শিরোনাম :
Logo উত্তর কচুয়া জাতীয়তাবাদী প্রবাসী কল্যাণ সংগঠনের উদ্যোগে মহিলা দলের বিশাল গনমিছিল Logo কচুয়ায় বিএনপির উদ্যোগে লিফলেট বিতরন ও মিছিল Logo চাঁদপুরে খতিবের উপর হামলার প্রতিবাদে শহর জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ Logo ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন চাঁদপুর জেলা শাখার উদ্যোগে দায়িত্বশীল তারবিয়াত অনুষ্ঠিত Logo চাঁদপুর জেলা বিজেপি’র জেলা কমিটি গঠনকল্পে সমন্বয় সভা আন্দালিভ রহমান পার্থ বাংলাদেশে সুস্থধারার রাজনীতির দিকপাল ………উপাধ্যক্ষ নুরুজ্জামান হীরা Logo আমরা সংস্কার চেয়েছি,জুলাই গণহত্যার বিচার চেয়েছি এবং নতুন সংবিধান চেয়েছি: নাহিদ ইসলাম Logo মিটফোর্ডে হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে হাবিপ্রবিতে বিক্ষোভ Logo ইবিতে শাখা ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মীর পদত্যাগ Logo কুষ্টিয়ায় ভুল প্রশ্নপত্র বিতরণের ঘটনায় কেন্দ্রসচিবসহ ৬ জনকে অব্যাহতি Logo রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থীদের ফেয়ারওয়েল অনুষ্ঠিত

গত ২০ বছরে বদলে গেছে পৃথিবীর কেন্দ্র

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৩:৪৮:৪২ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • ৭৭২ বার পড়া হয়েছে
অনলাইন ডেস্ক:

পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠের গভীরে থাকা অভ্যন্তরীণ কোর (ইনার কোর) পরিবর্তন হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। সাধারণত এটি গোলাকৃতির বলে মনে করা হলেও সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, কিছু জায়গায় এর আকৃতি বিকৃত হয়ে গেছে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই পরিবর্তন পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে, যা আমাদের সূর্যের ক্ষতিকর বিকিরণ থেকে রক্ষা করে।

কী বলছে গবেষণা?

যুক্তরাষ্ট্রের সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক জন ভিদালের নেতৃত্বে একটি গবেষণায় উঠে এসেছে, গত ২০ বছরে পৃথিবীর ইনার কোরে পরিবর্তন এসেছে। বিশেষ করে এর কিছু অংশ ১০০ মিটার বা তার বেশি উচ্চতায় বিকৃত হয়েছে। গবেষণাটি সাম্প্রতিক সময়ে ন্যাচার জিওসায়েন্স সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে।

পৃথিবীর কোর কেমন কাজ করে?

পৃথিবীর কেন্দ্র মূলত দুটি ভাগে বিভক্ত- তরল বাইরের কোর এবং কঠিন অভ্যন্তরীণ কোর। ইনার কোরের গতিশীলতা পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরির মূল চালিকা শক্তি। যদি এটি থেমে যায়, তাহলে পৃথিবীও মঙ্গলগ্রহের মতো প্রাণহীন হয়ে পড়তে পারে।

ইনার কোর পৃথিবীর অন্যান্য অংশের তুলনায় স্বতন্ত্রভাবে ঘোরে। তবে গবেষকরা দেখেছেন, ২০১০ সালের দিকে এটি পৃথিবীর ঘূর্ণনের তুলনায় ধীর হয়ে যায়, পরে আবার গতি বাড়িয়েছে।

ভূমিকম্পের ঢেউ বিশ্লেষণে মিলেছে নতুন তথ্য

বিজ্ঞানীরা সরাসরি পৃথিবীর কোরে পৌঁছাতে পারেন না, কারণ এটি প্রায় ৪ হাজার মাইল গভীরে অবস্থিত। তাই ভূমিকম্পের ফলে তৈরি হওয়া শকওয়েভ বা ভূকম্পন তরঙ্গ বিশ্লেষণ করেই তারা ইনার কোরের পরিবর্তন সম্পর্কে ধারণা পান।

১৯৯১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে একই জায়গায় সংঘটিত ভূমিকম্পের তথ্য বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা কোরের আকৃতি পরিবর্তনের প্রমাণ পেয়েছেন। গবেষকদের মতে, বাইরের কোরের তরল প্রবাহ এবং অসমান মাধ্যাকর্ষণ টানের কারণেই ইনার কোরের আকৃতি বিকৃত হতে পারে।

ভবিষ্যতে কী হতে পারে?

বিজ্ঞানীরা মনে করেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাইরের তরল কোর জমে অভ্যন্তরীণ কোরে পরিণত হচ্ছে। তবে এটি পুরোপুরি কঠিন হতে কয়েক বিলিয়ন বছর লেগে যাবে। এর আগেই পৃথিবী হয়তো সূর্যের তাপে বিলীন হয়ে যাবে।

অধ্যাপক জন ভিদাল বলেন, এই পরিবর্তন আমাদের দৈনন্দিন জীবনে তাৎক্ষণিক কোনো প্রভাব ফেলবে না। তবে আমরা জানতে চাই, পৃথিবীর কেন্দ্রস্থলে কী ঘটছে।

তিনি আরও জানান, পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র বিভিন্ন সময় আকস্মিক পরিবর্তনের শিকার হয়েছে। এটি ইনার কোরের বিকৃতির সঙ্গে সম্পর্কিত কি না, তা জানতে আরও গবেষণা প্রয়োজন। তবে তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, এটি পৃথিবীর কোর থেমে যাচ্ছে বলে ভাবার কোনো কারণ নেই। বিজ্ঞানের জগতে নতুন তথ্য সবসময় আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলায়।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

উত্তর কচুয়া জাতীয়তাবাদী প্রবাসী কল্যাণ সংগঠনের উদ্যোগে মহিলা দলের বিশাল গনমিছিল

গত ২০ বছরে বদলে গেছে পৃথিবীর কেন্দ্র

আপডেট সময় : ০৩:৪৮:৪২ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
অনলাইন ডেস্ক:

পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠের গভীরে থাকা অভ্যন্তরীণ কোর (ইনার কোর) পরিবর্তন হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। সাধারণত এটি গোলাকৃতির বলে মনে করা হলেও সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, কিছু জায়গায় এর আকৃতি বিকৃত হয়ে গেছে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই পরিবর্তন পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে, যা আমাদের সূর্যের ক্ষতিকর বিকিরণ থেকে রক্ষা করে।

কী বলছে গবেষণা?

যুক্তরাষ্ট্রের সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক জন ভিদালের নেতৃত্বে একটি গবেষণায় উঠে এসেছে, গত ২০ বছরে পৃথিবীর ইনার কোরে পরিবর্তন এসেছে। বিশেষ করে এর কিছু অংশ ১০০ মিটার বা তার বেশি উচ্চতায় বিকৃত হয়েছে। গবেষণাটি সাম্প্রতিক সময়ে ন্যাচার জিওসায়েন্স সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে।

পৃথিবীর কোর কেমন কাজ করে?

পৃথিবীর কেন্দ্র মূলত দুটি ভাগে বিভক্ত- তরল বাইরের কোর এবং কঠিন অভ্যন্তরীণ কোর। ইনার কোরের গতিশীলতা পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরির মূল চালিকা শক্তি। যদি এটি থেমে যায়, তাহলে পৃথিবীও মঙ্গলগ্রহের মতো প্রাণহীন হয়ে পড়তে পারে।

ইনার কোর পৃথিবীর অন্যান্য অংশের তুলনায় স্বতন্ত্রভাবে ঘোরে। তবে গবেষকরা দেখেছেন, ২০১০ সালের দিকে এটি পৃথিবীর ঘূর্ণনের তুলনায় ধীর হয়ে যায়, পরে আবার গতি বাড়িয়েছে।

ভূমিকম্পের ঢেউ বিশ্লেষণে মিলেছে নতুন তথ্য

বিজ্ঞানীরা সরাসরি পৃথিবীর কোরে পৌঁছাতে পারেন না, কারণ এটি প্রায় ৪ হাজার মাইল গভীরে অবস্থিত। তাই ভূমিকম্পের ফলে তৈরি হওয়া শকওয়েভ বা ভূকম্পন তরঙ্গ বিশ্লেষণ করেই তারা ইনার কোরের পরিবর্তন সম্পর্কে ধারণা পান।

১৯৯১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে একই জায়গায় সংঘটিত ভূমিকম্পের তথ্য বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা কোরের আকৃতি পরিবর্তনের প্রমাণ পেয়েছেন। গবেষকদের মতে, বাইরের কোরের তরল প্রবাহ এবং অসমান মাধ্যাকর্ষণ টানের কারণেই ইনার কোরের আকৃতি বিকৃত হতে পারে।

ভবিষ্যতে কী হতে পারে?

বিজ্ঞানীরা মনে করেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাইরের তরল কোর জমে অভ্যন্তরীণ কোরে পরিণত হচ্ছে। তবে এটি পুরোপুরি কঠিন হতে কয়েক বিলিয়ন বছর লেগে যাবে। এর আগেই পৃথিবী হয়তো সূর্যের তাপে বিলীন হয়ে যাবে।

অধ্যাপক জন ভিদাল বলেন, এই পরিবর্তন আমাদের দৈনন্দিন জীবনে তাৎক্ষণিক কোনো প্রভাব ফেলবে না। তবে আমরা জানতে চাই, পৃথিবীর কেন্দ্রস্থলে কী ঘটছে।

তিনি আরও জানান, পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র বিভিন্ন সময় আকস্মিক পরিবর্তনের শিকার হয়েছে। এটি ইনার কোরের বিকৃতির সঙ্গে সম্পর্কিত কি না, তা জানতে আরও গবেষণা প্রয়োজন। তবে তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, এটি পৃথিবীর কোর থেমে যাচ্ছে বলে ভাবার কোনো কারণ নেই। বিজ্ঞানের জগতে নতুন তথ্য সবসময় আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলায়।