মানবতার টানে বাঁধা না মানা এক দৃষ্টান্ত গড়েছে কচুয়ার একটি সামাজিক সংগঠন। কৃষকের ফসল, শিক্ষার্থীর শিক্ষা আর পথচারীর যাত্রা, সব মিলিয়ে জীবনযাত্রার গতি ফেরাতে চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার মেঘদাইর পশ্চিম মাঠে নির্মাণ করা হলো একটি কাঠের সেতু। আর এই মহৎ কাজটি করেছে আত্মমানবতার সেবায় নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘প্রাণের টানে রক্তদান’।
বৃহস্পতিবার দিনভর পরিশ্রম করে সুন্দরী সংযোগ খালের উপর তৈরি করা হয় কাঠের এই সেতু। ফলে অন্তত ২ কিলোমিটার দুরত্ব কমেছে! কৃষকদের যাতায়াতে যেমন সময় ও কষ্ট কমবে, তেমনি এলাকার শিক্ষার্থীরা পাবেন নিরাপদ ও সহজ চলাচলের সুবিধা।
বিশেষ করে মেঘদাইর তাহেরীয়া ফাজিল মাদ্রাসা ও মেঘদাইর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এর শিক্ষার্থীদের যাতায়াত হবে অনেক সহজ। উপকারভোগী হবেন নাংলা ও এনায়েতপুর গ্রামের সাধারণ মানুষও।
‘প্রাণের টানে রক্তদান’ শুধু রক্তদাতা সংগঠন নয়, তারা নিজেদের দায়িত্ব মনে করে যে কোনো মানবিক সংকটে পাশে দাঁড়াতে। সংগঠনের পরিচালক ফরিদ আহমদ বলেন, “আমরা শুধু রক্তই দেই না, ভালোবাসাও ছড়িয়ে দিই। এই সেতু মানবতার আরেকটি নিদর্শন।”
সেতু নির্মাণে উচ্ছ্বাস দেখা যায় স্থানীয় কৃষকদের মাঝে। আব্দুল জলিল নামের এক কুষক বলেন, এই সেতু যেন আমাদের জন্য আশীর্বাদ। আগে ফসল আনা-নেওয়ায় অনেক কষ্ট হতো। এখন খুব সহজে যাতায়াত করতে পারি।”
অন্যদিকে আব্দুর রহমান নামের এক শিক্ষার্থী জানায়, “আগে স্কুল যেতে ভয় লাগতো, এখন আনন্দ নিয়ে স্কুলে যাই।”
সংগঠনের সভাপতি সাইফুল ইসলাম সুমন বলেন, শুধু রক্তদান করলেই দায়িত্ব শেষ হয় না। আমরা বিশ্বাস করি, মানবিক যেকোনো প্রয়োজনে মানুষের পাশে দাঁড়ানোই প্রকৃত স্বেচ্ছাসেবা। মেঘদাইর অঞ্চলের কৃষক, শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের কষ্ট লাঘবের জন্য এই সেতু নির্মাণ করেছি। এটি আমাদের ভালোবাসার উপহার। আমরা চাই সবাই এগিয়ে আসুক, যার যার অবস্থান থেকে মানবিক কাজে অংশ নিক। সমাজ পরিবর্তনের জন্য বড় পদক্ষেপ নয়, ছোট উদ্যোগেই বড় পরিবর্তন সম্ভব।”