বৃহস্পতিবার | ৪ ডিসেম্বর ২০২৫ | হেমন্তকাল
শিরোনাম :
Logo আগামী নির্বাচনে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালনে সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান Logo টেকনাফে কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনীর যৌথ অভিযানে বিপুল পরিমাণ গোলা-বারুদসহ দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ Logo গাইবান্ধা এলোপাথাড়ি ছুরিকাঘাতে নিহত যুবক Logo খুবিতে আসন্ন ভর্তি পরীক্ষা: নিরাপত্তা প্রস্তুতি নিয়ে মতবিনিময় সভা Logo প্রগতিশীল প্রতিষ্ঠান চর্যাপদ সাহিত্য একাডেমির ‘হেমন্তসন্ধ্যা ও হাঁস পার্টি’ অনুষ্ঠিত হয়েছে Logo টেকনাফে কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনীর যৌথ অভিযানে বিপুল পরিমাণ গোলা-বারুদসহ দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ Logo সদরপুরে ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের জন্য কর্মবিরতি পালন করেছে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা Logo কয়রায় আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি দিবস পালিত Logo খুবিতে রফিক আজম ট্রাভেল স্কলারশিপ চালুর লক্ষ্যে এমওইউ স্বাক্ষর Logo খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় সোনালী ব্যাংক এমপ্লয়ীজ এসোসিয়েশন সিবি’এর দোয়া মাহফিল

কুবি শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে হিন্দুধর্ম অবমাননার অভিযোগ 

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৯:৪৭:৫৩ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫
  • ৭৯৫ বার পড়া হয়েছে
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্টের মাধ্যমে হিন্দুধর্মকে অবমাননা ও অশ্লীলভাবে উপস্থাপনের অভিযোগ উঠেছে৷ এতে ক্ষোভ জানিয়ে অভিযুক্তের শাস্তি দাবি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবার একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে সনাতন শিক্ষার্থীরা। 
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বেলা ১২টার দিকে শিক্ষার্থীরা এ অভিযোগপত্র জমা দেন। প্রক্টরের পর ভিসি বরাবরও অভিযোগপত্রের একটি কপি হস্তান্তর করেন তারা।
অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর নাম আব্দুর রহমান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০২৩-২৪ বর্ষের শিক্ষার্থী। তার নিজ জেলা চট্টগ্রাম। গতকাল ১৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় তার পোস্টটির স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে বেশ আলোচনা-সমালোচনার তৈরি হয়।
অভিযোগপত্রে জানানো হয়, সম্প্রতি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের (আব্দুর রহমান, আইন বিভাগ ১৮ তম আবর্তন) এক শিক্ষার্থী লাগাতার সনাতন ধর্মের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) কটুক্তি করে যাচ্ছে। এরমধ্যে গতকালের (১৪ এপ্রিল) একটি পোস্টে সনাতন ধর্মকে মারাত্মক ভাবে ঘৃণিত ভাষায় উপস্থাপন করা হয়েছে।
“হিন্দুধর্ম। ইট’স রিকোয়াইর্স টু বি এগ্রেসিভলি রেপড, (গালি) ইন আ রুড ওয়ে। (গালি)। আবার (গালি)।”
এতে আরো বলা হয়, এই বক্তব্য শুধু কুরুচিপূর্ণ নয়, বরং এটি আমাদের ধর্মীয় বিশ্বাসকে অপমান এবং ঘৃণিত করে। এই ধরনের বক্তব্য কোনো সভ্য সমাজ বা শিক্ষাঙ্গনে মেনে নেওয়া যায় না। এছাড়া সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩ অনুযায়ী ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত একটি দন্ডনীয় অপরাধ। যার সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে বর্তমানে দুই বছর কারাদণ্ড বা পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় একটি জ্ঞান ও সম্প্রীতির স্থান। এখানে এমন কোনো মত প্রকাশের সুযোগ থাকা উচিত নয় যা অন্যের ধর্মীয় অনুভূতিকে আঘাত করে এবং সাম্প্রদায়িক বিভাজন তৈরি করে।
অভিযোগপত্রে শিক্ষার্থীদের দাবি, উক্ত শিক্ষার্থীকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার পূর্বক দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হোক যাতে ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের ঘৃণিত কাজ না করে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ১৪ এপ্রিল M A Hussain – এম এ হোসাইন নামক একটি পেইজে জ্বলন্ত আগুনের মধ্যে জীবন্ত ছাগলকে পুড়িয়ে ফেলার একটি ভিডিও শেয়ার করা হয়। সেটার ক্যাপশন অপশনে লিখা ছিল ‘জনশ্রুতি আছে,_পৃথিবীর নিকৃষ্ট ধর্ম হচ্ছে হিন্দু ধর্ম। একটা নিরীহ জীবন্ত প্রাণীকে এভাবে আগুনে পুড়ে মারার অধিকার কি কোনো ধর্মে আছে?’
পরবর্তীতে স্ক্রিনশটটি আরো ছড়িয়ে পড়লে শেয়ারকৃত পোস্টটি ডিলিট করে ক্ষমা চেয়ে নতুন আরেকটি পোস্ট শেয়ার করেন। বর্তমানে অভিযুক্ত আবদুর রহমানের ফেসবুক একাউন্টটি ডিএক্টিভেট করে রাখা হয়েছে।
আইন বিভাগের ১৫ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী সজীব বিশ্বাস বলেন, ‘আব্দুর রহমান যেভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) আমাদের ধর্মকে নিয়ে কটুক্তি করেছে আমি তার তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একজন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থী কিভাবে একটা ধর্মকে নিয়ে এমনভাবে গালি দিতে পারে?আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বলবো, বিগত বছরগুলাতে যেভাবে ধর্মকে অবমাননার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কতৃক স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে, এবারও যেন তার ব্যতিক্রম না ঘটে। তার জন্য উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। যেন পরবর্তীতে এমন ঘটনা না ঘটে।’
এবিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত আবদুর রহমান বলেন, “আমি আমার বক্তব্য প্রক্টর অফিসে দিয়েছি।”
এ ব্যাপারে আইন বিভাগের বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহকারী অধ্যাপক আইন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. আলী মোর্শেদ কাজেম বলেন, ‘আমি এই বিষয়ে অবগত নই। ঘটনা সম্পূর্ণ না জেনে আমি তো কোন বক্তব্য দিতে পারছি না।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. আবদুল হাকিম বলেন, ‘আমরা অভিযোগপত্রটি পেয়েছি অভিযুক্ত শিক্ষার্থী যেহেতু আইন বিভাগের সেহেতু আমরা উক্ত বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের মাধ্যমে অভিযুক্তের সাথে কথা বলে বিষয়টি শৃংখলা কমিটির কাছে হস্তান্তর করবো।’
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, ‘আমি অভিযোগপত্রটি পেয়েছি। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে ডেকে শোকজ করা হবে। তার লিখিত ব্যাখ্যা গ্রহণের পর নিয়ম অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

আগামী নির্বাচনে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালনে সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান

কুবি শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে হিন্দুধর্ম অবমাননার অভিযোগ 

আপডেট সময় : ০৯:৪৭:৫৩ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্টের মাধ্যমে হিন্দুধর্মকে অবমাননা ও অশ্লীলভাবে উপস্থাপনের অভিযোগ উঠেছে৷ এতে ক্ষোভ জানিয়ে অভিযুক্তের শাস্তি দাবি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবার একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে সনাতন শিক্ষার্থীরা। 
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বেলা ১২টার দিকে শিক্ষার্থীরা এ অভিযোগপত্র জমা দেন। প্রক্টরের পর ভিসি বরাবরও অভিযোগপত্রের একটি কপি হস্তান্তর করেন তারা।
অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর নাম আব্দুর রহমান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০২৩-২৪ বর্ষের শিক্ষার্থী। তার নিজ জেলা চট্টগ্রাম। গতকাল ১৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় তার পোস্টটির স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে বেশ আলোচনা-সমালোচনার তৈরি হয়।
অভিযোগপত্রে জানানো হয়, সম্প্রতি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের (আব্দুর রহমান, আইন বিভাগ ১৮ তম আবর্তন) এক শিক্ষার্থী লাগাতার সনাতন ধর্মের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) কটুক্তি করে যাচ্ছে। এরমধ্যে গতকালের (১৪ এপ্রিল) একটি পোস্টে সনাতন ধর্মকে মারাত্মক ভাবে ঘৃণিত ভাষায় উপস্থাপন করা হয়েছে।
“হিন্দুধর্ম। ইট’স রিকোয়াইর্স টু বি এগ্রেসিভলি রেপড, (গালি) ইন আ রুড ওয়ে। (গালি)। আবার (গালি)।”
এতে আরো বলা হয়, এই বক্তব্য শুধু কুরুচিপূর্ণ নয়, বরং এটি আমাদের ধর্মীয় বিশ্বাসকে অপমান এবং ঘৃণিত করে। এই ধরনের বক্তব্য কোনো সভ্য সমাজ বা শিক্ষাঙ্গনে মেনে নেওয়া যায় না। এছাড়া সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩ অনুযায়ী ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত একটি দন্ডনীয় অপরাধ। যার সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে বর্তমানে দুই বছর কারাদণ্ড বা পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় একটি জ্ঞান ও সম্প্রীতির স্থান। এখানে এমন কোনো মত প্রকাশের সুযোগ থাকা উচিত নয় যা অন্যের ধর্মীয় অনুভূতিকে আঘাত করে এবং সাম্প্রদায়িক বিভাজন তৈরি করে।
অভিযোগপত্রে শিক্ষার্থীদের দাবি, উক্ত শিক্ষার্থীকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার পূর্বক দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হোক যাতে ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের ঘৃণিত কাজ না করে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ১৪ এপ্রিল M A Hussain – এম এ হোসাইন নামক একটি পেইজে জ্বলন্ত আগুনের মধ্যে জীবন্ত ছাগলকে পুড়িয়ে ফেলার একটি ভিডিও শেয়ার করা হয়। সেটার ক্যাপশন অপশনে লিখা ছিল ‘জনশ্রুতি আছে,_পৃথিবীর নিকৃষ্ট ধর্ম হচ্ছে হিন্দু ধর্ম। একটা নিরীহ জীবন্ত প্রাণীকে এভাবে আগুনে পুড়ে মারার অধিকার কি কোনো ধর্মে আছে?’
পরবর্তীতে স্ক্রিনশটটি আরো ছড়িয়ে পড়লে শেয়ারকৃত পোস্টটি ডিলিট করে ক্ষমা চেয়ে নতুন আরেকটি পোস্ট শেয়ার করেন। বর্তমানে অভিযুক্ত আবদুর রহমানের ফেসবুক একাউন্টটি ডিএক্টিভেট করে রাখা হয়েছে।
আইন বিভাগের ১৫ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী সজীব বিশ্বাস বলেন, ‘আব্দুর রহমান যেভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) আমাদের ধর্মকে নিয়ে কটুক্তি করেছে আমি তার তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একজন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থী কিভাবে একটা ধর্মকে নিয়ে এমনভাবে গালি দিতে পারে?আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বলবো, বিগত বছরগুলাতে যেভাবে ধর্মকে অবমাননার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কতৃক স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে, এবারও যেন তার ব্যতিক্রম না ঘটে। তার জন্য উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। যেন পরবর্তীতে এমন ঘটনা না ঘটে।’
এবিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত আবদুর রহমান বলেন, “আমি আমার বক্তব্য প্রক্টর অফিসে দিয়েছি।”
এ ব্যাপারে আইন বিভাগের বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহকারী অধ্যাপক আইন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. আলী মোর্শেদ কাজেম বলেন, ‘আমি এই বিষয়ে অবগত নই। ঘটনা সম্পূর্ণ না জেনে আমি তো কোন বক্তব্য দিতে পারছি না।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. আবদুল হাকিম বলেন, ‘আমরা অভিযোগপত্রটি পেয়েছি অভিযুক্ত শিক্ষার্থী যেহেতু আইন বিভাগের সেহেতু আমরা উক্ত বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের মাধ্যমে অভিযুক্তের সাথে কথা বলে বিষয়টি শৃংখলা কমিটির কাছে হস্তান্তর করবো।’
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, ‘আমি অভিযোগপত্রটি পেয়েছি। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে ডেকে শোকজ করা হবে। তার লিখিত ব্যাখ্যা গ্রহণের পর নিয়ম অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’