শিরোনাম :
Logo সাতক্ষীরায় বিজিবির বিশেষ অভিযান: ৮ লাখ টাকার ভারতীয় মালামাল জব্দ Logo রাবিতে পোষ্য কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে বিক্ষোভ Logo খুবিতে গনিত ক্লাবের যাত্রা: দায়িত্ব পেয়েছে পরমা-পলাশ Logo খুবিতে ‘মাইন্ড ওভার ম্যাথ’ শীর্ষক আলোচনা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান Logo  অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সিরাজগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের তীব্র নিন্দা Logo কচুয়ায় দাড়িপাল্লার গণজোয়ার: জামায়াতে ইসলামী প্রার্থীর গণসংযোগে মানুষের ঢল Logo জননেতা ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও রুমানা মাহমুদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের নিন্দা জেলা বিএনপির নেতার Logo জমকালো আয়োজনে ইবিতে নবীন বরণ  Logo ফরাজীকান্দি ইউনিয়নে গোলাপ ফুলের সমর্থনে জাকের পার্টির জনসভা Logo গাইবান্ধায় মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা কমিটি বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন বিএনপির একাংশের নেতাকর্মীরা

মাথার টুপি’র সূত্র ধরে কৃষক হত্যার আসামি ধরল ডিবি পুলিশ

  • rahul raj
  • আপডেট সময় : ০৮:০৮:৪৮ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ৪ জুন ২০২০
  • ৭৫৮ বার পড়া হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহঃ
ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলায় কৃষক নুর ইসলাম ওরফে বুড়োকে কুপিয়ে হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পাশের জমির পানবরজে পড়ে থাকা হত্যাকারীদের একজনের ব্যবহার করা মাথার টুপি’র (ক্যাপ) সূত্র ধরে ক্লুলেস এ হত্যার রহস্য উদঘাটন করা হয়। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরমধ্যে দুইজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। গ্রেফতাররা হলেন-বরিশখালী গ্রামের মৃত মুছা মোল্লার ছেলে মতিচুর রহমান, একই গ্রামের কোরবান আলীর ছেলে জিনারুল ইসলাম, সাবার মোল্লার ছেলে শামীম হোসেন। এদের মধ্যে মতিচুর জামিনে মুক্ত হয়ে পলাতক রয়েছেন। জানা যায়, গত বছরের ৫ মে বিকেলে হরিণাকুন্ডু উপজেলার দখলপুর গ্রামের বেলেমাঠ থেকে কৃষক নুর ইসলাম ওরফে বুড়ো’র ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওইদিনই নিহতের ভাই আজিজুল ইসলাম বাদী হয়ে হরিণাকুন্ডু থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন। পরে হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও মূল ঘটনা জানতে তদন্তে নামে থানা পুলিশ। একজনকে গ্রেফতার করা হলেও মূল ঘটনা আড়ালেই থেকে যায়। পরবর্তীতে গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর আদালত মামলা ডিবিতে হস্তান্তর করে। ঝিনাইদহ ডিবি পুলিশের ওসি আনোয়ার হোসেন’র নেতৃত্বে মামলার তদন্ত শুরু করে পুলিশ পরিদর্শক নজরুল ইসলাম। ঘটনার বিষয়ে পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান জানান, হত্যার ২-৩ দিন আগে কৃষক নুর ইসলাম ওরফে বুড়ো তার পান বরজের জমির আইল কাটছিল। পাশের জমির মালিক একই গ্রামের মতিচুর রহমান জমির আইল কাটতে বাঁধা দেয়। এ নিয়ে বুড়ো ও মতিচুরের বাক-বিতণ্ডা হয়। হত্যার দু’দিন আগে সন্ধ্যায় মতিচুর বরিশখালী বাজারের একটি চায়ের দোকানে আসামিদের নিয়ে বুড়োকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা মোতাবেক ঘটনার দিন ৫ মে বুড়ো নিজ পান বরজে কাজ করার সময় হত্যাকারীরা ঘটনাস্থলে যায়। কিলিং মিশনে অংশ নেয় ছয়জন। প্রথমে বুড়োকে চড়-থাপ্পড় মারলে সে পড়ে যায়। সেখান থেকে দৌড়ে পাশের পানবরজে গেলে সেখানে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করে। এরপর আসামিরা যার যার মত চলে যায়। হত্যার পর জিনারুল ইসলাম পাশেই তার নিজের পানবরজে যায়। সেখানে জিনারুল তার মাথায় থাকা রক্তমাখা ক্যাপ (টুপি) ভুল করে ফেলে রেখে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আলামত হিসেবে ক্যাপটি উদ্ধার করে। মামলার দায়িত্ব পাওয়ার পর ডিবি পুলিশের ওসি আনোয়ার হোসেন’র নেতৃত্বে পুলিশ পরিদর্শক নজরুল ইসলাম ক্যাপ’র মালিককে খোঁজা শুরু করে। স্থানীয় ও গ্রামবাসী ক্যাপটি জিনারুলের বলে শনাক্ত করলে জিনারুলকে গ্রেফতারে অভিযান শুরু করে। এদিকে হত্যার পর থেকে জিনারুল ঢাকার সাভার ও আশুলিয়া এলাকায় আত্মগোপনে থাকে। মোবাইল ট্রাকিংয়ের মাধ্যমে তার অবস্থান শনাক্ত করা হয়। পরে ঢাকা থেকে জিনারুলকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় ডিবি। ঝিনাইদহে আনার পর, পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান, ডিবি ওসি আনোয়ার হোসেন ও পুলিশ পরিদর্শক নজরুল ইসলাম’র দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে হত্যার কথা স্বীকার করে। পরে গত ৩১ মে আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী দেন। তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক শামীম হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। শামীমও সোমবার আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী দিয়েছেন। পুলিশ সুপার বলেন, এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বাকি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। দ্রুতই তাদের গ্রেফতার করা হবে। এদিকে ক্লু-লেস এই হত্যার রহস্য উদঘাটন করায় ডিবি পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন নিহতের পরিবার ও স্বজনরা।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

সাতক্ষীরায় বিজিবির বিশেষ অভিযান: ৮ লাখ টাকার ভারতীয় মালামাল জব্দ

মাথার টুপি’র সূত্র ধরে কৃষক হত্যার আসামি ধরল ডিবি পুলিশ

আপডেট সময় : ০৮:০৮:৪৮ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ৪ জুন ২০২০

স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহঃ
ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলায় কৃষক নুর ইসলাম ওরফে বুড়োকে কুপিয়ে হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পাশের জমির পানবরজে পড়ে থাকা হত্যাকারীদের একজনের ব্যবহার করা মাথার টুপি’র (ক্যাপ) সূত্র ধরে ক্লুলেস এ হত্যার রহস্য উদঘাটন করা হয়। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরমধ্যে দুইজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। গ্রেফতাররা হলেন-বরিশখালী গ্রামের মৃত মুছা মোল্লার ছেলে মতিচুর রহমান, একই গ্রামের কোরবান আলীর ছেলে জিনারুল ইসলাম, সাবার মোল্লার ছেলে শামীম হোসেন। এদের মধ্যে মতিচুর জামিনে মুক্ত হয়ে পলাতক রয়েছেন। জানা যায়, গত বছরের ৫ মে বিকেলে হরিণাকুন্ডু উপজেলার দখলপুর গ্রামের বেলেমাঠ থেকে কৃষক নুর ইসলাম ওরফে বুড়ো’র ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওইদিনই নিহতের ভাই আজিজুল ইসলাম বাদী হয়ে হরিণাকুন্ডু থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন। পরে হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও মূল ঘটনা জানতে তদন্তে নামে থানা পুলিশ। একজনকে গ্রেফতার করা হলেও মূল ঘটনা আড়ালেই থেকে যায়। পরবর্তীতে গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর আদালত মামলা ডিবিতে হস্তান্তর করে। ঝিনাইদহ ডিবি পুলিশের ওসি আনোয়ার হোসেন’র নেতৃত্বে মামলার তদন্ত শুরু করে পুলিশ পরিদর্শক নজরুল ইসলাম। ঘটনার বিষয়ে পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান জানান, হত্যার ২-৩ দিন আগে কৃষক নুর ইসলাম ওরফে বুড়ো তার পান বরজের জমির আইল কাটছিল। পাশের জমির মালিক একই গ্রামের মতিচুর রহমান জমির আইল কাটতে বাঁধা দেয়। এ নিয়ে বুড়ো ও মতিচুরের বাক-বিতণ্ডা হয়। হত্যার দু’দিন আগে সন্ধ্যায় মতিচুর বরিশখালী বাজারের একটি চায়ের দোকানে আসামিদের নিয়ে বুড়োকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা মোতাবেক ঘটনার দিন ৫ মে বুড়ো নিজ পান বরজে কাজ করার সময় হত্যাকারীরা ঘটনাস্থলে যায়। কিলিং মিশনে অংশ নেয় ছয়জন। প্রথমে বুড়োকে চড়-থাপ্পড় মারলে সে পড়ে যায়। সেখান থেকে দৌড়ে পাশের পানবরজে গেলে সেখানে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করে। এরপর আসামিরা যার যার মত চলে যায়। হত্যার পর জিনারুল ইসলাম পাশেই তার নিজের পানবরজে যায়। সেখানে জিনারুল তার মাথায় থাকা রক্তমাখা ক্যাপ (টুপি) ভুল করে ফেলে রেখে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আলামত হিসেবে ক্যাপটি উদ্ধার করে। মামলার দায়িত্ব পাওয়ার পর ডিবি পুলিশের ওসি আনোয়ার হোসেন’র নেতৃত্বে পুলিশ পরিদর্শক নজরুল ইসলাম ক্যাপ’র মালিককে খোঁজা শুরু করে। স্থানীয় ও গ্রামবাসী ক্যাপটি জিনারুলের বলে শনাক্ত করলে জিনারুলকে গ্রেফতারে অভিযান শুরু করে। এদিকে হত্যার পর থেকে জিনারুল ঢাকার সাভার ও আশুলিয়া এলাকায় আত্মগোপনে থাকে। মোবাইল ট্রাকিংয়ের মাধ্যমে তার অবস্থান শনাক্ত করা হয়। পরে ঢাকা থেকে জিনারুলকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় ডিবি। ঝিনাইদহে আনার পর, পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান, ডিবি ওসি আনোয়ার হোসেন ও পুলিশ পরিদর্শক নজরুল ইসলাম’র দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে হত্যার কথা স্বীকার করে। পরে গত ৩১ মে আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী দেন। তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক শামীম হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। শামীমও সোমবার আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী দিয়েছেন। পুলিশ সুপার বলেন, এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বাকি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। দ্রুতই তাদের গ্রেফতার করা হবে। এদিকে ক্লু-লেস এই হত্যার রহস্য উদঘাটন করায় ডিবি পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন নিহতের পরিবার ও স্বজনরা।