সম্প্রতি পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদ অভিমুখে লং মার্চ শুরু করে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সমর্থকরা। তার মুক্তির দাবিতে আন্দোলনরতদের সঙ্গে নিরাপত্তাবাহিনীর সংঘর্ষে এবার এক পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ইমরান খানের বহু সমর্থক আহত হয়েছেন।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদের কাছেই এ ঘটনা ঘটে।
দেশটির একজন মন্ত্রী এবং ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) বরাতে এই খবর জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। এদিকে গতকাল থেকেই কারাবন্দী ইমরান খানের ডাকা বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে পাকিস্তান। রাজধানী ইসলামাবাদ অভিমুখে দলটির নেতা-কর্মীরা মিছিল এগোতে থাকেন। তবে তার আগে থেকেই ইসলামাবাদ অভিমুখের সড়কে ব্যারিকেড দেয় কর্তৃপক্ষ।
পিটিআই সমর্থকদের গ্রেপ্তার ও পুলিশের টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপের খবরও আসে। এর পাশাপাশি সেখানকার ইন্টারনেট সেবাও বন্ধ করে দেয়া হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ইমরান খানের পক্ষের বিক্ষোভকারীদের দূরে রাখতে পূর্বাঞ্চলীয় পাঞ্জাব প্রদেশের সঙ্গে গণপরিবহন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
এদিকে ইমরান খানের ৮০ জন সমর্থককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে জানিয়ে প্রাদেশিক তথ্যমন্ত্রী উজমা বুখারি বলেছেন, ‘আমরা রাজধানীতে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা করতে দেব না।’ এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, ইসলামাবাদের ঠিক বাইরে সংঘর্ষে একজন পুলিশ কর্মকর্তা গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। এছাড়া অন্তত ৭০ জন আহত হয়েছেন। প্রদেশের বাইরেও কোথাও কোথাও সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে ইমরান খানের দল পিটিআই বলছে, তাদের বহু নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সোমবার (২৫ নভেম্বর) বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর তিন দিনের সফরে পাকিস্তান এসেছেন। এজন্য রাজধানীতে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। রোববার (২৪ নভেম্বর) দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন একটি প্রতিনিধিদলও পাকিস্তানে এসেছে।
পিটিআই বলছে, বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে চড়াও হয়েছে সরকার। তাদের শত শত নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদিকে ইমরান খানের রাজনৈতিক সহযোগী শওকত ইউসুফজাই জিও নিউজ টিভিকে বলেছেন, ‘সরকারি বাহিনী সরাসরি গুলি চালাচ্ছে।’
এদিকে দেশটির পুলিশের পক্ষ থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে জানা গেছে, ইসলামাবাদে জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ ইসলামাবাদ, রাওয়ালপিন্ডিসহ আশপাশের এলাকার সমস্ত স্কুল বন্ধ করে দিয়েছে। ওইসব এলাকা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমও ধীরগতির হয়ে গেছে। গত ১৩ নভেম্বর ইমরান খান এই সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছিলেন। তিনি এটিকে ‘চূড়ান্ত আহ্বান’ বলে উল্লেখ করেন। তিনি দাবি করেন, ২৬তম সংশোধনী বাতিল ও জনগণের চুরি যাওয়া ম্যান্ডেট পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য এই প্রতিবাদ।
উল্লেখ্য, গত বছরের আগস্ট মাসে ইমরান খানকে কারাগারে পাঠানোর পর থেকে পিটিআই তার মুক্তির দাবিতে নানা কর্মসূচি পালন করে আসছে। এরপর ওই বছরের অক্টোবরের শুরুর দিকে ইসলামাবাদে দলটির সাম্প্রতিকতম বিক্ষোভ সহিংস রূপ নেয়।