ভয়াবহ ড্রোন হামলার কবলে মস্কো, চার বিমানবন্দর বন্ধ

চলমান উত্তেজনার মধ্যেই রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে ড্রোন দিয়ে ভয়াবহ আক্রমণ চালিয়েছে ইউক্রেন। এনিয়ে টানা দ্বিতীয় রাত ইউক্রেনের ড্রোন হামলার মুখে পড়ল শহরটি। এদিকে সর্বশেষ হামলার পর মস্কোর চারটি বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া বেশকিছু ইউক্রেনীয় ড্রোন ভূপাতিত করার দাবিও করেছে রাশিয়া। আজ মঙ্গলবার (৬ মে) প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে তথ্যটি নিশ্চিত করেছে ব্রিটিশ মিডিয়া বিবিসি।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটি বলছে, টানা দ্বিতীয় রাত ইউক্রেনের ড্রোন হামলার মুখে পড়েছে রাশিয়ার রাজধানী মস্কো।

এ দিকে রাশিয়ার বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রক সংস্থা রোসাভিয়াটসিয়া জানিয়েছে, নিরাপত্তার স্বার্থে মস্কোর চারটি প্রধান বিমানবন্দর—ভনুকোভো, দোমোদেদোভো, শেরেমেতিয়েভো এবং ঝুকোভস্কি—অস্থায়ীভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।

মস্কোর মেয়র সের্গেই সোবিয়ানিন জানিয়েছেন, শহরের বিভিন্ন দিক থেকে আসা অন্তত ১৯টি ইউক্রেনীয় ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে। তবে, কিছু ড্রোনের ধ্বংসাবশেষ শহরের একটি প্রধান মহাসড়কে পড়েছে, যদিও এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

ইউক্রেন অবশ্য এখনো মস্কোতে এই হামলার প্রতিবেদনের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

এ দিকে রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলের রিলস্ক শহরে ইউক্রেনের হামলায় একটি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রুশ কর্মকর্তারা বলছেন, ভয়াবহ এই হামলায় দুই কিশোর আহত হয়েছে এবং শহরের কিছু অংশে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়েছে।

ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর দাবি, তারা কুরস্ক অঞ্চলের তিওতকিনো গ্রামের কাছে রাশিয়ার একটি ড্রোন কমান্ড ইউনিটে সফলভাবে হামলা চালিয়েছে। এই অভিযানে রুশ বাহিনীর উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ইউক্রেন দাবি করেছে।

রাশিয়ার সামরিক ব্লগাররা জানিয়েছেন, ইউক্রেনীয় বাহিনী সীমান্ত অতিক্রম করে কুরস্ক অঞ্চলে প্রবেশের চেষ্টা করেছে। তারা মাইনফিল্ড অতিক্রম করে সাঁজোয়া যান নিয়ে রুশ প্রতিরক্ষা অবস্থানে হামলা চালিয়েছে। এই সময় রুশ বাহিনী ব্রিজ উড়িয়ে দিয়ে ইউক্রেনীয় বাহিনীকে প্রতিহত করার চেষ্টা করে।

এই হামলার পর, ইউক্রেনের সীমান্তবর্তী সুমি অঞ্চলের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ দুটি বসতি থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এই পদক্ষেপটি রাশিয়ার সম্ভাব্য পাল্টা হামলার আশঙ্কায় নেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, ইউক্রেন গত বছরের আগস্টে কুরস্ক অঞ্চলে একটি চমকপ্রদ অভিযান চালিয়ে কিছু এলাকা নিয়ন্ত্রণে নেয়। তবে, রাশিয়া পরে দাবি করে যে তারা পুরো অঞ্চলটি পুনরুদ্ধার করেছে। যদিও ইউক্রেন দাবি করছে, তাদের সেনাবাহিনী এখনো কুরস্ক অঞ্চলে সক্রিয় রয়েছে।

 

ট্যাগস :

ভয়াবহ ড্রোন হামলার কবলে মস্কো, চার বিমানবন্দর বন্ধ

আপডেট সময় : ০৯:০৫:১৮ পূর্বাহ্ণ, মঙ্গলবার, ৬ মে ২০২৫

চলমান উত্তেজনার মধ্যেই রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে ড্রোন দিয়ে ভয়াবহ আক্রমণ চালিয়েছে ইউক্রেন। এনিয়ে টানা দ্বিতীয় রাত ইউক্রেনের ড্রোন হামলার মুখে পড়ল শহরটি। এদিকে সর্বশেষ হামলার পর মস্কোর চারটি বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া বেশকিছু ইউক্রেনীয় ড্রোন ভূপাতিত করার দাবিও করেছে রাশিয়া। আজ মঙ্গলবার (৬ মে) প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে তথ্যটি নিশ্চিত করেছে ব্রিটিশ মিডিয়া বিবিসি।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটি বলছে, টানা দ্বিতীয় রাত ইউক্রেনের ড্রোন হামলার মুখে পড়েছে রাশিয়ার রাজধানী মস্কো।

এ দিকে রাশিয়ার বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রক সংস্থা রোসাভিয়াটসিয়া জানিয়েছে, নিরাপত্তার স্বার্থে মস্কোর চারটি প্রধান বিমানবন্দর—ভনুকোভো, দোমোদেদোভো, শেরেমেতিয়েভো এবং ঝুকোভস্কি—অস্থায়ীভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।

মস্কোর মেয়র সের্গেই সোবিয়ানিন জানিয়েছেন, শহরের বিভিন্ন দিক থেকে আসা অন্তত ১৯টি ইউক্রেনীয় ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে। তবে, কিছু ড্রোনের ধ্বংসাবশেষ শহরের একটি প্রধান মহাসড়কে পড়েছে, যদিও এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

ইউক্রেন অবশ্য এখনো মস্কোতে এই হামলার প্রতিবেদনের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

এ দিকে রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলের রিলস্ক শহরে ইউক্রেনের হামলায় একটি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রুশ কর্মকর্তারা বলছেন, ভয়াবহ এই হামলায় দুই কিশোর আহত হয়েছে এবং শহরের কিছু অংশে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়েছে।

ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর দাবি, তারা কুরস্ক অঞ্চলের তিওতকিনো গ্রামের কাছে রাশিয়ার একটি ড্রোন কমান্ড ইউনিটে সফলভাবে হামলা চালিয়েছে। এই অভিযানে রুশ বাহিনীর উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ইউক্রেন দাবি করেছে।

রাশিয়ার সামরিক ব্লগাররা জানিয়েছেন, ইউক্রেনীয় বাহিনী সীমান্ত অতিক্রম করে কুরস্ক অঞ্চলে প্রবেশের চেষ্টা করেছে। তারা মাইনফিল্ড অতিক্রম করে সাঁজোয়া যান নিয়ে রুশ প্রতিরক্ষা অবস্থানে হামলা চালিয়েছে। এই সময় রুশ বাহিনী ব্রিজ উড়িয়ে দিয়ে ইউক্রেনীয় বাহিনীকে প্রতিহত করার চেষ্টা করে।

এই হামলার পর, ইউক্রেনের সীমান্তবর্তী সুমি অঞ্চলের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ দুটি বসতি থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এই পদক্ষেপটি রাশিয়ার সম্ভাব্য পাল্টা হামলার আশঙ্কায় নেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, ইউক্রেন গত বছরের আগস্টে কুরস্ক অঞ্চলে একটি চমকপ্রদ অভিযান চালিয়ে কিছু এলাকা নিয়ন্ত্রণে নেয়। তবে, রাশিয়া পরে দাবি করে যে তারা পুরো অঞ্চলটি পুনরুদ্ধার করেছে। যদিও ইউক্রেন দাবি করছে, তাদের সেনাবাহিনী এখনো কুরস্ক অঞ্চলে সক্রিয় রয়েছে।