মেহেরপুর সংবাদদাতা, মেহেরপুর॥ কুরবানি ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ত এখন কামারপাড়া। ডাসা, দা, বটি, চাকুসহ নানা ধারালো অস্ত্রের সান দেয়া ছাড়াও বিভিন্ন উপকরন বানাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। ক্রেতারাও ছুটছেন তাদের কুরবানির প্রয়োজনীয় অস্ত্র তৈরি ও শান দিতে। কিন্তু কয়লা ও ইষ্পাতের অভাবে সময়মত ক্রেতাদের চাহিদা পূরণ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কামারীদের।
আর কয়েক দিন পর কুরবানির ঈদ। করবানির পশু জবায় ও মাংস পক্রিয়ার মূল অস্ত্র ডাসা, ছুরি, বটি সহ বিভিন্ন সরাঞ্জম। ফলে ঠুং ঠাং শব্দে ব্যস্ত সময় পার করছেন মেহেরপুরের কামারীরা। বছরের অন্য সময়ে তেমন একটা কাজ না থাকলেও কুরবানির আগে ব্যস্ততা বেড়ে যায় কয়েকগুন। অনেকেই নতুন কাজ নেয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। কিন্তু কয়লা ও ইষ্পাতের অভাবে ক্রেতাদের চাহিদানূযায়ী তৈরিকৃত ডাসা, দা, বটি, চাকুসহ নানা ধারালো অস্ত্র সময় মত সরবরাহ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কামারীদের। এ সময়ে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পরিশ্রম করতে হচ্ছে তাদের। অন্যদিকে বিভিন্ন কৃত্রিম তৈরি সরাঞ্জম বাজার দখল করছে। ফলে বছরের অন্য সময় তেমন একটা চাহিদা থাকে না। সময় বাচাতে ও সৌখিনতার কারণে মানুষ এসব কৃত্রিম জিনিস ব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ কামারীদের।
কামার সুমন সরকার জানান, বছরের অন্য সময়ে দিন ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা আয় করি কুরবানির সময়ে দিনে এক হাজার টাকা থেকে বারাশ টাকা আয় হয় আমাদের। কৃত্রিম তৈরি বিভিন্ন সরাঞ্জম বাজার দখল করলেও ভাল মানের কাজের জন্য ক্রেতারা আসছেন কামার বাড়ি। তবে কয়লা সন্ধান করতে গিয়ে বেশি সময় ব্যয় করতে হচ্ছে আমাদের। ফলে কাজের বিঘœ ঘটছে।
কামার অশোক কুমার চন্দ্র জানান, কুরবানি সামনে রেখে আমাদের অনেক কাজ করতে হয়। এবছরে অনেক ডাসা, দা, বটি, চাকুসহ নানা ধারালো অস্ত্র তৈরী করেছি। যেসকল সরাঞ্জম তৈরী করেছি যদি সেগুলো সব বিক্রয় করতে পারি তাহলে আমরা অনেক লাভবান হব। আর যদি বিক্রয় না করতে পারি তাহলে অনেক ক্ষতি হবে।
এদিকে ফারুক হোসেন নামে এক ক্রেতারা সাথে কথা বলে জানা যায় যে, বাজারের কৃত্রিম জিনিসের চাইতে কামারবাড়ির তৈরির সরাঞ্জম মানের দিক দিয়ে ভাল। ফলে সকলে কামার বাড়ি আসেন এসব সরাঞ্জম তৈরি করতে। তাছাড়া কুরবানির আগে তাদের ব্যবহৃত ডাসা, দা, বটি, চাকুসহ সরাঞ্জগুলো কামারবাড়ি নিয়ে আসি সান দিতে। আবার কিছু কিছু ক্রেতা কৃত্রিম সরঞ্জম কিনতে ছুটছেন বাজারে। দাম বেশি হলেও সময় বাচাতে বাজার থেকে জিনিস কিনছেন তারা।