নিউজ ডেস্ক:
করোনার প্রাদুর্ভাব বেড়েই চলেছে ব্রাজিলে।হাসপাতালগুলোতে কোভিড–১৯ রোগে আক্রান্ত মানুষের জন্য জরুরি সিটের চাহিদা এতটাই বেড়েছে যে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে।এ তথ্য জানিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সাও পাওলোর মেয়র ব্রুনো কোভাস।
বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, মেয়রের তথ্যমতে, সরকারি হাসপাতালগুলোতে ধারণ ক্ষমতার ৯০ শতাংশই পূরণ হয়ে গেছে। দুই সপ্তাহের মধ্যে আর কোনো জায়গা থাকবে না।
কোভাস বলেন, তিনি রাজ্য গভর্নরের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করছেন। হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়ার আগে সংক্রামণ কমিয়ে আনার যায় কি না। এ জন্য কঠোর লকডাউন চালুর বিষয়ে কথা বলছেন তাঁরা। সাও পাওলো রাজ্যের গভর্নর পুলিশকে নিয়ন্ত্রণ করে। লকডাউন জারি করতে তার সমর্থন জরুরি।
ব্রাজিলে করোনার সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ হয়েছে সাও পাওলোতে। দেশের সবচেয়ে বড় এই নগরে এখন পর্যন্ত ৩ হাজার মানুষ মারা গেছে। দুই মাস আগেই জনগণকে বিচ্ছিন্ন থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, স্কুল এবং জনসম্গমের জায়গা বন্ধ করে দেওয়া হয়। লোকজনকে বাড়িতে থাকতে বলা হয়।
গত শনিবার সংক্রমণের দিক দিয়ে ব্রাজিল স্পেন ও ইতালিকে ছাড়িয়ে গেছে ব্রাজিল। সংক্রমণের দিক দিয়ে ব্রাজিলের অবস্থান এখন চতুর্থ। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় ৭ হাজার ৯৩৮ জন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছে। এ নিয়ে দেশটিতে সংক্রমিত মোট মানুষের সংখ্যা ২ লাখ ৪১ হাজার। সংক্রমণে ব্রাজিলের ওপরে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও যুক্তরাজ্য।
গত ২৪ ঘন্টায় ব্রাজিলে মারা গেছে ৪৮৫ জন। এই নিয়ে মৃতের সংখ্যা ১৬ হাজার ১১৮ জন। এখন পর্যন্ত পঞ্চম সর্বোচ্চ অবস্থা।
ব্রাজিলের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, সঠিক পরীক্ষার অভাবে সংক্রমণের সঠিক সংখ্যার বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। তবে তা সরকারি হিসেবের চেয়ে অনেক বেশি হবে। করোনা মোকাবিলায় ডানপন্থী সরকার দেশে–বিদেশে ব্যাপক সমালোচিত হয়েছেন।
গতকাল রোবাবারও রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় সমর্থক ও শিশুদের সঙ্গে ছবি তোলার জন্য সামাজিক দূরত্বের বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শকে অস্বীকার করেন প্রেসিডেন্ট জায়ের বলসোনারো।
সাও পাওলোর জনসংখ্যা প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ। সরকারি পরিসংখ্যান দেখা গেছে, বেশির ভাগ বাসিন্দা সামাজিক দূরত্বের নিয়মগুলো লঙ্ঘন করছে।
ব্রাজিলে করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকটি অঞ্চল আমাজনের বৃষ্টি অরণ্যে অভ্যন্তরে । গবেষকরা বলেছেন, এটি কোভিড–১৯ এর বিস্তারে আরও একটি নতুন সংকট যোগ করছে। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে আগের বছরের তুলনায় বন নিধনের হার ৫০ শতাংশ বেড়েছে ।