রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) একাংশ শিক্ষার্থী আওয়ামীপন্থী শিক্ষক ও ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে ৭ দিনের আলটিমেটাম দিয়েছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এসব শিক্ষক ও ছাত্রলীগের কিছু নেতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কাজ করছে এবং জুলাই বিরোধী ন্যারেটিভ দাড় করাচ্ছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে।
রাবি সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মারের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক বার্তায় এসব কথা জানান তিনি।
প্রশাসনের দিকে আঙ্গুল তুলে সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার বলেছেন, “আগামী ৭ দিনের মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি আওয়ামী চিহ্নিত দালাল শিক্ষক এবং সন্ত্রাসী ছাত্রলীগের তালিকা অনুযায়ী ব্যবস্থা না নেয়, আমি নিজে বাদী হয়ে মামলা করবো। এবং আমি বাদী হয়ে মামলা করলে, আপনাদেরও মামলা করতে বাধ্য করবো।”
তিনি আরও বলেন, “এর ফলে ওই দালালদের বিরুদ্ধে দুটি মামলা চলবে। আমি সারাজীবন কোর্টে হাজিরা দেবো, টাকা খরচ করবো, তবুও কোনো ছাড় নাই। অনেক আওয়ামী শিক্ষক এখন ক্লাসে এসে জুলাই বিরোধী ন্যারেটিভ দাড় করাচ্ছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে, অনেকে আবার অনলাইনে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।”
এ বিষয়ে শিবির নেতা নওসাজ্জামান বলেন, “শুধু সুলতান মাহমুদ রানা একা নেই, এরমতো সব জায়গায় ঘাপটি মেরে আছে এই কুলাঙ্গারগুলো। রাবি প্রশাসনকে আমরা বলতে চাচ্ছি, অবিলম্বে এদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে শাস্তি নিশ্চিত করুন। নাহলে এই রাবি আরও একটা ১৭ জুলাই দেখবে। এদের সাথে আপনাদের আত্মীয়তার সম্পর্ক বাসায় দেখাবেন, ১৬ জুলাইয়ের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের নামে তপু প্রশাসন যখন মামলা করেছিল তখনও আপনাদের কোনো সাড়া পাওয়া যায় নি। সেই সময় কোথায় ছিলো আপনাদের সুশীলপনা? যদি আন্দোলনকারীদের জীবনের থেকে আপনাদের কাছে কোনো কিছু গুরুত্বপূর্ণ থাকে তাহলে রাবি আন্দোলনকারীরা বসে থাকবেনা। এটাই শেষ বার্তা।”
নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাদের করা কয়েকটি ফেসবুক পোস্টের জবাব দিয়ে মাহায়ের ইসলাম বলেন, “কোনটা বাড়াবাড়ি? আপনার নেত্রী যখন হাজার হাজার ছাত্র-জনতাকে হত্যা করে, সেটা? নাকি সেই নেত্রীকে খুনী না বলতে চাওয়া? কোনটাকে বাড়াবাড়ি বলতে চাচ্ছেন?পতিত আমলে তো মুজিব আর হাসিনার কীর্তন গেয়ে গেলেন, এখন পারলে জিয়া আর খালেদার গুণ গাইতে শুরু করেন, তাহলে আগের আমলের মতো কিছুটা নুনভাত জুটতে পারে কপালে।
তিনি আরো জানান, আপনার মতো ফ্যাসিস্টের তল্পিবাহককে আমাদের ঠিকই চেনা আছে। ইতিহাসের নিকৃষ্টতর ফ্যাসিস্ট হাসিনার অপকর্মকে ‘সাফল্য’ আখ্যা দিয়ে বিশাল বই লিখেছেন! আন্দোলনের সময় ছাত্রদেরকে তাণ্ডবকারী আখ্যা দিয়ে পত্রিকায় কলাম লিখেছেন।
৫ আগস্টে পরেও আপনি ভালো হইলেন না, ইনিয়েবিনিয়ে ফ্যাসিস্ট নেত্রীর গুণগান গেয়ে যাচ্ছেন। ৫ আগস্টের পরে কয়েক মাস বিড়ালের ছানার মতো গর্তে লুকিয়েছিলেন! এখন ভয় কেটে যাওয়ায় আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে চাচ্ছেন! ভাববেন না ছাত্র জনতা আপনাদেরকে ভুলে যাচ্ছে, শুধু সময়ের অপেক্ষা!”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জি এ সাব্বির বলেন,এই আওয়ামী শু*য়োর এখনো বহাল তবিয়তে এই ক্যাম্পাসে আছে। প্রশাসনের দূর্বলতা এদের কথা বলার সাহস জোগাচ্ছে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, দাবি বাস্তবায়নে প্রশাসনের নির্দিষ্ট সময়সীমা পেরিয়ে গেলে তারা আইনি ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পথে নামবেন।