শিরোনাম :
Logo হাসিনার গণহত্যা মামলার প্রতিবেদন জমা; মিলেছে অপরাধের প্রমাণ Logo কচুয়ায় টানা ৪১ দিন জামাতে নামাজ পড়ে সাইকেল পুরস্কার পেল ১০ শিশু-কিশোর Logo চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার দুর্ঘটনায় নিহত বেড়ে ১০ Logo দেশে জঙ্গিবাদ উত্থানের মতো কিছুই ঘটেনি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Logo কচুয়ায় নিরাপদ সড়ক চাই উদ্যোগে ডা. আমিনুল ইসলামকে ফুলেল সংবর্ধনা Logo আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ কর্তৃক মাদক সম্রজ্ঞী মিনি বেগম মাদক বিক্রয়কালে হাতেনাতে গ্রেফতার Logo ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ঈদের আয়োজন Logo নির্বাচন ডিসেম্বরের মধ্যে না হলে দেশ অস্থিতিশীল হতে পারে, রয়টার্সকে মঈন খান Logo কলকাতাকে উড়িয়ে মুম্বাইয়ের প্রথম জয় Logo অস্ট্রেলিয়ার কেন্দ্রীয় চুক্তিতে চমক, তালিকায় ২ টেস্ট খেলা ব্যাটার

মেহেরপুরে সৌদিআরবের খেজুর চাষ

  • Nil Kontho
  • আপডেট সময় : ১১:৪৪:৫৬ অপরাহ্ণ, শনিবার, ১৪ জুলাই ২০১৮
  • ৭৭৫ বার পড়া হয়েছে

মাসুদ রানা, মেহেরপুর: মেহেরপুর মুজিবনগরে পরীক্ষামূলকভাবে মধ্যপ্রাচ্যের খেজুর চাষ শুরু হয়েছে। ১০ টি জাত নিয়ে এই চাষের যাত্রা শুরু হয়। মুজিবনগর সমন্বিত কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের’ আওতায় বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট কুষ্টিয়া ২০১৪ সালে এই খেজুর চাষ শুরু করে।
মুজিবনগর মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স চত্তরের পূর্ব পাশে ২ হাজার গাছের চারা রোপন করা হয়। বর্তমানে এই গাছের বয়স ৪ বছর। এই বাগান তত্বাবধান করছেন মহিবুল ইসলাম। তিনি কুষ্টিয়া ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট এর একজন নিয়মিত কর্মচারী। মহিবুল বলেন এই গাছগুলো এ দেশে আনতে প্রায় ২৫ হাজার টাকা কাস্টমস ট্যাক্স দিতে হয়েছে। গাছগুলো আনা হয়েছে আরব আমিরাত, সৌদিআরব, ইরান, ওমান, কাতার এবং সুদান থেকে। ১০ টি জাত আছে এই বাগানে যেমন- মরিয়ম মাকতুম, বাহারী, সুক্কারি, কালামি, ডেগলেথ নূর, খালাস, লুল, আম্বার ও আজওয়া।
চলতি বছরে ১০টি গাছে ফল ধরে। স্বাদ এবং আকারে মধ্যপ্রাচ্যের খেজুরের মতই। তত্বাবধায়ক মহিবুল ইসলাম বলেন- চারা লাগানোর নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম মানতে হয়। ৩ ফুট গভীর ও ৩ ফুট আড়াআড়ি গর্ত করে ২ দিন গর্তটা রোদে শুকিয়ে নিতে হয়। তারপর পোকা মাকড়ের উপদ্রব ঠেকাতে পাউডার বিষ মাটিতে মিশিয়ে ৮/১০ কেজি গোবর সার ব্যবহার করে প্রতিটি চারা রোপনের পর গোড়া যেন শুকিয়ে না যায় বা অতিরিক্ত পানি জমে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
আমদানি নির্ভর এই খেজুর ফলটিকে দেশে উৎপাদনের লক্ষ্যে কয়েকটি জাত বাছায় করে কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পণা চলছে বলে জানালেন কৃষি বিজ্ঞানীরা। চিকিৎসকরা বলছেন খেজুরটি আমাদের দেশে উৎপাদন করা সম্ভব হলে সহজে পূরণ হবে পুষ্টি চাহিদা।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট এর উর্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শহিদুল্লাহ্, বলেন- এটা একটি পরীক্ষামূলক প্রকল্প, এই চাষে কিছু সমস্যাও দেখা দিতে পারে। বর্ষাকালে পুষ্পমঞ্জুরীকে ঢেকে দিতে পারলে মধ্যপ্রাচ্যের মতই ফল উৎপাদন করা সম্ভব। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা অভিজিৎ সাহা বলেন- এই প্রকল্পটি সফল হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
মেহেরপুর সিভিল সার্জন ডা. জি কে এম সামসুজ্জামান বলেন এই ফলটির মধ্যে মিনারেল সহ বিভিন্ন উপাদান রয়েছে যা মানবদেহের রোগ প্রতিরোধে সহায়ক। এটি দেশে উৎপাদন হলে স্বল্প মূল্যে পুষ্টির চাহিদা পূরণ সম্ভব।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. আখতারুজ্জামান বলেন- এখানকার আবহাওয়া ও মাটি খেজুর চাষের জন্য উপযোগী। মেহেরপুরের মাটিতে প্রায় সব ধরনের আবাদ করা সম্ভব। তবে ধান গবেষণা কেন্দ্রর উচিত ছিল মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরকে সাথে নিয়ে কাজটি করার। তাহলে কাজটি আরও ভালো হতো।
মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা আক্তার বলেন- এখানে মুজিবনগর আম্রকাননের মতো খেজুর বাগানও অন্যরকম একটা আকর্ষণ হয়ে উঠবে পর্যটকদের কাছে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

হাসিনার গণহত্যা মামলার প্রতিবেদন জমা; মিলেছে অপরাধের প্রমাণ

মেহেরপুরে সৌদিআরবের খেজুর চাষ

আপডেট সময় : ১১:৪৪:৫৬ অপরাহ্ণ, শনিবার, ১৪ জুলাই ২০১৮

মাসুদ রানা, মেহেরপুর: মেহেরপুর মুজিবনগরে পরীক্ষামূলকভাবে মধ্যপ্রাচ্যের খেজুর চাষ শুরু হয়েছে। ১০ টি জাত নিয়ে এই চাষের যাত্রা শুরু হয়। মুজিবনগর সমন্বিত কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের’ আওতায় বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট কুষ্টিয়া ২০১৪ সালে এই খেজুর চাষ শুরু করে।
মুজিবনগর মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স চত্তরের পূর্ব পাশে ২ হাজার গাছের চারা রোপন করা হয়। বর্তমানে এই গাছের বয়স ৪ বছর। এই বাগান তত্বাবধান করছেন মহিবুল ইসলাম। তিনি কুষ্টিয়া ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট এর একজন নিয়মিত কর্মচারী। মহিবুল বলেন এই গাছগুলো এ দেশে আনতে প্রায় ২৫ হাজার টাকা কাস্টমস ট্যাক্স দিতে হয়েছে। গাছগুলো আনা হয়েছে আরব আমিরাত, সৌদিআরব, ইরান, ওমান, কাতার এবং সুদান থেকে। ১০ টি জাত আছে এই বাগানে যেমন- মরিয়ম মাকতুম, বাহারী, সুক্কারি, কালামি, ডেগলেথ নূর, খালাস, লুল, আম্বার ও আজওয়া।
চলতি বছরে ১০টি গাছে ফল ধরে। স্বাদ এবং আকারে মধ্যপ্রাচ্যের খেজুরের মতই। তত্বাবধায়ক মহিবুল ইসলাম বলেন- চারা লাগানোর নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম মানতে হয়। ৩ ফুট গভীর ও ৩ ফুট আড়াআড়ি গর্ত করে ২ দিন গর্তটা রোদে শুকিয়ে নিতে হয়। তারপর পোকা মাকড়ের উপদ্রব ঠেকাতে পাউডার বিষ মাটিতে মিশিয়ে ৮/১০ কেজি গোবর সার ব্যবহার করে প্রতিটি চারা রোপনের পর গোড়া যেন শুকিয়ে না যায় বা অতিরিক্ত পানি জমে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
আমদানি নির্ভর এই খেজুর ফলটিকে দেশে উৎপাদনের লক্ষ্যে কয়েকটি জাত বাছায় করে কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পণা চলছে বলে জানালেন কৃষি বিজ্ঞানীরা। চিকিৎসকরা বলছেন খেজুরটি আমাদের দেশে উৎপাদন করা সম্ভব হলে সহজে পূরণ হবে পুষ্টি চাহিদা।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট এর উর্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শহিদুল্লাহ্, বলেন- এটা একটি পরীক্ষামূলক প্রকল্প, এই চাষে কিছু সমস্যাও দেখা দিতে পারে। বর্ষাকালে পুষ্পমঞ্জুরীকে ঢেকে দিতে পারলে মধ্যপ্রাচ্যের মতই ফল উৎপাদন করা সম্ভব। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা অভিজিৎ সাহা বলেন- এই প্রকল্পটি সফল হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
মেহেরপুর সিভিল সার্জন ডা. জি কে এম সামসুজ্জামান বলেন এই ফলটির মধ্যে মিনারেল সহ বিভিন্ন উপাদান রয়েছে যা মানবদেহের রোগ প্রতিরোধে সহায়ক। এটি দেশে উৎপাদন হলে স্বল্প মূল্যে পুষ্টির চাহিদা পূরণ সম্ভব।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. আখতারুজ্জামান বলেন- এখানকার আবহাওয়া ও মাটি খেজুর চাষের জন্য উপযোগী। মেহেরপুরের মাটিতে প্রায় সব ধরনের আবাদ করা সম্ভব। তবে ধান গবেষণা কেন্দ্রর উচিত ছিল মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরকে সাথে নিয়ে কাজটি করার। তাহলে কাজটি আরও ভালো হতো।
মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা আক্তার বলেন- এখানে মুজিবনগর আম্রকাননের মতো খেজুর বাগানও অন্যরকম একটা আকর্ষণ হয়ে উঠবে পর্যটকদের কাছে।