শিরোনাম :
Logo আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস ২০২৫ উপলক্ষে কয়রায় র‍্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত Logo দর্শনা থানা পুলিশের মাদকবিরোধী অভিযান, ৪ কেজি গাঁজাসহ আটক ১ Logo জীবননগরে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস-২০২৫ উদযাপন Logo আইএফএডিকে বাংলাদেশের তরুণ কৃষি উদ্যোক্তাদের জন্য সামাজিক ব্যবসা তহবিল গঠনের প্রস্তাব প্রধান উপদেষ্টার Logo চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ডিঙ্গেদহ এলাকায় বিষাক্ত মদপানে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। Logo ভাতগ্রামে ফ্রী রক্তের গ্রুপ নির্ণয় ও ফ্রী মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হল Logo চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। Logo বিগত তিন নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারীদের বিরত রাখা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Logo কয়রায় মায়ের সঙ্গে অভিমানে ৯ বছরের স্কুলছাত্রী আছিয়ার মর্মান্তিক মৃত্যু Logo জাতীয় পতাকা ও সংগীত অবমাননাকারি সুন্দরগঞ্জের মিরাজ আটক : মামলা দায়ের

আমাদের প্রকৃত শত্রু কারা?

  • সম্পাদকীয় ডেস্ক সম্পাদকীয় ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৫:৩৩:৫৬ অপরাহ্ণ, বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • ৭৫০ বার পড়া হয়েছে

|| মেজর মো. আলতামাস করিম, পিএসসি ||

মহান রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআনে মুসলিমদের সবচেয়ে বিদ্বেষী ও শত্রু হিসেবে ইহুদি এবং মুশরিকদের উল্লেখ করেছেন।

বর্তমান দুনিয়ার বেশিরভাগ মানুষ ধর্মের ব্যাপারে উদাসীন বা নাস্তিক হলেও তারা মুসলিম বিদ্বেষী নয়। অল্পসংখ্যক ইহুদি ও তাদের রাষ্ট্র ইসরাইল মুসলিমদের সবচেয়ে বড় শত্রু রাষ্ট্র। অন্যদিকে মূর্তিপূজার আনুষ্ঠানিক রাষ্ট্র ভারতকেই পৃথিবীর একমাত্র মুশরিক রাষ্ট্র হিসেবে উল্লেখ করা যায়।

কোরআনের বর্ণনার সাথে মিলিয়ে দেখলে, মুসলিমদের সবচেয়ে বড় শত্রু দুইটি দেশের একটি ভারত ও অন্যটি ইসরাইল। কেয়ামত পর্যন্ত তারা মুসলিমদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করবে এবং কখনোই মুসলিমদের প্রকৃত বন্ধু হবে না।

এই ভূখণ্ডের হাজার বছরের ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, বারোশ শতাব্দীতে ইখতিয়ার উদ্দিন মোহাম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজী মাত্র ১৭ জন সৈন্য নিয়ে লক্ষণ সেনকে পরাজিত করেছিলেন। পরে মোগলরা কয়েকশো বছর ভারতবর্ষ শাসন করলেও কাউকে জোরপূর্বক ইসলাম গ্রহণ করায়নি। তবু উচ্চবর্ণের হিন্দুদের মুসলিমদের প্রতি সবসময় বিদ্বেষ ছিল কারণ অনেক নিম্নবর্ণের হিন্দু ইসলাম গ্রহণ করেছিল।

১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে সিরাজউদ্দৌলার পতনের পর উচ্চবর্ণের হিন্দুরাই সবচেয়ে বেশি উল্লসিত হয়েছিল এবং ইংরেজদের স্বাগত জানিয়েছিল। পরবর্তী ২০০ বছর ইংরেজদের প্রধান শত্রু ছিল মুসলিমরা। ১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তানের বিভক্তির সময়ও ইংরেজরা পাকিস্তানের প্রতি বৈরী ছিল। কাশ্মীর, হায়দ্রাবাদ ও পূর্ব পাকিস্তান ইস্যুতে ভারতীয় স্বার্থে একটি পরিবেশ তৈরি করা হয়েছিল, যা ভারত ব্যবহার করে কাশ্মীর ও হায়দ্রাবাদ দখল করে।

১৯৪৭ সাল থেকেই ভারতের স্বপ্ন ছিল বাংলা দখল করা। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ১৯৪৯ সালে আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠন হয় এবং পরে এটি সেকুলার আওয়ামী লীগে রূপান্তরিত হয়। শেখ মুজিবুর রহমান এর নেতা হিসেবে আবির্ভূত হন। অভিযোগ রয়েছে, তার পিতা বা পিতামহ হিন্দু ছিলেন। শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক জীবন বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, তিনি সবসময় ভারতের স্বার্থে কাজ করেছেন।

১৯৭১ সালে ভারত বাংলাদেশকে তাদের প্রদেশের চেয়ে অধিক মর্যাদা দিতে চায়নি। ১৯৭৫ সালে শেখ মুজিবের মৃত্যুর পর বাংলাদেশ ভারতের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। শেখ হাসিনাকে ১৯৮১ সালে দেশে ফিরিয়ে আনা হয় এবং তাকে প্রশিক্ষণ দিয়ে পুনরায় বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা চালানো হয়।

২০০১ সালে রৌমারীতে বিডিআরের বীরত্বের পর ভারত প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করে। ২০০৮ সালের নির্বাচনের ৫০ দিনের মধ্যেই ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়। এর মাধ্যমে ভারত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উপর কর্তৃত্ব স্থাপন করে।

অগাস্ট ২০২৪-এ শেখ হাসিনার পতন ভারতের জন্য অপমানজনক ছিল। এরপর তারা বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চালায়। ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ভারত ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশের শত্রু রাষ্ট্র ছিল।

আমাদের উচিত শত্রুকে চিহ্নিত করে তাদের পরিকল্পনা নস্যাৎ করার জন্য প্রস্তুত থাকা। শত্রুর যতই চক্রান্ত হোক, ঈমানদার হিসেবে আমাদের বিশ্বাস করতে হবে যে আল্লাহই সবচেয়ে উত্তম পরিকল্পনাকারী এবং তিনিই আমাদের জন্য যথেষ্ট।

লেখক: অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস ২০২৫ উপলক্ষে কয়রায় র‍্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

আমাদের প্রকৃত শত্রু কারা?

আপডেট সময় : ০৫:৩৩:৫৬ অপরাহ্ণ, বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

|| মেজর মো. আলতামাস করিম, পিএসসি ||

মহান রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআনে মুসলিমদের সবচেয়ে বিদ্বেষী ও শত্রু হিসেবে ইহুদি এবং মুশরিকদের উল্লেখ করেছেন।

বর্তমান দুনিয়ার বেশিরভাগ মানুষ ধর্মের ব্যাপারে উদাসীন বা নাস্তিক হলেও তারা মুসলিম বিদ্বেষী নয়। অল্পসংখ্যক ইহুদি ও তাদের রাষ্ট্র ইসরাইল মুসলিমদের সবচেয়ে বড় শত্রু রাষ্ট্র। অন্যদিকে মূর্তিপূজার আনুষ্ঠানিক রাষ্ট্র ভারতকেই পৃথিবীর একমাত্র মুশরিক রাষ্ট্র হিসেবে উল্লেখ করা যায়।

কোরআনের বর্ণনার সাথে মিলিয়ে দেখলে, মুসলিমদের সবচেয়ে বড় শত্রু দুইটি দেশের একটি ভারত ও অন্যটি ইসরাইল। কেয়ামত পর্যন্ত তারা মুসলিমদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করবে এবং কখনোই মুসলিমদের প্রকৃত বন্ধু হবে না।

এই ভূখণ্ডের হাজার বছরের ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, বারোশ শতাব্দীতে ইখতিয়ার উদ্দিন মোহাম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজী মাত্র ১৭ জন সৈন্য নিয়ে লক্ষণ সেনকে পরাজিত করেছিলেন। পরে মোগলরা কয়েকশো বছর ভারতবর্ষ শাসন করলেও কাউকে জোরপূর্বক ইসলাম গ্রহণ করায়নি। তবু উচ্চবর্ণের হিন্দুদের মুসলিমদের প্রতি সবসময় বিদ্বেষ ছিল কারণ অনেক নিম্নবর্ণের হিন্দু ইসলাম গ্রহণ করেছিল।

১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে সিরাজউদ্দৌলার পতনের পর উচ্চবর্ণের হিন্দুরাই সবচেয়ে বেশি উল্লসিত হয়েছিল এবং ইংরেজদের স্বাগত জানিয়েছিল। পরবর্তী ২০০ বছর ইংরেজদের প্রধান শত্রু ছিল মুসলিমরা। ১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তানের বিভক্তির সময়ও ইংরেজরা পাকিস্তানের প্রতি বৈরী ছিল। কাশ্মীর, হায়দ্রাবাদ ও পূর্ব পাকিস্তান ইস্যুতে ভারতীয় স্বার্থে একটি পরিবেশ তৈরি করা হয়েছিল, যা ভারত ব্যবহার করে কাশ্মীর ও হায়দ্রাবাদ দখল করে।

১৯৪৭ সাল থেকেই ভারতের স্বপ্ন ছিল বাংলা দখল করা। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ১৯৪৯ সালে আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠন হয় এবং পরে এটি সেকুলার আওয়ামী লীগে রূপান্তরিত হয়। শেখ মুজিবুর রহমান এর নেতা হিসেবে আবির্ভূত হন। অভিযোগ রয়েছে, তার পিতা বা পিতামহ হিন্দু ছিলেন। শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক জীবন বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, তিনি সবসময় ভারতের স্বার্থে কাজ করেছেন।

১৯৭১ সালে ভারত বাংলাদেশকে তাদের প্রদেশের চেয়ে অধিক মর্যাদা দিতে চায়নি। ১৯৭৫ সালে শেখ মুজিবের মৃত্যুর পর বাংলাদেশ ভারতের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। শেখ হাসিনাকে ১৯৮১ সালে দেশে ফিরিয়ে আনা হয় এবং তাকে প্রশিক্ষণ দিয়ে পুনরায় বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা চালানো হয়।

২০০১ সালে রৌমারীতে বিডিআরের বীরত্বের পর ভারত প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করে। ২০০৮ সালের নির্বাচনের ৫০ দিনের মধ্যেই ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়। এর মাধ্যমে ভারত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উপর কর্তৃত্ব স্থাপন করে।

অগাস্ট ২০২৪-এ শেখ হাসিনার পতন ভারতের জন্য অপমানজনক ছিল। এরপর তারা বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চালায়। ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ভারত ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশের শত্রু রাষ্ট্র ছিল।

আমাদের উচিত শত্রুকে চিহ্নিত করে তাদের পরিকল্পনা নস্যাৎ করার জন্য প্রস্তুত থাকা। শত্রুর যতই চক্রান্ত হোক, ঈমানদার হিসেবে আমাদের বিশ্বাস করতে হবে যে আল্লাহই সবচেয়ে উত্তম পরিকল্পনাকারী এবং তিনিই আমাদের জন্য যথেষ্ট।

লেখক: অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা