শিরোনাম :
Logo বিএসএফের হাতে আটক বাংলাদেশী কিশোরকে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বিজিবির নিকট হস্তান্তর Logo ব্যানসন গ্ৰুপের কোনো ঘরবাড়ি থাকবে না; রাবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক রাহী Logo নতুন পোপ নির্বাচিত হবে যেভাবে Logo শুল্কযুদ্ধ থামাতে যুক্তরাষ্ট্রকে যে বার্তা দিলো চীন Logo পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক Logo পারভেজ হত্যার বিচারের দাবিতে ইবি ছাত্রদলের মানববন্ধন Logo পঞ্চগড়ে ট্রাক মেরামতের সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মেকানিক নিহত, আহত সহকারী Logo সড়ক অবকাঠামো উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে চাঁদপুর সওজ বিভাগ Logo জাবিতে বটতলাসহ ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলো ওয়াশরুম স্থাপনের দাবি লাল সবুজের Logo যবিপ্রবিতে সক্রিয় তেল চুরির সিন্ডিকেট, হাতেনাতে ধরা

মুসলিম দেশে কোকা-কোলার ব্যবসায় ধস

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৭:৪১:১৪ পূর্বাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ৭২৩ বার পড়া হয়েছে

ইসরায়েল ও এর মিত্র দেশগুলোর পণ্য বয়কট করায়, মুসলিম দেশের স্থানীয় বাজারে হ্রাস পেয়েছে আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের পণ্যের চাহিদা। ফুলে ফেঁপে উঠছে স্থানীয় ব্যবসা-বাণিজ্য। মিসরের বাজারে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে দেশীয় প্রতিষ্ঠান ভি-সেভেন কোলা। এদিকে সৌদি আরবে জনপ্রিয় কোকা-কোলাকে ছাড়িয়ে গেছে ‘কিনজা’। গাজায় চলমান যুদ্ধের জেরে আন্তর্জাতিক পণ্যের দরপতন আরও বৃদ্ধি পাবে বলে অভিমত বিশ্লেষকদের।

মিসরের একটি সুপারশপে থরে থরে সাজানো আছে স্থানীয় বিভিন্ন ব্র্যান্ডের কোমল পানীয়ের বোতল আর ক্যান। মিসর, জর্ডান, কাতারের সুপার শপগুলোয় কোক-পেপসির বদলে ক্রমেই জায়গা করে নিচ্ছে স্থানীয় ব্র্যান্ডের কোমল-পানীয়। ব্যবসায়ীরা জানান, কোক-পেপসির বাজারে রীতিমত ধস নেমেছে। কোনো কোনো জায়গায় বিক্রি হ্রাস পেয়েছে ৭ থেকে ৮ গুণ।

স্থানীয়রা জানান, কোকা-কোলা আর পেপসির বেচাকেনা কমে গেছে। আগে শুধু রমজান মাসে কোকা-কোলা মূল্যছাড়সহ ও বাই-ওয়ান-গেট-ওয়ানের অফার দিত। কিন্তু এখন কিছুদিন পরপরই বিভিন্ন অফার দিচ্ছে ওরা। বয়কটের প্রভাব দীর্ঘমেয়াদি হবে।

বিক্রেতারা জানান, প্রতি সপ্তাহে বিদেশি সফট ড্রিংক্স বিক্রি করেছি ৫০০-৭০০ দিনার। এখন প্রতি সপ্তাহে ১০০ দিনার উঠানোও কষ্টসাধ্য। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের তৈরি সফট ড্রিংক্স আগে প্রতি সপ্তাহে বিক্রি করেছি ২০ থেকে ৬০ দিনারের মাঝে। এখন ১০ গুণ বেশি বিক্রি হয়।

পণ্য বয়কটের এই ঝড়ে মিসরে তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে দেশটির নিজস্ব কোমল পানীয় কোম্পানি ভি-সেভেন। গত বছরের তুলনায় এ বছর রফতানি বেড়েছে প্রায় ৩ গুণ। প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ নূর জানান, বিশ্বের ২১টি দেশে রফতানি হচ্ছে তাদের পানীয়টি।

মোহাম্মদ নুর বলেন, ভি-সেভেন আমরা ২০২৩ সালে বাজারে নিয়ে আসি। গাজায় যুদ্ধ শুরুর পরই মিসরীয় মার্কেটে এর বিক্রি শুরু করেছি। আল্লাহর রহমত অনেক ভালো সাড়া পেয়েছি। নজরে আসলো মানুষজন কোক-পেপসি বাদ দিয়ে আমাদের পণ্য কিনতেই বেশি আগ্রহী। গত ১ বছরে স্থানীয় মার্কেটে ভে-সেভেন বিক্রির পরিমাণ ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যান্য দেশে রপ্তানির পরিমাণও বেড়েছে ৩০০-৩৫০ শতাংশ।

একই চিত্র সৌদি আরবেও। দেশটির বাজারে কোকা-কোলাকে পেছনে ফেলে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে দেশি ব্র্যান্ড কিনজার। আবু ইসা হোল্ডিংয়ের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ফাওয়াজ ইদ্রিসি বলেন, কিনজার মুনাফা কোকা-কোলার চেয়ে এখন বেশি। খুব শীঘ্রই পেপসির বাজারেরও দখল নিবে।

সফট ড্রিংকস থেকে শুরু করে সাবান, ডিটারজেন্ট, শ্যাম্পু সবকিছুতেই ক্রেতারা এখন বয়কট করছে ইসরায়েল ও এর মিত্র দেশগুলোর পণ্য। ক্রেতারা জানান, কোকা-কোলা, পেপসি ছেড়ে আমি স্থানীয় ভাবে তৈরি করা সফট ড্রিংক কিনি, যেমন- ভি-কোলা কিংবা স্পাইরো স্প্যাথিস। ডিটারজেন্টসহ ঘরের অন্যান্য জিনিস কেনার ক্ষেত্রেও খেয়াল রাখি যেন ইসরায়েলি পণ্য না কিনতে হয়। ওদের জিনিষের বদলে মিসরীয় জিনিস কেনা অনেক ভালো।

জরিপ অনুযায়ী মধ্যপ্রাচ্যসহ অন্যান্য মুসলিম বিশ্বে আন্তর্জাতিক পণ্যের দরপতন হয়েছে ৪ শতাংশ।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

বিএসএফের হাতে আটক বাংলাদেশী কিশোরকে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বিজিবির নিকট হস্তান্তর

মুসলিম দেশে কোকা-কোলার ব্যবসায় ধস

আপডেট সময় : ০৭:৪১:১৪ পূর্বাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ইসরায়েল ও এর মিত্র দেশগুলোর পণ্য বয়কট করায়, মুসলিম দেশের স্থানীয় বাজারে হ্রাস পেয়েছে আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের পণ্যের চাহিদা। ফুলে ফেঁপে উঠছে স্থানীয় ব্যবসা-বাণিজ্য। মিসরের বাজারে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে দেশীয় প্রতিষ্ঠান ভি-সেভেন কোলা। এদিকে সৌদি আরবে জনপ্রিয় কোকা-কোলাকে ছাড়িয়ে গেছে ‘কিনজা’। গাজায় চলমান যুদ্ধের জেরে আন্তর্জাতিক পণ্যের দরপতন আরও বৃদ্ধি পাবে বলে অভিমত বিশ্লেষকদের।

মিসরের একটি সুপারশপে থরে থরে সাজানো আছে স্থানীয় বিভিন্ন ব্র্যান্ডের কোমল পানীয়ের বোতল আর ক্যান। মিসর, জর্ডান, কাতারের সুপার শপগুলোয় কোক-পেপসির বদলে ক্রমেই জায়গা করে নিচ্ছে স্থানীয় ব্র্যান্ডের কোমল-পানীয়। ব্যবসায়ীরা জানান, কোক-পেপসির বাজারে রীতিমত ধস নেমেছে। কোনো কোনো জায়গায় বিক্রি হ্রাস পেয়েছে ৭ থেকে ৮ গুণ।

স্থানীয়রা জানান, কোকা-কোলা আর পেপসির বেচাকেনা কমে গেছে। আগে শুধু রমজান মাসে কোকা-কোলা মূল্যছাড়সহ ও বাই-ওয়ান-গেট-ওয়ানের অফার দিত। কিন্তু এখন কিছুদিন পরপরই বিভিন্ন অফার দিচ্ছে ওরা। বয়কটের প্রভাব দীর্ঘমেয়াদি হবে।

বিক্রেতারা জানান, প্রতি সপ্তাহে বিদেশি সফট ড্রিংক্স বিক্রি করেছি ৫০০-৭০০ দিনার। এখন প্রতি সপ্তাহে ১০০ দিনার উঠানোও কষ্টসাধ্য। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের তৈরি সফট ড্রিংক্স আগে প্রতি সপ্তাহে বিক্রি করেছি ২০ থেকে ৬০ দিনারের মাঝে। এখন ১০ গুণ বেশি বিক্রি হয়।

পণ্য বয়কটের এই ঝড়ে মিসরে তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে দেশটির নিজস্ব কোমল পানীয় কোম্পানি ভি-সেভেন। গত বছরের তুলনায় এ বছর রফতানি বেড়েছে প্রায় ৩ গুণ। প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ নূর জানান, বিশ্বের ২১টি দেশে রফতানি হচ্ছে তাদের পানীয়টি।

মোহাম্মদ নুর বলেন, ভি-সেভেন আমরা ২০২৩ সালে বাজারে নিয়ে আসি। গাজায় যুদ্ধ শুরুর পরই মিসরীয় মার্কেটে এর বিক্রি শুরু করেছি। আল্লাহর রহমত অনেক ভালো সাড়া পেয়েছি। নজরে আসলো মানুষজন কোক-পেপসি বাদ দিয়ে আমাদের পণ্য কিনতেই বেশি আগ্রহী। গত ১ বছরে স্থানীয় মার্কেটে ভে-সেভেন বিক্রির পরিমাণ ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যান্য দেশে রপ্তানির পরিমাণও বেড়েছে ৩০০-৩৫০ শতাংশ।

একই চিত্র সৌদি আরবেও। দেশটির বাজারে কোকা-কোলাকে পেছনে ফেলে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে দেশি ব্র্যান্ড কিনজার। আবু ইসা হোল্ডিংয়ের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ফাওয়াজ ইদ্রিসি বলেন, কিনজার মুনাফা কোকা-কোলার চেয়ে এখন বেশি। খুব শীঘ্রই পেপসির বাজারেরও দখল নিবে।

সফট ড্রিংকস থেকে শুরু করে সাবান, ডিটারজেন্ট, শ্যাম্পু সবকিছুতেই ক্রেতারা এখন বয়কট করছে ইসরায়েল ও এর মিত্র দেশগুলোর পণ্য। ক্রেতারা জানান, কোকা-কোলা, পেপসি ছেড়ে আমি স্থানীয় ভাবে তৈরি করা সফট ড্রিংক কিনি, যেমন- ভি-কোলা কিংবা স্পাইরো স্প্যাথিস। ডিটারজেন্টসহ ঘরের অন্যান্য জিনিস কেনার ক্ষেত্রেও খেয়াল রাখি যেন ইসরায়েলি পণ্য না কিনতে হয়। ওদের জিনিষের বদলে মিসরীয় জিনিস কেনা অনেক ভালো।

জরিপ অনুযায়ী মধ্যপ্রাচ্যসহ অন্যান্য মুসলিম বিশ্বে আন্তর্জাতিক পণ্যের দরপতন হয়েছে ৪ শতাংশ।