শিরোনাম :
Logo পিআর পদ্ধতি জানে না জনগণ, চায় পুরোনো পদ্ধতিতে নির্বাচন: টুকু Logo চাঁদপুর সদর উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ Logo ঢাকাস্থ চাঁদপুর সমিতির’সাধারন সভা অনুষ্ঠিত চাঁদপুর জেলা হবে বাংলাদেশের মডেল এবং বুদ্ধি ভিত্তিক চর্চার প্রাণকেন্দ্র ……উপাধ্যক্ষ নূরুজ্জামান হীরা Logo বীরগঞ্জে জলবায়ু পরিবর্তন সচেতনতা বৃদ্ধিতে বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত Logo রাকসু নির্বাচনের আচরণবিধি প্রকাশিত Logo বিশুদ্ধ পানির চাহিদা পুরনের লক্ষে ১৩০টি টিউবওয়েল বিতরণ করেন মোঃ মতিউর রহমান Logo জকসু নিয়ে সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে আগ্রহী নন- জবি রেজিস্ট্রার Logo রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফাইন আর্টস ক্লাবের নেতৃত্বে সুমন ও ফুয়াদ Logo আরও ৩ লাখ টাকা জব্দ রিয়াদের বাড্ডার বাসা থেকে Logo ডেঙ্গু আক্রান্ত ৩৮৬ রোগী হাসপাতালে ভর্তি, প্রাণহানি ২ জনের

সেলিম ওসমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ শুনানি ৬ আগস্ট !

  • amzad khan
  • আপডেট সময় : ১১:৩৬:৫৩ পূর্বাহ্ণ, বুধবার, ৫ জুলাই ২০১৭
  • ৭৫২ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে লাঞ্ছনা করার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় নারায়ণগঞ্জের সংসদ সদস্য  এ কে এম সেলিম ওসমানসহ দুজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানির তারিখ আগামী ৬ আগস্ট ধার্য করেছেন আদালত।

গতকাল মঙ্গলবার ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক মোস্তাফিজুর রহমান এ তারিখ ঠিক করেন।
এদিন আসামি সেলিম ওসমান এবং অপর আসামি সেলিম ওসমানের সহযোগী অপু আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

মঙ্গলবার সেলিম ওসমানের পক্ষে তিন মাস পর অভিযোগ গঠনের দিন ধার্যের আবেদন করা হয়। পরে আদালত এক মাসের সময় মঞ্জুর করে ৬ আগস্ট অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন ধার্য করেন।

সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আনোয়ারুল কবির বাবুল জানান, সেলিম ওসমান মামলাটিতে জামিনে থাকলেও অপর আসামি অপু পলাতক ছিলেন। তিনি গত ৩১ মে মামলাটিতে আত্মসমর্পণ করে জামিন গ্রহণ করেন। ফলে আজ মামলাটি বিচার শুরুর জন্য প্রস্তুত হওয়ায় ৬ আগস্ট চার্জগঠনের শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত।

গত ২২ জানুয়ারি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে মামলাটি নারায়ণগঞ্জ আদালত থেকে ঢাকার সিজেএম আদালতে বিচারের জন্য বদলির নির্দেশ দেন।

এরপর গত ১ মার্চ নারায়ণগঞ্জের মুখ্য বিচারিক হাকিম (সিজেএম) আদালত থেকে ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম (সিজেএম) আদালতে মামলাটি স্থানান্তরিত হয়।

মোট ৬৫ পৃষ্ঠার মূল প্রতিবেদনের সঙ্গে সংযুক্তি হিসেবে আরো নথিপত্র আছে। তদন্তকালে ২৭ জনের জবানবন্দি নেওয়া হয়। বিচারক তদন্ত প্রতিবেদনে ছয়টি সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। এগুলো হলো- প্রথম, শ্যামল কান্তি ওই স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র মোহাম্মদ রিফাত হাসানকে ২০১৬ সালের ৮ মে মারধর করেছেন তা প্রমাণিত। দ্বিতীয়, ইসলাম ধর্ম ও আল্লাহকে নিয়ে শ্যামল কান্তির কটূক্তির সত্যতা পাওয়া যায়নি। তৃতীয়, ২০১৬ সালের ১৩ মে ওই স্কুলের পরিচালনা পর্ষদের সভা চলাকালে স্থানীয় শামসুল হকের ছেলে অপুর নেতৃত্বে ১০-১২ জন সভাকক্ষে ঢুকে প্রধান শিক্ষককে মারধর করার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তবে অপু ছাড়া বাকি ১০-১২ জনের নাম কোনো সাক্ষীই প্রকাশ করেননি। চতুর্থ, ২০১৬ সালের ১৩ মে বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভা চলাকালে আনুমানিক বেলা ১১টার দিকে স্থানীয় মসজিদ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয় যে, ইসলাম ধর্ম ও আল্লাহকে নিয়ে কটূক্তি করেছেন শ্যামল কান্তি। কে বা কারা ওই ঘোষণা দিয়েছেন, তা নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। তবে বিদ্যালয়ের উন্নয়নমূলক কাজ নিয়ে কমিটির সদস্যদের মধ্যে বিরোধের কারণে এমন ঘোষণা দেওয়া হতে পারে বলে বিশ্বাস করার কারণ আছে। পঞ্চম, ২০১৬ সালের ১৩ মে বিকেল ৫টার দিকে সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান প্রধান শিক্ষকের রুমে ঢুকে তাকে চারটি থাপ্পড় দিয়েছেন, এ অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি। ষষ্ঠ, সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের নির্দেশে শ্যামল কান্তি ভক্ত কান ধরে উঠ-বস করতে বাধ্য হয়েছেন, তা ভিডিও ফুটেজ দেখে প্রতীয়মান হয়েছে। তবে সাক্ষীদের সাক্ষ্য পর্যালোচনায় প্রতীয়মান হয়েছে যে, উপস্থিত জনগণের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তিনি ওই নির্দেশ দেন।

২০১৬ সালের ১০ আগস্ট ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে নারায়ণগঞ্জের স্কুল শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় পুলিশ প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করতে ব্যর্থ হয়েছে, এ মন্তব্য করে পুরো ঘটনার বিচারিক তদন্তের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

উল্লেখ্য, নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তিকে ইসলাম ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে ২০১৬ সালের ১৩ মে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে লাঞ্ছিত করার ঘটনাটি প্রকাশ পেলে দেশজুড়ে তীব্র নিন্দা-প্রতিবাদের ঝড় ওঠে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

পিআর পদ্ধতি জানে না জনগণ, চায় পুরোনো পদ্ধতিতে নির্বাচন: টুকু

সেলিম ওসমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ শুনানি ৬ আগস্ট !

আপডেট সময় : ১১:৩৬:৫৩ পূর্বাহ্ণ, বুধবার, ৫ জুলাই ২০১৭

নিউজ ডেস্ক:

শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে লাঞ্ছনা করার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় নারায়ণগঞ্জের সংসদ সদস্য  এ কে এম সেলিম ওসমানসহ দুজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানির তারিখ আগামী ৬ আগস্ট ধার্য করেছেন আদালত।

গতকাল মঙ্গলবার ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক মোস্তাফিজুর রহমান এ তারিখ ঠিক করেন।
এদিন আসামি সেলিম ওসমান এবং অপর আসামি সেলিম ওসমানের সহযোগী অপু আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

মঙ্গলবার সেলিম ওসমানের পক্ষে তিন মাস পর অভিযোগ গঠনের দিন ধার্যের আবেদন করা হয়। পরে আদালত এক মাসের সময় মঞ্জুর করে ৬ আগস্ট অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন ধার্য করেন।

সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আনোয়ারুল কবির বাবুল জানান, সেলিম ওসমান মামলাটিতে জামিনে থাকলেও অপর আসামি অপু পলাতক ছিলেন। তিনি গত ৩১ মে মামলাটিতে আত্মসমর্পণ করে জামিন গ্রহণ করেন। ফলে আজ মামলাটি বিচার শুরুর জন্য প্রস্তুত হওয়ায় ৬ আগস্ট চার্জগঠনের শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত।

গত ২২ জানুয়ারি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে মামলাটি নারায়ণগঞ্জ আদালত থেকে ঢাকার সিজেএম আদালতে বিচারের জন্য বদলির নির্দেশ দেন।

এরপর গত ১ মার্চ নারায়ণগঞ্জের মুখ্য বিচারিক হাকিম (সিজেএম) আদালত থেকে ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম (সিজেএম) আদালতে মামলাটি স্থানান্তরিত হয়।

মোট ৬৫ পৃষ্ঠার মূল প্রতিবেদনের সঙ্গে সংযুক্তি হিসেবে আরো নথিপত্র আছে। তদন্তকালে ২৭ জনের জবানবন্দি নেওয়া হয়। বিচারক তদন্ত প্রতিবেদনে ছয়টি সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। এগুলো হলো- প্রথম, শ্যামল কান্তি ওই স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র মোহাম্মদ রিফাত হাসানকে ২০১৬ সালের ৮ মে মারধর করেছেন তা প্রমাণিত। দ্বিতীয়, ইসলাম ধর্ম ও আল্লাহকে নিয়ে শ্যামল কান্তির কটূক্তির সত্যতা পাওয়া যায়নি। তৃতীয়, ২০১৬ সালের ১৩ মে ওই স্কুলের পরিচালনা পর্ষদের সভা চলাকালে স্থানীয় শামসুল হকের ছেলে অপুর নেতৃত্বে ১০-১২ জন সভাকক্ষে ঢুকে প্রধান শিক্ষককে মারধর করার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তবে অপু ছাড়া বাকি ১০-১২ জনের নাম কোনো সাক্ষীই প্রকাশ করেননি। চতুর্থ, ২০১৬ সালের ১৩ মে বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভা চলাকালে আনুমানিক বেলা ১১টার দিকে স্থানীয় মসজিদ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয় যে, ইসলাম ধর্ম ও আল্লাহকে নিয়ে কটূক্তি করেছেন শ্যামল কান্তি। কে বা কারা ওই ঘোষণা দিয়েছেন, তা নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। তবে বিদ্যালয়ের উন্নয়নমূলক কাজ নিয়ে কমিটির সদস্যদের মধ্যে বিরোধের কারণে এমন ঘোষণা দেওয়া হতে পারে বলে বিশ্বাস করার কারণ আছে। পঞ্চম, ২০১৬ সালের ১৩ মে বিকেল ৫টার দিকে সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান প্রধান শিক্ষকের রুমে ঢুকে তাকে চারটি থাপ্পড় দিয়েছেন, এ অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি। ষষ্ঠ, সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের নির্দেশে শ্যামল কান্তি ভক্ত কান ধরে উঠ-বস করতে বাধ্য হয়েছেন, তা ভিডিও ফুটেজ দেখে প্রতীয়মান হয়েছে। তবে সাক্ষীদের সাক্ষ্য পর্যালোচনায় প্রতীয়মান হয়েছে যে, উপস্থিত জনগণের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তিনি ওই নির্দেশ দেন।

২০১৬ সালের ১০ আগস্ট ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে নারায়ণগঞ্জের স্কুল শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় পুলিশ প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করতে ব্যর্থ হয়েছে, এ মন্তব্য করে পুরো ঘটনার বিচারিক তদন্তের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

উল্লেখ্য, নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তিকে ইসলাম ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে ২০১৬ সালের ১৩ মে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে লাঞ্ছিত করার ঘটনাটি প্রকাশ পেলে দেশজুড়ে তীব্র নিন্দা-প্রতিবাদের ঝড় ওঠে।