শুক্রবার | ২৮ নভেম্বর ২০২৫ | হেমন্তকাল
শিরোনাম :
Logo গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি রবিউল হাসানকে চাঁদপুর জেলার পুলিশ সুপার পদে বদলী Logo প্রতিষ্ঠার পর থেকে নির্মাণ হয়নি চাঁদপুর সদর হাসপাতালে স্থায়ী মর্গ, জীর্ণ-ভবনে ময়নাতদন্ত Logo চাঁদপুর ফরিদগঞ্জে তারুণ্যের আলো সামাজিক উন্নয়ন পরিষদের উদ্যোগ ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প Logo ফের ভূমিকম্প Logo কচুয়ায় জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ উপলক্ষে ৩০টি প্রদর্শনী Logo কুবির বাংলা বিভাগের বাংলা নাটক বিষয়ক প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলন Logo মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় যুবক নিহত Logo মাগুরার শ্রীপুরে প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ ও প্রদর্শনী- ২০২৫ এর উদ্বোধন Logo পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় জাতীয় প্রাণীসম্পদ সপ্তাহ ২০২৫ প্রদর্শনী Logo আমরা নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে কাজ করছি: চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের বিএনপির প্রার্থী বাবু খান

ঝিনাইদহে পিয়াঁজের ঝাঁজে পুড়ছে হত দরিদ্র মানুষ

  • Nil Kontho
  • আপডেট সময় : ০৫:৩৩:৫৫ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ৭ নভেম্বর ২০১৭
  • ৭৭৯ বার পড়া হয়েছে

জাহিদুর রহমান তারিক,ঝিনাইদহঃ কয়েক সপ্তাহ থেকে হুঁ হুঁ করে বাড়তে শুরু করা পিয়াজের দাম আর কমছে না। প্রথমদিকে দেশজুড়ে টানা বৃষ্টিকে দায়ী করলেও, বর্তমানে দেশি ও আমদানি করা পিয়াজের ব্যাপক ঘাটতিকেই দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা। গত একমাসের ব্যবধানে পিয়াজের কেজি বেড়ে ১০০ টাকা ছুঁই ছুঁই। পাইকারি বাজারে এ পণ্য কেজিপ্রতি ৮০ টাকা হলেও খুচরা বাজারগুলোতে ৯০-১০০ দাম হাঁকাচ্ছেন বিক্রেতারা। বাধ্য হয়ে বেশি দামে ক্রয় করতে হচ্ছে ক্রেতাদের। বাজারে কোনো ধরনের মনিটরিং না থাকায় পিয়াজের বাজার লাগামহীন বলে অভিযোগ করছেন স্বল্প আয়ের ক্রেতারা। ভোক্তাদের অভিযোগ, ব্যবসায়ীরা কোনো ধরনের কারণ ছাড়াই নিজেদের ইচ্ছামতো দাম বাড়াচ্ছেন। এতে করে তাদের মধ্যে দেখা গেছে ব্যাপক হতাশা আর চাপা ক্ষোভ। গতকাল ঝিনাইদহের বিভিন্ন বাজার ঘুরে এসব চিত্র পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, আমদানিকারক ও বড় বড় ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণেই পিয়াজের বাজার স্থিতিশীল রাখা যাচ্ছে না। পাশাপাশি বাজারে পিয়াজের সরবরাহ বাড়াতে সরকারের আগাম উদ্যোগের অভাবও দায়ী। নতুন হাটখোলার ব্যবসায়ী আবুল কালাম বলেন, নতুন মৌসুমের অল্পস্বল্প পিয়াজ উঠতে শুরু করবে কিছুদিন পর। তখন কিছুটা কমতে পারে। তবে পিয়াজের ঘাটতি পূরণ হতে সময় লাগবে। তাই দ্রুত দাম নাও কমতে পারে। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মূল্যতালিকা অনুযায়ী সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি ও আমদানি করা দুই ধরনের পিয়াজের দামই বেড়েছে।

দেশি পিয়াজ কেজিপ্রতি ৮০-৯০ টাকা এবং আমদানি করা ভারতীয় পিয়াজ ৬০-৭০ টাকা। গত সপ্তাহে উভয় মানের পিয়াজই ছিল কেজিতে ৫ টাকা কম। পিয়াজ ব্যবসায়ীদের মতে, আমদানি করা পিয়াজের ওপর নির্ভরতা বাড়ছে। বিদেশে দাম বাড়ার কারণে দেশের বাজারেও পিয়াজের দাম বেড়েছে। দক্ষিণ ভারতে বন্যা ও অতিবৃষ্টির কারণে পিয়াজের ফলন এবার কম হয়েছে। ফলে চড়ামূল্যে ভারত থেকে আমদানি করতে হচ্ছে পণ্যটি, যা স্থানীয় বাজারে অস্থিরতা বাড়াচ্ছে। ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, হিলি ও সোনামসজিদ এ চার স্থলবন্দর দিয়েই পিয়াজ আমদানি কমে গেছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বার্ষিক ২০-২২ লাখ টন চাহিদার বিপরীতে দেশে পিয়াজ উৎপাদন হচ্ছে ১৭ লাখ টনের মতো। দুই অর্থবছর ধরেই একই জায়গায় আটকে আছে উৎপাদন। ফলে ৪-৫ লাখ টন পিয়াজের ঘাটতি থাকছে দেশে। এ ঘাটতি পূরণ করতে হচ্ছে আমদানির মাধ্যমে। এ আমদানির সিংহভাগই আবার হচ্ছে ভারত থেকে। জানা গেছে, এক দশকের ব্যবধানে জনপ্রতি পিয়াজের চাহিদা দৈনিক ৪.১৮ থেকে বেড়ে প্রায় ১৭ গ্রামে উন্নীত হয়েছে। চাহিদা যে হারে বাড়ছে, ঠিক সে হারে উৎপাদন না বাড়ার কারণেই আমদানি নির্ভরতা থেকে বের হতে পারছে না বাংলাদেশ। এদিকে ঝিনাইদহের মধ্যও নি¤œ আয়ের মানুষ পেয়াজ কিনতে হাফিয়ে উঠছেন। পেয়াজ এখন সোনার হরিণ। হারাম পথে উপার্জনকারীদের কাছে দ্রব্যমুল্যের এই উর্ধ্বগতি তেমন কিছু মনে না হলেও সাধারণ মানুষের জীবন ধারণ যেন কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি রবিউল হাসানকে চাঁদপুর জেলার পুলিশ সুপার পদে বদলী

ঝিনাইদহে পিয়াঁজের ঝাঁজে পুড়ছে হত দরিদ্র মানুষ

আপডেট সময় : ০৫:৩৩:৫৫ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ৭ নভেম্বর ২০১৭

জাহিদুর রহমান তারিক,ঝিনাইদহঃ কয়েক সপ্তাহ থেকে হুঁ হুঁ করে বাড়তে শুরু করা পিয়াজের দাম আর কমছে না। প্রথমদিকে দেশজুড়ে টানা বৃষ্টিকে দায়ী করলেও, বর্তমানে দেশি ও আমদানি করা পিয়াজের ব্যাপক ঘাটতিকেই দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা। গত একমাসের ব্যবধানে পিয়াজের কেজি বেড়ে ১০০ টাকা ছুঁই ছুঁই। পাইকারি বাজারে এ পণ্য কেজিপ্রতি ৮০ টাকা হলেও খুচরা বাজারগুলোতে ৯০-১০০ দাম হাঁকাচ্ছেন বিক্রেতারা। বাধ্য হয়ে বেশি দামে ক্রয় করতে হচ্ছে ক্রেতাদের। বাজারে কোনো ধরনের মনিটরিং না থাকায় পিয়াজের বাজার লাগামহীন বলে অভিযোগ করছেন স্বল্প আয়ের ক্রেতারা। ভোক্তাদের অভিযোগ, ব্যবসায়ীরা কোনো ধরনের কারণ ছাড়াই নিজেদের ইচ্ছামতো দাম বাড়াচ্ছেন। এতে করে তাদের মধ্যে দেখা গেছে ব্যাপক হতাশা আর চাপা ক্ষোভ। গতকাল ঝিনাইদহের বিভিন্ন বাজার ঘুরে এসব চিত্র পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, আমদানিকারক ও বড় বড় ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণেই পিয়াজের বাজার স্থিতিশীল রাখা যাচ্ছে না। পাশাপাশি বাজারে পিয়াজের সরবরাহ বাড়াতে সরকারের আগাম উদ্যোগের অভাবও দায়ী। নতুন হাটখোলার ব্যবসায়ী আবুল কালাম বলেন, নতুন মৌসুমের অল্পস্বল্প পিয়াজ উঠতে শুরু করবে কিছুদিন পর। তখন কিছুটা কমতে পারে। তবে পিয়াজের ঘাটতি পূরণ হতে সময় লাগবে। তাই দ্রুত দাম নাও কমতে পারে। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মূল্যতালিকা অনুযায়ী সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি ও আমদানি করা দুই ধরনের পিয়াজের দামই বেড়েছে।

দেশি পিয়াজ কেজিপ্রতি ৮০-৯০ টাকা এবং আমদানি করা ভারতীয় পিয়াজ ৬০-৭০ টাকা। গত সপ্তাহে উভয় মানের পিয়াজই ছিল কেজিতে ৫ টাকা কম। পিয়াজ ব্যবসায়ীদের মতে, আমদানি করা পিয়াজের ওপর নির্ভরতা বাড়ছে। বিদেশে দাম বাড়ার কারণে দেশের বাজারেও পিয়াজের দাম বেড়েছে। দক্ষিণ ভারতে বন্যা ও অতিবৃষ্টির কারণে পিয়াজের ফলন এবার কম হয়েছে। ফলে চড়ামূল্যে ভারত থেকে আমদানি করতে হচ্ছে পণ্যটি, যা স্থানীয় বাজারে অস্থিরতা বাড়াচ্ছে। ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, হিলি ও সোনামসজিদ এ চার স্থলবন্দর দিয়েই পিয়াজ আমদানি কমে গেছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বার্ষিক ২০-২২ লাখ টন চাহিদার বিপরীতে দেশে পিয়াজ উৎপাদন হচ্ছে ১৭ লাখ টনের মতো। দুই অর্থবছর ধরেই একই জায়গায় আটকে আছে উৎপাদন। ফলে ৪-৫ লাখ টন পিয়াজের ঘাটতি থাকছে দেশে। এ ঘাটতি পূরণ করতে হচ্ছে আমদানির মাধ্যমে। এ আমদানির সিংহভাগই আবার হচ্ছে ভারত থেকে। জানা গেছে, এক দশকের ব্যবধানে জনপ্রতি পিয়াজের চাহিদা দৈনিক ৪.১৮ থেকে বেড়ে প্রায় ১৭ গ্রামে উন্নীত হয়েছে। চাহিদা যে হারে বাড়ছে, ঠিক সে হারে উৎপাদন না বাড়ার কারণেই আমদানি নির্ভরতা থেকে বের হতে পারছে না বাংলাদেশ। এদিকে ঝিনাইদহের মধ্যও নি¤œ আয়ের মানুষ পেয়াজ কিনতে হাফিয়ে উঠছেন। পেয়াজ এখন সোনার হরিণ। হারাম পথে উপার্জনকারীদের কাছে দ্রব্যমুল্যের এই উর্ধ্বগতি তেমন কিছু মনে না হলেও সাধারণ মানুষের জীবন ধারণ যেন কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে।