শিরোনাম :
Logo কচুয়ায় নিরাপদ সড়ক চাই উদ্যোগে ডা. আমিনুল ইসলামকে ফুলেল সংবর্ধনা Logo আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ কর্তৃক মাদক সম্রজ্ঞী মিনি বেগম মাদক বিক্রয়কালে হাতেনাতে গ্রেফতার Logo ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ঈদের আয়োজন Logo নির্বাচন ডিসেম্বরের মধ্যে না হলে দেশ অস্থিতিশীল হতে পারে, রয়টার্সকে মঈন খান Logo কলকাতাকে উড়িয়ে মুম্বাইয়ের প্রথম জয় Logo অস্ট্রেলিয়ার কেন্দ্রীয় চুক্তিতে চমক, তালিকায় ২ টেস্ট খেলা ব্যাটার Logo আবারও রাফাহ থেকে ফিলিস্তিনিদের সরে যাওয়ার নির্দেশ ইসরায়েলের Logo জাপানে মেগা ভূমিকম্পের আশঙ্কা, মারা যেতে পারে ৩ লাখ মানুষ Logo ঈদের দ্বিতীয় দিনেও ট্রেন-বাস স্টেশনে ঘরমুখো মানুষের চাপ Logo দুই অঞ্চলে ঝড়ের আভাস, সতর্ক সংকেত

‘দেশে ফিরতে পেরে ভাল লাগছে’, ফিরেই প্রথম প্রতিক্রিয়া উইং কমান্ডার অভিনন্দনের

  • আপডেট সময় : ০১:৫৫:৩৬ অপরাহ্ণ, শনিবার, ২ মার্চ ২০১৯
  • ৭৪৯ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

৫৮ ঘণ্টা পাকিস্তানের কবজায় থাকার পর শুক্রবার ভারতে ফিরেছেন উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান। ওই দিন রাত ৯টা ২০ নাগাদ ওয়াঘা-অটারী সীমান্তে তাঁকে ভারতের হাতে তুলে দেয় পাকিস্তান। দেশের মাটিতে পা রাখার পরই অভিনন্দনের প্রথম প্রতিক্রিয়া ছিল, “ফিরতে পেরে খুব ভাল লাগছে।”

গোটা দেশ প্রহর গুনছিল কখন ঘরে ফিরবেন দেশের এই বীর সন্তান। তাঁর ফিরে আসা নিয়েও দিনভর কম নাটক হয়নি। সকালেই খবর আসে ইসলামাবাদ থেকে সড়কপথে লাহৌরে নিয়ে আসা হচ্ছে অভিনন্দনকে। দুপুর ২টো নাগাদ ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হবে তাঁকে। কিন্তু সেই সময়ও পেরিয়ে যায়। ফের জানা যায়, সাড়ে ৩টে নাগাদ অভিনন্দন দেশে ফিরছেন। সেই সময়ও অতিক্রান্ত হয়ে যায়। অবশেষে রাত ৯টার পর ওয়াঘা সীমান্ত থেকে নীল ব্লেজার, সাদা জামা এবং ধূসর প্যান্টে হেঁটে আসতে দেখা যায়। দেশের মাটিতে পা রাখলেন। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন। স্বস্তি নেমে এল গোটা দেশে।

গত ২৭ ফেব্রুয়ারি পাক সেনার হাতে আটক হন অভিনন্দন। খবরটা সামনে আসতেই গোটা দেশে একটা আশঙ্কার ছায়া নেমে আসে। পাকিস্তানে ভারতীয় যুদ্ধবন্দিদের ইতিহাস মনে পড়ে যাচ্ছিল অনেকেরই। ১৯৯৯ সালের কার্গিল যুদ্ধের সময় পাক সেনার হাতে ধরা পড়া বায়ুসেনার আর এক পাইলট নচিকেতার উদাহরণই ছিল একমাত্র ভরসা। কিন্তু ভয় দেখাচ্ছিল অজয় আহুজার স্মৃতি।

ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট কে নচিকেতা এবং স্কোয়াড্রন লিডার অজয় আহুজা। ১৯৯৯ সালের ২৭ মে, কার্গিল যুদ্ধের সময় পাক বাহিনীর হাতে পড়েছিলেন এই দু’জন। সে দিন কার্গিলের আকাশে নচিকেতার মিগ-২৭ বিমানের ইঞ্জিনে আগুন ধরে যায়। তিনি ‘ইজেক্ট’ করে বেরিয়ে আসতে পারলেও পাক সেনার নর্দার্ন ইনফ্যান্ট্রি বন্দি করে তাঁকে। তৎকালীন অটলবিহারী বাজপেয়ী সরকার গোপনে বিস্তর আলোচনা চালিয়ে রাজি করায় পাকিস্তানকে। রেড ক্রসের মাধ্যমে ফিরিয়ে আনা হয় নচিকেতাকে। কিন্তু অজয়কে বন্দি অবস্থায় হত্যা করেছিল পাক বাহিনী। বায়ুসেনার ভেঙে পড়া বিমানের এক চালককে খুঁজতে বেরিয়েছিলেন তিনি। ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় অজয়ের বিমান। তিনি ‘ইজেক্ট’ করে নামতে পারলেও বন্দি হন। সে দিনই তাঁকে হত্যা করে পাক বাহিনী।

নচিকেতা ফিরলেও কী ভাবে অত্যাচার করা হয়েছিল ওই বায়ুসেনার পাইলটের উপর, সেই ঘটনা আজও অনেকের মনে টাটকা। সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা যেন অভিনন্দনের জীবনে নেমে না আসে গোটা দেশ জুড়ে সেই প্রার্থনা চলছিল। নচিকেতা ধরা পড়ার আট দিন পর দেশে ফিরেছিলেন। অভিনন্দন ফিরলেন দু’দিন পর। কিন্তু সেই দু’দিনের প্রতিটি মুহূর্ত যেন দুঃস্বপ্ন হয়ে তাড়া করছিল দেশবাসীকে। পাকিস্তান অভিনন্দনকে আটক করার পরই ভেবেছিল তাঁকে ঢাল বানিয়ে ভারতের উপর চাপ সৃষ্টি করবে। সেই খেলায় কিন্তু বাজিমাত করল ভারতই। স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, কোনও শর্ত ছাড়াই মুক্তি দিতে হবে তাঁকে। পাশাপাশি, জেনিভা কনভেনশনের বিষয়টিও পাকিস্তানকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছিল। আন্তর্জাতিক মঞ্চ থেকেও চাপ আসতে শুরু করেছিল পাকিস্তানের উপর। শেষমেশ, পাক প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করলেন, অভিনন্দনকে ছেড়ে দেওয়া হবে। ভারতকে ‘শান্তির বার্তা’ দিতেই নাকি এই সিদ্ধান্ত ছিল তাঁর।

সূত্র : আন্দবাজার পত্রিকা 

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

কচুয়ায় নিরাপদ সড়ক চাই উদ্যোগে ডা. আমিনুল ইসলামকে ফুলেল সংবর্ধনা

‘দেশে ফিরতে পেরে ভাল লাগছে’, ফিরেই প্রথম প্রতিক্রিয়া উইং কমান্ডার অভিনন্দনের

আপডেট সময় : ০১:৫৫:৩৬ অপরাহ্ণ, শনিবার, ২ মার্চ ২০১৯

নিউজ ডেস্ক:

৫৮ ঘণ্টা পাকিস্তানের কবজায় থাকার পর শুক্রবার ভারতে ফিরেছেন উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান। ওই দিন রাত ৯টা ২০ নাগাদ ওয়াঘা-অটারী সীমান্তে তাঁকে ভারতের হাতে তুলে দেয় পাকিস্তান। দেশের মাটিতে পা রাখার পরই অভিনন্দনের প্রথম প্রতিক্রিয়া ছিল, “ফিরতে পেরে খুব ভাল লাগছে।”

গোটা দেশ প্রহর গুনছিল কখন ঘরে ফিরবেন দেশের এই বীর সন্তান। তাঁর ফিরে আসা নিয়েও দিনভর কম নাটক হয়নি। সকালেই খবর আসে ইসলামাবাদ থেকে সড়কপথে লাহৌরে নিয়ে আসা হচ্ছে অভিনন্দনকে। দুপুর ২টো নাগাদ ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হবে তাঁকে। কিন্তু সেই সময়ও পেরিয়ে যায়। ফের জানা যায়, সাড়ে ৩টে নাগাদ অভিনন্দন দেশে ফিরছেন। সেই সময়ও অতিক্রান্ত হয়ে যায়। অবশেষে রাত ৯টার পর ওয়াঘা সীমান্ত থেকে নীল ব্লেজার, সাদা জামা এবং ধূসর প্যান্টে হেঁটে আসতে দেখা যায়। দেশের মাটিতে পা রাখলেন। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন। স্বস্তি নেমে এল গোটা দেশে।

গত ২৭ ফেব্রুয়ারি পাক সেনার হাতে আটক হন অভিনন্দন। খবরটা সামনে আসতেই গোটা দেশে একটা আশঙ্কার ছায়া নেমে আসে। পাকিস্তানে ভারতীয় যুদ্ধবন্দিদের ইতিহাস মনে পড়ে যাচ্ছিল অনেকেরই। ১৯৯৯ সালের কার্গিল যুদ্ধের সময় পাক সেনার হাতে ধরা পড়া বায়ুসেনার আর এক পাইলট নচিকেতার উদাহরণই ছিল একমাত্র ভরসা। কিন্তু ভয় দেখাচ্ছিল অজয় আহুজার স্মৃতি।

ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট কে নচিকেতা এবং স্কোয়াড্রন লিডার অজয় আহুজা। ১৯৯৯ সালের ২৭ মে, কার্গিল যুদ্ধের সময় পাক বাহিনীর হাতে পড়েছিলেন এই দু’জন। সে দিন কার্গিলের আকাশে নচিকেতার মিগ-২৭ বিমানের ইঞ্জিনে আগুন ধরে যায়। তিনি ‘ইজেক্ট’ করে বেরিয়ে আসতে পারলেও পাক সেনার নর্দার্ন ইনফ্যান্ট্রি বন্দি করে তাঁকে। তৎকালীন অটলবিহারী বাজপেয়ী সরকার গোপনে বিস্তর আলোচনা চালিয়ে রাজি করায় পাকিস্তানকে। রেড ক্রসের মাধ্যমে ফিরিয়ে আনা হয় নচিকেতাকে। কিন্তু অজয়কে বন্দি অবস্থায় হত্যা করেছিল পাক বাহিনী। বায়ুসেনার ভেঙে পড়া বিমানের এক চালককে খুঁজতে বেরিয়েছিলেন তিনি। ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় অজয়ের বিমান। তিনি ‘ইজেক্ট’ করে নামতে পারলেও বন্দি হন। সে দিনই তাঁকে হত্যা করে পাক বাহিনী।

নচিকেতা ফিরলেও কী ভাবে অত্যাচার করা হয়েছিল ওই বায়ুসেনার পাইলটের উপর, সেই ঘটনা আজও অনেকের মনে টাটকা। সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা যেন অভিনন্দনের জীবনে নেমে না আসে গোটা দেশ জুড়ে সেই প্রার্থনা চলছিল। নচিকেতা ধরা পড়ার আট দিন পর দেশে ফিরেছিলেন। অভিনন্দন ফিরলেন দু’দিন পর। কিন্তু সেই দু’দিনের প্রতিটি মুহূর্ত যেন দুঃস্বপ্ন হয়ে তাড়া করছিল দেশবাসীকে। পাকিস্তান অভিনন্দনকে আটক করার পরই ভেবেছিল তাঁকে ঢাল বানিয়ে ভারতের উপর চাপ সৃষ্টি করবে। সেই খেলায় কিন্তু বাজিমাত করল ভারতই। স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, কোনও শর্ত ছাড়াই মুক্তি দিতে হবে তাঁকে। পাশাপাশি, জেনিভা কনভেনশনের বিষয়টিও পাকিস্তানকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছিল। আন্তর্জাতিক মঞ্চ থেকেও চাপ আসতে শুরু করেছিল পাকিস্তানের উপর। শেষমেশ, পাক প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করলেন, অভিনন্দনকে ছেড়ে দেওয়া হবে। ভারতকে ‘শান্তির বার্তা’ দিতেই নাকি এই সিদ্ধান্ত ছিল তাঁর।

সূত্র : আন্দবাজার পত্রিকা