ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ (সিইসি) সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। নোটিশ পাওয়ার ৭ দিনের মাথায় এ সংক্রান্ত বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে আইনগত প্রতিকার চেয়ে রিট আবেদন করা হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২২ মে) জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ঢাকা মহানগর দক্ষিণের কর্মী হোসাইন মোহাম্মদ আনোয়ারের পক্ষে লিগ্যাল নোটিশটি পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সালাহ উদ্দিন রিগ্যান।
লিগ্যাল নোটিশে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছাড়া আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব ও প্রধান উপদেষ্টার প্রধান সচিবকে বিবাদী করা হয়।
এবার ‘ঢাকা অচল করে দেওয়া হুমকি’ ‘ছয়দিন ধরে অবরুদ্ধ নগর ভবন’ ‘আজো সমাবেশ’ ‘নাগরিক সেবা বন্ধ করে দেওয়া হবে’ এসব শিরোনামে ২১ মে ও ২৩ মে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন আইনজীবী সালাহ উদ্দিন রিগ্যান।
এর আগে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথ না পড়ানোর নির্দেশনা চেয়ে দায়ের করা রিট সরাসরি খারিজ করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, রিট আবেদনটি শুনানির জন্য গ্রহণযোগ্য নয়।
এদিন হাইকোর্টের বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এ আদেশের ফলে ইশরাক হোসেনকে শপথ দিতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
আদালতে ইশরাকের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। তাদের সহযোগিতা করেন ব্যারিস্টার এ কে এম এহসানুর রহমান ও অ্যাডভোকেট মাকসুদ উল্লাহ। রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাহফুজুর রহমান মিলন।
এর আগে গেল ২০ মে জনভোগান্তি কমাতে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন দ্রুত আয়োজনের জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনের কাছে চিঠি পাঠিয়েছিলেন হোসাইন মোহাম্মদ আনোয়ার।
চিঠিতে বলা হয়, বিনীত নিবেদন এই যে, আমি নিম্ন স্বাক্ষরকারী হোসাইন মো. আনোয়ার একজন সচেতন নাগরিক। জুলাই আন্দোলনের সংগঠক ও এনসিপি ঢাকা মহানগর দক্ষিণের রাজনৈতিক কর্মী।
এতে আরও বলা আছে, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন না হওয়ায় প্রতিনিয়ত সিটি করপোরেশন তালাবদ্ধ করে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। এতে করে জনহয়রানি ও ভোগান্তি বাড়ছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মো. শেখ ফজলে নূর তাপসের মেয়াদ শুরু হয় ২০২০ সালের ১৬ মে এবং ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার আন্দোলনে পালিয়ে যান। ঢাকা উত্তরের আতিকুল ইসলাম কার্যক্রম শুরু হয় ২০২০ সালের ১৬ মে এবং ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট উনিও পালিয়ে যান এবং পরবর্তীতে গ্রেফতার হন। এরপর ২০২৪ সালের ১৯ আগস্ট দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ শূন্য ঘোষণা করে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়। স্বাভাবিক নিয়ম অনুসারে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটির মেয়রের কার্যকালের মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে গত ১৫ মে (২০২৫)।
চিঠিতে বলা হয়, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের অন্তত ২ কোটি জনগণ বাস করে। যদি নির্বাচিত প্রতিনিধি না থাকে তাহলে যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করা খুবই কষ্ট সাধ্য। এই বিশাল জনগোষ্ঠীর ভোগান্তির আর শেষ থাকে না। নির্বাচন না দিয়ে জনগণের দৈনন্দিন নাগরিক সেবা ব্যাহত হচ্ছে এবং মারাত্মক জটিলতা তৈরি করতেছে, যা নগর গঠনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল।