শ্রীলংকাকে বিদায় দিয়ে বাংলাদেশকে নিয়ে শেষ চারে আফগানিস্তান !
প্রকাশের সময় :
মঙ্গলবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
নিউজ ডেস্ক:
এশিয়া কাপ ক্রিকেটের ১৪তম আসরের তৃতীয় ম্যাচে শ্রীলংকাকে ৯১ রানের ব্যবধানে হারিয়েছে আফগানিস্তান। ফলে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিলো লংকানরা। তাই ‘বি’ গ্রুপ থেকে বাংলাদেশকে নিয়ে এবারের আসরের শেষ চার নিশ্চিত করলো আফগানিস্তান। এ ম্যাচে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে ৫০ ওভারে সব ক’টি উইকেট হারিয়ে ২৪৯ রান সংগ্রহ করে আফগানিস্তান। জবাবে ১৫৮ রানেই অলআউট হয়ে যায় শ্রীলংকা।
দুবাইয়ে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৭০ বল মোকাবেলায় ৫৭ রানের জুটি এনে দেন দুই ওপেনার মোহাম্মদ শেহজাদ ও এনসানউল্লাহ। অফ-স্পিনার আকিলা ধনঞ্জয়ার শিকার হয়ে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪৭ বলে ৩৪ রান করেন শেহজাদ।
আরেক ওপেনার এহসানউল্লাহও শিকার হন ধনঞ্জয়ার। তবে সেটি আফগানিস্তানের দলীয় স্কোর ১০৭ রানে। দেখেশুনে খেলে ৬টি চারে ৬৫ বলে ৪৫ রান করেন এহসানউল্লাহ। তবে আউট হওয়ার আগে দ্বিতীয় উইকেটে রহমত শাহ’র সাথে ৫০ রান যোগ করেন এহসানউল্লাহ।
২৫তম ওভারের চতুর্থ বলে এহসানউল্লাহর বিদায়ে ক্রিজে যোগ দেন অধিনায়ক আসগর আফগান। কিন্তু ৫ বলের বেশি খেলতে পারেননি আফগান দলপতি। মাত্র ১ রান করে অফ-স্পিনার সেহান জয়সুরিয়ার শিকার হন আসগর।
১১০ রানে তৃতীয় উইকেট হারানোর পর বড় জুটির প্রত্যাশায় ছিলো আফগানিস্তান। সেই প্রত্যাশা পূরণ করে শ্রীলংকার বোলারদের ওপড় চাপ সৃস্টি করে রহমত ও হাসমতউল্লাহ শাহিদি দলীয় রান ২শর কাছাকাছি নিয়ে যান তারা। এরমধ্যে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১২তম হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন রহমত। হাফ-সেঞ্চুরি তুলেও নিজের স্কোরটা বড় করছিলেন তিনি। কিন্তু ৭২ রানে গিয়ে থামতে হয় তাকে। পেসার দুসমন্ত চামিরার প্রথম শিকার হন রহমত। ৯০ বলের ইনিংসে ৫টি চার মারেন তিনি।
রহমতের বিদায়ের কিছুক্ষণ পর বিদায় নেন শাহিদিও। ২টি চারে ৫২ বলে ৩৭ রান করেন তিনি। রহমত-শাহিদি চতুর্থ উইকেটে ৯১ বলে ৮০ রান যোগ করেন।
দলীয় ২০৩ রানে ও ৪৫তম ওভারে শাহিদির বিদায়ের পর দলের স্কোর দ্রুত বাড়ানোর চেষ্টা করেন সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ নবী ও নাজিবুল্লাহ জাদরান। কিন্তু ছোট ছোট ইনিংস খেলে থামেন তারা। নবী ১২ বলে ১৫ ও জাদরান ১৪ বলে ১২ রান করেন।
এরপর শেষেরদিকে রশিদ খান ৬ বলে ১৩ রান যোগ করেন। ফলে আড়াইশ রানের কোটা পেরিয়ে যাবার পথ পায় আফগানিস্তান। কিন্তু ডেথ ওভারে চার উইকেট নিয়ে আফগানিস্তানকে ২৪৯ রানেই গুটিয়ে দেন শ্রীলংকার মিডিয়াম পেসার থিসারা পেরেরা। ইনিংস শেষে তার বোলিং ফিগার ৯ ওভারে ৫৫ রানে ৫ উইকেট। ১৪০ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে চতুর্থবারের মত পাঁচ বা ততোধিক উইকেট নিলেন পেরেরা। বাংলাদেশের বিপক্ষে ২৩ রানে ৪ উইকেট নেয়া আরেক পেসার লাসিথ মালিঙ্গা এ ম্যাচে সুবিধা করতে পারেননি। ১০ ওভারে ৬৬ রানে ১ উইকেট নেন তিনি। অবশ্য তার বলে দু’বার ক্যাচ ছেড়েছেন শ্রীলংকার ফিল্ডাররা।
জয়ের জন্য ২৫০ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই উইকেট হারায় শ্রীলংকা। স্পিনার মুজিব উর রহমানের বলে শুন্য হাতে আউট হন ওপেনার কুশল মেন্ডিস।
এরপর দলের হাল ধরেন আরেক ওপেনার উপুল থারাঙ্গা ও ডি সিলভা। দু’জনের ব্যাটিং দৃঢ়তায় ৫৪ রান পায় দল। থারাঙ্গার সাথে ভুল বুঝাবুঝিতে রান আউটের ফাঁেদ পড়ে ২৩ রানে থেমে যান ডি সিলভা।
ডসলভা আউট হলে চার নম্বরে ব্যাট হাতে বড় ইনিংস খেলতে ব্যর্থ হন কুশল পেরেরাও। মাত্র ১৭ রান করে আফগানিস্তানের সেরা স্পিনার রশিদ খানের প্রথম শিকার হন তিনি। পেরেরা ফিরে যাবার তিন বল পর প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন থারাঙ্গাও। ধীরলয়ে খেলে ৩টি চারে ৬৪ বলে ৩৬ রান করে আউট হন তিনি।
৮৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ে শ্রীলংকা। চাপের মধ্যে থেকে বের হয়ে আসার পথ খুঁেজ তারা। কিন্তু দলকে চাপের মুখ থেকে রক্ষা করতে পারেননি শ্রীলংকার মিডল-অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যান অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ, শেহান জয়সুরিয়া ও থিসারা পেরেরা। তিনজই ছোট ছোট ইনিংস খেলে বিদায় নেন। ম্যাথুজ ২২, জয়সুরিয়া ১৪ ও পেরেরা ২৮ রানে থামেন।
স্বীকৃত ব্যাটসম্যানদের বিদায়ের পর শেষের দিকে আরও কোন ব্যাটসম্যানই বেশিক্ষণ উইকেটে টিকে থাকতে পারেননি। ফলে ৪১ দশমিক ২ ওভারে ১৫৮ রানে গুটিয়ে যায় শ্রীলংকা। আফগানিস্তানের পক্ষে মুজিব, নাইব, নবী ও রশিদ ২টি করে উইকেট নেন। ম্যাচের সেরা হয়েছেন আফগানের রহমত শাহ।
‘বি’ গ্রুপে এটি ছিলো শ্রীলংকার দ্বিতীয় ম্যাচ। নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের কাছে ১৩৭ রানে হেরেছিলো লংকানরা। অন্যদিকে টুর্নামেন্টে এটি প্রথম ম্যাচ ছিলো আফগানিস্তানের।
আগামী ২০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের মুখোমুখি হবে আফগানিস্তান।