আজ রবিবার, রাত সাড়ে এগারোটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক (ডেইরি গেইট) সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন তারা। তার আগে রাত দশটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে আরেকটি মশাল মিছিল শুরু করে ধর্ষণ বিরোধী মঞ্চ। মিছিলটি শহীদ মিনারের পাদদেশে এসে শেষ হয়। সেখানে আগে থেকে প্রতিবাদ সমাবেশ করছিলো নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা। তাদের সাথে একাত্মতা পোষণ করে ধর্ষণ বিরোধী মঞ্চ। মিছিল শেষে সেখানে সমাবেশ করেন তারা। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন আয়েশা সিদ্দিকা বৃষ্টি।
সমাবেশে বাংলা বিভাগের শিক্ষক আহসান ইমাম বলেন,”ছোট শিশু, গর্ভবতী, প্রতিবন্ধি নারী বয়স্ক নারী কেও বাদ যাচ্ছেনা। আমাদের ক্রমাগত কথা বলতে হচ্ছে, কিন্তু আমি আর কথা বলতে পারছিনা কারণ আমার শরীরে আমার মনে আছিয়া বসে আছে। আছিয়ার অবস্থা অকল্পনীয়। এই বাংলাদেশ আমাদের কাম্য ছিলো না। শুধু একটি কথাই বলবো ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড কার্যকর করতে হবে। আমার মায়েরা, বোনেরা আর অনিরাপদ থাকবেনা। আর একটি ধর্ষণের ঘটনাও আমরা শুনতে চাইনা।”
ধর্ষণবিরোধী মঞ্চের মুখপাত্র শাওলী বলেন ,”দেশের এমন একটি ক্রান্তিলগ্ন এসে উপস্থিত হয়েছি যে আমাদের মধ্যে আর কোন বিভেদ নাই, আমরা সবাই সেই ধর্ষিতা যার নিরাপত্তা এই দেশের সরকার কোনকালেই দিতে পারেনি। রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচারকে বিদায় করেছি কিন্তু এর কয়েকমাস পরেই আমাদের জীবনের নিরাপত্তা ও সম্ভ্রমের নিরাপত্তার জন্য আবার ও রাস্তায় নামতে হয়েছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এমনভাবে কথা বলেছেন যেন আইন শৃঙ্খলার কোন অবনতি হয়নি। জুলাই আন্দোলনের সময় পুলিশ আমাদের ওপর গুলি চালিয়েছে, রক্ত ঝরিয়েছে কিন্তু আজ সেই পুলিশ আমার কোন একজন বোনের নিরাপত্তা দিতে পারছেনা, তাহলে রাষ্ট্র এই সৈরাচার আমলের পুলিশ বাহিনী কেন রেখে দিয়েছে। আন্দোলন বিপ্লবের আঁতুরঘর জাহাঙ্গীরনগর থেকে আওয়াজ তুলে বলছি প্রত্যেকটি ধর্ষকের কালোহাতকে প্রতিহত করা হবে এই সিস্টেমকে জবাবদিহি করতে হবে।”
এছাড়াও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট জাবি শাখার সংগঠক সোহাগি সামিয়া বলেন, “আমরা দেখতে পাচ্ছি সারাদেশে একের পর এক ধর্ষণ হচ্ছে অন্যদিকে প্রশাসন নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। আমরা দেখেছি বিগত জুলাই বিপ্লবে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীরা জীবন বাজি রেখে রাস্তায় নেমেছিলো কিন্তু দেশের সবকিছু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীক করা হচ্ছে। আমরা এও দেখেছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক তারই নারী শিক্ষার্থীর পোশাক নিয়ে কটুক্তি করেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।”
সমাবেশ শেষে শিক্ষার্থীরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন এবং ১০:৫৫টা থেকে ১১:৩০টা পর্যন্ত মহাসড়কে অবস্থান করেন।