চোটে পড়ে মাসের পর মাস পুনর্বাসনে থাকা, উদ্দাম পার্টি ও বেপরোয়া জীবনযাপন—মাঠের বাইরের এসব কর্মকাণ্ডেই এখন নেইমার খবরের শিরোনাম হন বেশি। মাঠের কোনো ঘটনায় তাঁর শিরোনাম হওয়া সাম্প্রতিক সময়ে বিরলই বলা চলে।
নেইমারের ভক্তরা তাই অন্তত এ খবরে খুশি হতেন পারেন যে তাঁদের প্রিয় ফুটবলার এবার মাঠের ঘটনায় আলোচনায়। কিন্তু সেটাও অনেক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।কাল রাতে ব্রাজিলের শীর্ষ লিগে খেলতে নেমেছিলেন নেইমার। তাঁর দল সান্তোস ২-১ গোলে হেরে গেছে ইন্তারনাসিওনালের কাছে। এ হারে তারা অবনমন অঞ্চলেও নেমে গেছে।
নিজেদের মাঠ এস্তাদিও ভিলা বেলমিরোয় ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়েছিল সান্তোস। তবে শেষ দিকে দলটি ঘুরে দাঁড়ানোর আভাস দেয়। যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটেই গোল করেন নেইমারের আক্রমণভাগের সঙ্গী আলভারো বারিয়াল।এরপর সমতাসূচক গোলের আশায় আরও আক্রমণ শাণাতে থাকে সান্তোস। রেফারি শেষ বাজি বাজানোর মিনিট দুয়েক আগে বাঁ পায়ে জোরালো শট নেন নেইমার। বল ডান পাশের পোস্টে লেগে ফিরলে ঝাঁপিয়ে গ্লাভসবন্দী করেন ইন্তারনাসিওনালের গোলকিপার সের্হিও রোচেত।
কিন্তু নেইমার মনে করেন, রোচেত গ্লাভসবন্দী করার আগে বল ইন্তারনাসিওনালের গোললাইন পেরিয়ে গেছে। তাই গোল ধরে নিয়ে তিনি উদ্যাপন শুরু করে দেন।শেষ মুহূর্তে তাঁর গোলে সান্তোস হার এড়াচ্ছে ভেবে নেইমার এতটাই উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠেন যে লাথি মেরে কর্নার ফ্ল্যাগ ভেঙে ফেলেন। এমনকি জার্সিও প্রায় খুলতে বসেছিলেন। নেইমার সমতা ফিরিয়েছেন ধরে নিয়ে সান্তোসের সমর্থকেরাও উদ্যাপন করতে থাকেন।কিন্তু রেফারির মনে হয়েছে, বল ইন্তারনাসিওনালের গোললাইন পেরোয়নি। তাই খেলা চালিয়ে যাওয়ার সংকেত দেন। এতে হতাশ হয়ে পড়া নেইমার হাঁটু গেড়ে বসে পড়েন এবং হাত নেড়ে রেফারির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানান। এর কিছুক্ষণ পরই রেফারি শেষ বাঁশি বাজান।
এখানেই শেষ নয়। মাঠ ছাড়ার আগে গ্যালারির কাছে গিয়ে সান্তোসের এক সমর্থকের সঙ্গে তর্কেও জড়ান নেইমার।
ব্রাজিলের ফুটবলবিষয়ক প্ল্যাটফর্ম প্লানেতা দো ফুটবলের দাবি, ওই সমর্থকের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়েছে নেইমারের। ৩৩ বছর বয়সী তারকা একটি অকথ্য বাক্য ব্যবহার করে ওই দর্শককে বলেন, ‘পারলে এখানে আয়। নয়তো গোল্লায় যা!’
প্রায় ৩০ সেকেন্ড তর্কাতর্কির পর সতীর্থ গোলকিপার জোয়াও পাওলো নেইমারকে সরিয়ে নিয়ে গেলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।দর্শকের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়ানোর ঘটনা নেইমারের জন্য নতুন কিছু নয়। তবে শৈশবের ক্লাব সান্তোসে ফেরার পর থেকে মাঠে একটু বেশিই উত্তেজিত হয়ে পড়ছেন।
কতবার? সে তালিকাও করে রেখেছেন লুকাস মানেত্তা নামে এক ফুটবলপ্রেমী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে মানেত্তা লিখেছেন,
সম্প্রতি নেইমারের তর্কে জড়িয়ে পড়া:
বোতাফোগোর সমর্থকদের সঙ্গে ১ বার
সিআরবি সমর্থকদের সঙ্গে ১ বার
মিরাসল সমর্থকদের সঙ্গে ১ বার
সান্তোস সমর্থকদের সঙ্গে ২ বার
মোট ৫ বার
২০২৫ সালে নেইমার গোল করেছেন ৪টি
গোলের চেয়ে তর্কে জড়ানোর সংখ্যা ১টি বেশি!