শিরোনাম :
Logo বেরোবিতে বহিরাগত প্রবেশ নিষিদ্ধ Logo দেশব্যাপী হত্যাকাণ্ড এবং চলমান চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে চুয়াডাঙ্গায় তীব্র প্রতিবাদ Logo উত্তর কচুয়া জাতীয়তাবাদী প্রবাসী কল্যাণ সংগঠনের উদ্যোগে মহিলা দলের বিশাল গনমিছিল Logo কচুয়ায় বিএনপির উদ্যোগে লিফলেট বিতরন ও মিছিল Logo চাঁদপুরে খতিবের উপর হামলার প্রতিবাদে শহর জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ Logo ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন চাঁদপুর জেলা শাখার উদ্যোগে দায়িত্বশীল তারবিয়াত অনুষ্ঠিত Logo চাঁদপুর জেলা বিজেপি’র জেলা কমিটি গঠনকল্পে সমন্বয় সভা আন্দালিভ রহমান পার্থ বাংলাদেশে সুস্থধারার রাজনীতির দিকপাল ………উপাধ্যক্ষ নুরুজ্জামান হীরা Logo আমরা সংস্কার চেয়েছি,জুলাই গণহত্যার বিচার চেয়েছি এবং নতুন সংবিধান চেয়েছি: নাহিদ ইসলাম Logo মিটফোর্ডে হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে হাবিপ্রবিতে বিক্ষোভ Logo ইবিতে শাখা ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মীর পদত্যাগ

মাথাভাঙ্গা নদীতে মিললো কিশোরের গলা কাটা লাশ!

  • rahul raj
  • আপডেট সময় : ০১:৪৮:০১ অপরাহ্ণ, শনিবার, ৪ মে ২০১৯
  • ৭৫০ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গায় প্রেমের জেরে বন্ধুর হাতে বন্ধু খুন : ঘাতক শাফায়েত আটক

নিউজ ডেস্ক:রক্তাক্ত মাটি ও স্যান্ডেল দেখে অনুসন্ধানে মাথাভাঙ্গা নদী থেকে মোমিন নামের এক কিশোরের গলা কাটা লাল উদ্ধার করেছে সদর থানা পুলিশ। মোমিন আলুকদিয়া প্রেম বাজার এলাকার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে। বন্ধুর প্রেমিকার সাথে প্রেম করার অভিযোগে ছুরি দিয়ে গলাকেটে হত্যা করা হয় মোমিনকে। এ ঘটনায় হত্যাকারী বন্ধু শাফায়েত (১৫) নামে একজনকে আটক করেছে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক শাফায়েত খুনের ঘটনা স্বীকার করেছে বলে নিশ্চিত করেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ ফকরুল আলম খাঁন। গতকাল শুক্রকার রাত সাড়ে ৮টার দিকে আলুকদিয়া আকন্দবাড়ীয়া গাংপাড়া এলাকার মাথাভাঙ্গা নদী থেকে নিহত মোমিনের লাশ উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আকুন্দবাড়ীয়া গ্রামের গাংপাড়ায় শুক্রবার সকালে রক্তাক্ত মাটি ও স্যান্ডেল দেখে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয়রা। সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে রক্তাক্ত মাটি ও স্যান্ডেল উদ্ধার করে, মূল ঘটনার অনুসন্ধানে নামে। বিকালের দিকে ওই এলাকা থেকে খবর আশে মোমিন নামে এক কিশোরকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পরে পুলিশ পুনরায় ঘটনাস্থলে গিয়ে খোঁজ খবর নেওয়ার একপর্যায়ে মোমিনের কাছের বন্ধু শাফায়েতের বিষয়ে জানতে পারে। এসময় আকুন্দবাড়ীয়া গাংপাড়ার রমজান মিস্ত্রির ছেলে শাফায়েতকে আটক করে পুলিশ। পরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মোমিনকে হত্যার ঘটনা স্বীকার করাসহ নিহতের লাশ মাথাভাঙ্গা নদীতে কচুরিপনার নিচে ঢেকে রেখেছে বলে পুলিশের কাছে জানায় ওই হত্যাকারী।

পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে মাথাভাঙ্গা নদী থেকে নিহত মোমিনের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে পুলিশ। এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. কলিমুল্লাহসহ সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকুলে না থাকায় হত্যার কাজে ব্যবহৃত ওই ছুরি উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।

পরে আটক শাফায়েতকে থানা হেফাজতে নিলে আরও জানা যায়, গত দুই বছর বেশি সময় ধরে আলুকদিয়া রোমেলা খাতুন স্কুলের ৭ম শ্রেণীর এক ছাত্রীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিলো শাফায়েতের। এই প্রেমের বিষয়টি জানতো তার বন্ধু মোমিন। একপর্যায়ে গত কয়েক মাস ধরে মোমিন তার প্রেমিকাকে ফুসলিয়ে নিজে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি করে। আর এ ঘটনায় তাদের দু’জনের বন্ধুত্বের সম্পর্কের ফাটল ধরে। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার দু’জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর কৌশলে মোমিনকে আকুন্দবাড়ীয়া গাং পাড়ায় ডাকে শাফায়েত। এসময় শাফায়েত বিড়ি খাওয়ার নাম করে নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে ছুরি দিয়ে মোমিনের গলা কেটে হত্যা করে। মৃত্যু নিশ্চিত হলে নিহতের লাশ টেনে নিয়ে মাথাভাঙ্গা নদীতে কচুরিপানার নিচে ঢেকে রাখে।

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) আবু জিহাদ খাঁন বলেন, প্রেমঘটিত কারণে মোমিন নামে ওই কিশোরকে হত্যা করা হয়েছে। রক্তাক্ত মাটি ও স্যান্ডেল দেখে আকুন্দবাড়ীয়া গ্রামের লোকজন শুক্রবার সকালে পুলিশকে খবর দেয়। পরে মোমিন নামে এক কিশোর নিখোঁজের বিষয়টি জানতে পারে পুলিশ। অনুসন্ধানের একপর্যায়ে মোমিনের বন্ধু শাফায়েতকে আটক করে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে খুনের ঘটনা স্বীকার করে সে। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মাথাভাঙ্গা নদী থেকে নিহত মোমিনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় হত্যাকারী আটক শাফায়েতকে আরো জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এ ঘটনার সাথে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা।

চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. কলিমুল্লাহ জানান, জিজ্ঞাসাবাদে ঘাতক শাফায়েত স্বীকার করেছে গ্রামের এক স্কুলছাত্রীকে দুই বন্ধুর ভালোবাসাকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে বিবাদ দেখা দেয়। এই বিবাদের কারণে শাফায়েত মোমিনকে খুনের পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনার অংশ হিসাবে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কৌশলে মোমিনকে বাড়ি থেকে ডেকে নেয়। এরপর মাথাভাঙ্গা নদীর পাড়ে নিয়ে জবাই করে হত্যার পর গুম করার জন্য মাথাভাঙ্গা নদীতে ফেলে দেওয়া হয় মরদেহ।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

বেরোবিতে বহিরাগত প্রবেশ নিষিদ্ধ

মাথাভাঙ্গা নদীতে মিললো কিশোরের গলা কাটা লাশ!

আপডেট সময় : ০১:৪৮:০১ অপরাহ্ণ, শনিবার, ৪ মে ২০১৯

চুয়াডাঙ্গায় প্রেমের জেরে বন্ধুর হাতে বন্ধু খুন : ঘাতক শাফায়েত আটক

নিউজ ডেস্ক:রক্তাক্ত মাটি ও স্যান্ডেল দেখে অনুসন্ধানে মাথাভাঙ্গা নদী থেকে মোমিন নামের এক কিশোরের গলা কাটা লাল উদ্ধার করেছে সদর থানা পুলিশ। মোমিন আলুকদিয়া প্রেম বাজার এলাকার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে। বন্ধুর প্রেমিকার সাথে প্রেম করার অভিযোগে ছুরি দিয়ে গলাকেটে হত্যা করা হয় মোমিনকে। এ ঘটনায় হত্যাকারী বন্ধু শাফায়েত (১৫) নামে একজনকে আটক করেছে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক শাফায়েত খুনের ঘটনা স্বীকার করেছে বলে নিশ্চিত করেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ ফকরুল আলম খাঁন। গতকাল শুক্রকার রাত সাড়ে ৮টার দিকে আলুকদিয়া আকন্দবাড়ীয়া গাংপাড়া এলাকার মাথাভাঙ্গা নদী থেকে নিহত মোমিনের লাশ উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আকুন্দবাড়ীয়া গ্রামের গাংপাড়ায় শুক্রবার সকালে রক্তাক্ত মাটি ও স্যান্ডেল দেখে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয়রা। সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে রক্তাক্ত মাটি ও স্যান্ডেল উদ্ধার করে, মূল ঘটনার অনুসন্ধানে নামে। বিকালের দিকে ওই এলাকা থেকে খবর আশে মোমিন নামে এক কিশোরকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পরে পুলিশ পুনরায় ঘটনাস্থলে গিয়ে খোঁজ খবর নেওয়ার একপর্যায়ে মোমিনের কাছের বন্ধু শাফায়েতের বিষয়ে জানতে পারে। এসময় আকুন্দবাড়ীয়া গাংপাড়ার রমজান মিস্ত্রির ছেলে শাফায়েতকে আটক করে পুলিশ। পরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মোমিনকে হত্যার ঘটনা স্বীকার করাসহ নিহতের লাশ মাথাভাঙ্গা নদীতে কচুরিপনার নিচে ঢেকে রেখেছে বলে পুলিশের কাছে জানায় ওই হত্যাকারী।

পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে মাথাভাঙ্গা নদী থেকে নিহত মোমিনের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে পুলিশ। এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. কলিমুল্লাহসহ সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকুলে না থাকায় হত্যার কাজে ব্যবহৃত ওই ছুরি উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।

পরে আটক শাফায়েতকে থানা হেফাজতে নিলে আরও জানা যায়, গত দুই বছর বেশি সময় ধরে আলুকদিয়া রোমেলা খাতুন স্কুলের ৭ম শ্রেণীর এক ছাত্রীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিলো শাফায়েতের। এই প্রেমের বিষয়টি জানতো তার বন্ধু মোমিন। একপর্যায়ে গত কয়েক মাস ধরে মোমিন তার প্রেমিকাকে ফুসলিয়ে নিজে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি করে। আর এ ঘটনায় তাদের দু’জনের বন্ধুত্বের সম্পর্কের ফাটল ধরে। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার দু’জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর কৌশলে মোমিনকে আকুন্দবাড়ীয়া গাং পাড়ায় ডাকে শাফায়েত। এসময় শাফায়েত বিড়ি খাওয়ার নাম করে নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে ছুরি দিয়ে মোমিনের গলা কেটে হত্যা করে। মৃত্যু নিশ্চিত হলে নিহতের লাশ টেনে নিয়ে মাথাভাঙ্গা নদীতে কচুরিপানার নিচে ঢেকে রাখে।

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) আবু জিহাদ খাঁন বলেন, প্রেমঘটিত কারণে মোমিন নামে ওই কিশোরকে হত্যা করা হয়েছে। রক্তাক্ত মাটি ও স্যান্ডেল দেখে আকুন্দবাড়ীয়া গ্রামের লোকজন শুক্রবার সকালে পুলিশকে খবর দেয়। পরে মোমিন নামে এক কিশোর নিখোঁজের বিষয়টি জানতে পারে পুলিশ। অনুসন্ধানের একপর্যায়ে মোমিনের বন্ধু শাফায়েতকে আটক করে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে খুনের ঘটনা স্বীকার করে সে। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মাথাভাঙ্গা নদী থেকে নিহত মোমিনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় হত্যাকারী আটক শাফায়েতকে আরো জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এ ঘটনার সাথে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা।

চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. কলিমুল্লাহ জানান, জিজ্ঞাসাবাদে ঘাতক শাফায়েত স্বীকার করেছে গ্রামের এক স্কুলছাত্রীকে দুই বন্ধুর ভালোবাসাকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে বিবাদ দেখা দেয়। এই বিবাদের কারণে শাফায়েত মোমিনকে খুনের পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনার অংশ হিসাবে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কৌশলে মোমিনকে বাড়ি থেকে ডেকে নেয়। এরপর মাথাভাঙ্গা নদীর পাড়ে নিয়ে জবাই করে হত্যার পর গুম করার জন্য মাথাভাঙ্গা নদীতে ফেলে দেওয়া হয় মরদেহ।