মঙ্গলবার | ২ ডিসেম্বর ২০২৫ | হেমন্তকাল
শিরোনাম :
Logo পুলিশের অভিযানে পলাশবাড়ীতে চোরাই মাল উদ্ধার : দুই ভাঙ্গারি ব্যবসায়ী আটক Logo পলাশবাড়ীতে জুলাই যোদ্ধার বাবার প্রভাব খাটিয়ে জমি দখলের অভিযোগ Logo পর্যটক সেন্টমার্টিন পৌঁছলে ফুল দিয়ে পর্যটকদের বরণ Logo বিএনপি চেয়ারপার্সনের রোগমুক্তি ও সুস্থতা কামনায় জীবননগরে ছাত্রদল ও শ্রমিকদের দোয়া Logo জাতীয় নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নিরাপত্তা জোরদারে ব্যাপক প্রস্তুতি সরকারের Logo কারুবাক পাণ্ডুলিপি পুরস্কার পেলেন এইচএম জাকির Logo চাঁদপুরে নতুন খাবারের আকর্ষণ ‘কাচ্চি ডাইন’ গ্রাহকদের ভিড় বেড়েই চলছে Logo বেগম খালেদা জিয়া’র আশু রোগমুক্তি কামনায় ৮ নং ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত Logo নোবিপ্রবির আধুনিকায়নে ৩৩৪ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন Logo পর্যটক সেন্টমার্টিন পৌঁছলে ফুল দিয়ে পর্যটকদের বরণ

তিন চাকার গাড়িতে চলা শারিরীক প্রতিবন্ধী আমান উল্যাহ’র মানবেতর জীবন

হামাগুড়ি দিয়ে দু’হাতের উপর ভর করে ঘর থেকে বের হন শারিরীক প্রতিবন্ধী আমান উল্যাহ। অন্যের উপর নির্ভর করে তিন চাকার রিকশা করে চলে তার সংসার। সকাল থেকে বাড়ি থেকে বের তিন চাকার রিক্সা করে এলাকায় ভিক্ষা করেন। ভিক্ষা করে যে টাকা উপার্জন হয়, তাতে কোনোমতে চলে তাদের সংসার।

সংগ্রামের সময় টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দুই পা অচল হয়ে যায় তার। তখন বয়স ছিল তার ১২ বছর। এমন অবস্থায় তিনি ১৯৮৯ সালে এসএসসি পাস করেন। পরে জীবনের সংগ্রামে এভাবে বেচেঁ উঠেন তিনি। দুটি পা অকোজো হওয়ার পর ঘুড়ে দাড়াঁতে পারেন নি তিনি। দুই হাতে ভর দিয়েও কোনো মতে চলে তিনি। দুই হাতেই তার বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা। নুন আনতে পান্তা ফুরানোর সংসারে উপার্জনক্ষম কেউ নেই। পরিবারে স্ত্রী,২ মেয়ে ও ১ ছেলে রয়েছে তার। তবে ২ মেয়ের মধ্যে একজন প্রতিবন্ধী।।

চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার দোয়াটি গ্রামের হাজী বাড়ির মৃত. জয়নাল আবেদীনের ছেলে শারীরিক প্রতিবন্ধী আমান উল্যাহ এভাবে সংসারের গ্লানি টানতে ঘর থেকে বেড়িয়ে পড়েন। সংসারের বোঝা টানতে বেছে নেন ভিক্ষাবৃত্তি। এভাবেই পথে প্রন্তরে ঘুরে অন্যের দয়ার দানে পরিবারের ভরণ পোষণের হাল ধরেছেন। কিন্তু কয়েক মাস ধরে চলাচল করতে অক্ষম হওয়ায় মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন তিনি।

স্থানীয় প্রতিবেশীরা বলেন, শারীরিক প্রতিবন্ধকতা আর অভাব অনটনের সংসার তাকে দমিয়ে রেখেছেন। তিন চাকার একটা রিকশা নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে বেড়ান তিনি। হাত বাড়িয়ে চান একটু সহায়তা। তাই এমন পরিবারকে স্বচ্ছল করতে সকলেই যেন এগিয়ে আসেন এমন প্রত্যাশা করেছেন তারা।

শারীরিক প্রতিবন্ধী মো. আমান উল্যাহ বলেন,ভিক্ষাবৃত্তি পেশায় আসার কারণ জানতে চাইলে একটু ভারাক্রান্ত মুখে বলেন, গরিবের যন্ত্রণা বেশি, দুঃখ কষ্টের যেন অন্ত নেই। এজন্যই ভিক্ষা করি জীবন বাচাঁর তাগিদে। পরিবারের কথা চিন্তা করে শরীরের অর্ধেক অংশ অচল হলেও মনোবল সুদৃঢ় রেখে নিরুপায় হয়ে ভিক্ষাবৃত্তিতে জড়িয়েছিন। প্রতিবন্ধী ভাতা যে টাকা পান তাতে কিছুই হয় না তার ও পরিবারের। দুই হাতে চাকা ঘুরিয়ে গাড়ি নিয়ে সড়ক পারাপার ও চলাফেরা করতে খুব কষ্ট হয়। তাই ভিক্ষাবৃত্তি না করে স্বচ্ছল ভাবে চলতে সকলের সহযোগিতা কামনা করছি। সমাজে অনেক ধনী ও হৃদয়বান মানুষ আছেন। কেউ যদি একটু এগিয়ে আসেন, একটা ছোট দোকান করার ব্যবস্থা করে দেন তাহলে ভিক্ষা ছেড়ে দেব। কেউ আর্থিক সহযোগিতা করতে চাইলে ০১৮২৯১৯২৩২২ নাম্বারে যোগাযোগ করার আহ্বান করা গেল।

ছবি: কচুয়ার দোয়াটি গ্রামের শারীরিক প্রতিবন্ধী আমান উল্যাহ এভাবে তিন চাকার গাড়িতে করে ভিক্ষা করেন।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

পুলিশের অভিযানে পলাশবাড়ীতে চোরাই মাল উদ্ধার : দুই ভাঙ্গারি ব্যবসায়ী আটক

তিন চাকার গাড়িতে চলা শারিরীক প্রতিবন্ধী আমান উল্যাহ’র মানবেতর জীবন

আপডেট সময় : ০২:১৬:০৬ অপরাহ্ণ, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫

হামাগুড়ি দিয়ে দু’হাতের উপর ভর করে ঘর থেকে বের হন শারিরীক প্রতিবন্ধী আমান উল্যাহ। অন্যের উপর নির্ভর করে তিন চাকার রিকশা করে চলে তার সংসার। সকাল থেকে বাড়ি থেকে বের তিন চাকার রিক্সা করে এলাকায় ভিক্ষা করেন। ভিক্ষা করে যে টাকা উপার্জন হয়, তাতে কোনোমতে চলে তাদের সংসার।

সংগ্রামের সময় টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দুই পা অচল হয়ে যায় তার। তখন বয়স ছিল তার ১২ বছর। এমন অবস্থায় তিনি ১৯৮৯ সালে এসএসসি পাস করেন। পরে জীবনের সংগ্রামে এভাবে বেচেঁ উঠেন তিনি। দুটি পা অকোজো হওয়ার পর ঘুড়ে দাড়াঁতে পারেন নি তিনি। দুই হাতে ভর দিয়েও কোনো মতে চলে তিনি। দুই হাতেই তার বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা। নুন আনতে পান্তা ফুরানোর সংসারে উপার্জনক্ষম কেউ নেই। পরিবারে স্ত্রী,২ মেয়ে ও ১ ছেলে রয়েছে তার। তবে ২ মেয়ের মধ্যে একজন প্রতিবন্ধী।।

চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার দোয়াটি গ্রামের হাজী বাড়ির মৃত. জয়নাল আবেদীনের ছেলে শারীরিক প্রতিবন্ধী আমান উল্যাহ এভাবে সংসারের গ্লানি টানতে ঘর থেকে বেড়িয়ে পড়েন। সংসারের বোঝা টানতে বেছে নেন ভিক্ষাবৃত্তি। এভাবেই পথে প্রন্তরে ঘুরে অন্যের দয়ার দানে পরিবারের ভরণ পোষণের হাল ধরেছেন। কিন্তু কয়েক মাস ধরে চলাচল করতে অক্ষম হওয়ায় মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন তিনি।

স্থানীয় প্রতিবেশীরা বলেন, শারীরিক প্রতিবন্ধকতা আর অভাব অনটনের সংসার তাকে দমিয়ে রেখেছেন। তিন চাকার একটা রিকশা নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে বেড়ান তিনি। হাত বাড়িয়ে চান একটু সহায়তা। তাই এমন পরিবারকে স্বচ্ছল করতে সকলেই যেন এগিয়ে আসেন এমন প্রত্যাশা করেছেন তারা।

শারীরিক প্রতিবন্ধী মো. আমান উল্যাহ বলেন,ভিক্ষাবৃত্তি পেশায় আসার কারণ জানতে চাইলে একটু ভারাক্রান্ত মুখে বলেন, গরিবের যন্ত্রণা বেশি, দুঃখ কষ্টের যেন অন্ত নেই। এজন্যই ভিক্ষা করি জীবন বাচাঁর তাগিদে। পরিবারের কথা চিন্তা করে শরীরের অর্ধেক অংশ অচল হলেও মনোবল সুদৃঢ় রেখে নিরুপায় হয়ে ভিক্ষাবৃত্তিতে জড়িয়েছিন। প্রতিবন্ধী ভাতা যে টাকা পান তাতে কিছুই হয় না তার ও পরিবারের। দুই হাতে চাকা ঘুরিয়ে গাড়ি নিয়ে সড়ক পারাপার ও চলাফেরা করতে খুব কষ্ট হয়। তাই ভিক্ষাবৃত্তি না করে স্বচ্ছল ভাবে চলতে সকলের সহযোগিতা কামনা করছি। সমাজে অনেক ধনী ও হৃদয়বান মানুষ আছেন। কেউ যদি একটু এগিয়ে আসেন, একটা ছোট দোকান করার ব্যবস্থা করে দেন তাহলে ভিক্ষা ছেড়ে দেব। কেউ আর্থিক সহযোগিতা করতে চাইলে ০১৮২৯১৯২৩২২ নাম্বারে যোগাযোগ করার আহ্বান করা গেল।

ছবি: কচুয়ার দোয়াটি গ্রামের শারীরিক প্রতিবন্ধী আমান উল্যাহ এভাবে তিন চাকার গাড়িতে করে ভিক্ষা করেন।