চুয়াডাঙ্গার সরোজগঞ্জ বাজারের মুক্তমঞ্চে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে আলোচনা সভা ও দোয়ার অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে সরোজগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ীদের উদ্যোগে এর আয়োজন করা হয়। মাসুম বিল্লাহ’র সভাপতিত্বে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মাগুরা জেলা জামায়াতে ইসলামীর সাবেক জেলা আমির ও কেন্দ্রীয় নেতা যশোর, কুষ্টিয়া অঞ্চলের টিম সদস্য আব্দুল মতিন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুল মতিন বলেন, ‘দেশের শত্রুরা দুইবারের সাবেক সংসদ সদস্য মাওলানা দেলোওয়ার হোসেন সাঈদী সাহেবকে মিথ্যা মামলায় ১৩ বছর জেলে রেখে চিকিৎসার নামে বাইরে এনে ইনজেকশনের মাধ্যমে হত্যা করে। জামায়াতের সাবেক কেন্দ্রীয় আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী ও সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদসহ কে›ন্দ্রীয় নেতাদের ফাঁসি দেওয়া হয়। অসংখ্য নেতাদের ক্রসফায়ার দিয়ে হত্যা করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, অসংখ্য নেতা-কর্মীদের পায়ে গুলি করে পঙ্গু করে দেয়া হয়েছে। জেনারেল আজমীসহ অসংখ্য বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের আইনা ঘরে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়েছে। তাদের নামাজের সময়ও জানানো হয়নি। তাদের পঁচা খাবার খাওয়ানো হয়েছে। এখন সময় এসেবে সবকিছুর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার। এই স্বাধীন দেশের প্রতিটি মানুষের স্বাধীনতা অক্ষুণ্ন রাখার জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
আশিক মাহবুবের সঞ্চালনায় সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির রুহুল আমিন। তিনি বলেন, জামায়াত মানুষের ভাতের অধিকার, ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে চাই। বিগত সরকার দেশের মানুষের ওপর এমন জুলুম করেছে যে, এই জুলুমের কারণে কোনো সাধারণ জনগণ তাদের বিরুদ্ধে মামলাও করতে পারেনি। ছাত্র-জনতার বিপ্লবে স্বৈরাচার সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশ থেকে পালিয়েছে। এমনকি ৩০০ সংসদ সদস্য বিভিন্ন অপরাধের কারণে সবাই আত্মগোপনে চলে গেছে।
তিনি বলেন, ৫২ বছরে আমরা অনেক জ্ঞান অর্জন করেছি, কিন্তু একজন প্রকৌশলী যখন রোডের পরিবর্তে বাঁশ দিয়ে ঢালাই দেয়, তখন তার জ্ঞান কোনো কাজে আসে না, একজন চিকিৎসক যখন বিনা কারণে রোগীকে টেস্ট করান, তখন তার জ্ঞান কাজে আসে না, একজন পুলিশ যখন বিনা কারণে ইয়াবা দিয়ে একজন ভালো মানুষকে থানায় চালান দেয়, তখন তার জ্ঞান কোনো কাজে না। আমরা সবকিছুর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা তথা এ দেশেকে নতুন করে গড়ে তুলতে চাই। যেখানে দুর্নীতির কোন ঠাই হবে না।’ সদর উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে ও ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্টস অ্যন্ড বিজনেস ওয়েলফেয়াল ফাউন্ডেশনের আয়োজনে এ সমাবেশ শেষে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা শুরা ও কর্মপরিষদ সদস্য অ্যাড. মসলেম উদ্দীন, জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি আব্দুল কাদের ও সদর উপজেলা আমির বিলাল হোসেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নায়েবে আমির আব্দুল কাদের মল্লিক, উপজেলা সেক্রেটারি আব্দুল জব্বার, উপজেলা শুরা সদস্য ছানোয়ার হোসেন, উপজেলা প্রচার সম্পাদক গোলাম রসুল, কুতুবপুর ইউনিয়ন আমীর খবির উদ্দিন ও আবু উবাইদা প্রমুখ।
সভা ও দোয়া অনুষ্ঠান বাস্তবায়নের সহযোগিতা করেন আমিরুল ইসলাম শফি, আলহাজ্ব মহরম হোসেন মুন্সী, নুর আলম, মোস্তাফিজুর রহমান, মামুন হাওলাদার, তারিফুল শেখ, আনোয়ার হোসেন, মোহাম্মদ আব্দুর রহমান প্রমুখ।