মোঃনিয়াজ শফিক জবি প্রতিনিধি:জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ম্যানেজমেন্ট বিভাগের দুই শিক্ষক ও তিন শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনায় সমঝোতার চেষ্টা করছে শাখা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। বিভাগের শিক্ষকদের সঙ্গে দফায় দফায় করেছেন বৈঠক। গত রোববার (১৩ জুুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ভবনের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও সংবাদ সম্মেলন করে ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা তিন দফা দাবিতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন তারা।
এদিকে আজ সোমবার (১৪ জুলাই) শিক্ষার্থীদের দেওয়া আল্টিমেটামের ২৪ ঘণ্টা পার হলেও সুরাহা হয়নি এ ঘটনার, হয়নি পূর্বঘোষিত কর্মসূচিও। এতে ম্যানেজমেন্ট বিভাগে চলেছে দফায় দফায় সমঝোতা বৈঠক।
জানা যায়, সকাল থেকে ম্যানেজমেন্ট বিভাগের হামলার ঘটনাকে আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতার চেষ্টা চালাচ্ছে শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। বিভিন্ন সময়ে ওই বিভাগে গিয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠকও করছেন ছাত্র সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ। একইসঙ্গে হামলার শিকার হওয়া শিক্ষার্থীদের সাথেও সমঝোতার চেষ্টা চালায় তারা। এছাড়া বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দফায় দফায় বৈঠকেও সুরাহা মিলছে না ঘটনার।
এদিন শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. মোশাররফ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দীন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। উক্ত বৈঠকে হামলার শিকার দুই শিক্ষক ছাত্রকল্যাণ পরিচালক ড. কে এ এম রিফাত হোসেন এবং সহকারী প্রক্টর ও বিভাগের সরকারী অধ্যাপক শফিকুল ইসলামসহ ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
এসময় শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, ১৫ জুলাই সকাল ১০টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে নিরপেক্ষ তদন্ত সম্পন্ন করে প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করতে হবে। হামলায় সরাসরি জড়িত বর্তমান শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে অবিলম্বে বহিষ্কার করতে হবে। যেসব অছাত্র এই ঘটনায় জড়িত, তাদের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আজীবনের জন্য প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে হবে। ভবিষ্যতে এ ধরনের সহিংসতা প্রতিরোধে একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করে তা প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করতে হবে। ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক ট্যাগ ও অপপ্রচারের মাধ্যমে ব্যক্তিগত হেনস্তা বন্ধে কঠোর প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
বিভাগ সূত্রে জানা যায়, আগামীকাল মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) শহীদ সাজিদ একাডেমিক ভবনে তালা দিয়ে কর্মসূচি পালন করবে ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এসময় বিভাগের সকল ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ থাকবে৷ এছাড়া অন্যান্য বিভাগের মিড ও সেমিস্টার পরীক্ষা চলবে। কিন্তু কোনো ক্লাস হবে না।
এবিষয়ে হামলার শিকার হওয়া ফেরদৌস হাসান বলেন, আমাদের বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের হামলার ঘটনায় সকাল থেকে বৈঠক চলে। বৈঠকে আমাদেরকে শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মোশাররফ স্যার এবং সাধারণ সম্পাদক ড. রইছ উদ্দীন স্যার আজকে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে হামলাকারীদের তালিকা প্রকাশের কথা বলেন। এবিষয়ে ট্রেজারার ম্যামের সঙ্গে কথা বলতে যান তারা। কিন্তু তদন্ত কমিটির সদস্যরা তাদের সঙ্গে একমত না হওয়ায় তিনি রাগ করে বের হয়ে আসেন। এরপর আর কোনো কথা হয় নি। তবে আমাদের বিভাগের শিক্ষকদের আমাদের কর্মসূচির প্রতি সমর্থন রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদেরকে আশ্বাস দিলেও তা পূরণ হয়নি। আগামীকাল শহীদ সাজিদ ভবনে তালা দিয়ে আমরা কর্মসূচি পালন করবো। সকল বিভাগের পরীক্ষা চলবে, কিন্তু ক্লাস বন্ধ থাকবে।