মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম অধ্যুষিত রাষ্ট্র ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় চলমান সংকটের এই পর্যায়ে এসে দখলদার ইসরায়েলের সব বন্দিকে ছেড়ে দিতে নতুন একটি প্রস্তাব নিয়ে এসেছে স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস।
তারা জানিয়েছে- ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েল যদি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি মেনে নেয় এবং গাজা থেকে তাদের সব সৈন্য প্রত্যাহার করে নেয়; একমাত্র তাহলেই একত্রে সব ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হবে। হামাসের মুখপাত্র হাজেম কাসেম এরই মধ্যে প্রস্তাবটি উত্থাপন করেছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, হামাসের পক্ষ থেকে এমন একটি সময় প্রস্তাবটি এসেছে; যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বন্দিদের ধাপে ধাপে মুক্তি দেওয়ার প্রস্তাবের সমালোচনা করেছেন। একই সঙ্গে বন্দিদের পরিবারের সদস্যরাও তাদের আপনজনদের একবারে মুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন।
এ দিকে ইহুদিবাদী দখলদার রাষ্ট্র ইসরায়েলের দাবি- হামাসের হাতে আটক বাকি ৭২ জন বন্দি হয়তো ৭ অক্টোবরের হামলায় নিহত হয়েছেন, অথবা হামাসের হাতে বন্দি অবস্থায় মারা গেছেন।
যদিও হামাস এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলছে- ইসরায়েলি বোমা হামলায় তাদের হাতে থাকা ৬০ জন বন্দি নিহত হয়েছেন।
বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে, হামাস এবং অন্যান্য ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসরায়েল থেকে প্রায় ২৫১ জনকে অপহরণ করে গাজা উপত্যকায় নিয়ে যায়। এই বন্দিদের মধ্যে ইসরায়েলি নাগরিক ছাড়াও বিদেশি এবং বহু দ্বৈত নাগরিকও রয়েছেন।
বন্দি মুক্তির প্রসঙ্গে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে আলোচনা চলছে, যেখানে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারসহ বেশ কয়েকটি রাষ্ট্র মধ্যস্থতা করছে। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১৪১ বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে বলে ব্রিটিশ মিডিয়া বিবিসি নিউজের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়।
এ দিকে গাজা থেকে একজন শীর্ষ হামাস কর্মকর্তা বলেছেন, হামাস শনিবার ছয়জন জীবিত ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেবে। এছাড়া আগামীকাল বৃহস্পতিবার আরও চারজনের মৃতদেহ ফেরত দেওয়া হবে।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদেওন সায়ার বলেছেন, গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তির দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা এই সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে।
ইসরায়েল গাজায় মোবাইল হোম বা ভ্রাম্যমাণ বাড়ি এবং নির্মাণ সরঞ্জাম প্রবেশের অনুমতি দেওয়ায় এই মুক্তির প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়েছে। যুদ্ধবিরতির এই ধাপে মুক্তি দেওয়ার জন্য এই ছয়জন অবশিষ্ট জীবিত জিম্মি।
এই ঘোষণা গাজার বর্তমান পরিস্থিতিতে একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে, যেখানে মানবিক সংকট এবং রাজনৈতিক উত্তেজনা চলমান রয়েছে। এখন দেখার বিষয়, এই পদক্ষেপ কীভাবে সামগ্রিক পরিস্থিতিকে প্রভাবিত করে এবং ভবিষ্যতে আলোচনা ও শান্তি প্রক্রিয়ায় কী ভূমিকা রাখে। সূত্র: আল-জাজিরা