সোমবার | ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫ | শীতকাল
শিরোনাম :
Logo ভৈরব খননের শত কোটি টাকা জলে; বাধা ওয়াসার পাইপ Logo স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে পুরানো সিন্ডিকেট: নেপথ্যে স্বাচিপ Logo চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি সোহেল রুশদী, সাধারণ সম্পাদক এম এ লতিফ নির্বাচিত Logo বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়ালে দেয়ালে ওসমান হাদির গ্রাফিতি  Logo পলাশবাড়ীতে দলিল লেখকের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ Logo শীতার্ত মানুষের পাশে প্রশাসন: বেদে পল্লীতে কম্বল দিলেন চাঁদপুর ডিসি Logo মাদকের কুফল সম্পর্কে গণসচেতনতা সৃষ্টি ও মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে সমাবেশ সন্তানরা কোথায় যাচ্ছে, কার সঙ্গে মিশছে—এ বিষয়ে বাবা-মাকে আরও সচেতন হতে হবে-চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মোঃ নাজমুল ইসলাম সরকার Logo সেন্টমার্টিনগামী পর্যটকবাহী জাহাজে আগুনে একজনের মৃত্যু Logo দুর্নীতি মামলায় দোষী সাব্যস্ত মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক Logo শান্তর সেঞ্চুরিতে জয় দিয়ে বিপিএল শুরু রাজশাহীর

আলমডাঙ্গায় কান ধরিয়ে রাস্তা দাঁড় করিয়ে ১০ শিশু শিক্ষার্থীকে শাস্তি

  • rahul raj
  • আপডেট সময় : ১১:৪৫:২৬ পূর্বাহ্ণ, শনিবার, ১৩ এপ্রিল ২০১৯
  • ৭৪৫ বার পড়া হয়েছে

?

ফেসুবকে ছবি ভাইরাল : শিক্ষক আটক : মুচলেকায় মুক্তি

নিউজ ডেস্ক:ক্লাসের পড়া না পারার অভিযোগে ১০জন শিশু শিক্ষার্থীকে অভিনব শাস্তি দিয়ে ফেঁসে গেলেন মাদ্রাসা শিক্ষক মীর মিনহাজুল আবেদীন ওরফে আফ্রিদী (২২)। এ ঘটনা জানাজানি হয়ে গেলে গতকাল শুক্রবার অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে আটক করে পুলিশ। পরে অভিযুক্ত শিক্ষককে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সামনে উপস্থিত করলে ভবিষ্যতে এ ধরণের অপরাধ করবেন না মর্মে লিখিত মুচলেকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। আলমডাঙ্গা শহরে ‘মাদ্রাসাতুত তাকওয়া’ নামের একটি কওমি মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বিষয় পড়াতেন ওই শিক্ষক।
ওই শিক্ষার্থীরা জানায়, দুপুরের রোদের মধ্যে শহরের রোডে দীর্ঘক্ষণ দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। পরে কান ধরা অবস্থায় তাদের আবার ফিরিয়ে আনা হয় মাদ্রাসায়। মাদ্রাসায় ফিরে লজ্জায়-অপমানে সেদিন সবাই ব্যাপক কান্নাকাটি করে। তাদের মধ্যে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র সায়েম অচেতনও হয়ে পড়ে। পরে জ্ঞান ফিরলে মাদ্রাসা ছেড়ে স্থায়ীভাবে চলে যায়। এ ছাড়া আরও পাঁচজন শিক্ষার্থী এখনো মাদ্রাসায় ফেরেনি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানায়, পড়া না পারার জন্য গত ৮ এপ্রিল সোমবার আলমডাঙ্গা শহরে অবস্থিত ‘মাদ্রাসাতুত তাকওয়া’ নামের একটি কওমি মাদ্রাসার পঞ্চম ও দ্বিতীয় শ্রেণির ১০ জন শিক্ষার্থীকে শ্রেণিকক্ষে দাঁড় করিয়ে রাখেন ওই শিক্ষক। পরে ওই শিক্ষক শাস্তি মাত্রা বাড়িয়ে কান ধরা অবস্থায় ১০ জন শিক্ষার্থীকে শ্রেণিকক্ষ থেকে বের করে হাঁটিয়ে নিয়ে আলমডাঙ্গা শহরে মধ্যে নিয়ে যান এবং শহরের ব্যস্ততম সড়কে প্রকাশ্যে কান ধরা অবস্থায় দাঁড় করিয়ে দেন। এ ঘটনার ৩ দিন পর গত ১১ এপ্রিল বৃহস্পতিবার কানে ধরা অবস্থায় ১০ শিক্ষার্থী সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে আছে, এমন ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। পরে বিষয়টি সম্পর্কে আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাহাত মান্নান অবগত হন। শুক্রবার দুপুরে অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে আটক করে পুলিশ।
অভিযুক্ত শিক্ষক মীর মিনহাজুল আবেদীন ওরফে আফ্রিদী বলেন, ‘তারা কোনো দিনও ক্লাসের পড়া পারে না। ওই দিন রাগ চেপে রাখতে না পেরে ১০ জনকে শাস্তি দিয়ে ফেলি। পরে নিজের ভুল বুঝতে পেরে ক্ষমাও চেয়েছি।’
পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রাহাত মান্নান ওই মাদ্রাসায় উপস্থিত হন। তিনি নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থী, এলাকাবাসী ও শিক্ষকদের সাথে কথা বলেন। ডেকে নেওয়া হয় নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীদের কয়েকজন অভিভাবককে। ইউএনও অভিভাবকদের অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিতে বললে, তারা তা দিতে অস্বীকৃতি জানান। বলেন, তারা তাদের সন্তানদের শিক্ষার জন্য শারীরিক শাস্তি দিতে বলেছেন। তাছাড়া ওই শিক্ষক নিজেও ছাত্র। সে কারণে তাকে ক্ষমা করে দিতে ইউএনও’র নিকট অনুরোধ করেন। একপর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুচলেকা নিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষককে ছেড়ে দেন। ভবিষ্যতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদেরকে তিনি কখনও শারীরিক নির্যাতন ও অপমানিত হয় এমন আচরণ করবেন না মর্মে লিখিত মুচলেকায় সাক্ষর করেন অভিযুক্ত শিক্ষক। এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার সরকারি বিধি অনুসারে মাদ্রাসা পরিচালনার নির্দেশ দেন শিক্ষকদের। শিক্ষা অফিসকেও মাদ্রাসাটিকে দেখভাল করতে বলেন তিনি।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

ভৈরব খননের শত কোটি টাকা জলে; বাধা ওয়াসার পাইপ

আলমডাঙ্গায় কান ধরিয়ে রাস্তা দাঁড় করিয়ে ১০ শিশু শিক্ষার্থীকে শাস্তি

আপডেট সময় : ১১:৪৫:২৬ পূর্বাহ্ণ, শনিবার, ১৩ এপ্রিল ২০১৯

ফেসুবকে ছবি ভাইরাল : শিক্ষক আটক : মুচলেকায় মুক্তি

নিউজ ডেস্ক:ক্লাসের পড়া না পারার অভিযোগে ১০জন শিশু শিক্ষার্থীকে অভিনব শাস্তি দিয়ে ফেঁসে গেলেন মাদ্রাসা শিক্ষক মীর মিনহাজুল আবেদীন ওরফে আফ্রিদী (২২)। এ ঘটনা জানাজানি হয়ে গেলে গতকাল শুক্রবার অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে আটক করে পুলিশ। পরে অভিযুক্ত শিক্ষককে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সামনে উপস্থিত করলে ভবিষ্যতে এ ধরণের অপরাধ করবেন না মর্মে লিখিত মুচলেকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। আলমডাঙ্গা শহরে ‘মাদ্রাসাতুত তাকওয়া’ নামের একটি কওমি মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বিষয় পড়াতেন ওই শিক্ষক।
ওই শিক্ষার্থীরা জানায়, দুপুরের রোদের মধ্যে শহরের রোডে দীর্ঘক্ষণ দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। পরে কান ধরা অবস্থায় তাদের আবার ফিরিয়ে আনা হয় মাদ্রাসায়। মাদ্রাসায় ফিরে লজ্জায়-অপমানে সেদিন সবাই ব্যাপক কান্নাকাটি করে। তাদের মধ্যে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র সায়েম অচেতনও হয়ে পড়ে। পরে জ্ঞান ফিরলে মাদ্রাসা ছেড়ে স্থায়ীভাবে চলে যায়। এ ছাড়া আরও পাঁচজন শিক্ষার্থী এখনো মাদ্রাসায় ফেরেনি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানায়, পড়া না পারার জন্য গত ৮ এপ্রিল সোমবার আলমডাঙ্গা শহরে অবস্থিত ‘মাদ্রাসাতুত তাকওয়া’ নামের একটি কওমি মাদ্রাসার পঞ্চম ও দ্বিতীয় শ্রেণির ১০ জন শিক্ষার্থীকে শ্রেণিকক্ষে দাঁড় করিয়ে রাখেন ওই শিক্ষক। পরে ওই শিক্ষক শাস্তি মাত্রা বাড়িয়ে কান ধরা অবস্থায় ১০ জন শিক্ষার্থীকে শ্রেণিকক্ষ থেকে বের করে হাঁটিয়ে নিয়ে আলমডাঙ্গা শহরে মধ্যে নিয়ে যান এবং শহরের ব্যস্ততম সড়কে প্রকাশ্যে কান ধরা অবস্থায় দাঁড় করিয়ে দেন। এ ঘটনার ৩ দিন পর গত ১১ এপ্রিল বৃহস্পতিবার কানে ধরা অবস্থায় ১০ শিক্ষার্থী সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে আছে, এমন ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। পরে বিষয়টি সম্পর্কে আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাহাত মান্নান অবগত হন। শুক্রবার দুপুরে অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে আটক করে পুলিশ।
অভিযুক্ত শিক্ষক মীর মিনহাজুল আবেদীন ওরফে আফ্রিদী বলেন, ‘তারা কোনো দিনও ক্লাসের পড়া পারে না। ওই দিন রাগ চেপে রাখতে না পেরে ১০ জনকে শাস্তি দিয়ে ফেলি। পরে নিজের ভুল বুঝতে পেরে ক্ষমাও চেয়েছি।’
পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রাহাত মান্নান ওই মাদ্রাসায় উপস্থিত হন। তিনি নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থী, এলাকাবাসী ও শিক্ষকদের সাথে কথা বলেন। ডেকে নেওয়া হয় নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীদের কয়েকজন অভিভাবককে। ইউএনও অভিভাবকদের অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিতে বললে, তারা তা দিতে অস্বীকৃতি জানান। বলেন, তারা তাদের সন্তানদের শিক্ষার জন্য শারীরিক শাস্তি দিতে বলেছেন। তাছাড়া ওই শিক্ষক নিজেও ছাত্র। সে কারণে তাকে ক্ষমা করে দিতে ইউএনও’র নিকট অনুরোধ করেন। একপর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুচলেকা নিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষককে ছেড়ে দেন। ভবিষ্যতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদেরকে তিনি কখনও শারীরিক নির্যাতন ও অপমানিত হয় এমন আচরণ করবেন না মর্মে লিখিত মুচলেকায় সাক্ষর করেন অভিযুক্ত শিক্ষক। এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার সরকারি বিধি অনুসারে মাদ্রাসা পরিচালনার নির্দেশ দেন শিক্ষকদের। শিক্ষা অফিসকেও মাদ্রাসাটিকে দেখভাল করতে বলেন তিনি।