সদরপুর (ফরিদপুর) প্রতিনিধি:
প্রশাসনের প্রতি সাধারণ মানুষের অভিযোগের শেষ নেই। কিন্তু কিছু মানুষ ব্যতিক্রম হন বলেই এখনও আশার আলো জ্বলে। ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার নির্বাহী অফিসার জাকিয়া সুলতানা তেমনই এক ব্যতিক্রমী উদাহরণ।
দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র ৫ মাসের মধ্যে সৎ, নিষ্ঠাবান ও মানবিক নেতৃত্বের মাধ্যমে বদলে দিয়েছেন পুরো উপজেলা প্রশাসনের চিত্র। অর্জন করেছেন সাধারণ মানুষের আস্থা, ভালোবাসা আর অকুণ্ঠ প্রশংসা।
২০২৪ সালের ১১ ডিসেম্বর সদরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে যোগ দেন জাকিয়া সুলতানা। যোগদানের পর থেকেই শুরু হয় তার দুর্নীতিবিরোধী ও জনমুখী অভিযান। সরকারি-বেসরকারি প্রতিটি দপ্তরে ফেরান শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও গতিশীলতা। কমেছে জনভোগান্তি, বেড়েছে কার্যকর সেবা।
শুধু কার্যালয়ে বসেই নয়—ইউএনওর পদক্ষেপ ছড়িয়ে গেছে সদরপুরে শহর থেকে বিভিন্ন ইউনিয়ন এলাকার পদ্মার চর পর্যন্ত। ইভটিজিং, বাল্যবিয়ে কিংবা পারিবারিক নির্যাতনের মতো অন্যায়ের বিরুদ্ধে নেন তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ঝটিকা পরিদর্শনে ফিরেছে নিয়মানুবর্তিতা। স্কুলে পৌঁছে দিয়েছেন , বিতরণ করেছেন শিক্ষা সামগ্রী।
তার এমন কার্যক্রমের স্বীকৃতি দিতে ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ সহ বিভিন্ন সংগঠন তাকে ফুল দিয়ে সম্মাননা প্রদান করেছে। স্থানীয়রা বলছেন, তিনি শুধু একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা নন, একজন মানবিক নেতা।
উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ সাব্বির হাসান ও সাধারন সম্পাদক এস এম আলোমগীর হোসেন বলেন, ‘তিনি যেভাবে মানুষের কাছে গিয়ে কথা শোনেন, তাতে বোঝা যায়—উনি কতটা আন্তরিক’ ‘মানুষ তাকে নিজের একজন মনে করে। অফিসের সময় না জেনেও ইউএনওকে ফোন করে সমস্যার কথা বলছে—এটাই তার প্রতি ভালোবাসার প্রমাণ।’
উপজেলার ঢেউখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ মিজানুর রহমান বলেন তিন মাসের দায়িত্বে ইউএনওর উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছে: শতভাগ বাস্তবায়ন, অভিযোগ নিষ্পত্তির হার বৃদ্ধি, শিক্ষা খাতে অগ্রগতি, সরকারী জমিতে অবৈধ দখল উচ্ছেদ, মানবিক সহায়তা, বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে সফল টাস্কফোর্স গঠন, সরকারি অর্থের সঠিক ব্যবহার, এবং উন্নয়ন প্রকল্পে সময়মতো কাজ শেষ করা।
এই অর্জনকে একক দাবি না করে ইউএনও জাকিয়া সুলতানা বলেন, সদরপুরকে আধুনিক ও নাগরিকবান্ধব উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এই সাফল্য সদরপুরের জনগণ ও প্রশাসনের সম্মিলিত প্রয়াসের ফল।