শুক্রবার | ২৮ নভেম্বর ২০২৫ | হেমন্তকাল
শিরোনাম :
Logo গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি রবিউল হাসানকে চাঁদপুর জেলার পুলিশ সুপার পদে বদলী Logo প্রতিষ্ঠার পর থেকে নির্মাণ হয়নি চাঁদপুর সদর হাসপাতালে স্থায়ী মর্গ, জীর্ণ-ভবনে ময়নাতদন্ত Logo চাঁদপুর ফরিদগঞ্জে তারুণ্যের আলো সামাজিক উন্নয়ন পরিষদের উদ্যোগ ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প Logo ফের ভূমিকম্প Logo কচুয়ায় জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ উপলক্ষে ৩০টি প্রদর্শনী Logo কুবির বাংলা বিভাগের বাংলা নাটক বিষয়ক প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলন Logo মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় যুবক নিহত Logo মাগুরার শ্রীপুরে প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ ও প্রদর্শনী- ২০২৫ এর উদ্বোধন Logo পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় জাতীয় প্রাণীসম্পদ সপ্তাহ ২০২৫ প্রদর্শনী Logo আমরা নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে কাজ করছি: চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের বিএনপির প্রার্থী বাবু খান

ক্যান্সার আক্রান্ত মেয়ের জন্য ক্রিকেট থেকে অবসর!

  • amzad khan
  • আপডেট সময় : ০৬:০৫:৫৬ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০১৬
  • ৮১৬ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

বাবা নামিদামি ক্রিকেটার। ক্রিকেট ম্যাচের ব্যস্ত সূচির মাঝে তার সঙ্গ পাওয়া ভার।

নিশ্চয়ই ছোট্ট মেয়ে মিয়ার মন খারাপ থাকত। তাই কী ঈশ্বর এভাবে মেয়ের কাছে এনে দিলেন বাবাকে! বাবা ব্র্যাড হ্যাডিন অজি দলের নির্ভরযোগ্য উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান ছিলেন। তিনি মেয়ের জন্য বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের ইতি টেনেছিলেন গত বছর। সম্প্রতি তার আত্মজীবনীতে তিনি এই ঘটনা প্রকাশ করেন।’মাই ফ্যামিলিজ কিপার’ বইটির শুরুর চ্যাপ্টারেই লেখা আছে, দলের সঙ্গে হ্যাডিন তখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে। ভোর ৬টা ৩০ মিনিটে অস্ট্রেলিয়া থেকে একটি ফোন কল এলো। ফোন করেছির তার স্ত্রী কারিনা। সেই ফোন কলের মাধ্যেই অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম সেরা এই উইকেটকিপার পেলেন জীবনের সবচেয়ে বড় দুঃসংবাদটি! তার ১৬ মাস বয়সী মেয়েটিকে মরণব্যাধি ক্যান্সার আক্রমণ করেছে। কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে হ্যাডিন জিজ্ঞেস করেন, “ও কী মারা যাচ্ছে?” টেলিফোনের অপর প্রান্তে হ্যাডিনের স্ত্রী চিৎকার করে কাঁদছিলেন। আদরের মেয়েকে দেখতে এক মুহূর্ত দেরি না করে প্লেনে ওঠেন হ্যাডিন। ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ থেকে সেন্ট ভিনসেন্ট, বার্বাডোজ, লন্ডন এবং সিঙ্গাপুর হয়ে সে এক ভয়ানক দীর্ঘ জার্নি!

তারপর মেয়েকে নিয়ে সোজা হাসপাতালে। শুরু হলো ক্যান্সারের বিরুদ্ধে চিকিৎসাবিজ্ঞানের লড়াই। একটা সময় নিজের ক্যারিয়ার আর মেয়েকে বাঁচানোর লড়াই একসঙ্গে চালিয়ে যেতে পারছিলেন না হ্যাডিন। শেষ পর্যন্ত গত বছরের সেপ্টেম্বরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন তিনি। এরপর দীর্ঘ ৪ বছরের লড়াইয়ের পর জয়ী হয় বিজ্ঞান। ক্যান্সারের হাত থেকে এখনও শতভাগ মুক্ত না হলেও উচ্ছ্বল প্রাণবন্ত এক শিশু হয়ে বেড়ে উঠছে মিয়া। বাবারও এখন অনেক সময়। মেয়েকে চোখের আড়াল করতে চান না তিনি। লড়াই যেটুকু বাকি আছে সেটুকুও চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। হ্যাডিনের ভাষায়, “এই লড়াই কোনো বাবা মা কি কখনও আশা করে?”

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে অশ্রুসজল চোখে তিনি আরও বলেন, “আমার মেয়েটা এখনও বোঝে না তার কী হয়েছিল। বিগত চার বছরের কিছুই তার মনে তেমন কোনো প্রভাব ফেলেনি। সে শুধু জানে একদিন তার এই কষ্টগুলো হবে না। আমরা সেই দিনটির প্রত্যাশায় আছে যেদিন আমাদের মেয়ে পুরোপুরি রোগমুক্ত হবে। ”

নিজের বইয়ে বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা প্রসঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে সম্প্রতি হ্যাডিন বলেছেন, “আমি প্রথমে ভেবেছিলাম নিজেদের ব্যক্তিগত কথা জনসমক্ষে প্রকাশ করব কিনা। কিন্তু আমার স্ত্রী এতে সম্মতি দেওয়ায় আমি আগ্রহ খুঁজে পাই। মেয়েকে নিয়ে আমাদের সংগ্রামের কথা সবাইকে জানাতে চাই। আমি এবং আমার স্ত্রী চেয়েছি, এটা যেন শুধু একটি গতানুগতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারের ওপর বই না হয়। বরং একজন ক্রিকেটারের ব্যক্তিগত জীবনের নানা সংগ্রামের কথা মানুষ যেন জানতে পারে। ”

উল্লেখ্য, হ্যাডিন-কারিনা দম্পতির ৫ বছর বয়সী একটি ছেলে রয়েছে। নাম জ্যাক।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি রবিউল হাসানকে চাঁদপুর জেলার পুলিশ সুপার পদে বদলী

ক্যান্সার আক্রান্ত মেয়ের জন্য ক্রিকেট থেকে অবসর!

আপডেট সময় : ০৬:০৫:৫৬ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০১৬

নিউজ ডেস্ক:

বাবা নামিদামি ক্রিকেটার। ক্রিকেট ম্যাচের ব্যস্ত সূচির মাঝে তার সঙ্গ পাওয়া ভার।

নিশ্চয়ই ছোট্ট মেয়ে মিয়ার মন খারাপ থাকত। তাই কী ঈশ্বর এভাবে মেয়ের কাছে এনে দিলেন বাবাকে! বাবা ব্র্যাড হ্যাডিন অজি দলের নির্ভরযোগ্য উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান ছিলেন। তিনি মেয়ের জন্য বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের ইতি টেনেছিলেন গত বছর। সম্প্রতি তার আত্মজীবনীতে তিনি এই ঘটনা প্রকাশ করেন।’মাই ফ্যামিলিজ কিপার’ বইটির শুরুর চ্যাপ্টারেই লেখা আছে, দলের সঙ্গে হ্যাডিন তখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে। ভোর ৬টা ৩০ মিনিটে অস্ট্রেলিয়া থেকে একটি ফোন কল এলো। ফোন করেছির তার স্ত্রী কারিনা। সেই ফোন কলের মাধ্যেই অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম সেরা এই উইকেটকিপার পেলেন জীবনের সবচেয়ে বড় দুঃসংবাদটি! তার ১৬ মাস বয়সী মেয়েটিকে মরণব্যাধি ক্যান্সার আক্রমণ করেছে। কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে হ্যাডিন জিজ্ঞেস করেন, “ও কী মারা যাচ্ছে?” টেলিফোনের অপর প্রান্তে হ্যাডিনের স্ত্রী চিৎকার করে কাঁদছিলেন। আদরের মেয়েকে দেখতে এক মুহূর্ত দেরি না করে প্লেনে ওঠেন হ্যাডিন। ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ থেকে সেন্ট ভিনসেন্ট, বার্বাডোজ, লন্ডন এবং সিঙ্গাপুর হয়ে সে এক ভয়ানক দীর্ঘ জার্নি!

তারপর মেয়েকে নিয়ে সোজা হাসপাতালে। শুরু হলো ক্যান্সারের বিরুদ্ধে চিকিৎসাবিজ্ঞানের লড়াই। একটা সময় নিজের ক্যারিয়ার আর মেয়েকে বাঁচানোর লড়াই একসঙ্গে চালিয়ে যেতে পারছিলেন না হ্যাডিন। শেষ পর্যন্ত গত বছরের সেপ্টেম্বরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন তিনি। এরপর দীর্ঘ ৪ বছরের লড়াইয়ের পর জয়ী হয় বিজ্ঞান। ক্যান্সারের হাত থেকে এখনও শতভাগ মুক্ত না হলেও উচ্ছ্বল প্রাণবন্ত এক শিশু হয়ে বেড়ে উঠছে মিয়া। বাবারও এখন অনেক সময়। মেয়েকে চোখের আড়াল করতে চান না তিনি। লড়াই যেটুকু বাকি আছে সেটুকুও চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। হ্যাডিনের ভাষায়, “এই লড়াই কোনো বাবা মা কি কখনও আশা করে?”

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে অশ্রুসজল চোখে তিনি আরও বলেন, “আমার মেয়েটা এখনও বোঝে না তার কী হয়েছিল। বিগত চার বছরের কিছুই তার মনে তেমন কোনো প্রভাব ফেলেনি। সে শুধু জানে একদিন তার এই কষ্টগুলো হবে না। আমরা সেই দিনটির প্রত্যাশায় আছে যেদিন আমাদের মেয়ে পুরোপুরি রোগমুক্ত হবে। ”

নিজের বইয়ে বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা প্রসঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে সম্প্রতি হ্যাডিন বলেছেন, “আমি প্রথমে ভেবেছিলাম নিজেদের ব্যক্তিগত কথা জনসমক্ষে প্রকাশ করব কিনা। কিন্তু আমার স্ত্রী এতে সম্মতি দেওয়ায় আমি আগ্রহ খুঁজে পাই। মেয়েকে নিয়ে আমাদের সংগ্রামের কথা সবাইকে জানাতে চাই। আমি এবং আমার স্ত্রী চেয়েছি, এটা যেন শুধু একটি গতানুগতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারের ওপর বই না হয়। বরং একজন ক্রিকেটারের ব্যক্তিগত জীবনের নানা সংগ্রামের কথা মানুষ যেন জানতে পারে। ”

উল্লেখ্য, হ্যাডিন-কারিনা দম্পতির ৫ বছর বয়সী একটি ছেলে রয়েছে। নাম জ্যাক।