শিরোনাম :
Logo ইবিতে রিপোর্টার্স ইউনিটির কমিটিতে নতুন নেতৃত্ব Logo অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমি জিরো টলারেন্স ;বেরোবি উপাচার্য Logo কুয়েট ভিসির পদত্যাগের দাবিতে পাবিপ্রবিতে ইনকিলাব মঞ্চের মানববন্ধন Logo খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি নির্বাচন ২০২৫ এর কমিশন গঠন ও তফসিল ঘোষণা Logo কুয়েট ভিসির পদত্যাগের দাবিতে রাবি শিক্ষার্থীদের অনশন Logo কুয়েট উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আমরণ অনশন—ইবি শিক্ষার্থীদের একাত্মতা Logo জাবিতে “সংগ্রামের শত রঙ” নামে জুলাই-বিপ্লবের আলোকচিত্র প্রদর্শনী Logo শ্রীবরদীতে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের সহায়তায় ছাত্রদল Logo আমরণ অনশনে বসেছেন হাবিপ্রবি শিক্ষার্থী কুয়েট ভিসির পদত্যাগের দাবি Logo শেরপুরে ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্সের ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ৫ লক্ষ টাকার চেক প্রদান

গর্ভাবস্থায় বাংলাদেশে মদ্যপান করেন ২ শতাংশ মা !

  • amzad khan
  • আপডেট সময় : ০৪:৫২:৫৭ অপরাহ্ণ, রবিবার, ২৯ জানুয়ারি ২০১৭
  • ৭৬১ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

গর্ভধারণকালে দেশে ২ শতাংশ মা মদ বা মদজাতীয় পানীয় পান করেন। এ কারণে ১০ হাজার শিশুর মধ্যে ৩টি শিশু জন্ম নিচ্ছে মদের প্রভাবজনিত প্রতিবন্ধিতা নিয়ে। বৈশ্বিক এক গবেষণায় এ তথ্য পাওয়া গেছে।

গর্ভাবস্থায় মদ খাওয়া ও মদের প্রভাবজনিত প্রতিবন্ধিতা নিয়ে গবেষণা করেছে কানাডার সেন্টার ফর অ্যাডিকশন অ্যান্ড মেন্টাল হেলথ। গবেষণায় দেখা গেছে বছরে সারা বিশ্বে ১ লাখ ১৯ হাজার শিশু এই ধরনের প্রতিবন্ধিতা নিয়ে জন্মায়। গবেষণার ফলাফল যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী জনস্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সাময়িকী ল্যানসেটের জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহের অনলাইন সংস্করণে ছাপা হয়েছে।

মদের প্রভাবজনিত প্রতিবন্ধিতাকে চিকিৎসকেরা বলছেন ‘ফিটাল এলকোহল সিনড্রম’ বা ‘ফাস’। গর্ভাবস্থায় মা মদ খেলে তার বিরূপ প্রভাব পড়ে গর্ভস্থ শিশুর ওপর। গবেষণা প্রবন্ধে বলা হয়েছে, এতে মস্তিষ্ক স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পরে, জন্মগত নানা ত্রুটি দেখা দিতে পারে, জন্মের আগে ও পরে শিশুর বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হতে পারে, মুখ অবয়বে বিকৃতি দেখা দিতে পারে, বোধ-বুদ্ধি-আবেগে ঘাটতি দেখা দিতে পারে। ‘ফাস’ লক্ষণ নিয়ে জন্মালে পরিণত বয়সে একই সময়ে একাধিক রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি। গবেষণা ফলাফলকে গুরুত্বপূর্ণ বলে বর্ণনা করেছেন বিশিষ্ট শিশুরোগ চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদ অধ্যাপক এম কিউ-কে তালুকদার। তিনি বলেন, ৩০ বছর আগে যুক্তরাজ্যে পেশা চর্চার সময় তিনি এই ধরনের শিশু দেখেছেন। এই ধরনের শিশুর জন্মের সময় ওজন কম হয়, হাত-পা নরম হয়, চোখ ও থুতনি ছোট হয়, মুখে ও কপালে লোম বেশি হয়। তিনি বলেন, ‘এই ধরনের লক্ষণ নিয়ে কোনো শিশু এলে চিকিৎসকের উচিত মাকে জিজ্ঞেস করা যে, তিনি গর্ভাবস্থায় মদ খেতেন কি না।’

অধ্যাপক তালুকদার বলেন, ‘ফাস’ লক্ষণযুক্ত শিশুদের বিশেষ কোনো চিকিৎসা নেই। এ ক্ষেত্রে একটাই পথ, তা হচ্ছে মাকে মদ থেকে দূরে রাখা।

মদ খাওয়া নিয়ে ২৩ হাজার ৪৭০টি এবং ‘ফাস’ নিয়ে ১১ হাজার ১১০টি গবেষণা প্রবন্ধের তথ্য বিশ্লেষণ করে বর্তমান গবেষকেরা দেখেছেন, সারা বিশ্বে ৯ দশমিক ৮ শতাংশ মা গর্ভাবস্থায় মদ খান। জন্ম নেওয়া প্রতি ১০ হাজার শিশুর মধ্যে ১৪ দশমিক ৬টি শিশু ‘ফাস’ নিয়ে জন্মায়। গর্ভাবস্থায় মদ খায় এমন ৬৭ জনের মধ্যে একজন মা এ রকম প্রতিবন্ধী শিশুর জন্ম দেন। আর বছরে সারা বিশ্বে এ রকম ১ লাখ ১৯ হাজার শিশুর জন্ম হচ্ছে।

গবেষণা প্রবন্ধের সম্পূরক পরিশিষ্টে অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের তথ্য দেওয়া হয়েছে। তাতে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশে আনুমানিক ২ দশমিক ১ শতাংশ গর্ভবতী নারী মদ খান। আর ১০ হাজারের মধ্যে আনুমানিক ৩ দশমিক ১টি শিশুর জন্ম হচ্ছে ‘ফাস’ লক্ষণ নিয়ে।

জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের (নিপোর্ট) তথ্য অনুযায়ী দেশে বছরে প্রায় ৩৭ লাখ মা গর্ভধারণ করেন। ল্যানসেটের তথ্যের সঙ্গে নিপোর্টের হিসাব মেলালে বছরে ১ হাজার ১৬০টি শিশুর জন্ম হচ্ছে ‘ফাস’ লক্ষণ নিয়ে।

প্রবন্ধের শেষ অংশে গবেষকেরা বলেছেন, প্রজননক্ষম মায়েদের মদ খাওয়ার ব্যাপারে বাছবিচারের ব্যবস্থা করা দরকার। গর্ভধারণ-পূর্ব স্বাস্থ্য সচেতনতামূলক বা জন্মনিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের সময় এসব নারীকে সচেতন করতে হবে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

ইবিতে রিপোর্টার্স ইউনিটির কমিটিতে নতুন নেতৃত্ব

গর্ভাবস্থায় বাংলাদেশে মদ্যপান করেন ২ শতাংশ মা !

আপডেট সময় : ০৪:৫২:৫৭ অপরাহ্ণ, রবিবার, ২৯ জানুয়ারি ২০১৭

নিউজ ডেস্ক:

গর্ভধারণকালে দেশে ২ শতাংশ মা মদ বা মদজাতীয় পানীয় পান করেন। এ কারণে ১০ হাজার শিশুর মধ্যে ৩টি শিশু জন্ম নিচ্ছে মদের প্রভাবজনিত প্রতিবন্ধিতা নিয়ে। বৈশ্বিক এক গবেষণায় এ তথ্য পাওয়া গেছে।

গর্ভাবস্থায় মদ খাওয়া ও মদের প্রভাবজনিত প্রতিবন্ধিতা নিয়ে গবেষণা করেছে কানাডার সেন্টার ফর অ্যাডিকশন অ্যান্ড মেন্টাল হেলথ। গবেষণায় দেখা গেছে বছরে সারা বিশ্বে ১ লাখ ১৯ হাজার শিশু এই ধরনের প্রতিবন্ধিতা নিয়ে জন্মায়। গবেষণার ফলাফল যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী জনস্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সাময়িকী ল্যানসেটের জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহের অনলাইন সংস্করণে ছাপা হয়েছে।

মদের প্রভাবজনিত প্রতিবন্ধিতাকে চিকিৎসকেরা বলছেন ‘ফিটাল এলকোহল সিনড্রম’ বা ‘ফাস’। গর্ভাবস্থায় মা মদ খেলে তার বিরূপ প্রভাব পড়ে গর্ভস্থ শিশুর ওপর। গবেষণা প্রবন্ধে বলা হয়েছে, এতে মস্তিষ্ক স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পরে, জন্মগত নানা ত্রুটি দেখা দিতে পারে, জন্মের আগে ও পরে শিশুর বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হতে পারে, মুখ অবয়বে বিকৃতি দেখা দিতে পারে, বোধ-বুদ্ধি-আবেগে ঘাটতি দেখা দিতে পারে। ‘ফাস’ লক্ষণ নিয়ে জন্মালে পরিণত বয়সে একই সময়ে একাধিক রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি। গবেষণা ফলাফলকে গুরুত্বপূর্ণ বলে বর্ণনা করেছেন বিশিষ্ট শিশুরোগ চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদ অধ্যাপক এম কিউ-কে তালুকদার। তিনি বলেন, ৩০ বছর আগে যুক্তরাজ্যে পেশা চর্চার সময় তিনি এই ধরনের শিশু দেখেছেন। এই ধরনের শিশুর জন্মের সময় ওজন কম হয়, হাত-পা নরম হয়, চোখ ও থুতনি ছোট হয়, মুখে ও কপালে লোম বেশি হয়। তিনি বলেন, ‘এই ধরনের লক্ষণ নিয়ে কোনো শিশু এলে চিকিৎসকের উচিত মাকে জিজ্ঞেস করা যে, তিনি গর্ভাবস্থায় মদ খেতেন কি না।’

অধ্যাপক তালুকদার বলেন, ‘ফাস’ লক্ষণযুক্ত শিশুদের বিশেষ কোনো চিকিৎসা নেই। এ ক্ষেত্রে একটাই পথ, তা হচ্ছে মাকে মদ থেকে দূরে রাখা।

মদ খাওয়া নিয়ে ২৩ হাজার ৪৭০টি এবং ‘ফাস’ নিয়ে ১১ হাজার ১১০টি গবেষণা প্রবন্ধের তথ্য বিশ্লেষণ করে বর্তমান গবেষকেরা দেখেছেন, সারা বিশ্বে ৯ দশমিক ৮ শতাংশ মা গর্ভাবস্থায় মদ খান। জন্ম নেওয়া প্রতি ১০ হাজার শিশুর মধ্যে ১৪ দশমিক ৬টি শিশু ‘ফাস’ নিয়ে জন্মায়। গর্ভাবস্থায় মদ খায় এমন ৬৭ জনের মধ্যে একজন মা এ রকম প্রতিবন্ধী শিশুর জন্ম দেন। আর বছরে সারা বিশ্বে এ রকম ১ লাখ ১৯ হাজার শিশুর জন্ম হচ্ছে।

গবেষণা প্রবন্ধের সম্পূরক পরিশিষ্টে অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের তথ্য দেওয়া হয়েছে। তাতে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশে আনুমানিক ২ দশমিক ১ শতাংশ গর্ভবতী নারী মদ খান। আর ১০ হাজারের মধ্যে আনুমানিক ৩ দশমিক ১টি শিশুর জন্ম হচ্ছে ‘ফাস’ লক্ষণ নিয়ে।

জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের (নিপোর্ট) তথ্য অনুযায়ী দেশে বছরে প্রায় ৩৭ লাখ মা গর্ভধারণ করেন। ল্যানসেটের তথ্যের সঙ্গে নিপোর্টের হিসাব মেলালে বছরে ১ হাজার ১৬০টি শিশুর জন্ম হচ্ছে ‘ফাস’ লক্ষণ নিয়ে।

প্রবন্ধের শেষ অংশে গবেষকেরা বলেছেন, প্রজননক্ষম মায়েদের মদ খাওয়ার ব্যাপারে বাছবিচারের ব্যবস্থা করা দরকার। গর্ভধারণ-পূর্ব স্বাস্থ্য সচেতনতামূলক বা জন্মনিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের সময় এসব নারীকে সচেতন করতে হবে।