শিরোনাম :
Logo জুলাই সনদে এনসিপির পরেও অংশগ্রহণের সুযোগ আছে : ধর্ম উপদেষ্টা Logo নারী টি-টোয়েন্টিতে দ্রুততম সেঞ্চুরির বিশ্ব রেকর্ড গড়লেন নাভগির Logo দক্ষিণ কোরিয়ায় এপেক সম্মেলনে ট্রাম্প-শি বৈঠক হবে Logo তারেক রহমানের সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রচিন্তার নতুন দ্বার উন্মোচিত হয়েছে : মনিরুল হক চৌধুরী Logo মুন্সিগঞ্জ জেলা জামায়াতের আমীরের সঙ্গে ঝিকুট ফাউন্ডেশনের সৌজন্য সাক্ষাৎ Logo প্রতিবন্ধী ধর্ষণ মামলার এক পলাতক আসামী গ্রেফতার Logo একদিনের সফরে কাল চাঁদপুর আসছেন মুফতি ফয়জুল করীম! Logo ধর্ষণের ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ইবিতে বিক্ষোভ ! Logo খুবির গণিত অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের গ্র্যান্ড রিইউনিয়ন উদ্বোধন! Logo বুটেক্সে ‘অরণ্যের সুর – ফোক ফেস্ট ২.০’ অনুষ্ঠিত

আন্দোলনকারীদের চাঙ্গা রাখতে গান আর স্লোগানে মুখর শাহবাগ মোড়

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৭:৩২:১৭ অপরাহ্ণ, রবিবার, ৭ জুলাই ২০২৪
  • ৮১৭ বার পড়া হয়েছে

নীলকন্ঠ ডেক্সঃ

সরকারি চাকরিতে কোটা প্রত্যাহারের দাবিতে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে আজ শাহবাগ মোড় অবরোধ করে রেখেছেন শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীরা। তীব্র গরমে আন্দোলনকারীরা যেন ঝিমিয়ে না পড়েন তাই তাদের চাঙ্গা রাখতে বিভিন্ন ধরনের গান এবং স্লোগান অব্যাহত রেখেছেন তারা।

কয়েক হাজার আন্দোলনকারী অবস্থান নিয়েছেন শাহবাগ মোড়ে। বেশিরভাগের মাথায় বাঁধা বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা। কেউ কেউ মাথায় ‘কোটা মুক্ত দেশ চাই’ এমন ফিতাও বেঁধে রেখেছেন। সড়কে লেখা হচ্ছে গ্রাফিতি। সেখানে লেখা আছে ‘বৈষম্যমূলক কোটার বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ ও ‘কোটাসহ সকল বৈষম্য নিপাত যাক’।

এর আগে দুপুর ৩টা ৫০ মিনিটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিক থেকে একটি মিছিল নিয়ে আন্দোলনকারীরা শাহবাগ মোড়ে এসে সবদিকের রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে বসে পড়েন। এতে সবদিকের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

আন্দোলনে অংশ নিতে আসা এক শিক্ষার্থী নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে যাচ্ছি। আমাদের যদি বাধ্য করা হয় আমরা প্রয়োজনে আমরা কঠোর আন্দোলনে যাব। পূর্ব কর্মসূচি অনুযায়ী আমরা আজ শাহবাগে জড়ো হয়েছি। পরবর্তী কর্মসূচি যা দেওয়া হবে, আমরা সে অনুযায়ী পালন করব।

এর আগে শনিবার (৬ জুলাই) কোটা আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম আজ বিকেল ৩টায় সারাদেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ‘ব্লকেড’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা ছিল। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা, ১০ শতাংশ নারী, অনগ্রসর জেলার বাসিন্দাদের জন্য ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষের জন্য ৫ শতাংশ আর প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য ১ শতাংশ আসন সংরক্ষিত ছিল।

ওই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোটা সংস্কারের দাবিতে বড় বিক্ষোভ হয়। কোটা ব্যবস্থার সংস্কার করে ৫৬ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবি জানিয়েছিলেন তখনকার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। পরে সরকারি চাকরিতে (প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে) সব ধরনের কোটা বাতিল করে পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

২০২১ সালে সেই পরিপত্রের ‘মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলে’র অংশটিকে চ্যালেঞ্জ করে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান উচ্চ আদালতে একটি রিট আবেদন করেন। সেই রিটের রায়ে চলতি বছরের ৫ জুন পরিপত্রের ওই অংশ অবৈধ ঘোষণা করেন আদালত। এরপর ৯ জুন হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। ওইদিন এই আবেদন শুনানির জন্য আপিল বিভাগে পাঠিয়ে দেন চেম্বার আদালত।

সেদিন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেছিলেন, সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় বহাল থাকবে নাকি বাতিল হবে সে ব্যাপারে আপিল বিভাগ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।

পরে গত ৪ জুলাই প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের সরকারি সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় আপাতত বহাল রাখার নির্দেশ দেন এবং এই রায় প্রকাশের পর রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত আপিল করার পরামর্শ দেন।

হাইকোর্ট কোটা বাতিলের সরকারি সিদ্ধান্তকে অবৈধ ঘোষণা করার পর থেকেই আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। তারা ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল রাখার দাবি জানাচ্ছেন।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

জুলাই সনদে এনসিপির পরেও অংশগ্রহণের সুযোগ আছে : ধর্ম উপদেষ্টা

আন্দোলনকারীদের চাঙ্গা রাখতে গান আর স্লোগানে মুখর শাহবাগ মোড়

আপডেট সময় : ০৭:৩২:১৭ অপরাহ্ণ, রবিবার, ৭ জুলাই ২০২৪

নীলকন্ঠ ডেক্সঃ

সরকারি চাকরিতে কোটা প্রত্যাহারের দাবিতে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে আজ শাহবাগ মোড় অবরোধ করে রেখেছেন শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীরা। তীব্র গরমে আন্দোলনকারীরা যেন ঝিমিয়ে না পড়েন তাই তাদের চাঙ্গা রাখতে বিভিন্ন ধরনের গান এবং স্লোগান অব্যাহত রেখেছেন তারা।

কয়েক হাজার আন্দোলনকারী অবস্থান নিয়েছেন শাহবাগ মোড়ে। বেশিরভাগের মাথায় বাঁধা বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা। কেউ কেউ মাথায় ‘কোটা মুক্ত দেশ চাই’ এমন ফিতাও বেঁধে রেখেছেন। সড়কে লেখা হচ্ছে গ্রাফিতি। সেখানে লেখা আছে ‘বৈষম্যমূলক কোটার বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ ও ‘কোটাসহ সকল বৈষম্য নিপাত যাক’।

এর আগে দুপুর ৩টা ৫০ মিনিটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিক থেকে একটি মিছিল নিয়ে আন্দোলনকারীরা শাহবাগ মোড়ে এসে সবদিকের রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে বসে পড়েন। এতে সবদিকের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

আন্দোলনে অংশ নিতে আসা এক শিক্ষার্থী নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে যাচ্ছি। আমাদের যদি বাধ্য করা হয় আমরা প্রয়োজনে আমরা কঠোর আন্দোলনে যাব। পূর্ব কর্মসূচি অনুযায়ী আমরা আজ শাহবাগে জড়ো হয়েছি। পরবর্তী কর্মসূচি যা দেওয়া হবে, আমরা সে অনুযায়ী পালন করব।

এর আগে শনিবার (৬ জুলাই) কোটা আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম আজ বিকেল ৩টায় সারাদেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ‘ব্লকেড’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা ছিল। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা, ১০ শতাংশ নারী, অনগ্রসর জেলার বাসিন্দাদের জন্য ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষের জন্য ৫ শতাংশ আর প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য ১ শতাংশ আসন সংরক্ষিত ছিল।

ওই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোটা সংস্কারের দাবিতে বড় বিক্ষোভ হয়। কোটা ব্যবস্থার সংস্কার করে ৫৬ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবি জানিয়েছিলেন তখনকার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। পরে সরকারি চাকরিতে (প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে) সব ধরনের কোটা বাতিল করে পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

২০২১ সালে সেই পরিপত্রের ‘মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলে’র অংশটিকে চ্যালেঞ্জ করে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান উচ্চ আদালতে একটি রিট আবেদন করেন। সেই রিটের রায়ে চলতি বছরের ৫ জুন পরিপত্রের ওই অংশ অবৈধ ঘোষণা করেন আদালত। এরপর ৯ জুন হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। ওইদিন এই আবেদন শুনানির জন্য আপিল বিভাগে পাঠিয়ে দেন চেম্বার আদালত।

সেদিন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেছিলেন, সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় বহাল থাকবে নাকি বাতিল হবে সে ব্যাপারে আপিল বিভাগ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।

পরে গত ৪ জুলাই প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের সরকারি সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় আপাতত বহাল রাখার নির্দেশ দেন এবং এই রায় প্রকাশের পর রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত আপিল করার পরামর্শ দেন।

হাইকোর্ট কোটা বাতিলের সরকারি সিদ্ধান্তকে অবৈধ ঘোষণা করার পর থেকেই আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। তারা ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল রাখার দাবি জানাচ্ছেন।