শিরোনাম :
Logo ঘাতকের বুলেটে সাভারের রাজপথে অত্যন্ত নির্মমভাবে শহীদ হন শিক্ষার্থী ইয়ামিন Logo পলাশবাড়ীতে ধানের শীর্ষ প্রতিকের পক্ষে উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত Logo হাবিপ্রবিতে প্রথমবারের মতো দুই দিনব্যাপী ব্র‍্যাকনেট প্রেজেন্টস আইইইই কম্পিউটার সোসাইটি সামার সিম্পোজিয়াম ২০২৫ Logo সাজিদের মৃত্যু ‘অস্বাভাবিক’ দাবি করে ইবি শিক্ষার্থীদের প্রেস কনফারেন্স Logo শেরপুরে ‘রূপসী শেরপুর’-এর মাসব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি উদ্বোধন Logo জবির উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত Logo খাগড়াছড়ির ত্রিপুরা কিশোরীকে ধর্ষণের প্রতিবাদে রাবিতে বিক্ষোভ মিছিল Logo ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন Logo সাজিদের জানাজা সম্পন্ন, মৃত্যুরহস্য উদঘাটনে তদন্তের ঘোষণা Logo ঊচত এর দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ

শৈলকুপায় পানির স্তর নেমে ৩০ হাজার নলকূপ অচল, ব্যাপক সংকটে খাবার পানি !

  • Nil Kontho
  • আপডেট সময় : ১০:৪২:৩৬ অপরাহ্ণ, সোমবার, ১৭ এপ্রিল ২০১৭
  • ৭৬০ বার পড়া হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার,ঝিনাইদহঃ  ঝিনাইদহ শৈলকুপা উপজেলায় প্রায় ৩০ হাজার হস্তচালিত নলকূপ অচল হয়ে পড়েছে। এতে শৈলকূপ পৌরসভাসহ ৯টি ইউনিয়নে খাবার পানির সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় হস্তচালিত নলকূপে পানি উঠছে না। পাশাপাশি অনেক অগভীর নলকূপ (শ্যালো মেশিন) দিয়েও পানি উঠছে না। ফলে সেচ দেয়া নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছে।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তার সূত্রে জানা যায়, বেশ কয়েক বছর ধরে শুষ্ক মৌসুমে গড়াই নদী শুকিয়ে যায়। এর ফলে গড়াই তীরবর্তী সারুটিয়া, হাকিমপুর ও ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নে এ সময় মৌসুমে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যায়। ফলে হস্তচালিত নলকূপ অচল হয়ে পড়ে। সৃষ্টি হয় খাবার পানির সংকট। যত দিন যাচ্ছে সঙ্কট তত প্রকট হচ্ছে।

এ বছর ওই তিন ইউনিয়নের সাথে কাঁচেরকোল, মনোহরপুর, বগুড়া, আবাইপুর, নিত্যানন্দপুর, উমেদপুর ও পৌরসভা এলাকায় ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর নেমে গেছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল দপ্তর থেকে ‘তারা পাম্প’ স্থাপনের উপদেশ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু ‘তারা পাম্প’ স্থাপন ব্যয় বহুল। সাধারণ গৃহস্থের পক্ষে তা সম্ভব নয়। অনেকে ‘মিনি তারা পাম্প’ বসিয়ে পানি সঙ্কট থেকে উত্তরণের পথ খুঁজছেন। আবার কোনো কোনো স্থানে ‘মিনি তারা পাম্পেও’ পানি উঠছে না।

কৃষকরা জানান, ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় অনেক স্থানে অগভীর নলকূপ (শ্যালো মেশিন) দিয়ে পানি উঠছে না। ৮-১০ ফুট গর্ত খুঁড়ে শ্যালো মেশিন গুলো সেখানে বসানো হচ্ছে। সেচের পানির অভাবে সদ্য বপনকৃত পাট শুকিয়ে যাচ্ছে। মাঠ ফেটে চৌচির হচ্ছে। ব্রহ্মপুর গ্রামের চাষি বেল্লাল হোসেন বলেন, ইঞ্জিন গর্তে বসানোর পরেও পানি উত্তোলনের পরিমাণ বাড়ছে না। কম পানি উঠছে।

এক বিঘা পাট ক্ষেতে সেচ দিতে ৭-৮ লিটার ডিজেল লাগছে। আগে এক বিঘা জমিতে একবার সেচ দিতে সেচযন্ত্রের মালিকরা ৮শ’ টাকা নিত। এখন ১২শ’ টাকা নিচ্ছে। অনেক পুকুরের পানিও শুকিয়ে গেছে। শৈলকুপা ১৮ নম্বর সরকারি প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুল আজিজ জানান, তার স্কুলের ২টি নলকূপ অচল হয়ে গেছে। ছাত্ররা খাবার পানির অভাবে পড়েছে।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের শৈলকুপার সহকারী প্রকৌশলী জালাল আহমেদ বলেন, অক্টোবর মাস থেকে বৃষ্টি হয় না। ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর ২০ ফুটের নিচে নেমে গেলে হস্তচালিত নলকূপে পানি উঠে না। এখন পানির স্তর ৩০-৩৫ ফুট নিচে নেমে গেছে। এতে খাবার পানির সংকট সৃষ্টি হয়েছে বলে তিনি স্বীকার করেন।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ঝিনাইদহের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ রাশিদুল আলম বলেন, কুমার ও গড়াই নদীর পানি তলানীতে ঠেকেছে। পাশাপাশি বৃষ্টি নেই, এজন্য হস্তচালিত নলকূপ অচল হয়ে পড়েছে। সমস্যা সমাধানের জন্য পল্লী পানি সরবরাহ কর্মসূচির অধীন ৬০টি ‘তারা পাম্প’ বসানোর টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। তবে প্রয়োজনের তুলনায় এ সংখ্যা নগণ্য।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

ঘাতকের বুলেটে সাভারের রাজপথে অত্যন্ত নির্মমভাবে শহীদ হন শিক্ষার্থী ইয়ামিন

শৈলকুপায় পানির স্তর নেমে ৩০ হাজার নলকূপ অচল, ব্যাপক সংকটে খাবার পানি !

আপডেট সময় : ১০:৪২:৩৬ অপরাহ্ণ, সোমবার, ১৭ এপ্রিল ২০১৭

স্টাফ রিপোর্টার,ঝিনাইদহঃ  ঝিনাইদহ শৈলকুপা উপজেলায় প্রায় ৩০ হাজার হস্তচালিত নলকূপ অচল হয়ে পড়েছে। এতে শৈলকূপ পৌরসভাসহ ৯টি ইউনিয়নে খাবার পানির সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় হস্তচালিত নলকূপে পানি উঠছে না। পাশাপাশি অনেক অগভীর নলকূপ (শ্যালো মেশিন) দিয়েও পানি উঠছে না। ফলে সেচ দেয়া নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছে।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তার সূত্রে জানা যায়, বেশ কয়েক বছর ধরে শুষ্ক মৌসুমে গড়াই নদী শুকিয়ে যায়। এর ফলে গড়াই তীরবর্তী সারুটিয়া, হাকিমপুর ও ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নে এ সময় মৌসুমে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যায়। ফলে হস্তচালিত নলকূপ অচল হয়ে পড়ে। সৃষ্টি হয় খাবার পানির সংকট। যত দিন যাচ্ছে সঙ্কট তত প্রকট হচ্ছে।

এ বছর ওই তিন ইউনিয়নের সাথে কাঁচেরকোল, মনোহরপুর, বগুড়া, আবাইপুর, নিত্যানন্দপুর, উমেদপুর ও পৌরসভা এলাকায় ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর নেমে গেছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল দপ্তর থেকে ‘তারা পাম্প’ স্থাপনের উপদেশ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু ‘তারা পাম্প’ স্থাপন ব্যয় বহুল। সাধারণ গৃহস্থের পক্ষে তা সম্ভব নয়। অনেকে ‘মিনি তারা পাম্প’ বসিয়ে পানি সঙ্কট থেকে উত্তরণের পথ খুঁজছেন। আবার কোনো কোনো স্থানে ‘মিনি তারা পাম্পেও’ পানি উঠছে না।

কৃষকরা জানান, ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় অনেক স্থানে অগভীর নলকূপ (শ্যালো মেশিন) দিয়ে পানি উঠছে না। ৮-১০ ফুট গর্ত খুঁড়ে শ্যালো মেশিন গুলো সেখানে বসানো হচ্ছে। সেচের পানির অভাবে সদ্য বপনকৃত পাট শুকিয়ে যাচ্ছে। মাঠ ফেটে চৌচির হচ্ছে। ব্রহ্মপুর গ্রামের চাষি বেল্লাল হোসেন বলেন, ইঞ্জিন গর্তে বসানোর পরেও পানি উত্তোলনের পরিমাণ বাড়ছে না। কম পানি উঠছে।

এক বিঘা পাট ক্ষেতে সেচ দিতে ৭-৮ লিটার ডিজেল লাগছে। আগে এক বিঘা জমিতে একবার সেচ দিতে সেচযন্ত্রের মালিকরা ৮শ’ টাকা নিত। এখন ১২শ’ টাকা নিচ্ছে। অনেক পুকুরের পানিও শুকিয়ে গেছে। শৈলকুপা ১৮ নম্বর সরকারি প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুল আজিজ জানান, তার স্কুলের ২টি নলকূপ অচল হয়ে গেছে। ছাত্ররা খাবার পানির অভাবে পড়েছে।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের শৈলকুপার সহকারী প্রকৌশলী জালাল আহমেদ বলেন, অক্টোবর মাস থেকে বৃষ্টি হয় না। ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর ২০ ফুটের নিচে নেমে গেলে হস্তচালিত নলকূপে পানি উঠে না। এখন পানির স্তর ৩০-৩৫ ফুট নিচে নেমে গেছে। এতে খাবার পানির সংকট সৃষ্টি হয়েছে বলে তিনি স্বীকার করেন।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ঝিনাইদহের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ রাশিদুল আলম বলেন, কুমার ও গড়াই নদীর পানি তলানীতে ঠেকেছে। পাশাপাশি বৃষ্টি নেই, এজন্য হস্তচালিত নলকূপ অচল হয়ে পড়েছে। সমস্যা সমাধানের জন্য পল্লী পানি সরবরাহ কর্মসূচির অধীন ৬০টি ‘তারা পাম্প’ বসানোর টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। তবে প্রয়োজনের তুলনায় এ সংখ্যা নগণ্য।