নিউজ ডেস্ক:
ম্যাচের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়েন, হাল ছাড়েন না। সতীর্থদের অনুপ্রেরণাও দিতে জানেন। ম্যাচের কঠিন পরিস্থিতিতেও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর ব্যাক্তিত্ব ও মানসিকতা দেখে ইস্পাতের মতো দৃঢ় বলেই মনে হয়। সেই রোনালদোকেও কাঁদিয়ে ছেড়েছিলেন হোসে মরিনহো। এমনই ঝাঁজ এই পর্তুগিজ কোচের!
অবিশ্বাস্য ঠেকতে পারে। হাজার হলেও শুধু রিয়াল মাদ্রিদেই দেখা হয়েছিল এ দুজনের। আর রিয়ালে আসার আগেই রোনালদো মহাতারকা। একবার ব্যালন ডি’অর জেতা হয়ে গেছে। দলবদলের সে সময়ের বিশ্ব রেকর্ড গড়েই তাঁকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে এনেছেন রিয়াল সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ। দলের সবচেয়ে দামি খেলোয়াড়ের মতের বাইরে কিছু করারা আগে দুবার ভাবেন ক্লাব সভাপতি। সেই রোনালদোকে কাঁদাতে পারেন কোচ?
এমন কথাই জানা গেল লুকা মদরিচের সুবাদে। ক্রোয়েশিয়ান এই ব্যালন ডি’অর জয়ী আত্মজীবনী বের করছেন। ‘ইন মাই ওয়ে’ নামের সেই আত্মজীবনী এখনো সবার কাছে পৌছায়নি। তবে ইতালির করিয়েরে দেল্লো স্পোর্তের সুবাদে এই বইয়ের কিছু অংশ মানুষের কাছে পৌছে গেছে। সেখানেই জানা গেল রোনালদো ও মরিনহোর মধ্যকার এই ঘটনার কথা।
২০১৩ সালে রিয়ালে নিজের শেষ মৌসুম কাটিয়েছেন মরিনহো। মদরিচের তখন রিয়ালে দ্বিতীয় বছর চলছে। আগের মৌসুমে বার্সার আধিপত্যের অবসান ঘটিয়ে রিয়ালকে লিগ জেতালেও ক্লাবে নিজের তৃতীয় সে মৌসুমে বেশ কজন খেলোয়াড়ের সঙ্গে খিটিমিটি লেগে যায় মরিনহোর। সে মৌসুমেরই কোপা দেল রে-র এক ম্যাচের ঘটনা উল্লেখ করেছেন মদরিচ, ‘আমি হোসের (মরিনহো) আচরণ দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। কোপা দেল রে-তে আমরা ২-০তে জিতছিলাম, এই সময় একটা থ্রো ইনে প্রতিপক্ষকে তাড়া করেনি রোনালদো। হোসে ওর ওপর ক্ষেপে ওঠে। মাঠে বেশ বড় একটা সময় দুজনে তর্ক করেছে। বিরতিতে যখন লকার রুমে এলাম সবাই, তখন দেখি রোনালদোর চোখে প্রায় পানি এসে পড়েছে।’
ঘটনার সেখানেই শেষ নয়। কোচের আচরণে রোনালদোর মতো খেলোয়াড়ও ভেঙে পড়েছিলেন। মদরিচ বইয়ে লিখেছেন, ‘রোনালদো বলল, “আমি সেরাটা দিই তবু তিনি আমার সমালোচনা করেই চলেছেন।” মরিনহো এসেই আবার ওর (রোনালদো) সমালোচনা শুরু করল। এবং মাঠে ওর দায়িত্ব পালন না করা নিয়ে দোষারোপ করতে লাগলেন। এমন অবস্থা হয়েছিল যে অন্যরা এসে না থামালে মারামারি বেধে যেত দুজনের।’
রিয়ালে তিন বছরে বেশ সফল সময়ই কাটিয়েছেন মরিনহো। কিন্তু শেষ মৌসুমে কিছু জেতা হয়নি তাঁর। আর দলের খেলোয়ারদের সঙ্গে সম্পর্কের এতটাই অবনতি হয়েছিল যে পেরেজের অনিচ্ছা স্বত্ত্বেও রিয়াল ছেড়ে চেলসিতে গিয়েছিলেন।