শিরোনাম :
Logo জবিতে ধর্ষণের সর্বোচ্চ বিচার দাবিতে বিক্ষোভ ও মাশাল মিছিল Logo ধর্ষকদের জনসম্মুখে ফাঁসি দন্ড কার্যকরের দাবিতে পাবিপ্রবিতে বিক্ষোভ মিছিল Logo কয়রায় ৩০ কেজি পারসে মাছের পোনা জব্দ Logo লন্ডনের বিগ বেনে উঠে ফিলিস্তিনের পতাকা ওড়ালেন তিনি, ১৬ ঘণ্টা পর গ্রেপ্তার Logo বাংলাদেশ থেকে আরও ৪২ মে.টন আলু গেল নেপালে Logo কচুয়ায় জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে রোজার তাৎপর্য শীর্ষক আলোচনা ও ইফতার মাহফিল Logo পরীক্ষা না দিয়েই শিক্ষার্থীকে পাস করানোর অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের বিরুদ্ধে Logo ধর্ষকক যে দলের হোক শাস্তি মৃত্যুদন্ড দাবিতে বেরোবিতে মানববন্ধন Logo চুয়াডাঙ্গায় বিএনপি নেতা রফিককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার ৩ Logo খুবির প্রধান ফটক ‘শহিদ মীর মুগ্ধ তোরণ’ উদ্বোধন

সারাদেশে সংঘটিত ধর্ষণের প্রতিবাদে কুবিতে মানববন্ধন

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৪:৩১:১৮ অপরাহ্ণ, রবিবার, ৯ মার্চ ২০২৫
  • ৭১১ বার পড়া হয়েছে

সারাদেশের মতো কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়েও (কুবি) ধর্ষণের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা। রবিবার (০৯ মার্চ) বেলা একটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বরে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মারুফ শেখ এবং আরাফ ভূঁইয়ার সঞ্চালনায় এ মানববন্ধনে শিক্ষকরাও সংহতি প্রকাশ করেন। বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. কামরুন নাহার শীলা, সহযোগী অধ্যাপক ড. নাহিদা বেগম, নৃবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. শামীমা নাসরিন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান (ভারপ্রাপ্ত) সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুল হাসানসহ অন্যান্য শিক্ষকরাও এসময় উপস্থিত ছিলেন।

‘দিয়েছি তো রক্ত আরও দেব রক্ত’, ধর্ষকের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘একটা একটা ধর্ষক ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর’, ‘আবু সাঈদের বাংলায় ধষর্কের ঠাই নাই’, ‘চব্বিশের বাংলায় ধর্ষকের ঠাঁই নাই’ সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে।

রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী জুলফা আক্তার বলেন, ‘আমরা সবাই আছিয়ার ধর্ষণের কাহিনি জানি। এমন অনেক ধর্ষণ হয় যার খবর আমরা জানি না। আমাদের সামনে আসে না, অনেকে ভয়ে প্রকাশ করে না। এভাবে ধর্ষন বাড়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে ধর্ষকদের উপযুক্ত সাজা না হওয়া। ১০ হাজার ২০ হাজার টাকা দিয়ে, হুমকি ধামকি দিয়ে তারা আবার মুক্ত আকাশের নিচে ঘুরে বেড়ায়। আমাদের দাবি, আমরা ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই, প্রকাশ্যে এনে যেন ফাঁসি দেওয়া হয়। যেন সামনে কোন ধর্ষক কাউকে ধর্ষণের কথা চিন্তাও না করতে পারে। আমাদের সবাইকে একসঙ্গে মিলে ধর্ষকদের প্রতিহত করতে হবে।’

নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ফাতেমা-তুজ-জোহরা মীম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জায়গায় পড়াশোনার সত্ত্বেও এমন অনেক মানুষ আছে যাদের মন-মানসিকতা অনেক নীচু। তারা নারীদেরকে বিভিন্নভাবে বুলিং করে। আমাদের চারপাশে এমন অনেক মানুষ আছে যারা ভিতরে এক এবং বাহিরে আরেক। এধরনের মানুষকে প্রশাসন চিহ্নিত করুক। যারা তারা ভবিষ্যতে পটেনশিয়াল রেপিস্ট হিসেবে না গড়ে ওঠে। প্রশাসনকে এমন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করুক যেন নারীদেরকে নিয়ে কটুক্তি করার আগে তাদের কলিজা কেঁপে ওঠে।’

বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. কামরুন নাহার শীলা বলেন, ‘গভীর শোক এবং প্রতিবাদের ভাষাকে একত্র করার জন্য আজকে আমরা এখানে জড়ো হয়েছি। গত কয়েকদিন ধরে আইনশৃঙ্খলার অবনতির করাল গ্রাসের শিকার হচ্ছে নারীরা। আজকে একটা নারী-শিশুও ধর্ষকের হাত থেকে নিরাপদ না। ছোট শিশু আছিয়া জীবনকে বোঝার আগেই তার জীবনটা শেষ করে দিয়েছে ধর্ষকেরা।

তিনি আরো বলেন, ‘ম্যোরাল পুলিশিংয়ের নামে যে নারী হেনস্থা তা কোনোভাবেই কাম্য না। আমরা এই রহস্যের সমাপ্তি চাই। সুন্দর সহিংসতামুক্ত বাংলাদেশ চাই।’

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান (ভারপ্রাপ্ত) মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘ধর্ষণই একমাত্র অপরাধ যেখানে ভুক্তভোগীকে তার নির্দোষতা প্রমাণ করতে হয়। আমাদের নিকটজনদের মধ্যেই ধর্ষক লুকিয়ে থাকে। তাই ছোটবেলা থেকে নারীদেরকে ধর্ষকের ব্যাপারে সচেতন করতে হবে। নারীদেরকে ছোটবেলা থেকেই শেখাতে হবে কোনটা গুডটাচ্ আর কোনটা বেডটাচ্। এখন দেশে ধর্ষণের যে মহাযজ্ঞ চলতেছে অনেকেই বলতেছে নারী বেপর্দার কারণে তা হচ্ছে। পর্দার কথা যদি বলতে হয় তাহলে নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই পর্দার বিধান রয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে ধর্ষকের বিচার নিশ্চিত করে বাংলাদেশকে ধর্ষকমুক্ত করতে হবে।’

নৃবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. শামীমা নাসরিন বলেন, ‘দেশব্যাপী নারীর প্রতি যে সহিংসতা চলছে তারই প্রতিবাদে আমরা এখানে দাঁড়িয়েছি। প্রতিবাদ করলেই যদি সমস্যা সমাধান হতো তাহলে হয়তো আমাদের এখানে দাঁড়াতে হতো না। এটার মানে স্পষ্ট যে আমাদের দেশের মানুষ হোক নারী বা পুরুষ কোনোভাবেই নিরাপদ নয়। ‘

কর্মসূচি শেষে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে সন্ধ্যায় মশাল মিছিল আয়োজনের ঘোষণা দেওয়া হয়।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

জবিতে ধর্ষণের সর্বোচ্চ বিচার দাবিতে বিক্ষোভ ও মাশাল মিছিল

সারাদেশে সংঘটিত ধর্ষণের প্রতিবাদে কুবিতে মানববন্ধন

আপডেট সময় : ০৪:৩১:১৮ অপরাহ্ণ, রবিবার, ৯ মার্চ ২০২৫

সারাদেশের মতো কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়েও (কুবি) ধর্ষণের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা। রবিবার (০৯ মার্চ) বেলা একটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বরে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মারুফ শেখ এবং আরাফ ভূঁইয়ার সঞ্চালনায় এ মানববন্ধনে শিক্ষকরাও সংহতি প্রকাশ করেন। বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. কামরুন নাহার শীলা, সহযোগী অধ্যাপক ড. নাহিদা বেগম, নৃবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. শামীমা নাসরিন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান (ভারপ্রাপ্ত) সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুল হাসানসহ অন্যান্য শিক্ষকরাও এসময় উপস্থিত ছিলেন।

‘দিয়েছি তো রক্ত আরও দেব রক্ত’, ধর্ষকের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘একটা একটা ধর্ষক ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর’, ‘আবু সাঈদের বাংলায় ধষর্কের ঠাই নাই’, ‘চব্বিশের বাংলায় ধর্ষকের ঠাঁই নাই’ সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে।

রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী জুলফা আক্তার বলেন, ‘আমরা সবাই আছিয়ার ধর্ষণের কাহিনি জানি। এমন অনেক ধর্ষণ হয় যার খবর আমরা জানি না। আমাদের সামনে আসে না, অনেকে ভয়ে প্রকাশ করে না। এভাবে ধর্ষন বাড়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে ধর্ষকদের উপযুক্ত সাজা না হওয়া। ১০ হাজার ২০ হাজার টাকা দিয়ে, হুমকি ধামকি দিয়ে তারা আবার মুক্ত আকাশের নিচে ঘুরে বেড়ায়। আমাদের দাবি, আমরা ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই, প্রকাশ্যে এনে যেন ফাঁসি দেওয়া হয়। যেন সামনে কোন ধর্ষক কাউকে ধর্ষণের কথা চিন্তাও না করতে পারে। আমাদের সবাইকে একসঙ্গে মিলে ধর্ষকদের প্রতিহত করতে হবে।’

নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ফাতেমা-তুজ-জোহরা মীম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জায়গায় পড়াশোনার সত্ত্বেও এমন অনেক মানুষ আছে যাদের মন-মানসিকতা অনেক নীচু। তারা নারীদেরকে বিভিন্নভাবে বুলিং করে। আমাদের চারপাশে এমন অনেক মানুষ আছে যারা ভিতরে এক এবং বাহিরে আরেক। এধরনের মানুষকে প্রশাসন চিহ্নিত করুক। যারা তারা ভবিষ্যতে পটেনশিয়াল রেপিস্ট হিসেবে না গড়ে ওঠে। প্রশাসনকে এমন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করুক যেন নারীদেরকে নিয়ে কটুক্তি করার আগে তাদের কলিজা কেঁপে ওঠে।’

বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. কামরুন নাহার শীলা বলেন, ‘গভীর শোক এবং প্রতিবাদের ভাষাকে একত্র করার জন্য আজকে আমরা এখানে জড়ো হয়েছি। গত কয়েকদিন ধরে আইনশৃঙ্খলার অবনতির করাল গ্রাসের শিকার হচ্ছে নারীরা। আজকে একটা নারী-শিশুও ধর্ষকের হাত থেকে নিরাপদ না। ছোট শিশু আছিয়া জীবনকে বোঝার আগেই তার জীবনটা শেষ করে দিয়েছে ধর্ষকেরা।

তিনি আরো বলেন, ‘ম্যোরাল পুলিশিংয়ের নামে যে নারী হেনস্থা তা কোনোভাবেই কাম্য না। আমরা এই রহস্যের সমাপ্তি চাই। সুন্দর সহিংসতামুক্ত বাংলাদেশ চাই।’

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান (ভারপ্রাপ্ত) মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘ধর্ষণই একমাত্র অপরাধ যেখানে ভুক্তভোগীকে তার নির্দোষতা প্রমাণ করতে হয়। আমাদের নিকটজনদের মধ্যেই ধর্ষক লুকিয়ে থাকে। তাই ছোটবেলা থেকে নারীদেরকে ধর্ষকের ব্যাপারে সচেতন করতে হবে। নারীদেরকে ছোটবেলা থেকেই শেখাতে হবে কোনটা গুডটাচ্ আর কোনটা বেডটাচ্। এখন দেশে ধর্ষণের যে মহাযজ্ঞ চলতেছে অনেকেই বলতেছে নারী বেপর্দার কারণে তা হচ্ছে। পর্দার কথা যদি বলতে হয় তাহলে নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই পর্দার বিধান রয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে ধর্ষকের বিচার নিশ্চিত করে বাংলাদেশকে ধর্ষকমুক্ত করতে হবে।’

নৃবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. শামীমা নাসরিন বলেন, ‘দেশব্যাপী নারীর প্রতি যে সহিংসতা চলছে তারই প্রতিবাদে আমরা এখানে দাঁড়িয়েছি। প্রতিবাদ করলেই যদি সমস্যা সমাধান হতো তাহলে হয়তো আমাদের এখানে দাঁড়াতে হতো না। এটার মানে স্পষ্ট যে আমাদের দেশের মানুষ হোক নারী বা পুরুষ কোনোভাবেই নিরাপদ নয়। ‘

কর্মসূচি শেষে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে সন্ধ্যায় মশাল মিছিল আয়োজনের ঘোষণা দেওয়া হয়।