মেহেরপুরে ইজিবাইক চালক খোকন হত্যা মামলায় তিন জনের মৃত্যুদন্ড

  • Nil Kontho
  • আপডেট সময় : ১১:১৮:১০ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২৩ অক্টোবর ২০১৮
  • ৭৫৩ বার পড়া হয়েছে

মেহেরপুর সংবাদদাতা॥ মেহেরপুরে চাঞ্চল্যকর ইজিবাইক চালক এনায়েত হোসেন খান খোকন হত্যা মামলায় তিন জনের মৃত্যুদন্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো: নুরুল ইসলাম এ আদেশ দেন। মৃত্যুদন্ডাদেশ প্রাপ্ত আসামিরা হলেন মেহেরপুর সদর উপজেলার গোপালপুর মাঝপাড়া গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে আলমগীর হোসেন, রামনগর কলোনিপাড়ার জিন্নাত আলীর ছেলে মামুন হোসেন, একই গ্রামের আজিম উদ্দিনের ছেলে মো: ওয়াসিম।
একই সঙ্গে তাদের একই ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অপর একটি ধারায় ওই তিন জনের যাবজ্জীন কারাদন্ড এবং ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরো ২ বছর করে জেল দিয়েছে আদালত।
মামলার বাকি দুই আসামির ৩ বছর করে জেল এবং ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদন্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন- কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার বড়বাড়িয়া গ্রামের খাইবর হোসেনের ছেলে কাবুল ইসলাম এবং দৌলতপুর উপজেলার খলিসাকুন্ডি গ্রামের সাত্তার আলীর ছেলে ফিরোজ আলী।
মামলার এজাহারে জানা গেছে, মেহেরপুর শহরের হোটেল বাজার এলাকার আব্দুল জলিল খানের ছেলে এনায়েত হোসেন খান খোকন ইজিবাইক চালিয়ে জীবন নির্বাহ করতো। ২০১৬ সালের ২৭ অক্টোবর প্রতিদিনের ন্যায় দুপুরের দিকে ইজিবাইক নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। রাতে বাড়ি না ফেরায় বাড়ির সকলে বিভিন্ন স্থানে খোজ খবর নিয়ে খুজে পায়না। পর দিন সকালে সদর উপজেলার টেংরামারি গ্রামে পাকুড়তলা নামক স্থান থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। তবে ইজিবাইকটি পাওয়া যায়না। ওই দিন রোজিনা আখতার বাদি হয়ে সদর থানায় একটি হত্যা ও ছিনতাই মামলা করেন। মামলার প্রাথমিক তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগ দাখিল করেন সদর থানার এস আই রফিকুল ইসলাম। আসামিরা ইজিবাইক খোকন কে হত্যা শেষে ইজিবাইকটি ছিনতাই করে পালিয়ে যায় বলে তদন্তে উল্লেখ করা হয়।
মামলায় কোন আসামি বা সাক্ষীর নাম না থাকলেও তদন্তাকারী কর্মকর্তা এস আই রফিকুল ইসলাম মোবাইল ফোন ট্রাকিং করে আসামিদের সনাক্ত করেন। প্রথমে সেই সূত্রে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার খলিসা কুন্ডি গ্রামের আসামি ফিরোজ আলীকে গ্রেপ্তার করেন। পরে তার দেওয়া স্বীকারোক্তী মোতাবেক অন্য আসামিদের আটক করেন। আসামি দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তী মূলক জবানবন্দী দেন। পরবর্তীতে ওই মামলায় আদালতে ১৭ জন সাক্ষ্য প্রদান করেন।
মামলার নথি ও সাক্ষীদের সাক্ষ্য পযালোচনা করে বিজ্ঞ বিচারক এই আদেশ দেন। এই আদেশের বিরুদ্ধে আসামিরা উচ্চ আদালতে আগামি সাত দিনের মধ্যে আপিল করতে পারবেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে পাবলিক প্রসিকিউটর পল্লব ভট্টাচার্য এবং আসামি পক্ষে শফিকুল আলম আইনজীবীর দায়িত্ব পালন করেন।
পাবলিক প্রসিকিউটর পল্লব ভট্টাচার্য বলেন, রায়ে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। এ রায় এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে মাইল ফলক হিসেবে কাজ করবে।
আসামি পক্ষের আইনজীবী শফিকুল আলম বলেন, এ রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে আমরা আপিল করবো।

:

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

মেহেরপুরে ইজিবাইক চালক খোকন হত্যা মামলায় তিন জনের মৃত্যুদন্ড

আপডেট সময় : ১১:১৮:১০ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২৩ অক্টোবর ২০১৮

মেহেরপুর সংবাদদাতা॥ মেহেরপুরে চাঞ্চল্যকর ইজিবাইক চালক এনায়েত হোসেন খান খোকন হত্যা মামলায় তিন জনের মৃত্যুদন্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো: নুরুল ইসলাম এ আদেশ দেন। মৃত্যুদন্ডাদেশ প্রাপ্ত আসামিরা হলেন মেহেরপুর সদর উপজেলার গোপালপুর মাঝপাড়া গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে আলমগীর হোসেন, রামনগর কলোনিপাড়ার জিন্নাত আলীর ছেলে মামুন হোসেন, একই গ্রামের আজিম উদ্দিনের ছেলে মো: ওয়াসিম।
একই সঙ্গে তাদের একই ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অপর একটি ধারায় ওই তিন জনের যাবজ্জীন কারাদন্ড এবং ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরো ২ বছর করে জেল দিয়েছে আদালত।
মামলার বাকি দুই আসামির ৩ বছর করে জেল এবং ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদন্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন- কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার বড়বাড়িয়া গ্রামের খাইবর হোসেনের ছেলে কাবুল ইসলাম এবং দৌলতপুর উপজেলার খলিসাকুন্ডি গ্রামের সাত্তার আলীর ছেলে ফিরোজ আলী।
মামলার এজাহারে জানা গেছে, মেহেরপুর শহরের হোটেল বাজার এলাকার আব্দুল জলিল খানের ছেলে এনায়েত হোসেন খান খোকন ইজিবাইক চালিয়ে জীবন নির্বাহ করতো। ২০১৬ সালের ২৭ অক্টোবর প্রতিদিনের ন্যায় দুপুরের দিকে ইজিবাইক নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। রাতে বাড়ি না ফেরায় বাড়ির সকলে বিভিন্ন স্থানে খোজ খবর নিয়ে খুজে পায়না। পর দিন সকালে সদর উপজেলার টেংরামারি গ্রামে পাকুড়তলা নামক স্থান থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। তবে ইজিবাইকটি পাওয়া যায়না। ওই দিন রোজিনা আখতার বাদি হয়ে সদর থানায় একটি হত্যা ও ছিনতাই মামলা করেন। মামলার প্রাথমিক তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগ দাখিল করেন সদর থানার এস আই রফিকুল ইসলাম। আসামিরা ইজিবাইক খোকন কে হত্যা শেষে ইজিবাইকটি ছিনতাই করে পালিয়ে যায় বলে তদন্তে উল্লেখ করা হয়।
মামলায় কোন আসামি বা সাক্ষীর নাম না থাকলেও তদন্তাকারী কর্মকর্তা এস আই রফিকুল ইসলাম মোবাইল ফোন ট্রাকিং করে আসামিদের সনাক্ত করেন। প্রথমে সেই সূত্রে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার খলিসা কুন্ডি গ্রামের আসামি ফিরোজ আলীকে গ্রেপ্তার করেন। পরে তার দেওয়া স্বীকারোক্তী মোতাবেক অন্য আসামিদের আটক করেন। আসামি দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তী মূলক জবানবন্দী দেন। পরবর্তীতে ওই মামলায় আদালতে ১৭ জন সাক্ষ্য প্রদান করেন।
মামলার নথি ও সাক্ষীদের সাক্ষ্য পযালোচনা করে বিজ্ঞ বিচারক এই আদেশ দেন। এই আদেশের বিরুদ্ধে আসামিরা উচ্চ আদালতে আগামি সাত দিনের মধ্যে আপিল করতে পারবেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে পাবলিক প্রসিকিউটর পল্লব ভট্টাচার্য এবং আসামি পক্ষে শফিকুল আলম আইনজীবীর দায়িত্ব পালন করেন।
পাবলিক প্রসিকিউটর পল্লব ভট্টাচার্য বলেন, রায়ে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। এ রায় এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে মাইল ফলক হিসেবে কাজ করবে।
আসামি পক্ষের আইনজীবী শফিকুল আলম বলেন, এ রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে আমরা আপিল করবো।

: