শিরোনাম :
Logo বীরগঞ্জে রাস্তার গাছ কাটা ও চাঁদা দাবীর অপরাধে এনসিপি নেতা ও সাবেক ইউপি সদস্য সহ ১০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা Logo শেষবিদায় দিলেন মেয়ের কফিনে চুমু দিয়ে Logo বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের ছয়টি দাবির প্রত্যেকটিই যৌক্তিক বলে মনে করে সরকার Logo আজ এইচএসসি ও সমমানের সকল পরীক্ষা স্থগিত Logo কয়রায় নবনিযুক্ত ইউএনও মোঃ আব্দুল্লাহ আল বাকীর সাথে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের সৌজন্য সাক্ষাৎ Logo মাইলস্টোন ট্র্যাজেডির সত্য উদঘাটন ও পরীক্ষা স্থগিতের প্রতিবাদে চুয়াডাঙ্গায় অবস্থান কর্মসূচি Logo শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে সাচার উচ্চ বিদ্যালয়ে অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত Logo উত্তরায় বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় রাবির শিক্ষক ফোরামের শোক প্রকাশ Logo কুবিতে অনুষ্ঠিত হলো ‘অ্যাপেক্স, জ্যোতির্বিজ্ঞান অলিম্পিয়াড ২০২৫’ এর প্রথম পর্যায়ের পরীক্ষা Logo জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহিদদের স্মরণে কুবির বিজয় ২৪ হলের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি

আপনি জানেন কি ? ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনা কে নিয়ে এত দ্বন্দ্ব !

  • আপডেট সময় : ০২:২৯:২৭ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ১৪ জুন ২০১৮
  • ৭৩৯ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

বিশ্বকাপে কাঁপছে বিশ্ব। ফুটবল উন্মাদনায় মেতেছে এই গ্রহ। আজ পর্দা উঠবে শতকোটি মানুষের আকাঙ্ক্ষার এই আয়োজনের। তবে বাংলাদেশে সব উন্মাদনা ছাপিয়ে প্রতিবছরই যে বিষয়টি আলোচনার শীর্ষে থাকে, তা হলো আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল। কিন্তু কেন?

বাংলাদেশে গত এক দশকে ক্রিকেটের সাফল্যে ফুটবলের প্রতি মানুষের আকর্ষণ কমেছে। তবে ফুটবলের প্রতি এখানকার মানুষের আগ্রহ কমতে থাকার সবচেয়ে বড় কারণ আন্তর্জাতিক ফুটবলে তেমন কোনো অর্জন না থাকা। কিন্তু তারপরও ফুটবলের প্রতি মানুষের ভালোবাসা যেন মনের কোণে একটা বিশেষ জায়গা দখল করে আছে। মাঝেমধ্যেই যার প্রমাণ মেলে। গ্রাম, পাড়া বা মহল্লাভিত্তিক ফুটবল খেলা হলেও দর্শকের ঢল নামে। আর বিশ্বকাপ ফুটবলের সময় এই আগ্রহ বেড়ে যায় বহুগুণ। ভালো লাগা থেকে তৈরি হয় উচ্ছ্বাস, উন্মাদনা।

তবে দুঃখের বিষয় হলো, বিশ্বকাপ ফুটবল নিয়ে এই আবেগ, উচ্ছ্বাস আর উন্মাদনা কখনো-সখনো নোংরামিতেও পরিণত হয়। বিশেষ করে আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল নিয়ে যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়, তা অনেক সময় বড় বড় শত্রুতার ঘটনাকেও হার মানায়। নিজ দেশেই যেন জাতি বড় দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। এই খেলাকে কেন্দ্র করে মারামারি, লাঞ্ছিত করা, এমনকি খুনোখুনি পর্যন্ত হয়। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আক্রমণাত্মক, কুরুচিপূর্ণ, অশ্লীল মন্তব্য তো আছেই।

ব্রাজিলের সমর্থকরা আর্জেন্টিনার পতাকাকে প্যান্ডেলের কাপড় আর আর্জেন্টিনার সমর্থকরা ব্রাজিলের পতাকাকে মলের রঙের সাথে তুলনা করেন। এসবের মধ্য দিয়ে তারা একে অন্যকে ছোট করতে গিয়ে নিজেরাই ছোট হন।

এক ভয়াবহ ঘটনা দেখেছি ২০১০ সালে। ব্রাজিল যখন কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডসের সাথে হেরে বিদায় নিল, তখন আর্জেন্টিনার সমর্থকরা আনন্দ মিছিল করছিল। এর মাঝে একজন ব্রাজিল সমর্থক এসে ভিড়ের মধ্যে দুই-তিনটা পটকা ছুড়ে মারে। শুরু হলো বন্ধুদের মধ্যে মারামারি, যা পরবর্তী সময়ে পারিবারিক পর্যায় পর্যন্ত গড়ায়। সেই যে বন্ধুত্ব নষ্ট হলো, এখনো সেই দ্বন্দ্ব রয়ে গেছে।

প্রশ্ন হলো, যারা ফুটবল বিশ্বকাপের সময় এমন আচরণ করেন, তারা কি আসলেই ফুটবলকে ভালোবাসেন? তারা কি জেনে-বুঝে এমনটি করেন? তারা কি বোঝেন না, এসবের মধ্য দিয়ে তারা নিজেদেরই ছোট করছেন? আমার ধারণা, বেশিরভাগ সমর্থকই তাদের নিজের পছন্দের দলের অধিকাংশ খেলোয়াড় সম্বন্ধেও জানেন না। এমনকি সব খেলোয়াড়ের নামও বলতে পারবেন না। আর একটি বিষয় হলো, আপনি যে দলকেই সমর্থন করুন না কেন, কোন খেলোয়াড় বা কোন টিম ভালো খেলল, তা নিয়ে আপনি বাজে মন্তব্য করতে পারেন না। অনেককেই দেখেছি নিজের পছন্দের সাথে মিল না থাকায় বিদ্বেষ থেকে মেসি, নেইমার, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর মতো খেলোয়াড়ের দক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। যারা এসব খেলোয়াড়ের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, তারা আসলে কতটা ফুটবলপ্রেমী বা খেলা বোঝেন, তা নিয়েও আমার সন্দেহ আছে।

আমার ব্যক্তিগত অভিমত হলো, এই মারামারি আর্জেন্টিনা বা ব্রাজিলের জন্য তারা করেন না। এই দ্বন্দ্ব নিজের পছন্দ বা ইচ্ছার বিষয়টিকে প্রধান্য দেয়ার জন্য। আমরা যেটিকে ‘ইগো’ বলে থাকি। যা একটি মনস্তাত্ত্বিক বিষয়। ‘সিমিলারিটি/অ্যাট্রাকশন’ থিওরি অনুযায়ী একজন মানুষ সেই মানুষটিকেই বেশি পছন্দ করেন যার সাথে তার পছন্দ বা ভালোলাগাগুলো মিলে যায়। যেমন, আমরা যখন কারো সাথে পরিচিত হই তখন প্রথম দিকেই জিজ্ঞাসা করি ‘আপনার হোম ডিস্ট্রিক্ট কোথায়?’ উত্তরে আমরা শুনতে চাই নিজ জেলার নাম। না হলেও অন্তত নিজ বিভাগের নাম। ঠিক এমন প্রতিটি ক্ষেত্রেই যেমন খাওয়া, পছন্দের মানুষ,  লেখক, বিশ্বাস, দর্শন ইত্যাদি ক্ষেত্রে আমরা একজন আর একজনের সাথে মিল খুঁজে বেড়াই। যখন এই মিলগুলো আমরা পাই না তখনই এক ধরনের নেতিবাচক ধারণা বা অবস্থান তৈরি হয়। আর তা ছাড়া যখন কেউ বলেন যে লোকটি না বুঝে কোনো একটি দলকে সমর্থন করছেন, সেটি সেই ব্যক্তিকে হেয়প্রতিপন্ন করে বা নিজের কাছে অনেক ছোট করে। যা সেই ব্যক্তির ব্যক্তিত্বেও আঘাত করে।

বিশ্বকাপ ফুটবল টিমের সমর্থনের বিষয়টি অনেকটা কোনো এলাকা বা বংশের ঐতিহ্য-সংস্কৃতির মতো। তাই যখন কেউ সেটি নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করেন বা কটূক্তি করেন, তখন অন্যের অনুভূতিতে ব্যাপকভাবে আঘাত করে। এসব কারণে নিজেদের মধ্যে এত দ্বন্দ্ব আর হানাহানি। ব্যক্তিগত পছন্দ আর অনুভূতির কারণে তারা পরস্পরের সাথে বিবাদে জড়ায়। যেই অনুভূতি মানুষের মনে এক ধরনের হিংস্রতা ও আক্রোশের জন্ম দেয়।

ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুধু বাংলাদেশে নয়, ফুটবল জগতে এ দুটি দলই জনপ্রিয় এবং চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে পরিচিত। কিন্তু এ দুটি দেশের লোকেরা মিলেমিশেই খেলা উপভোগ করেন। তারা নিজেদের মধ্যে বড় ধরনের দাঙ্গা-হাঙ্গামা করেছেন, এ রকম উদাহরণ নেই। তা ছাড়া আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল নিয়ে আমাদের দেশে যে ধরনের নোংরামি হয়, তা বিশ্বের আর কোনো দেশে হয় কি না, আমার সন্দেহ।

কী লাভ নিজেদের মধ্যে এই বিভেদ তৈরি করে? উল্টো এটি আমাদের মস্তিষ্কে ও মনে এক ধরনের চাপ সৃষ্টি করে, যা আমাদের শরীরের জন্যও ক্ষতিকর।

কাউকে জ্ঞান দিতে চাই না। শুধু সবার কাছে অনুরোধ করতে চাই, আসুন আমরা সবাই মিলেমিশে বিশ্বকাপের খেলাগুলো উপভোগ করি। খেলা নিয়ে সমালোচনা যদি করতেই হয় তবে গঠনমূলক সমালোচনা করি। খেলাকে খেলা হিসেবেই দেখি।

সূত্র : চ্যানেল টোয়েন্টি ফোর 

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

বীরগঞ্জে রাস্তার গাছ কাটা ও চাঁদা দাবীর অপরাধে এনসিপি নেতা ও সাবেক ইউপি সদস্য সহ ১০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা

আপনি জানেন কি ? ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনা কে নিয়ে এত দ্বন্দ্ব !

আপডেট সময় : ০২:২৯:২৭ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ১৪ জুন ২০১৮

নিউজ ডেস্ক:

বিশ্বকাপে কাঁপছে বিশ্ব। ফুটবল উন্মাদনায় মেতেছে এই গ্রহ। আজ পর্দা উঠবে শতকোটি মানুষের আকাঙ্ক্ষার এই আয়োজনের। তবে বাংলাদেশে সব উন্মাদনা ছাপিয়ে প্রতিবছরই যে বিষয়টি আলোচনার শীর্ষে থাকে, তা হলো আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল। কিন্তু কেন?

বাংলাদেশে গত এক দশকে ক্রিকেটের সাফল্যে ফুটবলের প্রতি মানুষের আকর্ষণ কমেছে। তবে ফুটবলের প্রতি এখানকার মানুষের আগ্রহ কমতে থাকার সবচেয়ে বড় কারণ আন্তর্জাতিক ফুটবলে তেমন কোনো অর্জন না থাকা। কিন্তু তারপরও ফুটবলের প্রতি মানুষের ভালোবাসা যেন মনের কোণে একটা বিশেষ জায়গা দখল করে আছে। মাঝেমধ্যেই যার প্রমাণ মেলে। গ্রাম, পাড়া বা মহল্লাভিত্তিক ফুটবল খেলা হলেও দর্শকের ঢল নামে। আর বিশ্বকাপ ফুটবলের সময় এই আগ্রহ বেড়ে যায় বহুগুণ। ভালো লাগা থেকে তৈরি হয় উচ্ছ্বাস, উন্মাদনা।

তবে দুঃখের বিষয় হলো, বিশ্বকাপ ফুটবল নিয়ে এই আবেগ, উচ্ছ্বাস আর উন্মাদনা কখনো-সখনো নোংরামিতেও পরিণত হয়। বিশেষ করে আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল নিয়ে যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়, তা অনেক সময় বড় বড় শত্রুতার ঘটনাকেও হার মানায়। নিজ দেশেই যেন জাতি বড় দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। এই খেলাকে কেন্দ্র করে মারামারি, লাঞ্ছিত করা, এমনকি খুনোখুনি পর্যন্ত হয়। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আক্রমণাত্মক, কুরুচিপূর্ণ, অশ্লীল মন্তব্য তো আছেই।

ব্রাজিলের সমর্থকরা আর্জেন্টিনার পতাকাকে প্যান্ডেলের কাপড় আর আর্জেন্টিনার সমর্থকরা ব্রাজিলের পতাকাকে মলের রঙের সাথে তুলনা করেন। এসবের মধ্য দিয়ে তারা একে অন্যকে ছোট করতে গিয়ে নিজেরাই ছোট হন।

এক ভয়াবহ ঘটনা দেখেছি ২০১০ সালে। ব্রাজিল যখন কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডসের সাথে হেরে বিদায় নিল, তখন আর্জেন্টিনার সমর্থকরা আনন্দ মিছিল করছিল। এর মাঝে একজন ব্রাজিল সমর্থক এসে ভিড়ের মধ্যে দুই-তিনটা পটকা ছুড়ে মারে। শুরু হলো বন্ধুদের মধ্যে মারামারি, যা পরবর্তী সময়ে পারিবারিক পর্যায় পর্যন্ত গড়ায়। সেই যে বন্ধুত্ব নষ্ট হলো, এখনো সেই দ্বন্দ্ব রয়ে গেছে।

প্রশ্ন হলো, যারা ফুটবল বিশ্বকাপের সময় এমন আচরণ করেন, তারা কি আসলেই ফুটবলকে ভালোবাসেন? তারা কি জেনে-বুঝে এমনটি করেন? তারা কি বোঝেন না, এসবের মধ্য দিয়ে তারা নিজেদেরই ছোট করছেন? আমার ধারণা, বেশিরভাগ সমর্থকই তাদের নিজের পছন্দের দলের অধিকাংশ খেলোয়াড় সম্বন্ধেও জানেন না। এমনকি সব খেলোয়াড়ের নামও বলতে পারবেন না। আর একটি বিষয় হলো, আপনি যে দলকেই সমর্থন করুন না কেন, কোন খেলোয়াড় বা কোন টিম ভালো খেলল, তা নিয়ে আপনি বাজে মন্তব্য করতে পারেন না। অনেককেই দেখেছি নিজের পছন্দের সাথে মিল না থাকায় বিদ্বেষ থেকে মেসি, নেইমার, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর মতো খেলোয়াড়ের দক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। যারা এসব খেলোয়াড়ের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, তারা আসলে কতটা ফুটবলপ্রেমী বা খেলা বোঝেন, তা নিয়েও আমার সন্দেহ আছে।

আমার ব্যক্তিগত অভিমত হলো, এই মারামারি আর্জেন্টিনা বা ব্রাজিলের জন্য তারা করেন না। এই দ্বন্দ্ব নিজের পছন্দ বা ইচ্ছার বিষয়টিকে প্রধান্য দেয়ার জন্য। আমরা যেটিকে ‘ইগো’ বলে থাকি। যা একটি মনস্তাত্ত্বিক বিষয়। ‘সিমিলারিটি/অ্যাট্রাকশন’ থিওরি অনুযায়ী একজন মানুষ সেই মানুষটিকেই বেশি পছন্দ করেন যার সাথে তার পছন্দ বা ভালোলাগাগুলো মিলে যায়। যেমন, আমরা যখন কারো সাথে পরিচিত হই তখন প্রথম দিকেই জিজ্ঞাসা করি ‘আপনার হোম ডিস্ট্রিক্ট কোথায়?’ উত্তরে আমরা শুনতে চাই নিজ জেলার নাম। না হলেও অন্তত নিজ বিভাগের নাম। ঠিক এমন প্রতিটি ক্ষেত্রেই যেমন খাওয়া, পছন্দের মানুষ,  লেখক, বিশ্বাস, দর্শন ইত্যাদি ক্ষেত্রে আমরা একজন আর একজনের সাথে মিল খুঁজে বেড়াই। যখন এই মিলগুলো আমরা পাই না তখনই এক ধরনের নেতিবাচক ধারণা বা অবস্থান তৈরি হয়। আর তা ছাড়া যখন কেউ বলেন যে লোকটি না বুঝে কোনো একটি দলকে সমর্থন করছেন, সেটি সেই ব্যক্তিকে হেয়প্রতিপন্ন করে বা নিজের কাছে অনেক ছোট করে। যা সেই ব্যক্তির ব্যক্তিত্বেও আঘাত করে।

বিশ্বকাপ ফুটবল টিমের সমর্থনের বিষয়টি অনেকটা কোনো এলাকা বা বংশের ঐতিহ্য-সংস্কৃতির মতো। তাই যখন কেউ সেটি নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করেন বা কটূক্তি করেন, তখন অন্যের অনুভূতিতে ব্যাপকভাবে আঘাত করে। এসব কারণে নিজেদের মধ্যে এত দ্বন্দ্ব আর হানাহানি। ব্যক্তিগত পছন্দ আর অনুভূতির কারণে তারা পরস্পরের সাথে বিবাদে জড়ায়। যেই অনুভূতি মানুষের মনে এক ধরনের হিংস্রতা ও আক্রোশের জন্ম দেয়।

ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুধু বাংলাদেশে নয়, ফুটবল জগতে এ দুটি দলই জনপ্রিয় এবং চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে পরিচিত। কিন্তু এ দুটি দেশের লোকেরা মিলেমিশেই খেলা উপভোগ করেন। তারা নিজেদের মধ্যে বড় ধরনের দাঙ্গা-হাঙ্গামা করেছেন, এ রকম উদাহরণ নেই। তা ছাড়া আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল নিয়ে আমাদের দেশে যে ধরনের নোংরামি হয়, তা বিশ্বের আর কোনো দেশে হয় কি না, আমার সন্দেহ।

কী লাভ নিজেদের মধ্যে এই বিভেদ তৈরি করে? উল্টো এটি আমাদের মস্তিষ্কে ও মনে এক ধরনের চাপ সৃষ্টি করে, যা আমাদের শরীরের জন্যও ক্ষতিকর।

কাউকে জ্ঞান দিতে চাই না। শুধু সবার কাছে অনুরোধ করতে চাই, আসুন আমরা সবাই মিলেমিশে বিশ্বকাপের খেলাগুলো উপভোগ করি। খেলা নিয়ে সমালোচনা যদি করতেই হয় তবে গঠনমূলক সমালোচনা করি। খেলাকে খেলা হিসেবেই দেখি।

সূত্র : চ্যানেল টোয়েন্টি ফোর