শিরোনাম :
Logo আমরা সংস্কার চেয়েছি,জুলাই গণহত্যার বিচার চেয়েছি এবং নতুন সংবিধান চেয়েছি: নাহিদ ইসলাম Logo মিটফোর্ডে হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে হাবিপ্রবিতে বিক্ষোভ Logo ইবিতে শাখা ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মীর পদত্যাগ Logo কুষ্টিয়ায় ভুল প্রশ্নপত্র বিতরণের ঘটনায় কেন্দ্রসচিবসহ ৬ জনকে অব্যাহতি Logo রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থীদের ফেয়ারওয়েল অনুষ্ঠিত Logo ঢাকায় ব্যবসায়ীকে নৃশংস হত্যার প্রতিবাদে রাবিতে বিক্ষোভ মিছিল Logo নির্মম ভাবে সোহাগ হত্যার ঘটনায় ইবিতে বিক্ষোভ Logo সুপারস্টার ডি এ তায়েব অফিসিয়াল ফ্যান ক্লাবের আয়োজনে সাংবাদিক অপু চৌধুরীকে সংবর্ধনা Logo চাঁদপুরে মসজিদে খতিবকে কুপিয়ে জখম Logo আম্মা-আব্বা আমাকে মাফ করে দিবেন; আমি আপনাদের ভালো মেয়ে হতে পারি নাই

মুঠোফোন তুলতে গিয়ে সেপটিক ট্যাংকে আটকে পড়েন একজন, অন্যরা যান উদ্ধার করতে

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৫:২৭:৫৯ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫
  • ৭১৪ বার পড়া হয়েছে

টয়লেটের কমোডে মুঠোফোন পড়ে গিয়েছিল। কমোড সরিয়ে সেপটিক ট্যাংকে নেমে সেই মুঠোফোন তুলতে গিয়েছিলেন রানা পট্টনায়ক। চিৎকার শুনে তাঁকে উদ্ধার করতে যান ভাই শ্রাবণ পট্টনায়ক। তাঁরা দুজনই সেখানে অচেতন হয়ে পড়েন। পরে তাঁদের উদ্ধার করতে সেপটিক ট্যাংকে নামেন আরও তিনজন। তাঁদের মধ্যে দুই সহোদরসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে।

এ ঘটনা মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার রাজঘাট ইউনিয়নের হরিণছড়া চা–বাগানের উত্তরলাইন এলাকার।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন দুই ভাই রানা পট্টনায়ক (১৯) ও শ্রাবণ পট্টনায়ক (২৫); কৃষ্ণা রবিদাশ (২০) এবং নিপেন ফুলমারী (৩০)। অসুস্থ রবি বুনার্জী হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বাড়িতে ফিরেছেন। তাঁরা সবাই চা–বাগানের শ্রমিকের সন্তান। শ্রাবণ পট্টনায়কের স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা। নিপেন ফুলমারীর স্ত্রী ও দুই মেয়ে রয়েছে।ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বাসিন্দা সঞ্জয় বলেন, ‘গতকাল বুধবার রাত ১১টার দিকে হঠাৎ চা–বাগানে চিৎকার শুনে আমি বের হই। গিয়ে দেখি সেখানে একটি কাঁচা পায়খানার গর্তে কয়েকজন পড়ে আছেন। পরে আমিসহ সবাই মিলে পাঁচজনকে গর্ত থেকে টেনে বের করি। প্রচণ্ড গন্ধ ও গ্যাস ছিল সেই গর্তে, আমি নিজেও সেখান থেকে বের হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ি।’

রাজঘাট চা–বাগানের প্যানেল চেয়ারম্যান সেলিম আহমেদ প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে বলেন, রানা পট্টনায়ক গতকাল রাতে তাঁর বাড়িসংলগ্ন কাঁচা টয়লেটে যান। সেখানে কমোডের নিচে মাটির গর্তের সেপটিক ট্যাংক। রানার মুঠোফোন কমোড দিয়ে সেপটিক ট্যাংকে পড়ে যায়। তিনি কমোডটি সরিয়ে ওই গর্তে নামেন। চিৎকার শুনে তাঁর ভাই শ্রাবণ পট্টনায়েক ছুটে আসেন। তাঁকে উদ্ধার করতে গেলে শ্রাবণও সেখানে আটকে পড়েন। লোকজনের চিৎকার শুনে নিপেন ফুলমারী, কৃষ্ণা রবিদাশ ও রবি বুনার্জীও গর্তে নামেন। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে প্রথমে শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাঁদের মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। এ সময় চারজনকে মৃত্যু ঘোষণা করা হয়। আর অসুস্থ রবি বুনার্জীকে এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

হরিণছড়া চা–বাগানের ব্যবস্থাপক বিকাশ সিংহা বলেন, ‘এটি দুঃখজনক ঘটনা। গতকাল রাতে ঘটনাটি শোনার সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করি। একজনকে সিলেটে পাঠিয়েছিলাম, তিনি সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরে এসেছেন। ফিনলে পরিবারের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে থাকব।’

সহকারী পুলিশ সুপার (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ সার্কেল) আনিসুর রহমান বলেন, ‘আমাদের কাছে মনে হয়েছে এগুলো দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু। নিহত ব্যক্তির পরিবার থেকে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ গ্রহণ করার জন্য আবেদন করা হয়েছে। তাঁদের কোনো অভিযোগ নেই। মৃতদেহগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

আমরা সংস্কার চেয়েছি,জুলাই গণহত্যার বিচার চেয়েছি এবং নতুন সংবিধান চেয়েছি: নাহিদ ইসলাম

মুঠোফোন তুলতে গিয়ে সেপটিক ট্যাংকে আটকে পড়েন একজন, অন্যরা যান উদ্ধার করতে

আপডেট সময় : ০৫:২৭:৫৯ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫

টয়লেটের কমোডে মুঠোফোন পড়ে গিয়েছিল। কমোড সরিয়ে সেপটিক ট্যাংকে নেমে সেই মুঠোফোন তুলতে গিয়েছিলেন রানা পট্টনায়ক। চিৎকার শুনে তাঁকে উদ্ধার করতে যান ভাই শ্রাবণ পট্টনায়ক। তাঁরা দুজনই সেখানে অচেতন হয়ে পড়েন। পরে তাঁদের উদ্ধার করতে সেপটিক ট্যাংকে নামেন আরও তিনজন। তাঁদের মধ্যে দুই সহোদরসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে।

এ ঘটনা মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার রাজঘাট ইউনিয়নের হরিণছড়া চা–বাগানের উত্তরলাইন এলাকার।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন দুই ভাই রানা পট্টনায়ক (১৯) ও শ্রাবণ পট্টনায়ক (২৫); কৃষ্ণা রবিদাশ (২০) এবং নিপেন ফুলমারী (৩০)। অসুস্থ রবি বুনার্জী হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বাড়িতে ফিরেছেন। তাঁরা সবাই চা–বাগানের শ্রমিকের সন্তান। শ্রাবণ পট্টনায়কের স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা। নিপেন ফুলমারীর স্ত্রী ও দুই মেয়ে রয়েছে।ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বাসিন্দা সঞ্জয় বলেন, ‘গতকাল বুধবার রাত ১১টার দিকে হঠাৎ চা–বাগানে চিৎকার শুনে আমি বের হই। গিয়ে দেখি সেখানে একটি কাঁচা পায়খানার গর্তে কয়েকজন পড়ে আছেন। পরে আমিসহ সবাই মিলে পাঁচজনকে গর্ত থেকে টেনে বের করি। প্রচণ্ড গন্ধ ও গ্যাস ছিল সেই গর্তে, আমি নিজেও সেখান থেকে বের হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ি।’

রাজঘাট চা–বাগানের প্যানেল চেয়ারম্যান সেলিম আহমেদ প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে বলেন, রানা পট্টনায়ক গতকাল রাতে তাঁর বাড়িসংলগ্ন কাঁচা টয়লেটে যান। সেখানে কমোডের নিচে মাটির গর্তের সেপটিক ট্যাংক। রানার মুঠোফোন কমোড দিয়ে সেপটিক ট্যাংকে পড়ে যায়। তিনি কমোডটি সরিয়ে ওই গর্তে নামেন। চিৎকার শুনে তাঁর ভাই শ্রাবণ পট্টনায়েক ছুটে আসেন। তাঁকে উদ্ধার করতে গেলে শ্রাবণও সেখানে আটকে পড়েন। লোকজনের চিৎকার শুনে নিপেন ফুলমারী, কৃষ্ণা রবিদাশ ও রবি বুনার্জীও গর্তে নামেন। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে প্রথমে শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাঁদের মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। এ সময় চারজনকে মৃত্যু ঘোষণা করা হয়। আর অসুস্থ রবি বুনার্জীকে এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

হরিণছড়া চা–বাগানের ব্যবস্থাপক বিকাশ সিংহা বলেন, ‘এটি দুঃখজনক ঘটনা। গতকাল রাতে ঘটনাটি শোনার সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করি। একজনকে সিলেটে পাঠিয়েছিলাম, তিনি সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরে এসেছেন। ফিনলে পরিবারের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে থাকব।’

সহকারী পুলিশ সুপার (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ সার্কেল) আনিসুর রহমান বলেন, ‘আমাদের কাছে মনে হয়েছে এগুলো দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু। নিহত ব্যক্তির পরিবার থেকে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ গ্রহণ করার জন্য আবেদন করা হয়েছে। তাঁদের কোনো অভিযোগ নেই। মৃতদেহগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।