ইউক্রেনের সাম্প্রতিক এক গোপন সামরিক অভিযানে রাশিয়ার কৌশলগত সেতু, বিমানঘাঁটি এবং গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধাস্ত্র ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দেশটির নিরাপত্তা সংস্থা এসবিইউ জানিয়েছে, মঙ্গলবার কের্চ সেতুতে প্রায় ২,৫০০ পাউন্ড বিস্ফোরকের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। আর সেটি করা হয় পানির নিচে থেকে। ইউক্রেনের ইতিহাসে এটিকে এখন পর্যন্ত অন্যতম বড় সামরিক অভিযান হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
এরই মধ্যে সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কন্ডোলিজা রাইস সতর্ক করেছেন যে, এই ঘটনার পর রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারেন। তিনি বলেন, ‘পুতিন নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছেন এবং ইউক্রেনকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য আরও মরিয়া হয়ে উঠতে পারেন।’
ফক্স নিউজের ‘ফক্স অ্যান্ড ফ্রেন্ডস’ অনুষ্ঠানে বুধবার (৪ জুন) দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রাইস বলেন, ‘এই হামলা যুদ্ধের প্রকৃতি বদলে দিয়েছে। ইউক্রেন দেখিয়েছে, তুলনামূলকভাবে সস্তা ড্রোন দিয়েও রাশিয়ার বিলিয়ন ডলারের বিমান বহরকে ধ্বংস করা সম্ভব।’
রাইস বলেন, এই অপারেশন শুধু একটি সামরিক বিজয় নয়, এটি একটি দুর্দান্ত গোয়েন্দা সাফল্যও। তার ভাষায়, ‘ইউক্রেন তাদের ড্রোন নির্মাণ ও পরিচালনার দক্ষতায় উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে।’
তিনি আরও বলেন,‘এই হামলার পর পুতিন এখন রাশিয়ার ভেতরেই ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ খুঁজে বেড়াবেন। দেশে শুরু হতে পারে একপ্রকার ‘উইচ হান্ট’। এটি তার জন্য আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়াবে।’
রাইস বলেন,‘পুতিন এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি অস্থির হয়ে পড়েছেন। তিনি সবসময়ই একজন স্বৈরাচারী ছিলেন, কিন্তু এখন তার মধ্যে ইউক্রেনকে ধ্বংস করার এক ধরনের উন্মত্ততা কাজ করছে।’
উল্লেখ্য, রাইস যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ প্রশাসনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন এবং সে সময় থেকেই পুতিনের কর্মকাণ্ড ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করে আসছেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউক্রেনের সাম্প্রতিক সাফল্য সামরিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ হলেও এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও ভয়াবহ হতে পারে। পুতিন নতুন করে আরও আগ্রাসী কৌশল গ্রহণ করতে পারেন, যা ইউক্রেন ছাড়িয়ে গোটা ইউরোপের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে।