ঝিনাইদহ থেকে জাহিদুর রহমান তারিকঃ ঝিনাইদহের ভগবাননগর গামবাসীর সহযোগিতায় বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা সংঘ’র আয়োজনে সদর উপজেলার কালিচরনপুর ইউনিয়নের ভগবাননগর গামের মাঠে বসেছিল বাংলার অন্যতম ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলার এ আসর। গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া এই লাঠি খেলা দেখতে ভীড় করে হাজার হাজার মানুষ। দর্শকদের হাততালিতে উৎসবমুখর হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। শনিবার সকালে অনুষ্ঠানের সভাপতি আমজাত হোসেন এর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী দিনে উদ্বোধন করেন কালিচরনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কৃষনপদ দত্ত ও সাবেক চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন আলম। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কনক কান্তি দাস। অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা ডাক্তার রাশেদ আলম মামুন। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন কালিচরনপুর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড মেম্বর (স্থানীয় মেম্বর) জাহাঙ্গীর হোসেন, সাবেক মেম্বরগন মোদাচ্ছের আলী বিশ্বাস,হিয়াখান হোসেন লিকু, ইসলাম বিশ্বাস। আলোচনা শেষে লাঠি ও পরে আড়মুখ গ্রামের নজরুল ইসলাম বয়াতী ও কুষ্টিয়া জেলার বেবী নদীয়া সরকার ভাবগান পরিবেশন করবেন। দর্শকরা জানান, নতুন প্রজন্মের অনেকেই এ খেলা প্রথম দেখলেন। হারানো ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনতেই লাঠিখেলার এমন আয়োজন প্রতিনিয়ত করার দাবি তাদের।পাশা-পাশি হা-ডুডু,ট্যাক-ট্যাক,গাদন খেলা,মরোগ লড়াই,চি বুড়ি,গোলক ধাঁদা খেলারও আয়োজকদের কাছে দাবী করেন গ্রাম বাসি। আয়োজকগন বলেন, আর হারানো ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনতেই এ লাঠিখেলার ৬ষ্ঠ বারের মত এবারও আয়োজন করা হয়েছে। ৬০ দশক থেকে প্রচলিত এ লাঠিখেলাকে আজও গ্রাম ও শহরের বুকে ধরে রাখতে স্থানীয়দের পাশাপাশি সরকারকেও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। অনুষ্ঠানের সভাপতি আমজাত হোসেন বলেন, আবহমান গ্রাম বাংলার অন্যতম জনপ্রিয় লাঠি খেলা। বর্তমানে ইনটারনেট, ফেসবুক, অনলাইন, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে মানুষ এখন ভুলতে বসেছে এক সময়ের জনপ্রিয় এই খেলাটি। এ খেলাটি সত্যি মনমুগ্ধকর। উদ্বোধনী দিনে প্রচন্ড ভিড় উপেক্ষা করে লাঠিখেলা উপভোগ করেন সাধারণ মানুষ। বর্ণিল সাজে লাঠি হাতে লাঠিয়ালরা অংশ নেন এ খেলায়। ঢাকঢোল আর বাঁশির তালে আনন্দে উল¬াসে মেতে ওঠেন সবাই। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে নানা বয়সের মানুষ রং-বেরঙের পোশাক পরে মাঠে নামেন লাঠি খেলতে। মানুষের এ উচ্ছাস প্রমাণ করে লাঠি খেলা নিয়ে মানুষের আগ্রহ আছে। ঝিনাইদহের সেরা লাঠিয়াল দল সহ নিজ গ্রামের দল সহ বিভিন্ন এলাকার দল খেলায় অংশ গ্রহন করেন।