শিরোনাম :
Logo সবচেয়ে টেকসই টেলিকম কোম্পানির স্বীকৃতি পেল গ্রামীণফোন Logo বর্ষায় মসলা সংরক্ষণের ৫ উপায় Logo ৫ আগস্ট বন্ধ থাকবে ব্যাংক Logo ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের পুকুরে মিলল শিক্ষার্থীর মরদেহ Logo সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ Logo অর্থের বিনিময়ে পলাশবাড়ীর খাদ্যবান্ধব ডিলার নিয়োগ দিয়ে লাপাত্তা টিসিএফ Logo ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে শিক্ষার্থীর মৃত্যু; শিক্ষার্থীরা রাবি মেডিকেলের নাম দিল নাপা সেন্টার Logo জাতির উন্নতির জন্য জাতীয় ঐক্য প্রয়োজন – মির্জা গালিব Logo গোপালগঞ্জে চলমান কারফিউ’র মেয়াদ বাড়লো Logo লেডি দেহলভী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে মাদক বিরোধী সচেতনতামূলক সভা মাদক সমাজ ও জাতিকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেয় ………….সাখাওয়াত জামিল সৈকত

করোনার আতুর ঘর এখন গাংনীর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স 

  • rahul raj
  • আপডেট সময় : ১০:২৭:১২ পূর্বাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ৬ আগস্ট ২০২০
  • ৭৭২ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি এখন করোনার আতুর ঘর হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে সবার কাছে। তিনজন চিকিৎসক, নার্স, অফিস সহকারী, স্টোরকিপারসহ ৯ জনের কোভিড-১৯ পজিটিভ। একই সঙ্গে ল্যাব টেকনিশিয়ান রয়েছেন লকডাউনে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এম রিয়াজুল আলম আক্রান্ত হলেও তিনি করোনামুক্ত হয়ে আবারও দায়িত্ব পালন করছেন। ফলে করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধে হাসপাতালের চলমান কার্যক্রম ও স্বাস্থ্যসেবা চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। অন্যদিকে উপজেলায় করোনা আক্রান্ত সাধারণ রোগী ছাড়াও স্বাস্থ্য বিভাগের আক্রান্ত কর্মকর্তা কর্মচারীদের হোম কোয়ারেন্টিন বা সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার বিষয়টি উপেক্ষিত। ফলে করোনাভাইরাস ছড়ানোর সম্ভাবনা বেশি।
গাংনী হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ৪ আগস্ট হাসপাতালের আরএমও ডা. সাদিয়া আক্তার, নার্স আমেনা খাতুন ও স্টোর কিপার দবির উদ্দীন আক্রান্ত হন। এর আগে ২৬ জুলাই করোনা আক্রান্ত হন উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (এসএসিএমও) এসএম তানভির আহম্মেদ। একই সময়ে মেডিকেল অফিসার ডা. হামিদুল ইসলাম সস্ত্রীক ও অফিস সহকারী আসাদুল ইসলাম লিটন কোভিড-১৯ পজিটিভ হয়েছেন। আক্রান্ত ব্যক্তিরা নিজ নিজ বাড়িতে লকডাউনে হোম আইসোলেশনে আছেন। হাসপাতালের ল্যাব টেকনিশিয়ান সুনিতি রায়ের স্বামী আক্রান্ত হয়েছেন ৪ আগস্ট। ফলে সুনিতা রায় নিজ বাড়িতে লকডাউনে রয়েছেন। তিনি গাংনী হাসপাতালের করোনাভাইরাস নমুনা সংগ্রহকারী দলের অন্যতম সদস্য। তিনি লকডাউনে থাকায় নমুনা সংগ্রহ নিয়ে একটা সংকট দেখা দিয়েছে। এছাড়াও এসএম তানভির আহম্মেদ আক্রান্ত ব্যক্তিদের বাড়িতে ওষুধ পৌঁছুনো ও তাদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের নমুনা সংগ্রহকারী দলের সদস্য হিসেবে কাজ করেছেন। অপরদিকে প্রধান সহকারী আসাদুল ইসলাম লিটন ঢাকায় অপারেশন করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন বলে ধারণা সংশ্লিষ্ঠদের। বাকিরা স্থানীয়ভাবে আক্রান্ত।
বিভিন্ন এলাকা ও আক্রান্তদের বাড়িতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জ¦র সর্দি কাশি হওয়ায় করোনা টেস্টে আসেন তারা। এসময় নিজ বাড়িতে লকডাউনে না থেকে ও সামাজিক দূরত্ব না মেনেই চলাচল করছেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও, নার্সসহ যারা করোনাক্রান্ত তারা নমুনা পরীক্ষাতে দিয়ে রীতিমতো অফিস করেছেন। তাদের সংস্পর্শে এসেছেন কয়েকশত মানুষ। জ্বর সেরে যাওয়ার পর ও নমুনা পরীক্ষার রির্পোট না আসায় স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন পজেটিভ রিপোর্ট আসতে পারে ভেবে স্বাভাবিকভাবে ঘুরে বেড়িয়েছেন।
এদিকে করোনাক্রান্ত গাংনীর আমতৈল গ্রামের ইউপি সদস্য ফজলুল হক বেশ কয়েকদিন ধরে অবাধে চলাফেরা করছেন। মসজিদে নামাজ আদায় থেকে শুরু করে চায়ের দোকানে আড্ডা এবং স্বাভাবিক সব কাজকর্মই করেছেন তিনি। বামন্দীর বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আব্দুল মালেক চপল গেল দুই দিন ধরে বাইরে স্বাভাবিক চলাফেরা করছেন। একইভাবে করোনাক্রান্ত সহড়াবাড়িয়ার আওয়ামী লীগ নেতা একরামুল হক আহার চায়ের দোকানে আড্ডা আর সালিশ বৈঠক করছেন সব সময়। এরা পরিবার প্রতিবেশি এমনকি এলাকার লোকজনের জন্য জিবনের হুমকী।
অপরদিকে, জেলার একটি বড় অংশ নিয়ে গঠিত গাংনী উপজেলা। ফলে জেলার প্রায় অর্ধেক মানুষের স্বাস্থ্যসেবার একমাত্র সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে বেশিরভাগ দরিদ্র মানুষ চিকিৎসাসেবা নিয়ে থাকেন। স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন করোনা আক্রান্ত হবার কারণে সেবা দান কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে। সেই সাথে অনেকেই করোনা আক্রান্ত হবার ভয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসতে চাইছেন না।
গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এম রিয়াজুল আলম বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধে অনেক সাফল্য রয়েছে আমাদের। এ সাফল্য ধরে রাখার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। হাসপাতালে কর্মরতদের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় চিন্তিত স্বাস্থ্য বিভাগ। তিনি আরো বলেন, যারা লকডাউন বা আইসোলেশন অমান্য করছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

সবচেয়ে টেকসই টেলিকম কোম্পানির স্বীকৃতি পেল গ্রামীণফোন

করোনার আতুর ঘর এখন গাংনীর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স 

আপডেট সময় : ১০:২৭:১২ পূর্বাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ৬ আগস্ট ২০২০

নিউজ ডেস্ক:

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি এখন করোনার আতুর ঘর হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে সবার কাছে। তিনজন চিকিৎসক, নার্স, অফিস সহকারী, স্টোরকিপারসহ ৯ জনের কোভিড-১৯ পজিটিভ। একই সঙ্গে ল্যাব টেকনিশিয়ান রয়েছেন লকডাউনে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এম রিয়াজুল আলম আক্রান্ত হলেও তিনি করোনামুক্ত হয়ে আবারও দায়িত্ব পালন করছেন। ফলে করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধে হাসপাতালের চলমান কার্যক্রম ও স্বাস্থ্যসেবা চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। অন্যদিকে উপজেলায় করোনা আক্রান্ত সাধারণ রোগী ছাড়াও স্বাস্থ্য বিভাগের আক্রান্ত কর্মকর্তা কর্মচারীদের হোম কোয়ারেন্টিন বা সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার বিষয়টি উপেক্ষিত। ফলে করোনাভাইরাস ছড়ানোর সম্ভাবনা বেশি।
গাংনী হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ৪ আগস্ট হাসপাতালের আরএমও ডা. সাদিয়া আক্তার, নার্স আমেনা খাতুন ও স্টোর কিপার দবির উদ্দীন আক্রান্ত হন। এর আগে ২৬ জুলাই করোনা আক্রান্ত হন উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (এসএসিএমও) এসএম তানভির আহম্মেদ। একই সময়ে মেডিকেল অফিসার ডা. হামিদুল ইসলাম সস্ত্রীক ও অফিস সহকারী আসাদুল ইসলাম লিটন কোভিড-১৯ পজিটিভ হয়েছেন। আক্রান্ত ব্যক্তিরা নিজ নিজ বাড়িতে লকডাউনে হোম আইসোলেশনে আছেন। হাসপাতালের ল্যাব টেকনিশিয়ান সুনিতি রায়ের স্বামী আক্রান্ত হয়েছেন ৪ আগস্ট। ফলে সুনিতা রায় নিজ বাড়িতে লকডাউনে রয়েছেন। তিনি গাংনী হাসপাতালের করোনাভাইরাস নমুনা সংগ্রহকারী দলের অন্যতম সদস্য। তিনি লকডাউনে থাকায় নমুনা সংগ্রহ নিয়ে একটা সংকট দেখা দিয়েছে। এছাড়াও এসএম তানভির আহম্মেদ আক্রান্ত ব্যক্তিদের বাড়িতে ওষুধ পৌঁছুনো ও তাদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের নমুনা সংগ্রহকারী দলের সদস্য হিসেবে কাজ করেছেন। অপরদিকে প্রধান সহকারী আসাদুল ইসলাম লিটন ঢাকায় অপারেশন করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন বলে ধারণা সংশ্লিষ্ঠদের। বাকিরা স্থানীয়ভাবে আক্রান্ত।
বিভিন্ন এলাকা ও আক্রান্তদের বাড়িতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জ¦র সর্দি কাশি হওয়ায় করোনা টেস্টে আসেন তারা। এসময় নিজ বাড়িতে লকডাউনে না থেকে ও সামাজিক দূরত্ব না মেনেই চলাচল করছেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও, নার্সসহ যারা করোনাক্রান্ত তারা নমুনা পরীক্ষাতে দিয়ে রীতিমতো অফিস করেছেন। তাদের সংস্পর্শে এসেছেন কয়েকশত মানুষ। জ্বর সেরে যাওয়ার পর ও নমুনা পরীক্ষার রির্পোট না আসায় স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন পজেটিভ রিপোর্ট আসতে পারে ভেবে স্বাভাবিকভাবে ঘুরে বেড়িয়েছেন।
এদিকে করোনাক্রান্ত গাংনীর আমতৈল গ্রামের ইউপি সদস্য ফজলুল হক বেশ কয়েকদিন ধরে অবাধে চলাফেরা করছেন। মসজিদে নামাজ আদায় থেকে শুরু করে চায়ের দোকানে আড্ডা এবং স্বাভাবিক সব কাজকর্মই করেছেন তিনি। বামন্দীর বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আব্দুল মালেক চপল গেল দুই দিন ধরে বাইরে স্বাভাবিক চলাফেরা করছেন। একইভাবে করোনাক্রান্ত সহড়াবাড়িয়ার আওয়ামী লীগ নেতা একরামুল হক আহার চায়ের দোকানে আড্ডা আর সালিশ বৈঠক করছেন সব সময়। এরা পরিবার প্রতিবেশি এমনকি এলাকার লোকজনের জন্য জিবনের হুমকী।
অপরদিকে, জেলার একটি বড় অংশ নিয়ে গঠিত গাংনী উপজেলা। ফলে জেলার প্রায় অর্ধেক মানুষের স্বাস্থ্যসেবার একমাত্র সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে বেশিরভাগ দরিদ্র মানুষ চিকিৎসাসেবা নিয়ে থাকেন। স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন করোনা আক্রান্ত হবার কারণে সেবা দান কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে। সেই সাথে অনেকেই করোনা আক্রান্ত হবার ভয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসতে চাইছেন না।
গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এম রিয়াজুল আলম বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধে অনেক সাফল্য রয়েছে আমাদের। এ সাফল্য ধরে রাখার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। হাসপাতালে কর্মরতদের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় চিন্তিত স্বাস্থ্য বিভাগ। তিনি আরো বলেন, যারা লকডাউন বা আইসোলেশন অমান্য করছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।