শিরোনাম :
Logo আজকের নামাজের সময়সূচি Logo যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আবার আলোচনা করতে চায় সরকার Logo চাঁদপুর পৌরসভার ১২৬ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা Logo জবিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উপর হামলা সমঝোতার চেষ্টা শাখা ছাত্রদলের, দফায় দফায় বৈঠক Logo তারেক রহমানকে নিয়ে কটুক্তির প্রতিবাদে রাবি জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের নিন্দা Logo যুব সমাজের মধ্যে ইসলামী মূল্যবোধ না থাকায় আজ যুব সমাজ অধপতনে নিমর্জিত ……..কে. এম ইয়াসিন রাশেদসানী Logo কচুয়ার কাদলা ইউনিয়ন যুবদলের আলোচনা সভা ও কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত Logo ‘পঞ্চায়েত’ আমার জীবন বদলে দিয়েছে Logo ইন্দোনেশিয়ার পূর্ব উপকূলে ৬.৭ মাত্রার ভূমিকম্প Logo সারাদেশে বৃষ্টির সম্ভাবনা হালকা থেকে মাঝারি

হানাফি মাজহাব ও ইমাম আবু হানিফা (রহ.)

  • নীলকন্ঠ অনলাইন নীলকন্ঠ অনলাইন
  • আপডেট সময় : ০১:২৫:১২ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • ৭৫১ বার পড়া হয়েছে
ইমাম আবু হানিফা ফিকাহ শাস্ত্রের উন্নয়ন ও এটাকে সার্বজনীন করার জন্য একটি ছাত্র সমিতি গঠন করেন। মোট ৪০ জন মেধাবী ছাত্র মূল সমিতির সদস্য ছিলেন। এই সভায় কোনো একটি বিষয়কে আলোচনার জন্য দেওয়া হতো। আলোচিত হওয়ার পর গৃহীত সিদ্ধান্ত লিখা হতো। এভাবে ‘হানাফি ফিকাহ’ প্রতিষ্ঠিত হয়।

হানাফি ফিকাহ অল্পদিনের মধ্যে বিস্তার লাভ করে। ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর ইন্তেকালের পর আব্বাসীয় শাসক হারুন আল রশিদ হানাফি ফিকাহকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দান করেন। পরবর্তীকালে সেলজুক, গজনভি, মিসরের আইয়ুবি, মামলুক শাসক এবং উপমহাদেশের স্বাধীন মুসলমান ও মোগল শাসকরা হানাফি ফিকাহ মোতাবিক শাসন ও বিচারকার্য পরিচালনা করতেন।

বর্তমান বিশ্বের মুসলিম জনগণের প্রায় অর্ধাংশ হানাফি ফিকাহর অনুসারী। তুরস্ক, পূর্ব ইউরোপীয় দেশ, ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ইরাক, মিসর, মধ্য এশিয়া, আফগানিস্তান, বার্মা প্রভৃতি দেশের সুন্নি মুসলমানদের ৯০ শতাংশ হানাফি ফিকাহর অনুসারী। এছাড়া আরব ও আফ্রিকার দেশসমূহকে হানাফিদের বিপুল সংখ্যা আছে।

ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-কে ফিকাহ শাস্ত্রের জনক বলা হয়। হিজরি দ্বিতীয় শতাব্দীর আগ পর্যন্ত ফিকাহ শাস্ত্রে কোনো গুরুত্বপূর্ণ পাঠ্য বিষয় ছিল না। প্রচলিত হাজার হাজার ফাতওয়া বা মাসআলার সে যুগে কোনো ভিত্তিই ছিল না। তিনি প্রথম ফাতওয়া, রায় প্রদান প্রভৃতিকে একটি ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করেন। তাঁর পর হতেই ফিকাহ নিয়মিত পাঠ্যসূচির মর্যাদা লাভ করে।

ইমাম আবু হানিফা (রহ.) প্রণীত ফিকহের বৈশিষ্ট্য এই মাজহাব তত্ত্ব, তথ্য ও কল্যাণকামিতার ওপর প্রতিষ্ঠিত।
হানাফি ফিকহ সহজ।
কিয়াস ও ইস্তিহসানের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
কোরআনকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
তাহজিব ও তামাদ্দুনের ওপর ভিত্তি করে ফিকহ রচনা করা হয়েছে।
লেনদেন ও আচার-আচরণের ক্ষেত্রে হানাফি ফিকহ সংগতিশীল।
সার্বজনীনতা ও ভারসাম্য বজায় রাখা হয়েছে।
যুক্তিসিদ্ধ। প্রতিটি মাসয়ালার ব্যাখ্যা অত্যন্ত যুক্তিসঙ্গত।
হানাফি মাজহাবের বুনিয়াদ শুরা ভিত্তিক ইজতিহাদ।
রেওয়ায়েতের (কোরআন-হাদিসের বর্ণনা) সঙ্গে দেরায়েত বা যুক্তির যথাযথ মিল রয়েছে।

ইমাম আবু হানিফা মূলত যে কোনো মাসআলার কেত্রে কোরআনে বর্ণিত সংশ্লিষ্ট বিষয়ের সকল আয়াত, হাদিস শরিফ, সাহাবায়ে কেরামের আচরণ ও আমল ইত্যাদি সামনে রেখে এবং আয়াত ও হাদিসগুলোর পেক্ষাপট বিবেচনায় রেখে অতঃপর সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার চেষ্টা করেছেন।

তিনি এক্ষেত্রে অনেক সময় হাদিসের শাব্দিক অর্থের প্রতি গুরুত্ব আরোপ না করে হাদিস দ্বারা প্রকৃতপক্ষে কী বোঝানো হয়েছে সেদিকে সমধিক গুরুত্ব আরোপ করেছেন। (ড. মুহাম্মদ হামীদুল্লাহ, দি ইমারেজন্স অব ইসলাম, পৃ. ১৭৯)

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

আজকের নামাজের সময়সূচি

হানাফি মাজহাব ও ইমাম আবু হানিফা (রহ.)

আপডেট সময় : ০১:২৫:১২ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
ইমাম আবু হানিফা ফিকাহ শাস্ত্রের উন্নয়ন ও এটাকে সার্বজনীন করার জন্য একটি ছাত্র সমিতি গঠন করেন। মোট ৪০ জন মেধাবী ছাত্র মূল সমিতির সদস্য ছিলেন। এই সভায় কোনো একটি বিষয়কে আলোচনার জন্য দেওয়া হতো। আলোচিত হওয়ার পর গৃহীত সিদ্ধান্ত লিখা হতো। এভাবে ‘হানাফি ফিকাহ’ প্রতিষ্ঠিত হয়।

হানাফি ফিকাহ অল্পদিনের মধ্যে বিস্তার লাভ করে। ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর ইন্তেকালের পর আব্বাসীয় শাসক হারুন আল রশিদ হানাফি ফিকাহকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দান করেন। পরবর্তীকালে সেলজুক, গজনভি, মিসরের আইয়ুবি, মামলুক শাসক এবং উপমহাদেশের স্বাধীন মুসলমান ও মোগল শাসকরা হানাফি ফিকাহ মোতাবিক শাসন ও বিচারকার্য পরিচালনা করতেন।

বর্তমান বিশ্বের মুসলিম জনগণের প্রায় অর্ধাংশ হানাফি ফিকাহর অনুসারী। তুরস্ক, পূর্ব ইউরোপীয় দেশ, ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ইরাক, মিসর, মধ্য এশিয়া, আফগানিস্তান, বার্মা প্রভৃতি দেশের সুন্নি মুসলমানদের ৯০ শতাংশ হানাফি ফিকাহর অনুসারী। এছাড়া আরব ও আফ্রিকার দেশসমূহকে হানাফিদের বিপুল সংখ্যা আছে।

ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-কে ফিকাহ শাস্ত্রের জনক বলা হয়। হিজরি দ্বিতীয় শতাব্দীর আগ পর্যন্ত ফিকাহ শাস্ত্রে কোনো গুরুত্বপূর্ণ পাঠ্য বিষয় ছিল না। প্রচলিত হাজার হাজার ফাতওয়া বা মাসআলার সে যুগে কোনো ভিত্তিই ছিল না। তিনি প্রথম ফাতওয়া, রায় প্রদান প্রভৃতিকে একটি ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করেন। তাঁর পর হতেই ফিকাহ নিয়মিত পাঠ্যসূচির মর্যাদা লাভ করে।

ইমাম আবু হানিফা (রহ.) প্রণীত ফিকহের বৈশিষ্ট্য এই মাজহাব তত্ত্ব, তথ্য ও কল্যাণকামিতার ওপর প্রতিষ্ঠিত।
হানাফি ফিকহ সহজ।
কিয়াস ও ইস্তিহসানের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
কোরআনকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
তাহজিব ও তামাদ্দুনের ওপর ভিত্তি করে ফিকহ রচনা করা হয়েছে।
লেনদেন ও আচার-আচরণের ক্ষেত্রে হানাফি ফিকহ সংগতিশীল।
সার্বজনীনতা ও ভারসাম্য বজায় রাখা হয়েছে।
যুক্তিসিদ্ধ। প্রতিটি মাসয়ালার ব্যাখ্যা অত্যন্ত যুক্তিসঙ্গত।
হানাফি মাজহাবের বুনিয়াদ শুরা ভিত্তিক ইজতিহাদ।
রেওয়ায়েতের (কোরআন-হাদিসের বর্ণনা) সঙ্গে দেরায়েত বা যুক্তির যথাযথ মিল রয়েছে।

ইমাম আবু হানিফা মূলত যে কোনো মাসআলার কেত্রে কোরআনে বর্ণিত সংশ্লিষ্ট বিষয়ের সকল আয়াত, হাদিস শরিফ, সাহাবায়ে কেরামের আচরণ ও আমল ইত্যাদি সামনে রেখে এবং আয়াত ও হাদিসগুলোর পেক্ষাপট বিবেচনায় রেখে অতঃপর সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার চেষ্টা করেছেন।

তিনি এক্ষেত্রে অনেক সময় হাদিসের শাব্দিক অর্থের প্রতি গুরুত্ব আরোপ না করে হাদিস দ্বারা প্রকৃতপক্ষে কী বোঝানো হয়েছে সেদিকে সমধিক গুরুত্ব আরোপ করেছেন। (ড. মুহাম্মদ হামীদুল্লাহ, দি ইমারেজন্স অব ইসলাম, পৃ. ১৭৯)