গাংনী পৌরসভার মেয়র আশরাফুল ইসলামের বিরুদ্ধে কাউন্সিলরদের নানা অভিযোগ

  • rahul raj
  • আপডেট সময় : ১২:৪৯:৪৯ অপরাহ্ণ, সোমবার, ২৭ মে ২০১৯
  • ৭৪৩ বার পড়া হয়েছে

কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধে মামলা করবেন গাংনীর মেয়র

নিউজ ডেস্ক:গাংনী পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলামের বিরুদ্ধে মাসিক সভা ডেকে নিজেই না থাকার অভিযোগ তুলেছে কাউন্সিলররা। গতকাল রোববার দুপুরে পৌর কাউন্সিল নবির উদ্দিন, বদরুল আলম বুদু, আছেল উদ্দিন, বাবুল আকতার ও সংরক্ষিত আসনের মহিলা কাউন্সিলর ফিরোজা বেগম সাংবাদিকদের কাছে পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলামের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ করে বলেন, ‘মেয়র আশরাফুল ইসলাম বারবার মাসিক সভা ডাকলেও কোন নোটিশ ছাড়ায় সে অনুপস্থিত থাকে। আবার রেজুলেশন খাতায় স্বাক্ষর করার কোন সুযোগ তিনি দেন না।’
‘তবে মেয়র আশরাফ ভেন্ডার জানান, আমার অনুপস্থিতিতে আমাকে না জানিয়ে আমার অফিস স্টাফদের ভয়ভীতি দেখিয়ে অফিস থেকে বের করে চারটি কম্পিউটারসহ অফিসের বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর করেছে কাউন্সিলররা এ বিষয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।
কাউন্সিলর নবির উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, ‘মেয়র আশরাফুলের দুর্নীতির বিষয়ে আমরা প্রতিবাদ করি বলেই, সে মাসিক মিটিং ডেকে খাতাপত্র গোপন রেখে নিজে অনুপস্থিত থাকলেও, পরে গোপনে রেজুলেশন খাতায় নিজে স্বাক্ষর করে থাকে। অথচ আমাদের স্বাক্ষর বঞ্চিত করে রাখেন, যাতে পরপর তিনটি মিটিং অনুপস্থিত থাকলে কাউন্সিলর পদ হারিয়ে যায়। আর এতে মেয়রের দুর্নীতি খুব সহজেই কায়েম করতে পারেন।’
কাউন্সিলররা অভিযোগে আরো বলেন, ‘এর আগে দু’বার মাসিক মিটিং ডাকার পরও সে অনুপস্থিত ছিল। যে কারণে আমরা রেজুলেশন খাতায় স্বাক্ষর করার সুযোগ পাইনি। এখন গতকাল (রোববার) পরপর তিনটি মাসিক মিটিং এর রেজুলেশনে যদি স্বাক্ষর না হয় তাহলে কাউন্সিলর পদ থাকবেনা।’ যে কারণে কাউন্সিলররা পৌরসভায় উত্তেজিত হয়ে পৌর কর্মচারি-কর্মকর্তাদের অফিস ছেড়ে চলে যেতে বলেন। এ সময় কর্মকর্তারা অফিস কক্ষ বন্ধ করে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকে।
কাউন্সিলর নবির উদ্দিন সাংবাদিকদের কাছে আরো বলেন, ‘পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলাম বর্তমানে অনেক টাকা ঋণী হয়ে দেউলিয়া হয়ে গেছে। যে কারণে বিভিন্ন খাতে দুর্নীতি করে যাচ্ছে। এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে যারা কথা বলে, তাদেরকে নানাভাবে হয়রানি করে পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলাম।’ তিনি আরও বলেন, ‘গাংনী তহবাজারের নির্মিত ১৩টি দোকান ঘর নির্মাণ করে তাতে পুরাতন দুজন ব্যবসায়ীকে দোকান বরাদ্দ থেকে বঞ্চিত করেছে।’ কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘ব্যবসায়ী দু’জন টাকা জামানতের রশিদ দাবি করেছিলেন। পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলাম পৌর রশিদ বই ছাড়াই দোকান বরাদ্দের টাকা পকেটস্থ করেছে।’ এছাড়াও আরো অনেক অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় কাউন্সিলরদের রেজুলেশন বইয়ে স্বাক্ষর করা থেকে বঞ্চিত করা ছাড়াও বিভিন্ন সুবিধা থেকেও বঞ্চিত করে রাখেন।
কাউন্সিলররা সাংবাদিকদের জানান, ‘পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলামের স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধ না হলে আমরা আগামীতে জেলা প্রশাসকের হস্থক্ষেপ কামনা করব। তাতেও যদি না হয়, তাহলে আরো উপর মহলে জানাবো।
জানতে চাইলে পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘এর আগে নিয়মিত মিটিং হয়েছে, তারা তাদের ইচ্ছামতো মিটিং এ অনুপস্থিত ছিল। এমনকি ১০টার সময়ের মিটিংয়ে তারা আসবে বেলা দুই’টার দিকে। এ কারণে তারা যদি রেজুলেশনে স্বাক্ষর না করতে পারেন, তাতে আমার কিছু করার নেই।’ মেয়র আরো বলেন, ‘পৌরসভার উন্নয়নের জন্য কিছু বরাদ্দের জন্য জরুরীভাবে ঢাকায় এসেছি। আজকের মিটিং স্থগিত হয়েছে, এই মিটিং আগামীতে হবে। এ ব্যাপারে নোটিশ দেওয়া হবে। কিন্তু কাউন্সিলররা আমার অনুপস্থিতিতে আমাকে না জানিয়ে আমার অফিস স্টাফদের ভয়ভীতি দেখিয়ে অফিস থেকে বের করে চারটি কম্পিউটারসহ অফিসের বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর করেছে। তাতে প্রায় ৫ লাখ টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে। এ বিষয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করবেন বলে জানান মেয়র আশরাফুল ইসলাম।

 

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

কুষ্টিয়ায় ভুল প্রশ্নপত্র বিতরণের ঘটনায় কেন্দ্রসচিবসহ ৬ জনকে অব্যাহতি

গাংনী পৌরসভার মেয়র আশরাফুল ইসলামের বিরুদ্ধে কাউন্সিলরদের নানা অভিযোগ

আপডেট সময় : ১২:৪৯:৪৯ অপরাহ্ণ, সোমবার, ২৭ মে ২০১৯

কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধে মামলা করবেন গাংনীর মেয়র

নিউজ ডেস্ক:গাংনী পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলামের বিরুদ্ধে মাসিক সভা ডেকে নিজেই না থাকার অভিযোগ তুলেছে কাউন্সিলররা। গতকাল রোববার দুপুরে পৌর কাউন্সিল নবির উদ্দিন, বদরুল আলম বুদু, আছেল উদ্দিন, বাবুল আকতার ও সংরক্ষিত আসনের মহিলা কাউন্সিলর ফিরোজা বেগম সাংবাদিকদের কাছে পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলামের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ করে বলেন, ‘মেয়র আশরাফুল ইসলাম বারবার মাসিক সভা ডাকলেও কোন নোটিশ ছাড়ায় সে অনুপস্থিত থাকে। আবার রেজুলেশন খাতায় স্বাক্ষর করার কোন সুযোগ তিনি দেন না।’
‘তবে মেয়র আশরাফ ভেন্ডার জানান, আমার অনুপস্থিতিতে আমাকে না জানিয়ে আমার অফিস স্টাফদের ভয়ভীতি দেখিয়ে অফিস থেকে বের করে চারটি কম্পিউটারসহ অফিসের বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর করেছে কাউন্সিলররা এ বিষয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।
কাউন্সিলর নবির উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, ‘মেয়র আশরাফুলের দুর্নীতির বিষয়ে আমরা প্রতিবাদ করি বলেই, সে মাসিক মিটিং ডেকে খাতাপত্র গোপন রেখে নিজে অনুপস্থিত থাকলেও, পরে গোপনে রেজুলেশন খাতায় নিজে স্বাক্ষর করে থাকে। অথচ আমাদের স্বাক্ষর বঞ্চিত করে রাখেন, যাতে পরপর তিনটি মিটিং অনুপস্থিত থাকলে কাউন্সিলর পদ হারিয়ে যায়। আর এতে মেয়রের দুর্নীতি খুব সহজেই কায়েম করতে পারেন।’
কাউন্সিলররা অভিযোগে আরো বলেন, ‘এর আগে দু’বার মাসিক মিটিং ডাকার পরও সে অনুপস্থিত ছিল। যে কারণে আমরা রেজুলেশন খাতায় স্বাক্ষর করার সুযোগ পাইনি। এখন গতকাল (রোববার) পরপর তিনটি মাসিক মিটিং এর রেজুলেশনে যদি স্বাক্ষর না হয় তাহলে কাউন্সিলর পদ থাকবেনা।’ যে কারণে কাউন্সিলররা পৌরসভায় উত্তেজিত হয়ে পৌর কর্মচারি-কর্মকর্তাদের অফিস ছেড়ে চলে যেতে বলেন। এ সময় কর্মকর্তারা অফিস কক্ষ বন্ধ করে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকে।
কাউন্সিলর নবির উদ্দিন সাংবাদিকদের কাছে আরো বলেন, ‘পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলাম বর্তমানে অনেক টাকা ঋণী হয়ে দেউলিয়া হয়ে গেছে। যে কারণে বিভিন্ন খাতে দুর্নীতি করে যাচ্ছে। এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে যারা কথা বলে, তাদেরকে নানাভাবে হয়রানি করে পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলাম।’ তিনি আরও বলেন, ‘গাংনী তহবাজারের নির্মিত ১৩টি দোকান ঘর নির্মাণ করে তাতে পুরাতন দুজন ব্যবসায়ীকে দোকান বরাদ্দ থেকে বঞ্চিত করেছে।’ কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘ব্যবসায়ী দু’জন টাকা জামানতের রশিদ দাবি করেছিলেন। পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলাম পৌর রশিদ বই ছাড়াই দোকান বরাদ্দের টাকা পকেটস্থ করেছে।’ এছাড়াও আরো অনেক অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় কাউন্সিলরদের রেজুলেশন বইয়ে স্বাক্ষর করা থেকে বঞ্চিত করা ছাড়াও বিভিন্ন সুবিধা থেকেও বঞ্চিত করে রাখেন।
কাউন্সিলররা সাংবাদিকদের জানান, ‘পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলামের স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধ না হলে আমরা আগামীতে জেলা প্রশাসকের হস্থক্ষেপ কামনা করব। তাতেও যদি না হয়, তাহলে আরো উপর মহলে জানাবো।
জানতে চাইলে পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘এর আগে নিয়মিত মিটিং হয়েছে, তারা তাদের ইচ্ছামতো মিটিং এ অনুপস্থিত ছিল। এমনকি ১০টার সময়ের মিটিংয়ে তারা আসবে বেলা দুই’টার দিকে। এ কারণে তারা যদি রেজুলেশনে স্বাক্ষর না করতে পারেন, তাতে আমার কিছু করার নেই।’ মেয়র আরো বলেন, ‘পৌরসভার উন্নয়নের জন্য কিছু বরাদ্দের জন্য জরুরীভাবে ঢাকায় এসেছি। আজকের মিটিং স্থগিত হয়েছে, এই মিটিং আগামীতে হবে। এ ব্যাপারে নোটিশ দেওয়া হবে। কিন্তু কাউন্সিলররা আমার অনুপস্থিতিতে আমাকে না জানিয়ে আমার অফিস স্টাফদের ভয়ভীতি দেখিয়ে অফিস থেকে বের করে চারটি কম্পিউটারসহ অফিসের বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর করেছে। তাতে প্রায় ৫ লাখ টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে। এ বিষয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করবেন বলে জানান মেয়র আশরাফুল ইসলাম।