শিরোনাম :
Logo কচুয়ায় নিরাপদ সড়ক চাই উদ্যোগে ডা. আমিনুল ইসলামকে ফুলেল সংবর্ধনা Logo আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ কর্তৃক মাদক সম্রজ্ঞী মিনি বেগম মাদক বিক্রয়কালে হাতেনাতে গ্রেফতার Logo ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ঈদের আয়োজন Logo নির্বাচন ডিসেম্বরের মধ্যে না হলে দেশ অস্থিতিশীল হতে পারে, রয়টার্সকে মঈন খান Logo কলকাতাকে উড়িয়ে মুম্বাইয়ের প্রথম জয় Logo অস্ট্রেলিয়ার কেন্দ্রীয় চুক্তিতে চমক, তালিকায় ২ টেস্ট খেলা ব্যাটার Logo আবারও রাফাহ থেকে ফিলিস্তিনিদের সরে যাওয়ার নির্দেশ ইসরায়েলের Logo জাপানে মেগা ভূমিকম্পের আশঙ্কা, মারা যেতে পারে ৩ লাখ মানুষ Logo ঈদের দ্বিতীয় দিনেও ট্রেন-বাস স্টেশনে ঘরমুখো মানুষের চাপ Logo দুই অঞ্চলে ঝড়ের আভাস, সতর্ক সংকেত

ঢাকায় পাইপলাইনে তেল যাবে আগামী মাসে

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ১২:১৪:৪৬ অপরাহ্ণ, সোমবার, ৪ নভেম্বর ২০২৪
  • ৭২৬ বার পড়া হয়েছে

চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা অঞ্চলে পাইপলাইনে জ্বালানি তেল সরবরাহ আগামী মাস থেকে শুরু হচ্ছে। নানা প্রতিকূলতা মোকাবেলার পর বাস্তবায়িত প্রকল্পটির মাধ্যমে চট্টগ্রাম থেকে আড়াইশ কিলোমিটার পাইপলাইন নির্মাণ করা হয়েছে। বছরে ৫০ লাখ টন জ্বালানি তেল সরবরাহের সক্ষমতা নিয়ে নির্মিত এই পাইপলাইনে বর্তমানে ৩০ লাখ টন তেল যাবে নারায়ণগঞ্জের গুদনাইল–ফতুল্লা ডিপোতে। আড়াই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই প্রকল্প কোটি কোটি টাকার জ্বালানি তেল অপচয় ঠেকানোসহ বছরে অন্তত আড়াইশ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে, দেশে বর্তমানে বছরে গড়ে ৭০ লাখ টন জ্বালানি তেলের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৩০ লাখ টন জ্বালানি ব্যবহৃত হয় ঢাকা বিভাগে। এই তেলের প্রায় পুরোটা পতেঙ্গার গুপ্তাখাল প্রধান ডিপো থেকে নৌপথে নারায়ণগঞ্জের গুদনাইল, ফতুল্লা ও চাঁদপুর ডিপোতে নেওয়া হয়। এরপর সেখান থেকে সড়কপথে পরিবহন করা হয়। রেলওয়ে ওয়াগনের মাধ্যমেও কিছু জ্বালানি তেল পরিবাহিত হয়।

দেশের জ্বালানি তেলের ৯০ শতাংশ পরিবাহিত হয় নৌপথে। তেল বিপণন কোম্পানিগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকা প্রায় ২০০টি অয়েল ট্যাংকার এসব জ্বালানি তেল পরিবহন করে। নৌপথে জ্বালানি তেল পরিবহনে সিস্টেম লসের পাশাপাশি বিভিন্ন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনাও ঘটে। তাছাড়া শুষ্ক মৌসুমে নাব্যতা কমে যাওয়ায় জ্বালানি তেল পরিবহনে সংকট তৈরি হয়। অপরদিকে বেসরকারি খাতের অন্তত ৩০ হাজার ট্যাংক লরির পাশাপাশি রেলওয়ে ওয়াগনের মাধ্যমে সড়ক ও রেলপথেও জ্বালানি তেল পরিবহন করা হয় দেশের নানা অঞ্চলে।

জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, জ্বালানি পরিবহনের সিস্টেম লস কমানো, নৌপথে তেল পরিবহনের বিপুল খরচ সাশ্রয়সহ দ্রুততম সময়ে তেল পৌঁছানোর লক্ষ্যে চট্টগ্রাম থেকে নারায়ণগঞ্জ এবং ঢাকার ফতুল্লা পর্যন্ত আড়াইশ কিলোমিটার পাইপলাইন নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ‘চট্টগ্রাম হতে ঢাকা পর্যন্ত পাইপলাইনে জ্বালানি তেল পরিবহন’ শীর্ষক প্রকল্পটি ২০১৬ সালের অক্টোবরে একনেকে অনুমোদন লাভ করে। কথা ছিল ২০২০ সালের ৩০ জুন প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। কিন্ত নানামুখী প্রতিবন্ধকতা এবং প্রতিকূলতার মাঝে পড়তে হয় গুরুত্বপূর্ণ এই প্রকল্পটিকে। পরে সরকার সেনাবাহিনীর মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়। পদ্মা অয়েল কোম্পানির তত্ত্বাবধানে সেনাবাহিনী প্রকল্পটির কাজ সম্পন্ন করছে।

প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রাম থেকে নারায়ণগঞ্জের গুদনাইল পর্যন্ত ৭টি স্টেশনসহ ২৪১.২৮ কিলোমিটার ১৬ ইঞ্চি ব্যাসের ভূগর্ভস্থ পাইপলাইন নির্মাণ, গুদনাইল থেকে ফতুল্লা পর্যন্ত দুটি স্টেশনসহ ৮.২৯ কিলোমিটার ১০ ইঞ্চি ব্যাসের পাইপলাইন নির্মাণ করা হয়েছে। এর মধ্যে বিভিন্ন নদীর তলদেশ দিয়ে অন্তত ৯ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপন করা হয়েছে। প্রকল্পটির আওতায় কুমিল্লার বরুড়ায় নতুন একটি ডিপো স্থাপন করা হয়েছে। যেখান থেকে চাঁদপুরসহ সন্নিহিত অঞ্চলে জ্বালানি তেল সরবরাহ করা হবে।

চট্টগ্রামের ডেসপ্যাচ টার্মিনালের স্ক্যাডা মাস্টার কন্ট্রোল স্টেশন থেকেই ২৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপলাইনের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ এবং পরিচালনা করা হবে। স্ক্যাডা, টেলিকমিউনিকেশন এবং লিক ডিটেকশন করতে এই পাইপলাইনের সাথে অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল লাইন সংযুক্ত থাকবে।

আগামী মাসের শুরুতে প্রকল্পটি উদ্বোধন করা হবে জানিয়ে বিপিসির দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে, পাইপলাইনটি পুরোদমে চালু হলে জ্বালানি তেল সরবরাহে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। পাশাপাশি জ্বালানি নিরাপত্তাও সুদৃঢ় হবে।

ট্যাগস :

কচুয়ায় নিরাপদ সড়ক চাই উদ্যোগে ডা. আমিনুল ইসলামকে ফুলেল সংবর্ধনা

ঢাকায় পাইপলাইনে তেল যাবে আগামী মাসে

আপডেট সময় : ১২:১৪:৪৬ অপরাহ্ণ, সোমবার, ৪ নভেম্বর ২০২৪

চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা অঞ্চলে পাইপলাইনে জ্বালানি তেল সরবরাহ আগামী মাস থেকে শুরু হচ্ছে। নানা প্রতিকূলতা মোকাবেলার পর বাস্তবায়িত প্রকল্পটির মাধ্যমে চট্টগ্রাম থেকে আড়াইশ কিলোমিটার পাইপলাইন নির্মাণ করা হয়েছে। বছরে ৫০ লাখ টন জ্বালানি তেল সরবরাহের সক্ষমতা নিয়ে নির্মিত এই পাইপলাইনে বর্তমানে ৩০ লাখ টন তেল যাবে নারায়ণগঞ্জের গুদনাইল–ফতুল্লা ডিপোতে। আড়াই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই প্রকল্প কোটি কোটি টাকার জ্বালানি তেল অপচয় ঠেকানোসহ বছরে অন্তত আড়াইশ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে, দেশে বর্তমানে বছরে গড়ে ৭০ লাখ টন জ্বালানি তেলের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৩০ লাখ টন জ্বালানি ব্যবহৃত হয় ঢাকা বিভাগে। এই তেলের প্রায় পুরোটা পতেঙ্গার গুপ্তাখাল প্রধান ডিপো থেকে নৌপথে নারায়ণগঞ্জের গুদনাইল, ফতুল্লা ও চাঁদপুর ডিপোতে নেওয়া হয়। এরপর সেখান থেকে সড়কপথে পরিবহন করা হয়। রেলওয়ে ওয়াগনের মাধ্যমেও কিছু জ্বালানি তেল পরিবাহিত হয়।

দেশের জ্বালানি তেলের ৯০ শতাংশ পরিবাহিত হয় নৌপথে। তেল বিপণন কোম্পানিগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকা প্রায় ২০০টি অয়েল ট্যাংকার এসব জ্বালানি তেল পরিবহন করে। নৌপথে জ্বালানি তেল পরিবহনে সিস্টেম লসের পাশাপাশি বিভিন্ন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনাও ঘটে। তাছাড়া শুষ্ক মৌসুমে নাব্যতা কমে যাওয়ায় জ্বালানি তেল পরিবহনে সংকট তৈরি হয়। অপরদিকে বেসরকারি খাতের অন্তত ৩০ হাজার ট্যাংক লরির পাশাপাশি রেলওয়ে ওয়াগনের মাধ্যমে সড়ক ও রেলপথেও জ্বালানি তেল পরিবহন করা হয় দেশের নানা অঞ্চলে।

জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, জ্বালানি পরিবহনের সিস্টেম লস কমানো, নৌপথে তেল পরিবহনের বিপুল খরচ সাশ্রয়সহ দ্রুততম সময়ে তেল পৌঁছানোর লক্ষ্যে চট্টগ্রাম থেকে নারায়ণগঞ্জ এবং ঢাকার ফতুল্লা পর্যন্ত আড়াইশ কিলোমিটার পাইপলাইন নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ‘চট্টগ্রাম হতে ঢাকা পর্যন্ত পাইপলাইনে জ্বালানি তেল পরিবহন’ শীর্ষক প্রকল্পটি ২০১৬ সালের অক্টোবরে একনেকে অনুমোদন লাভ করে। কথা ছিল ২০২০ সালের ৩০ জুন প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। কিন্ত নানামুখী প্রতিবন্ধকতা এবং প্রতিকূলতার মাঝে পড়তে হয় গুরুত্বপূর্ণ এই প্রকল্পটিকে। পরে সরকার সেনাবাহিনীর মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়। পদ্মা অয়েল কোম্পানির তত্ত্বাবধানে সেনাবাহিনী প্রকল্পটির কাজ সম্পন্ন করছে।

প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রাম থেকে নারায়ণগঞ্জের গুদনাইল পর্যন্ত ৭টি স্টেশনসহ ২৪১.২৮ কিলোমিটার ১৬ ইঞ্চি ব্যাসের ভূগর্ভস্থ পাইপলাইন নির্মাণ, গুদনাইল থেকে ফতুল্লা পর্যন্ত দুটি স্টেশনসহ ৮.২৯ কিলোমিটার ১০ ইঞ্চি ব্যাসের পাইপলাইন নির্মাণ করা হয়েছে। এর মধ্যে বিভিন্ন নদীর তলদেশ দিয়ে অন্তত ৯ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপন করা হয়েছে। প্রকল্পটির আওতায় কুমিল্লার বরুড়ায় নতুন একটি ডিপো স্থাপন করা হয়েছে। যেখান থেকে চাঁদপুরসহ সন্নিহিত অঞ্চলে জ্বালানি তেল সরবরাহ করা হবে।

চট্টগ্রামের ডেসপ্যাচ টার্মিনালের স্ক্যাডা মাস্টার কন্ট্রোল স্টেশন থেকেই ২৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপলাইনের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ এবং পরিচালনা করা হবে। স্ক্যাডা, টেলিকমিউনিকেশন এবং লিক ডিটেকশন করতে এই পাইপলাইনের সাথে অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল লাইন সংযুক্ত থাকবে।

আগামী মাসের শুরুতে প্রকল্পটি উদ্বোধন করা হবে জানিয়ে বিপিসির দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে, পাইপলাইনটি পুরোদমে চালু হলে জ্বালানি তেল সরবরাহে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। পাশাপাশি জ্বালানি নিরাপত্তাও সুদৃঢ় হবে।