতেন। দেশের মাটিতে তিনি অনেক পালোয়ানকে দৈহিক কসরত দেখিয়েছেন৷ একবারে কয়েক হাজার বুক ডন দেওয়া ছিল তার প্রতিদিনের শরীরচর্চার অঙ্গ৷ তার নিত্যদিনের খাবারের তালিকায় ছিল ছটি দেশি মুরগি, দশ লিটার দুধ, হাফ লিটার ঘি ও আমন্ডের মিশ্রণ৷

ব্রিটিশের দখলে থাকা ভারতবর্ষে পাঞ্জাবের অমৃতসরে ১৮৭৮ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন গুলাম মহম্মদ৷ ছোটো থেকেই শরীরচর্চার প্রতি ছিল তার গভীর টান৷ বিখ্যাত বডি বিল্ডার ব্রুশ লিকে নিজের এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা হিসেবে মানতেন গুলাম মহম্মদ৷ প্রথমে নিজের বাবা মহম্মদ আজিজ বক্সের কাছেই অনুশীলন করতেন তিনি৷ দশবছর বয়সেই তিনি জয় করে নিয়েছিলেন বিভিন্ন স্থানীয় প্রতিযোগিতা৷ ফলে ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়তে থাকে তার নাম৷ তবে ১৮৯৫ সালে কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে পরতে হয় তাকে৷ একটি প্রতিযোগিতায় তাকে লড়াতে হয় ‘রুস্তম-ই-হিন্দ’ নামে খ্যাত রহিম বক্স সুলতানিওয়ালার সঙ্গে৷ ৬ ফুট ৯ ইঞ্চির দৈত্যাকার রহিমের সঙ্গে ৫ ফুট ৭ ইঞ্চির গুলামের লড়াই অমীমাংসিত রয়ে যায়৷

বেড়ে যায় গামার কদর৷ সর্বত্র জয় জয়কার পরে যায়৷ এরপরে একের পর এক প্রতিযোগিতার তৎকালীন ভারতের নাম করা পালোয়ানদের পরাজিত করতে থাকেন গামা৷ ১৮৯৮ সালে গুলাম মহিউদ্দিন, ১৯০২ সালে ভোপালের প্রতাপ সিং, ১৯০৪ সালে ইন্দোরের আলি বাবা সাইন ও ১৯০৭ সালে মুলতানের হাসান বক্স৷ এরপর আবারও তার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রহিম বক্স সুলতানিওয়ালার মুখোমুখি হয়েছিলেন গুলাম মহম্মদ কিন্তু এবারও প্রতিযোগিতা অমীমাংসিত থাকে৷

এরপরে ভারতে অপরাজিত থেকে গামা ইংল্যান্ডের উদ্দেশ্যে রওনা দেন৷ কিন্তু উচ্চতা কম থাকার কারণে অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয় তাকে৷ থেমে যাননি তিনি৷ হুঁশিয়ারি দেন যে ইংল্যান্ডের যেকোনও ব্রিটিশ পালোয়ান ত্রিশ মিনিটে পরাজিত করতে পারেন তিনি৷ এমনকি সেই সময়ে ইংল্যান্ডের নামকরা পালোয়ান স্টেনিশলাস জোবিশকো ও ফ্রাঙ্ক গোটচকে৷ কিন্তু স্টেনিশলাস ছাড়া আর কেউ তার সঙ্গে লড়তে সাহস দেখাননি৷ ১৯১০ সালের ১০ সেপ্টেম্বর স্টেনিশলাসের সঙ্গে রেশলিং রিংয়ে মুখোমুখি হন গামা৷ সবাইকে অবাক করে এক মিনিটেরও কম সময়ে স্টেনিশলাসকে কাবু করে ফেলেছিলেন গামা এবং পরবর্তী ২ ঘণ্টা ৩৫ মিনিট একইভাবে স্টেনিশলাসকে কাবু করে রেখেছিলেন৷ প্রতিযোগিতা থেকে যায় অমিমাংসীত৷ সেই মাসেরই ১৯ তারিখ আবারও গামার মুখোমুখি হওয়ার কথা ছিল স্টেনিশলাসের৷ কিন্তু গামার সঙ্গে লড়াইয়ের ময়দানে আর নামতে চাননি তিনি৷ ফলে প্রথম ভারতীয় রেশলার হিসেবে ওয়ার্ল্ড হেভিওয়েট টাইটেলের বিজয়ী হন গুলাম মহম্মদ, পান রুস্তম-ই-জামানা ফেতাব৷

১৯১১ সালে আবারও তার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রহিম বক্স সুলতানিওয়ালার সঙ্গে লড়াইয়ে নামেন গুলাম মহম্মদ৷ তবে এবার আর অমীমাংসিত রইল না খেলা জয়ী হন গুলাম মহম্মদ৷ ১৯২৯ সালে সুইডিশ পালোয়ান জিশেস পিটারশনের বিরুদ্ধে শেষবারের মত রেশলিংয়ের রিংয়ে নামেন তিনি৷ তারপরে ইতিটানেন নিজের পঞ্চাশ বছরের রেশলিং কেরিয়ারে৷ ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীনতা লাভের পরে পাকিস্তানে বসবাস করতে শুরু করেন তিনি৷ তবে শেষ বয়সে অর্থারাইটিসে ভুগে ১৯৬৩ সালে মৃত্যু হয় গুলাম মহমম্দের৷ শেষ হয় ভারতের মাটিতে জন্মান এক বীর পালোয়ান ‘দ্য গ্রেট গামা’র জীবন৷

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

বেরোবিতে বহিরাগত প্রবেশ নিষিদ্ধ

ভয়ঙ্কর কুস্তিগীর গামা দৈনিক খেতেন ৬ মুরগি-১০ লিটার দুধ !

আপডেট সময় : ০১:৫৬:১১ অপরাহ্ণ, রবিবার, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

নিউজ ডেস্ক:

গুলাম মহম্মদ বা ‘দ্য গ্রেট গামা’ ভারতের মাটিতে অনেক পালোয়ানকে চোখের পলকেই পরাজিত করে ফেলতেন। দেশের মাটিতে তিনি অনেক পালোয়ানকে দৈহিক কসরত দেখিয়েছেন৷ একবারে কয়েক হাজার বুক ডন দেওয়া ছিল তার প্রতিদিনের শরীরচর্চার অঙ্গ৷ তার নিত্যদিনের খাবারের তালিকায় ছিল ছটি দেশি মুরগি, দশ লিটার দুধ, হাফ লিটার ঘি ও আমন্ডের মিশ্রণ৷

ব্রিটিশের দখলে থাকা ভারতবর্ষে পাঞ্জাবের অমৃতসরে ১৮৭৮ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন গুলাম মহম্মদ৷ ছোটো থেকেই শরীরচর্চার প্রতি ছিল তার গভীর টান৷ বিখ্যাত বডি বিল্ডার ব্রুশ লিকে নিজের এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা হিসেবে মানতেন গুলাম মহম্মদ৷ প্রথমে নিজের বাবা মহম্মদ আজিজ বক্সের কাছেই অনুশীলন করতেন তিনি৷ দশবছর বয়সেই তিনি জয় করে নিয়েছিলেন বিভিন্ন স্থানীয় প্রতিযোগিতা৷ ফলে ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়তে থাকে তার নাম৷ তবে ১৮৯৫ সালে কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে পরতে হয় তাকে৷ একটি প্রতিযোগিতায় তাকে লড়াতে হয় ‘রুস্তম-ই-হিন্দ’ নামে খ্যাত রহিম বক্স সুলতানিওয়ালার সঙ্গে৷ ৬ ফুট ৯ ইঞ্চির দৈত্যাকার রহিমের সঙ্গে ৫ ফুট ৭ ইঞ্চির গুলামের লড়াই অমীমাংসিত রয়ে যায়৷

বেড়ে যায় গামার কদর৷ সর্বত্র জয় জয়কার পরে যায়৷ এরপরে একের পর এক প্রতিযোগিতার তৎকালীন ভারতের নাম করা পালোয়ানদের পরাজিত করতে থাকেন গামা৷ ১৮৯৮ সালে গুলাম মহিউদ্দিন, ১৯০২ সালে ভোপালের প্রতাপ সিং, ১৯০৪ সালে ইন্দোরের আলি বাবা সাইন ও ১৯০৭ সালে মুলতানের হাসান বক্স৷ এরপর আবারও তার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রহিম বক্স সুলতানিওয়ালার মুখোমুখি হয়েছিলেন গুলাম মহম্মদ কিন্তু এবারও প্রতিযোগিতা অমীমাংসিত থাকে৷

এরপরে ভারতে অপরাজিত থেকে গামা ইংল্যান্ডের উদ্দেশ্যে রওনা দেন৷ কিন্তু উচ্চতা কম থাকার কারণে অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয় তাকে৷ থেমে যাননি তিনি৷ হুঁশিয়ারি দেন যে ইংল্যান্ডের যেকোনও ব্রিটিশ পালোয়ান ত্রিশ মিনিটে পরাজিত করতে পারেন তিনি৷ এমনকি সেই সময়ে ইংল্যান্ডের নামকরা পালোয়ান স্টেনিশলাস জোবিশকো ও ফ্রাঙ্ক গোটচকে৷ কিন্তু স্টেনিশলাস ছাড়া আর কেউ তার সঙ্গে লড়তে সাহস দেখাননি৷ ১৯১০ সালের ১০ সেপ্টেম্বর স্টেনিশলাসের সঙ্গে রেশলিং রিংয়ে মুখোমুখি হন গামা৷ সবাইকে অবাক করে এক মিনিটেরও কম সময়ে স্টেনিশলাসকে কাবু করে ফেলেছিলেন গামা এবং পরবর্তী ২ ঘণ্টা ৩৫ মিনিট একইভাবে স্টেনিশলাসকে কাবু করে রেখেছিলেন৷ প্রতিযোগিতা থেকে যায় অমিমাংসীত৷ সেই মাসেরই ১৯ তারিখ আবারও গামার মুখোমুখি হওয়ার কথা ছিল স্টেনিশলাসের৷ কিন্তু গামার সঙ্গে লড়াইয়ের ময়দানে আর নামতে চাননি তিনি৷ ফলে প্রথম ভারতীয় রেশলার হিসেবে ওয়ার্ল্ড হেভিওয়েট টাইটেলের বিজয়ী হন গুলাম মহম্মদ, পান রুস্তম-ই-জামানা ফেতাব৷

১৯১১ সালে আবারও তার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রহিম বক্স সুলতানিওয়ালার সঙ্গে লড়াইয়ে নামেন গুলাম মহম্মদ৷ তবে এবার আর অমীমাংসিত রইল না খেলা জয়ী হন গুলাম মহম্মদ৷ ১৯২৯ সালে সুইডিশ পালোয়ান জিশেস পিটারশনের বিরুদ্ধে শেষবারের মত রেশলিংয়ের রিংয়ে নামেন তিনি৷ তারপরে ইতিটানেন নিজের পঞ্চাশ বছরের রেশলিং কেরিয়ারে৷ ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীনতা লাভের পরে পাকিস্তানে বসবাস করতে শুরু করেন তিনি৷ তবে শেষ বয়সে অর্থারাইটিসে ভুগে ১৯৬৩ সালে মৃত্যু হয় গুলাম মহমম্দের৷ শেষ হয় ভারতের মাটিতে জন্মান এক বীর পালোয়ান ‘দ্য গ্রেট গামা’র জীবন৷