নিউজ ডেস্ক:
হ্যারি কেনকে ভয় পাচ্ছে না ক্রোয়েশিয়া। তাদের কোচ জ্লাটকো দালিচ বললেন, ‘‘হ্যারি কেন সব চেয়ে বেশি গোল করেছে। ওকে আটকানো কঠিন। কিন্তু আমাদেরও দারুণ সেন্টার ব্যাকরা রয়েছে। আমরা মেসিকে (লিয়োনেল) আটকেছি। আটকেছি ডেনমার্কের এরিকেসেনকেও (ক্রিশ্চিয়ান)। আশা করি কেনকেও আটকাব।’’
দালিচের ক্রোয়েশিয়া বুধবার বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল খেলবে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে। এই কোচ হুঙ্কার দিচ্ছেন, ‘‘আমাদের নিজেদের শক্তির উপর পুরো আস্থা আছে। ইংল্যান্ডকে ভয় পাই না।’’ তা হলে কি এই ইংল্যান্ড আদৌ ভাল দল না? দালিচের জবাব, ‘‘এক বারও বলছি না এমন কথা। ভাল না হলে সেমিফাইনালে উঠত না।’’
এখানেই থামেননি ক্রোয়েশিয়ার কোচ, ‘‘ওদের যেটুকু খেলা দেখেছি তাতে বুঝেছি ওরা খুব দ্রুত ডাইরেক্ট ফুটবল খেলে। সেটপিসেও ভাল। কর্নার পেলে ওদের লম্বা ফুটবলাররা যে কোনও সময় হেডে গোল করে যেতে পারে। এগুলো মাথায় রেখেই আমাদের খেলতে হবে।’’
হ্যারি কেন ছাড়াও দালিচ আলাদা করে প্রশংসা করেছেন রাহিম স্টার্লিংয়ের। বিশেষ করে যে গতিতে স্টার্লিং ছোটেন তার সঙ্গে ডিফেন্ডারদের পেরে ওঠা কঠিন বলে তিনি মনে করেন। যদিও দালিচ ফাইনালে ওঠার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী। তাঁর কথা, ‘‘বিশ্বকাপে আমাদের আগের সব নজির ছাপিয়ে যেতে চাই।’’
ক্রোয়েশিয়ার জন্য ভাল খবর, তাদের ডিফেন্ডার দোমাগজ ভিদা ফিফার শাস্তির হাত থেকে বেঁচে গেলেন। রাশিয়াকে হারিয়ে উঠে ভিদা অনলাইন ভিডিয়োয় বলেছিলেন, ‘এটা ইউক্রেনের গৌরব’। ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার খারাপ সম্পর্কের কথা সুবিদিত। অনেকে ভেবেছিলেন, ফুটবলে রাজনীতি টেনে আনায় ভিদাকে শাস্তি দেবে ফিফা। তাঁর সেমিফাইনালও খেলা হবে না। ততটা অবশ্য হয়নি। তাঁকে শুধু সতর্ক করা হয়েছে। ভিদা অবশ্য নিজের ভুল স্বীকার করে বলছেন, ‘‘একটু মজা করে ফেলেছিলাম। এই জয় ইউক্রেনের নয়, ক্রোয়েশিয়ার।’’
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভিদার খেলা নিশ্চিত হলেও চোটের জন্য ছিটকে গেলেন তাঁদের রক্ষণের প্রধান ভরসা জিমে ভ্রাসাল্কো। দালিচ স্বীকার করেছেন, আতলেতিকো দে মাদ্রিদের এই ডিফেন্ডারের না থাকাটা তাঁদের কাছে ধাক্কা। পাশাপাশি ইংল্যান্ডের কিন্তু চোট আঘাতের তেমন সমস্যা নেই। এমনকি সুইডেন ম্যাচে চোট পাওয়া জর্ডান হেন্ডারসনও সুস্থ হচ্ছেন। ইংল্যান্ড শিবির থেকে জানানো হয়েছে, ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে তাঁর খেলা আটকাবে না। আরও খবর হল, সেমিফাইনালে গ্যারেথ সাউথগেট দল সাজাবেন ৩-৫-২ ছকে।
এমনিতে বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে ওঠার উত্তেজনা এখনও ছুঁয়ে আছে ইংল্যান্ডকে। মাঝেমাঝেই দেখা যাচ্ছে সে দেশের ছোট ছোট শহরেও জাতীয় পতাকা নিয়ে মানুষ মিছিল করছেন হ্যারি কেনদের নামে জয়ধ্বনি দিতে দিতে। আপ্লুত প্রাক্তনরাও। ইংল্যান্ড শেষ বার বিশ্বকাপ জিতেছিল ১৯৬৬ সালে। সেই দলে ছিলেন জেফ হার্স্ট। তিনি বলেছেন, ‘‘আমরা নিজের দেশে বিশ্বকাপ জিতেছিলাম। এ বারের দলটা কাপ জিতলে সেটা পাবে বিদেশের মাটিতে। সে ক্ষেত্রে এ বারের দলের কৃতিত্বকে আমি অনেক বেশি নম্বর দেব।’’
প্রায় হার্স্টের সুরে সুর মিলিয়েছেন আল্যান শিয়েরারও। তাঁর কথা, ‘‘বিশ্বকাপের আগে আমাদের নিয়ে এক দল লোক হাসাহাসি করেছিল। আমি এখন তাদের খুঁজছি। মোক্ষম জবাবটা হবে ১৫ জুলাই হ্যারি কেনরা কাপটা হাতে ধরলে।’’
হ্যারি কেন নিজেও চান, বিদেশে প্রথম বার বিশ্বকাপ জিতে ছেষট্টির দলকে ছাপিয়ে যেতে। তাঁর কথা, ‘‘সবাইকে মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে। বিশ্বকাপটা নিয়ে যেতে চাই।’’ সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘‘ছেষট্টির ইংল্যান্ডের মতো খেলতে চাই। বিদেশে জিতলে ওদের চেয়েও এগিয়ে যাব। তবে এটা বললাম বলে ভাববেন না, ওদের সম্মান করি না। ছোটবেলা থেকে ওদের গল্প শুনেই তো বড় হয়েছি। ওই দলটাই আমাদের অনুপ্রেরণা।’’