শিরোনাম :
Logo মৃত্যুদণ্ড বজায় রেখে গুম প্রতিরোধ, প্রতিকার ও সুরক্ষা অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন Logo সিরাজদিখানে মরহুম হাজী জয়নাল আবেদীন মাষ্টার স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের দুটি ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত Logo ঢাকায় হামলার প্রতিবাদে খুবিতে প্রকৌশল অধিকার দাবিতে মানববন্ধন Logo চিকিৎসার অভাবে মানবেতর জীবন যাপন করছেন প্রবাসফেরত ইসমাইল হোসেন Logo চিত্রা-নড়াইল জেলা ছাত্রকল্যাণ ফাউন্ডেশনের নেতৃত্বে আরমান ও বোরহান Logo চাঁদপুর সদরের জনবান্ধব ইউএনও সাখাওয়াত জামিল সৈকতকে লক্ষ্মীপুরের এডিসি পদে বদলী Logo বেরোবিতে ভর্তি পরীক্ষার আসন বরাদ্দে অনিময়ের অভিযোগ ; প্রশাসন বলছে শিক্ষার্থীদের বুঝার ভুল Logo প্রকাশিত হয়েছে কবি ও কথাসাহিত্যিক নুরুন্নাহার মুন্নির সাহিত্য পত্রিকা ‘আখ্যান’ Logo পলাশবাড়ী পৌর এলাকায় জমি জবর দখলের অভিযোগ Logo প্রবাসফেরত ইসমাইলের পাশে দাঁড়ালেন এনসিপি নেতা ডা. আরিফুল ইসলাম

আমাদের প্রকৃত শত্রু কারা?

  • সম্পাদকীয় ডেস্ক সম্পাদকীয় ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৫:৩৩:৫৬ অপরাহ্ণ, বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • ৭৪৪ বার পড়া হয়েছে

|| মেজর মো. আলতামাস করিম, পিএসসি ||

মহান রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআনে মুসলিমদের সবচেয়ে বিদ্বেষী ও শত্রু হিসেবে ইহুদি এবং মুশরিকদের উল্লেখ করেছেন।

বর্তমান দুনিয়ার বেশিরভাগ মানুষ ধর্মের ব্যাপারে উদাসীন বা নাস্তিক হলেও তারা মুসলিম বিদ্বেষী নয়। অল্পসংখ্যক ইহুদি ও তাদের রাষ্ট্র ইসরাইল মুসলিমদের সবচেয়ে বড় শত্রু রাষ্ট্র। অন্যদিকে মূর্তিপূজার আনুষ্ঠানিক রাষ্ট্র ভারতকেই পৃথিবীর একমাত্র মুশরিক রাষ্ট্র হিসেবে উল্লেখ করা যায়।

কোরআনের বর্ণনার সাথে মিলিয়ে দেখলে, মুসলিমদের সবচেয়ে বড় শত্রু দুইটি দেশের একটি ভারত ও অন্যটি ইসরাইল। কেয়ামত পর্যন্ত তারা মুসলিমদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করবে এবং কখনোই মুসলিমদের প্রকৃত বন্ধু হবে না।

এই ভূখণ্ডের হাজার বছরের ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, বারোশ শতাব্দীতে ইখতিয়ার উদ্দিন মোহাম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজী মাত্র ১৭ জন সৈন্য নিয়ে লক্ষণ সেনকে পরাজিত করেছিলেন। পরে মোগলরা কয়েকশো বছর ভারতবর্ষ শাসন করলেও কাউকে জোরপূর্বক ইসলাম গ্রহণ করায়নি। তবু উচ্চবর্ণের হিন্দুদের মুসলিমদের প্রতি সবসময় বিদ্বেষ ছিল কারণ অনেক নিম্নবর্ণের হিন্দু ইসলাম গ্রহণ করেছিল।

১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে সিরাজউদ্দৌলার পতনের পর উচ্চবর্ণের হিন্দুরাই সবচেয়ে বেশি উল্লসিত হয়েছিল এবং ইংরেজদের স্বাগত জানিয়েছিল। পরবর্তী ২০০ বছর ইংরেজদের প্রধান শত্রু ছিল মুসলিমরা। ১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তানের বিভক্তির সময়ও ইংরেজরা পাকিস্তানের প্রতি বৈরী ছিল। কাশ্মীর, হায়দ্রাবাদ ও পূর্ব পাকিস্তান ইস্যুতে ভারতীয় স্বার্থে একটি পরিবেশ তৈরি করা হয়েছিল, যা ভারত ব্যবহার করে কাশ্মীর ও হায়দ্রাবাদ দখল করে।

১৯৪৭ সাল থেকেই ভারতের স্বপ্ন ছিল বাংলা দখল করা। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ১৯৪৯ সালে আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠন হয় এবং পরে এটি সেকুলার আওয়ামী লীগে রূপান্তরিত হয়। শেখ মুজিবুর রহমান এর নেতা হিসেবে আবির্ভূত হন। অভিযোগ রয়েছে, তার পিতা বা পিতামহ হিন্দু ছিলেন। শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক জীবন বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, তিনি সবসময় ভারতের স্বার্থে কাজ করেছেন।

১৯৭১ সালে ভারত বাংলাদেশকে তাদের প্রদেশের চেয়ে অধিক মর্যাদা দিতে চায়নি। ১৯৭৫ সালে শেখ মুজিবের মৃত্যুর পর বাংলাদেশ ভারতের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। শেখ হাসিনাকে ১৯৮১ সালে দেশে ফিরিয়ে আনা হয় এবং তাকে প্রশিক্ষণ দিয়ে পুনরায় বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা চালানো হয়।

২০০১ সালে রৌমারীতে বিডিআরের বীরত্বের পর ভারত প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করে। ২০০৮ সালের নির্বাচনের ৫০ দিনের মধ্যেই ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়। এর মাধ্যমে ভারত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উপর কর্তৃত্ব স্থাপন করে।

অগাস্ট ২০২৪-এ শেখ হাসিনার পতন ভারতের জন্য অপমানজনক ছিল। এরপর তারা বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চালায়। ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ভারত ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশের শত্রু রাষ্ট্র ছিল।

আমাদের উচিত শত্রুকে চিহ্নিত করে তাদের পরিকল্পনা নস্যাৎ করার জন্য প্রস্তুত থাকা। শত্রুর যতই চক্রান্ত হোক, ঈমানদার হিসেবে আমাদের বিশ্বাস করতে হবে যে আল্লাহই সবচেয়ে উত্তম পরিকল্পনাকারী এবং তিনিই আমাদের জন্য যথেষ্ট।

লেখক: অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

মৃত্যুদণ্ড বজায় রেখে গুম প্রতিরোধ, প্রতিকার ও সুরক্ষা অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন

আমাদের প্রকৃত শত্রু কারা?

আপডেট সময় : ০৫:৩৩:৫৬ অপরাহ্ণ, বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

|| মেজর মো. আলতামাস করিম, পিএসসি ||

মহান রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআনে মুসলিমদের সবচেয়ে বিদ্বেষী ও শত্রু হিসেবে ইহুদি এবং মুশরিকদের উল্লেখ করেছেন।

বর্তমান দুনিয়ার বেশিরভাগ মানুষ ধর্মের ব্যাপারে উদাসীন বা নাস্তিক হলেও তারা মুসলিম বিদ্বেষী নয়। অল্পসংখ্যক ইহুদি ও তাদের রাষ্ট্র ইসরাইল মুসলিমদের সবচেয়ে বড় শত্রু রাষ্ট্র। অন্যদিকে মূর্তিপূজার আনুষ্ঠানিক রাষ্ট্র ভারতকেই পৃথিবীর একমাত্র মুশরিক রাষ্ট্র হিসেবে উল্লেখ করা যায়।

কোরআনের বর্ণনার সাথে মিলিয়ে দেখলে, মুসলিমদের সবচেয়ে বড় শত্রু দুইটি দেশের একটি ভারত ও অন্যটি ইসরাইল। কেয়ামত পর্যন্ত তারা মুসলিমদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করবে এবং কখনোই মুসলিমদের প্রকৃত বন্ধু হবে না।

এই ভূখণ্ডের হাজার বছরের ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, বারোশ শতাব্দীতে ইখতিয়ার উদ্দিন মোহাম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজী মাত্র ১৭ জন সৈন্য নিয়ে লক্ষণ সেনকে পরাজিত করেছিলেন। পরে মোগলরা কয়েকশো বছর ভারতবর্ষ শাসন করলেও কাউকে জোরপূর্বক ইসলাম গ্রহণ করায়নি। তবু উচ্চবর্ণের হিন্দুদের মুসলিমদের প্রতি সবসময় বিদ্বেষ ছিল কারণ অনেক নিম্নবর্ণের হিন্দু ইসলাম গ্রহণ করেছিল।

১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে সিরাজউদ্দৌলার পতনের পর উচ্চবর্ণের হিন্দুরাই সবচেয়ে বেশি উল্লসিত হয়েছিল এবং ইংরেজদের স্বাগত জানিয়েছিল। পরবর্তী ২০০ বছর ইংরেজদের প্রধান শত্রু ছিল মুসলিমরা। ১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তানের বিভক্তির সময়ও ইংরেজরা পাকিস্তানের প্রতি বৈরী ছিল। কাশ্মীর, হায়দ্রাবাদ ও পূর্ব পাকিস্তান ইস্যুতে ভারতীয় স্বার্থে একটি পরিবেশ তৈরি করা হয়েছিল, যা ভারত ব্যবহার করে কাশ্মীর ও হায়দ্রাবাদ দখল করে।

১৯৪৭ সাল থেকেই ভারতের স্বপ্ন ছিল বাংলা দখল করা। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ১৯৪৯ সালে আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠন হয় এবং পরে এটি সেকুলার আওয়ামী লীগে রূপান্তরিত হয়। শেখ মুজিবুর রহমান এর নেতা হিসেবে আবির্ভূত হন। অভিযোগ রয়েছে, তার পিতা বা পিতামহ হিন্দু ছিলেন। শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক জীবন বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, তিনি সবসময় ভারতের স্বার্থে কাজ করেছেন।

১৯৭১ সালে ভারত বাংলাদেশকে তাদের প্রদেশের চেয়ে অধিক মর্যাদা দিতে চায়নি। ১৯৭৫ সালে শেখ মুজিবের মৃত্যুর পর বাংলাদেশ ভারতের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। শেখ হাসিনাকে ১৯৮১ সালে দেশে ফিরিয়ে আনা হয় এবং তাকে প্রশিক্ষণ দিয়ে পুনরায় বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা চালানো হয়।

২০০১ সালে রৌমারীতে বিডিআরের বীরত্বের পর ভারত প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করে। ২০০৮ সালের নির্বাচনের ৫০ দিনের মধ্যেই ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়। এর মাধ্যমে ভারত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উপর কর্তৃত্ব স্থাপন করে।

অগাস্ট ২০২৪-এ শেখ হাসিনার পতন ভারতের জন্য অপমানজনক ছিল। এরপর তারা বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চালায়। ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ভারত ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশের শত্রু রাষ্ট্র ছিল।

আমাদের উচিত শত্রুকে চিহ্নিত করে তাদের পরিকল্পনা নস্যাৎ করার জন্য প্রস্তুত থাকা। শত্রুর যতই চক্রান্ত হোক, ঈমানদার হিসেবে আমাদের বিশ্বাস করতে হবে যে আল্লাহই সবচেয়ে উত্তম পরিকল্পনাকারী এবং তিনিই আমাদের জন্য যথেষ্ট।

লেখক: অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা