নিউজ ডেস্ক:
অনুমতি না নিয়েই তৃণমূল বিএনপির যুক্তরাষ্ট্র শাখার সভাপতি হিসেবে সাংবাদিক ও উপস্থাপক আশরাফুল হাসান বুলবুলের নাম ঘোষণা করা হয়েছে বলে তিনি নিজেই অভিযোগ করেছেন। গত শুক্রবার (৫ মে) বিকেল ৪টায় এ কমিটি ঘোষণার ৫ ঘণ্টা পরই এ বিস্ময় প্রকাশ করেন তিনি।
নিউইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটসে মেজবান রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তৃণমূল বিএনপির কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা ৩১ সদস্যবিশিষ্ট যুক্তরাষ্ট্র শাখার নাম ঘোষণা করেন। এতে সাংবাদিক ও উপস্থাপক আশরাফুল হাসান বুলবুলকে সভাপতি এবং মাহবুবুর রহমান সবুজকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- অভিনেতা আহমদ শরীফ। তবে আশরাফুল হাসান বুলবুল উপস্থিত ছিলেন না।
সংবাদ সম্মেলন শেষ করেই জেএফকে এয়ারপোর্ট হয়ে লন্ডনে চলে যান ব্যারিস্টার হুদা। এদিন সন্ধ্যার পর কমিটি ঘোষণার ৫ ঘন্টা পরই এক লিখিত বিবৃতিতে গণমাধ্যমকে আশরাফুল হাসান বুলবুল বলেন, ‘তৃণমূল বিএনপি’র সাথে আমার কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা নেই। তৃণমূল বিএনপি’র আমি কেউ না।
বুলবুল আরও বলেন, ‘শুক্রবার নিউইয়র্কে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা আমাকে সভাপতি করে একটি কমিটি ঘোষণা করেন, যা অনভিপ্রেত। ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার সঙ্গে আত্মীয়তার সম্পর্ক থাকলেও তার রাজনীতির সঙ্গে আমার কখনোই কোনো সংশ্লিষ্টতা ছিল না, এখনো নেই।
এ নিয়ে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আশরাফুল হাসান বুলবুল।
ব্যারিস্টার হুদা সপ্তাহখানেক আগে নিউইয়র্কে এসেছিলেন তার নির্বাচনী এলাকার একটি সামাজিক সংগঠনের অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্যে। এরপরই তিনি নিউইয়র্কে বিভিন্ন জনের সাথে, বিশেষ করে নিষিদ্ধ ঘোষিত ফ্রিডম পার্টি এবং জামায়াত-শিবিরের ঘনিষ্ঠ লোকজনের সাথে মতবিনিময়ের পরই তৃণমূল বিএনপির যুক্তরাষ্ট্র শাখা ঘোষণা করেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। ঘোষিত কমিটির অপর কর্মকর্তারা হলেন সিনিয়র সহ-সভাপতি-রিমন ইসলাম, সহ-সভাপতি আলমগীর হোসেন, আবু সাদেক, জাকির হোসেন এবং মনিরুল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক-নজরুল ইসলাম, শরিফ খান এবং মোহাম্মদ হেলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক-রিয়াদ উদ্দিন ও মেহদী হাসান মনির, কোষাধ্যক্ষ-শাহিনূর রহমান বিপ্লব, প্রচার সম্পাদক-আনামুল হক, দফতর সম্পাদক-রাকিবুল আলম, মহিলা সম্পাদিকা-জেসমীন রহমান ডালিয়া, সাংস্কৃতিক সম্পাদক-ফারাহ চৌধুরী প্রমুখ।
এর আগে নিউইয়র্কস্থ নবাবগঞ্জ সমিতির সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা বলেন, আমি নবাবগঞ্জকে এগিয়ে নিতে চাই। আমার চাচা সালমান এফ রহমান আগামী নির্বাচনে দোহার-নবাবগঞ্জ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। আমি চাচাকে সহায়তা করবো। কারণ, আমি কারো প্রতিপক্ষ নই। আমার নতুন রাজনীতি হচ্ছে সবার জন্য ভালবাসা, কারো প্রতি বৈরিতা নয়, যে জন্য তৃণমূল বিএনপি নামে দল গঠন করেছি।
বিএনপির সাবেক এই নেতা বলেন, ‘আমি বিএনপির রাজনীতি থেকে ভিন্ন পথে। জিয়াউর রহমানের সাথে থেকে এই দল প্রতিষ্ঠা করেছি। এই দলের প্রথম ৯ জনের একজন ছিলাম আমি। বিএনপি থেকেই নির্বাচন করে আমি সংসদে যাই এবং মন্ত্রীও হয়েছি। বিএনপি চলতো শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়ার ১৯ দফার ভিত্তিতে। কিন্তু বর্তমান বিএনপিতে জিয়ার ১৯ দফা নেই। সেজন্যেই পদত্যাগ করেছি।
সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার হুদা বলেন, আমি বিএনপির চেয়ারপার্সনকে বলেছি, আমি সহিংসতার রাজনীতি চাই না। পেট্রল বোমা মেরে মানুষ হত্যার রাজনীতি চাই না, দেশের সম্পদ নষ্ট হয়-এমন রাজনীতি চাই না। খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সমঝোতা করে দেশ চালানোর অনুরোধ করি, কিন্তু তিনি আমার কথা রাখেননি। এজন্যেই আমি সরে দাঁড়িয়েছি। আমার নতুন স্লোগান হচ্ছে- সুস্থ রাজনীতি, সুশাসন আর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা।