আল মাহমুদ দোলোন (পঞ্চগড়)
ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত জনগোষ্ঠীর পুর্নবাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থান কর্মসূচির আওতায় পঞ্চগড়ে তারুণ্যের উৎসব উপলক্ষে সামাজিক উন্নয়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
“এসো দেশ বদলাই পৃথিবী বদলাই” শ্লোগান নিয়ে বোদা উপজেলা পরিষদ চত্বরে শনিবার (১১ জানুয়ারি) বিকেলে ভিক্ষুকদের মাঝে ভ্যান ও দোকান ঘর বিতরণ করা হয়, এবং ৪৬ তম জাতীয় বিজ্ঞান বিষয়ক কুইজ অংশগ্রহণকারি ১৬ টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রী প্রতিযোগি বিজয়ীদের মাঝেও পুরস্কার প্রদান করা হয়।
বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহরিয়ার নজিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক সাবেত আলী। অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য দেন সমাজসেবা অধিদপ্তর পঞ্চগড়ের উপ পরিচালক অনিরুদ্ধ কুমার রায়।
জেলা প্রশাসক সাবেত আলী প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, পঞ্চগড় জেলায় কোন ওয়াচ টাওয়ার নাই। পঞ্চগড়ের সৌন্দর্য্য বাড়ানোর জন্য পঞ্চগড় শহরের প্রবেশ পথ করতোয়া সেতুর কাছে একটি ওয়াচ টাওয়ার নির্মান করা হবে যা বাংলাদেশের মধ্যে সবচেয়ে উঁচু টাওয়ার। ইতোমধ্যে আমরা জায়গা নির্বাচণ করেছি, এ সময় তিনি বলেন পঞ্চগড়ে মান সম্মত কোন উন্নত মানের অডিটোরিয়াম নাই। এখানে একটি অডিটোরিয়াম নির্মান করা হবে। সে জন্য পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়েছে।
স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি সুইমিং পুল নির্মান করা হবে। শিক্ষার্থীরা যেনো স্কুল সময় বাদে সুইমিং পুলে গিয়ে সাঁতার শিখতে পারে। তিনি আরও বলেন, আপনারা আপনাদের সন্তানদের জম্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন করবেন।
আমি পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক হিসেবে সেপ্টেম্বর মাসে যোগদান করেছি। তখন জম্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনে সারা দেশের মধ্যে পঞ্চগড় জেলা ছিল ৬৩ তম, এবার আমরা প্রথম হয়েছি। আপনাদের সহযোগিতার কারনেই এটা অর্জন করা হওয়া সম্ভব হয়েছে। এজন্য পঞ্চগড় জেলা প্রশাসনকে অভিনন্দন জানিয়েছেন মন্ত্রী পরিষদ থেকে। আমাদের চিন্তা ভাবনা আর মনোভাব যদি উন্নত বিশ্বের মত হয় তাহলে আমরাও আমাদের দেশকে উন্নতদেশে পরিনত করতে পারবো।
এসময় বোদা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজিম উদ্দীন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন পঞ্চগড়ের সমন্বয়ক ফজলে রাব্বি, বোদা উপজেলার সহকারী কমিশনার ভূমি এসএম ফুয়াদ উপস্থিত ছিলেন।
অতিথিরা বলেন, গত বছর আমরা ৫০৯ জন ভিক্ষুককে পূর্নবাসন করেছিলাম। এবার আমরা প্রায় ৫০ হাজার ভিক্ষুককে সহায়তা করবো। যাতে তারা আর ভিক্ষা না করে। ভিক্ষাবৃত্তি নিরসন করার জন্য আমরা চেষ্টা করছি, কিন্তু যারা ভিক্ষাকে পেশা হিসেবে নিয়েছে তাদেরকে আমরা পূর্নবাসন করবো এবং তারা যেন ভ্যান বিক্রি করতে না পারে, তারা যেন ভিক্ষাবৃত্তি পেশায় আবার জড়িত হতে না পারে তা মনিটরিং করবে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেম্বারগন। পরে ভিক্ষুকদের পূর্নবাসনে সহযোগিতা করার জন্য ও যাচাই বাছাই করার কাজে সাথে থাকার জন্য এবং জম্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনে প্রচার প্রচারনা করার জন্য তিনটি ইউনিয়ন পরিষদকে পুরস্কৃত করা হয়।
অনুষ্ঠান শেষে জেলা প্রশাসক সাবেত আলী অতিথিদের সাথে নিয়ে ভিক্ষুকদের পূর্নবাসন করার জন্য ৯ টি ভ্যান ও ৪টি মালামালসহ দোকান ঘর প্রদান করেন।