সিরাজগঞ্জে বাধ ভাঙ্গন, তলিয়ে গেছে ১০ গ্রাম নিয়ন্ত্রনে কাজ করছে সেনাবাহিনী

  • Nil Kontho
  • আপডেট সময় : ০৩:৪৮:১০ অপরাহ্ণ, শনিবার, ১৫ জুলাই ২০১৭
  • ৭৬১ বার পড়া হয়েছে

 রাকিবুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:  সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি কমতে শুরু করলেও পানির প্রবল চাপের কারনে বৃহস্পতিবার রাতে  সদর উপজেলার রতনকান্দি ইউনিয়নের বাহুকা চৌধূরীবাড়ি এলাকায় নির্মাণাধীন নদী তীর রক্ষা বাঁধের ২০ মিটার এলাকায় ভাঙ্গনের পর শুক্রবার ধসের বিস্তৃতি বেড়ে ৪০ মিটারে দাড়ায়। রাত থেকেই বাধের ধস নিয়ন্ত্রনে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড ও  সেনাবাহিনীর একটি টিম বাধ সংস্কারে কাজ করছে। বাধ ধসের কারনে এ ইউনিয়নে প্রায় ১০টি গ্রামে গ্রামে পানিতে তলিয়ে গেছে। নষ্ট হয়েছে ঘড়বাড়ি ও ফসলি জমি।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ হাসান ইমাম জানান, বঙ্গবন্ধু সেতুর পুর্বপাড়ে অবস্থিত সেনা ক্যাম্পের ১১ পদাধিক ডিভিসন রিভার কোরের মেজর সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি টিম ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের যৌথ প্রচেষ্টায় ভেঙ্গে যাওয়া প্রায় ৪০ মিটার বাধ এলাকা নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব হয়েছে। রাত ২টা থেকে কাজ শুরুর পর থেকে সেখানে বাশেঁর পাইলিং, বালি ভর্তি জিওব্যাগ ও প্লাষ্টিকের বস্তা ফেলা হচ্ছে। আশা করছি দুপুরে মধ্যে সংস্কার কাজ শেষ হবে।  তিনি আরও বলেন, চলতি বছরের মে মাসে ১৭৪০ মিটার দীর্ঘ এ বাধের নির্মান কাজ শুরু হয়। ইতোমধ্যে বাধের ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। ভাঙ্গন স্থানটি বাধ ও একটি সংযোগ রাস্তার সংযোগস্থল। সেখানে একটি খড়ের পালার নিচে অবস্থিত একটি ইদুরের গর্ত দিয়ে প্রথমে পানি প্রবেশ করতে থাকে। গর্তটি বন্ধ করতে গেলে বাড়ির মালিক পানি উন্নয়ন বোর্ড ও ঠিকাদারের লোকজনকে লাঞ্চিত করায় গর্তটি বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। যে কারনে ওই ইদুরের গর্তটি ক্রমশ: বড় হয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করতে থাকে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। নির্মানাধীন বাধের বাকি ২০ ভাগ নির্মান কাজ আগামীকাল থেকে শুরু করা হবে বলেও জানিয়েছেন এই পাউবো কর্মকর্তা। এলাকাবাসীর অভিরযাগ যদি সময়মত বাধটির নির্মান কাজ শেষ হতো তবে কাহলে কাদের এ অবস্থায় পরকে হতো না ।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে যমুনা নদীর পানির প্রবল চাপে ভাঙ্গন স্থান দিয়ে পানি প্রবেশ করে বাহুকা, ইটালি, সিমলা, বালিঘুগরি, চিলগাছা, ভেওয়ামারা, গজারিয়া ও পাঁচ ঠাকুরীসহ আশপাশের এলাকা প্লাবিত হলেও বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। এসব এলাকার বেশ কিছু আতংকিত লোকজন রাতেই বাড়িঘর সরিয়ে অন্যত্র নেয়। সংবাদ পেয়ে রাতে সিরাজগঞ্জ-১ আসনের সাবেক এমপি ইঞ্জি: তানভীর শাকিল জয়, জেলা প্রশাসক কামরুন নাহার সিদ্দিকা ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শক করেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাতেই আতংকিত লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে তাদের মাঝে ত্রান সামগ্রী বিতরন করা করা। বাঁধ ভাঙ্গার সংবাদে উদ্বেগ প্রকাশ করে এলাকার মানুষকে শান্ত থাকার আহবান জানান আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। এক বিবৃতিতে মন্ত্রী বাঁধের ভাঙ্গা অংশ দ্রুত সময়ের মধ্যে সংস্কার এবং বাঁধ অভ্যন্তরের ক্ষয়ক্ষতি যাতে কম হয় সে জন্য জরুরী ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
এ দিকে আজ থেকে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীতে পানি কমতে শুরু  করেছে । গতকাল পানি ৪ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ৬৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে । পানি কমতে শুরু করলেও বান ভাসী মানুষের দুর্ভোগ এখনও শেষ হয়নি ।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

সিরাজগঞ্জে বাধ ভাঙ্গন, তলিয়ে গেছে ১০ গ্রাম নিয়ন্ত্রনে কাজ করছে সেনাবাহিনী

আপডেট সময় : ০৩:৪৮:১০ অপরাহ্ণ, শনিবার, ১৫ জুলাই ২০১৭

 রাকিবুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:  সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি কমতে শুরু করলেও পানির প্রবল চাপের কারনে বৃহস্পতিবার রাতে  সদর উপজেলার রতনকান্দি ইউনিয়নের বাহুকা চৌধূরীবাড়ি এলাকায় নির্মাণাধীন নদী তীর রক্ষা বাঁধের ২০ মিটার এলাকায় ভাঙ্গনের পর শুক্রবার ধসের বিস্তৃতি বেড়ে ৪০ মিটারে দাড়ায়। রাত থেকেই বাধের ধস নিয়ন্ত্রনে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড ও  সেনাবাহিনীর একটি টিম বাধ সংস্কারে কাজ করছে। বাধ ধসের কারনে এ ইউনিয়নে প্রায় ১০টি গ্রামে গ্রামে পানিতে তলিয়ে গেছে। নষ্ট হয়েছে ঘড়বাড়ি ও ফসলি জমি।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ হাসান ইমাম জানান, বঙ্গবন্ধু সেতুর পুর্বপাড়ে অবস্থিত সেনা ক্যাম্পের ১১ পদাধিক ডিভিসন রিভার কোরের মেজর সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি টিম ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের যৌথ প্রচেষ্টায় ভেঙ্গে যাওয়া প্রায় ৪০ মিটার বাধ এলাকা নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব হয়েছে। রাত ২টা থেকে কাজ শুরুর পর থেকে সেখানে বাশেঁর পাইলিং, বালি ভর্তি জিওব্যাগ ও প্লাষ্টিকের বস্তা ফেলা হচ্ছে। আশা করছি দুপুরে মধ্যে সংস্কার কাজ শেষ হবে।  তিনি আরও বলেন, চলতি বছরের মে মাসে ১৭৪০ মিটার দীর্ঘ এ বাধের নির্মান কাজ শুরু হয়। ইতোমধ্যে বাধের ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। ভাঙ্গন স্থানটি বাধ ও একটি সংযোগ রাস্তার সংযোগস্থল। সেখানে একটি খড়ের পালার নিচে অবস্থিত একটি ইদুরের গর্ত দিয়ে প্রথমে পানি প্রবেশ করতে থাকে। গর্তটি বন্ধ করতে গেলে বাড়ির মালিক পানি উন্নয়ন বোর্ড ও ঠিকাদারের লোকজনকে লাঞ্চিত করায় গর্তটি বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। যে কারনে ওই ইদুরের গর্তটি ক্রমশ: বড় হয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করতে থাকে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। নির্মানাধীন বাধের বাকি ২০ ভাগ নির্মান কাজ আগামীকাল থেকে শুরু করা হবে বলেও জানিয়েছেন এই পাউবো কর্মকর্তা। এলাকাবাসীর অভিরযাগ যদি সময়মত বাধটির নির্মান কাজ শেষ হতো তবে কাহলে কাদের এ অবস্থায় পরকে হতো না ।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে যমুনা নদীর পানির প্রবল চাপে ভাঙ্গন স্থান দিয়ে পানি প্রবেশ করে বাহুকা, ইটালি, সিমলা, বালিঘুগরি, চিলগাছা, ভেওয়ামারা, গজারিয়া ও পাঁচ ঠাকুরীসহ আশপাশের এলাকা প্লাবিত হলেও বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। এসব এলাকার বেশ কিছু আতংকিত লোকজন রাতেই বাড়িঘর সরিয়ে অন্যত্র নেয়। সংবাদ পেয়ে রাতে সিরাজগঞ্জ-১ আসনের সাবেক এমপি ইঞ্জি: তানভীর শাকিল জয়, জেলা প্রশাসক কামরুন নাহার সিদ্দিকা ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শক করেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাতেই আতংকিত লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে তাদের মাঝে ত্রান সামগ্রী বিতরন করা করা। বাঁধ ভাঙ্গার সংবাদে উদ্বেগ প্রকাশ করে এলাকার মানুষকে শান্ত থাকার আহবান জানান আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। এক বিবৃতিতে মন্ত্রী বাঁধের ভাঙ্গা অংশ দ্রুত সময়ের মধ্যে সংস্কার এবং বাঁধ অভ্যন্তরের ক্ষয়ক্ষতি যাতে কম হয় সে জন্য জরুরী ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
এ দিকে আজ থেকে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীতে পানি কমতে শুরু  করেছে । গতকাল পানি ৪ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ৬৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে । পানি কমতে শুরু করলেও বান ভাসী মানুষের দুর্ভোগ এখনও শেষ হয়নি ।