ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ) শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অবহেলা ও অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে তার সহপাঠীরা তথা (সংবর্ত ৩৬ ব্যাচ)।
শুক্রবার (১৮ জুলাই) ক্যাম্পাসে এক প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা এ মৃত্যু নিয়ে তাদের অবস্থান জানান এবং তিন দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এসময় প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
প্রেস কনফারেন্সে তারা বলেন,
“বেদনার সঙ্গে জানাচ্ছি, আমাদের সহপাঠী ও বন্ধু সাজিদ আব্দুল্লাহর নিথর দেহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে একটি পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। মৃতদেহের অবস্থা দেখে এটি কোনো স্বাভাবিক মৃত্যু বলে আমাদের বিশ্বাস হয়নি। যে বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের জন্য নিরাপদ আশ্রয় হওয়ার কথা, সেখানে এমন মর্মান্তিক মৃত্যু আমাদের গভীরভাবে চিন্তিত, ক্ষুব্ধ ও শঙ্কিত করে তুলেছে।”
তাদের দাবি, সাজিদের মৃত্যু নিছক একটি দুর্ঘটনা নয় বরং এটি প্রশাসনের দীর্ঘদিনের অব্যবস্থা, অবহেলা, নিরাপত্তাহীনতা এবং অযোগ্যতার ফলাফল। তারা বলেন, “১৭৫ একর আয়তনের এই বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই পর্যাপ্ত সিসিটিভি ক্যামেরা, নেই পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা কিংবা নিরাপত্তা প্রটোকল। এমন পরিস্থিতিতে একটি শিক্ষার্থীর জীবন হুমকির মুখে পড়া অত্যন্ত দুঃখজনক এবং লজ্জার।” তারা আরও অভিযোগ করেন, এই ঘটনার পরও প্রশাসনের ভূমিকা ছিল দায়সারা ও আত্মরক্ষামূলক। সুষ্ঠু তদন্ত এবং প্রকৃত কারণ উদঘাটনের আগেই নানা ধরনের ব্যাখ্যা দিয়ে ঘটনাকে হালকাভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
তাদের ঘোষিত কর্মসূচি সমূহ:
সংবর্ত ৩৬ ব্যাচ তাদের দাবির প্রতি প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণের লক্ষ্যে তিন দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।
১. সাজিদের গায়েবানা জানাজা আগামীকাল (শনিবার) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হবে।
২. বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের উদাত্ত আহ্বান জানানো হয়েছে।
৩. দাবিসমূহ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
প্রেস কনফারেন্সে শিক্ষার্থীরা জানান, এই মৃত্যু যেন আর কারও জীবনে না আসে, সে জন্যই তারা প্রশাসনের কাছে জবাবদিহি, নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং যথাযথ তদন্তের দাবি তুলেছেন।
তারা আরও বলেন, “আমরা চাই না আর কোনো সাজিদ হারিয়ে যাক। আমরা চাই একটি নিরাপদ, জবাবদিহিমূলক এবং সচেতন প্রশাসন।