হোয়াইট হাউসে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার সঙ্গে এক বৈঠকে ‘শ্বেত গণহত্যা’র প্রমাণ হিসেবে যেসব ছবি ও ভিডিও উপস্থাপন করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, তার কিছু ছিল কঙ্গোর, আবার কিছু ছিল বিভ্রান্তিকর।
ট্রাম্প এক পর্যায়ে একটি প্রবন্ধের প্রিন্টআউট তুলে ধরে বলেন, ‘এরা সবাই শ্বেতাঙ্গ কৃষক, যাদের কবর দেওয়া হচ্ছে।’ কিন্তু তিনি যে ছবি দেখান, সেটি ছিল ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে কঙ্গোর গোমা শহরে রুয়ান্ডা-সমর্থিত এম২৩ বিদ্রোহীদের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহতদের মরদেহ তোলার দৃশ্য। ভিডিও দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
রয়টার্স বরাত দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, ভিডিও থেকে নেওয়া ওই ছবি ট্রাম্পের দাবির সঙ্গে কোনোভাবেই সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
ভিডিওতে হাজার হাজার সাদা ক্রস দেখা যায়, যেটিকে ট্রাম্প কবর বলে দাবি করেন। কিন্তু এটি আসলে দক্ষিণ আফ্রিকার নিউক্যাসেল ও নরমানডেইন শহরের মধ্যবর্তী মহাসড়কের পাশে স্থাপিত একটি স্মৃতিসৌধ – কবরস্থান নয়।
স্মৃতিসৌধটির উদ্যোক্তা রব হোয়াটসন বলেন, ‘এটি একটি স্মৃতিস্তম্ভ ছিল, স্থায়ী নয় বরং অস্থায়ীভাবে স্থাপন করা হয়েছিল।’
ট্রাম্পের দেখানো ভিডিওতে বিভ্রান্তিকর তথ্য ও ভুল ছিল, যার মাধ্যমে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেত কৃষকদের ‘নির্যাতিত’ হিসেবে চিত্রিত করে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় দেওয়ার প্রস্তাব তুলে ধরেন। এই দাবিগুলো দক্ষিণ আফ্রিকা সরকার প্রত্যাখ্যান করেছে। ‘শ্বেত গণহত্যা’ নিয়ে প্রচলিত ষড়যন্ত্র তত্ত্ব দীর্ঘদিন ধরে উগ্র-ডানপন্থী মহলে ঘুরে বেড়ালেও এর কোনো ভিত্তি নেই।
ভিডিওতে দক্ষিণ আফ্রিকার বামপন্থী নেতা জুলিয়াস মালেমাকে দেখানো হয়, যিনি তার ইকোনমিক ফ্রিডম ফাইটার্স (ইইএফ) পার্টির পোশাকে ‘হোয়াইটনেসের গলা কেটে ফেলো’ এবং ‘কিল দ্য বুর, কিল দ্য ফার্মার’ স্লোগান দিতে দেখা যায়। যদিও ট্রাম্প তাকে সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে উপস্থাপন করেন, মালেমা বাস্তবে একজন বিরোধী নেতা এবং তার দল গত নির্বাচনে মাত্র ৯.৫% ভোট পেয়ে চতুর্থ হয়।
প্রেসিডেন্ট রামাফোসা ও তার প্রতিনিধি দল ট্রাম্পের সামনে স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন যে, তারা মালেমার উসকানিমূলক বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন।
সম্প্রতি ট্রাম্প দক্ষিণ আফ্রিকার ভূমি সংস্কার, পররাষ্ট্রনীতি ও শ্বেত সংখ্যালঘুদের প্রতি ‘অবিচার’ নিয়ে কড়া সমালোচনা করায় রামাফোসার এই সফরের উদ্দেশ্য ছিল যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়ন।